বিশেষ সাক্ষাৎকার-বিরোধী দল সংসদে এসে সমালোচনা করুক by আব্দুস শহীদ
আগামীকাল শুরু হচ্ছে জাতীয় সংসদের অধিবেশন। এরই মধ্যে দুই দলের চিফ হুইপের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। বিরোধী দল সংসদে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে পরিবেশ সৃষ্টির দাবি জানিয়েছে। সরকারি দল বলছে, তাঁরা যেকোনো বিষয়ে সংসদে এসে কথা বলতে পারে।
তা সত্ত্বেও অনিশ্চয়তা কাটছে না। এই প্রেক্ষাপটে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ারের বক্তব্য তুলে ধরা হলো।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মশিউল আলম ও তানভীর সোহেল
প্রথম আলো প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের শরিক দলগুলো নবম সংসদের প্রথম অধিবেশনে কয়েক দিন আর পঞ্চম অধিবেশনে মাত্র এক দিন উপস্থিত ছিল। সোমবার ষষ্ঠ অধিবেশন বসতে যাচ্ছে। বিরোধী দলের সেখানে যোগদান সম্পর্কে নিশ্চিত খবর পাওয়া যায়নি। সংসদের বাকিটা মেয়াদ কি এভাবেই, প্রধান বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে, চলবে? জনগণ কিন্তু সংসদে সব দলের অংশগ্রহণ খুবই প্রত্যাশা করে।
আব্দুস শহীদ ধন্যবাদ। আপনাদের যে প্রত্যাশা, সেই একই প্রত্যাশা আমাদেরও। সংসদ নির্বাচনের পরে এক দল সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে, অন্য দল সংখ্যালঘিষ্ঠ। এটাই গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য। নবম জাতীয় সংসদে বিরোধী দল বা চারদলীয় জোটের আসনসংখ্যা যা-ই হোক না কেন, তারা সরকারি দলের সম্পূরক। সরকারি ও বিরোধী উভয় পক্ষে জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিয়েই পূর্ণাঙ্গ সংসদ। জনসাধারণ তাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে, অর্থাৎ তাদের ওপর দায়িত্ব দিয়েছে। সরকার যদি কোনো ধরনের ভুল করে, বিরোধী দল সংসদে সেসব ভুল ধরিয়ে দেবে, সমালোচনা করবে—এই দায়িত্ব জনগণ তাদের দিয়েছে। সংখ্যায় তারা কতজন, সেটা মুখ্য বিষয় নয়।
প্রথম আলো কিন্তু আমরা তো কোনো সংসদের বিরোধী দলকে সেই দায়িত্ব পালন করতে দেখি না। আপনাদের দলও যখন বিরোধী দলে ছিল, তখন কথায় কথায় সংসদ বর্জন করেছে।
আব্দুস শহীদ আমাদের দল সংসদে যোগ দিয়েছে, ওয়াকআউট করেছে, আবার ফিরে এসেছে। কিন্তু নবম জাতীয় সংসদে এ পর্যন্ত বিরোধী দলের নেতা উপস্থিত ছিলেন মাত্র পাঁচ দিন। সংসদ নেতা এবং সংসদে বিরোধী দলের নেতা—এই দুইয়ের সমন্বয়ে সংসদ প্রাণবন্ত হয়, সংসদের সব কর্মকাণ্ডের গ্রহণযোগ্যতার একটা ভিত্তি তৈরি হয়। এটা গণতন্ত্রের পরবর্তী বিকাশের ক্ষেত্রে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এ ক্ষেত্রে আপনাদের যে প্রত্যাশা, জাতির যে প্রত্যাশা; আমাদেরও সেই প্রত্যাশা। কিন্তু বিষয়টি এ পর্যন্ত যে পর্যায়ে এসেছে, সেটার কিছু কারণ আছে। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার স্বৈরতান্ত্রিক শাসন চলেছে, তার ফলে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি, চর্চা-অনুশীলন বারবার ব্যাহত হয়েছে।
প্রথম আলো এখন স্বৈরতন্ত্র নেই। এখন তো সংসদীয় গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুশীলনে কোনো বাধা-বিপত্তি নেই।
আব্দুস শহীদ নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রে ফিরে আসার পর থেকে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুশীলনের ধারাটি ফিরে এসেছে। কিন্তু সেটাকে বিকশিত করা বা পরিশীলনের জন্য উভয় পক্ষের যে আন্তরিক ভূমিকা প্রয়োজন ছিল, তা পালনে কোনো না কোনো পক্ষ ব্যর্থ হচ্ছে।
প্রথম আলো সংসদে সরকারি দলের ভূমিকা বেশি। বিরোধী দল যাতে সংসদে অংশ নেয়, সেই চেষ্টা সরকারি দলের করা উচিত। আপনারা কি তা করেন?
আব্দুস শহীদ আমরা সংসদে তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরও বিরোধী দলের উপস্থিতিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। সে জন্য সংসদে স্বাধীনভাবে কথা বলার যে সুযোগ তাঁদের দেওয়া হয়, অতীতের সঙ্গে তুলনা করলে আপনারা নিজেরাই দেখবেন, সেটা অতীতের চেয়েও বেশি।
প্রথম আলো আপনারা বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের কথা বলেছিলেন, কিন্তু সেটা করেননি...।
আব্দুস শহীদ ভালো প্রশ্ন করেছেন। মনে হয় যে আমরা ডেপুটি স্পিকারের পদটি বিরোধী দলকে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছি। কিন্তু মোটেও তা নয়। সংসদের কার্যপ্রণালি বিধি অনুযায়ী, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের দুই ঘণ্টা আগে নোটিশ করতে হয়। আমরা আধা ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি যে বিরোধী দল ডেপুটি স্পিকার পদের জন্য নোটিশ করবে। কিন্তু তারা যখন তা করেনি, তখন আমরা নোটিশ করেছি।
প্রথম আলো আপনারা কি বিরোধী দলকে নোটিশ করতে বলেছিলেন বা কোনোভাবে জানিয়েছিলেন যে আপনারা তাদের নোটিশ করার জন্য অপেক্ষা করছেন?
আব্দুস শহীদ তাদের নোটিশ করতে আমরা বলতে পারি না। আমরা যখন নোটিশ করেছি, তখন তারা করেনি। তারা যদি নোটিশ করত, নিজেদের প্রার্থী দিত এবং আমরা যদি তাদের প্রার্থীকে ভোট না দিতাম, তাহলে আপনারা বলতে পারতেন যে ডেপুটি স্পিকারের পদটি আমরা বিরোধী দলকে দিইনি। দেখুন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোর সভাপতির পদও আমরা বিরোধীদলীয় সাংসদদের দিয়েছি, এটা আগে কখনো ছিল না।
প্রথম আলো কার্যপ্রণালি বিধিতে যা-ই থাক, আন্তরিকভাবে চাইলে আপনারা নিজেরাই কি ডেপুটি স্পিকার পদে বিরোধী দলের কোনো সাংসদকে নির্বাচিত করতে পারতেন না?
আব্দুস শহীদ না, এটা সাংবিধানিক বিষয়। কার্যপ্রণালি বিধির বাইরে গিয়ে কিছু করার সুযোগ নেই। আন্তরিকভাবে আপনাকে বলি, আওয়ামী লীগের ভাবনা ছিল এ রকম: বিরোধী দল যদি ডেপুটি স্পিকার পদে প্রার্থী দিত, আওয়ামী লীগও নিজেরা প্রার্থী দিত। কিন্তু ভোটাভুটিতে যাওয়ার আগে আওয়ামী লীগ নিজের প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিত। এটাই ছিল আমাদের নেত্রীর ইচ্ছা। কিন্তু সেটা হয়নি। বিরোধী দল আগাগোড়াই সম্পূর্ণ অসহযোগিতার কৌশল নিয়েছে।
প্রথম আলো সোমবারের অধিবেশনে বিরোধী দল যাতে অংশ নেয়, সে জন্য কি আপনাদের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে?
আব্দুস শহীদ আমরা তো সব সময়ই তাঁদের বলে আসছি, আপনারা সংসদে আসুন, আপনাদের যা কিছু বলার আছে সংসদে এসে বলুন। আমাদের সমালোচনা যত করতে চান সংসদে এসে করুন। মাননীয় স্পিকার বিরোধী দলের ব্যাপারে অত্যন্ত উদার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা শেখ হাসিনাও আন্তরিকভাবে চান, বিরোধী দল সংসদে অংশগ্রহণ করুক।
প্রথম আলো আপনারা এসব বলেন বিভিন্ন বক্তৃতায় বা গণমাধ্যমে, জনগণকে শুনিয়ে। বিরোধী দলও আপনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বিভিন্ন বক্তৃতায় বা গণমাধ্যমে, জনগণকে শুনিয়ে। আপনাদের মধ্যে সরাসরি কথা বলায় সমস্যা কোথায়? আপনারা কেন সরাসরি তাঁদের বলেন না সংসদে আসতে?
আব্দুস শহীদ আমি সরকারি দলের পক্ষ থেকে বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপকে সেদিনও বলেছি। আজ, এখনই, আপনাদের সামনেই তাঁকে আবার ফোন করে অধিবেশনে আসতে বলতে পারি।
(বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদে চিফ হুইপের কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎকারের একপর্যায়ে তিনি বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুককে টেলিফোন করে বিরোধী দলকে আসন্ন সংসদ অধিবেশনে যোগ দিতে আহ্বান জানান। তার আধ ঘণ্টা পর তিনি বিরোধীদলীয় চিফ হুইপের কার্যালয়ে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন এবং একই আহ্বান জানান।)
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মশিউল আলম ও তানভীর সোহেল
প্রথম আলো প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের শরিক দলগুলো নবম সংসদের প্রথম অধিবেশনে কয়েক দিন আর পঞ্চম অধিবেশনে মাত্র এক দিন উপস্থিত ছিল। সোমবার ষষ্ঠ অধিবেশন বসতে যাচ্ছে। বিরোধী দলের সেখানে যোগদান সম্পর্কে নিশ্চিত খবর পাওয়া যায়নি। সংসদের বাকিটা মেয়াদ কি এভাবেই, প্রধান বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে, চলবে? জনগণ কিন্তু সংসদে সব দলের অংশগ্রহণ খুবই প্রত্যাশা করে।
আব্দুস শহীদ ধন্যবাদ। আপনাদের যে প্রত্যাশা, সেই একই প্রত্যাশা আমাদেরও। সংসদ নির্বাচনের পরে এক দল সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে, অন্য দল সংখ্যালঘিষ্ঠ। এটাই গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য। নবম জাতীয় সংসদে বিরোধী দল বা চারদলীয় জোটের আসনসংখ্যা যা-ই হোক না কেন, তারা সরকারি দলের সম্পূরক। সরকারি ও বিরোধী উভয় পক্ষে জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিয়েই পূর্ণাঙ্গ সংসদ। জনসাধারণ তাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে, অর্থাৎ তাদের ওপর দায়িত্ব দিয়েছে। সরকার যদি কোনো ধরনের ভুল করে, বিরোধী দল সংসদে সেসব ভুল ধরিয়ে দেবে, সমালোচনা করবে—এই দায়িত্ব জনগণ তাদের দিয়েছে। সংখ্যায় তারা কতজন, সেটা মুখ্য বিষয় নয়।
প্রথম আলো কিন্তু আমরা তো কোনো সংসদের বিরোধী দলকে সেই দায়িত্ব পালন করতে দেখি না। আপনাদের দলও যখন বিরোধী দলে ছিল, তখন কথায় কথায় সংসদ বর্জন করেছে।
আব্দুস শহীদ আমাদের দল সংসদে যোগ দিয়েছে, ওয়াকআউট করেছে, আবার ফিরে এসেছে। কিন্তু নবম জাতীয় সংসদে এ পর্যন্ত বিরোধী দলের নেতা উপস্থিত ছিলেন মাত্র পাঁচ দিন। সংসদ নেতা এবং সংসদে বিরোধী দলের নেতা—এই দুইয়ের সমন্বয়ে সংসদ প্রাণবন্ত হয়, সংসদের সব কর্মকাণ্ডের গ্রহণযোগ্যতার একটা ভিত্তি তৈরি হয়। এটা গণতন্ত্রের পরবর্তী বিকাশের ক্ষেত্রে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এ ক্ষেত্রে আপনাদের যে প্রত্যাশা, জাতির যে প্রত্যাশা; আমাদেরও সেই প্রত্যাশা। কিন্তু বিষয়টি এ পর্যন্ত যে পর্যায়ে এসেছে, সেটার কিছু কারণ আছে। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার স্বৈরতান্ত্রিক শাসন চলেছে, তার ফলে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি, চর্চা-অনুশীলন বারবার ব্যাহত হয়েছে।
প্রথম আলো এখন স্বৈরতন্ত্র নেই। এখন তো সংসদীয় গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুশীলনে কোনো বাধা-বিপত্তি নেই।
আব্দুস শহীদ নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রে ফিরে আসার পর থেকে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুশীলনের ধারাটি ফিরে এসেছে। কিন্তু সেটাকে বিকশিত করা বা পরিশীলনের জন্য উভয় পক্ষের যে আন্তরিক ভূমিকা প্রয়োজন ছিল, তা পালনে কোনো না কোনো পক্ষ ব্যর্থ হচ্ছে।
প্রথম আলো সংসদে সরকারি দলের ভূমিকা বেশি। বিরোধী দল যাতে সংসদে অংশ নেয়, সেই চেষ্টা সরকারি দলের করা উচিত। আপনারা কি তা করেন?
আব্দুস শহীদ আমরা সংসদে তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরও বিরোধী দলের উপস্থিতিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। সে জন্য সংসদে স্বাধীনভাবে কথা বলার যে সুযোগ তাঁদের দেওয়া হয়, অতীতের সঙ্গে তুলনা করলে আপনারা নিজেরাই দেখবেন, সেটা অতীতের চেয়েও বেশি।
প্রথম আলো আপনারা বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের কথা বলেছিলেন, কিন্তু সেটা করেননি...।
আব্দুস শহীদ ভালো প্রশ্ন করেছেন। মনে হয় যে আমরা ডেপুটি স্পিকারের পদটি বিরোধী দলকে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছি। কিন্তু মোটেও তা নয়। সংসদের কার্যপ্রণালি বিধি অনুযায়ী, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের দুই ঘণ্টা আগে নোটিশ করতে হয়। আমরা আধা ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি যে বিরোধী দল ডেপুটি স্পিকার পদের জন্য নোটিশ করবে। কিন্তু তারা যখন তা করেনি, তখন আমরা নোটিশ করেছি।
প্রথম আলো আপনারা কি বিরোধী দলকে নোটিশ করতে বলেছিলেন বা কোনোভাবে জানিয়েছিলেন যে আপনারা তাদের নোটিশ করার জন্য অপেক্ষা করছেন?
আব্দুস শহীদ তাদের নোটিশ করতে আমরা বলতে পারি না। আমরা যখন নোটিশ করেছি, তখন তারা করেনি। তারা যদি নোটিশ করত, নিজেদের প্রার্থী দিত এবং আমরা যদি তাদের প্রার্থীকে ভোট না দিতাম, তাহলে আপনারা বলতে পারতেন যে ডেপুটি স্পিকারের পদটি আমরা বিরোধী দলকে দিইনি। দেখুন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোর সভাপতির পদও আমরা বিরোধীদলীয় সাংসদদের দিয়েছি, এটা আগে কখনো ছিল না।
প্রথম আলো কার্যপ্রণালি বিধিতে যা-ই থাক, আন্তরিকভাবে চাইলে আপনারা নিজেরাই কি ডেপুটি স্পিকার পদে বিরোধী দলের কোনো সাংসদকে নির্বাচিত করতে পারতেন না?
আব্দুস শহীদ না, এটা সাংবিধানিক বিষয়। কার্যপ্রণালি বিধির বাইরে গিয়ে কিছু করার সুযোগ নেই। আন্তরিকভাবে আপনাকে বলি, আওয়ামী লীগের ভাবনা ছিল এ রকম: বিরোধী দল যদি ডেপুটি স্পিকার পদে প্রার্থী দিত, আওয়ামী লীগও নিজেরা প্রার্থী দিত। কিন্তু ভোটাভুটিতে যাওয়ার আগে আওয়ামী লীগ নিজের প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিত। এটাই ছিল আমাদের নেত্রীর ইচ্ছা। কিন্তু সেটা হয়নি। বিরোধী দল আগাগোড়াই সম্পূর্ণ অসহযোগিতার কৌশল নিয়েছে।
প্রথম আলো সোমবারের অধিবেশনে বিরোধী দল যাতে অংশ নেয়, সে জন্য কি আপনাদের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে?
আব্দুস শহীদ আমরা তো সব সময়ই তাঁদের বলে আসছি, আপনারা সংসদে আসুন, আপনাদের যা কিছু বলার আছে সংসদে এসে বলুন। আমাদের সমালোচনা যত করতে চান সংসদে এসে করুন। মাননীয় স্পিকার বিরোধী দলের ব্যাপারে অত্যন্ত উদার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা শেখ হাসিনাও আন্তরিকভাবে চান, বিরোধী দল সংসদে অংশগ্রহণ করুক।
প্রথম আলো আপনারা এসব বলেন বিভিন্ন বক্তৃতায় বা গণমাধ্যমে, জনগণকে শুনিয়ে। বিরোধী দলও আপনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বিভিন্ন বক্তৃতায় বা গণমাধ্যমে, জনগণকে শুনিয়ে। আপনাদের মধ্যে সরাসরি কথা বলায় সমস্যা কোথায়? আপনারা কেন সরাসরি তাঁদের বলেন না সংসদে আসতে?
আব্দুস শহীদ আমি সরকারি দলের পক্ষ থেকে বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপকে সেদিনও বলেছি। আজ, এখনই, আপনাদের সামনেই তাঁকে আবার ফোন করে অধিবেশনে আসতে বলতে পারি।
(বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদে চিফ হুইপের কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎকারের একপর্যায়ে তিনি বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুককে টেলিফোন করে বিরোধী দলকে আসন্ন সংসদ অধিবেশনে যোগ দিতে আহ্বান জানান। তার আধ ঘণ্টা পর তিনি বিরোধীদলীয় চিফ হুইপের কার্যালয়ে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন এবং একই আহ্বান জানান।)
No comments