চারদিক-ভাগাভাগি—ঈদের খুশি by এনামুল করিম
সারা বছর বিপদে ও নানা সংকটে মানুষের পাশে থেকে বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি ট্রাই ফাউন্ডেশন প্রতিবছরের মতো এবারও আয়োজন করেছিল ‘ভাগাভাগি—ঈদের খুশি ২০১০’ কর্মসূচি। ঈদের আনন্দের কিছুটা অংশ সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে—আধা কেজি সেমাই, একটি কনডেন্সড মিল্ক, আধা কেজি চিনি, তিন কেজি চাল ও আধা কেজি ডালের উপহার প্যাকেট—পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা।
এ দেশে অনেক মানুষ ও পরিবার আছে, যাদের কাছে ঈদের আগে এই সামান্য সামগ্রী হয়তো একমাত্র সম্বল। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কমবেশি বিতরণের পাশাপাশি রাজধানীর রাস্তায়, ফুটপাতে রাত কাটানো গৃহহীন মানুষকে গভীর রাতে দেওয়া হয় এই উপহার। এ বছর প্যাকেটপ্রতি খরচ পড়েছে ২৫০-৩০০ টাকা। ট্রাই ফাউন্ডেশন সম্পূর্ণভাবে দেশীয় উৎস—সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থ দিয়ে পরিচালিত সংগঠন। কিছু সমমনা পেশাজীবী ও সেই সঙ্গে বন্ধু-স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীর নিয়মিত জীবনযাপনের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা পূরণের সামান্য চেষ্টা। নিজেদের কিছু কর্মকাণ্ড দিয়ে অন্যদেরও বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে উৎসাহিত করা। প্রাথমিকভাবে স্থাপত্যচর্চার ক্লায়েন্ট এবং তারপর বন্ধু-শুভাকাঙ্ক্ষী, অগ্রজদের সঙ্গে নিয়ে ট্রাই ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু। সাধারণ সময়ে অসহায় মানুষকে সহায়তা করার অনুভূতির পাশাপাশি বিশেষ করে উৎসবের সময় নিজেদের আনন্দটুকুর কিছু অংশ ভাগাভাগি করে নেওয়াই ছিল এর প্রাথমিক মূল উদ্দেশ্য। তারপর এর কার্যক্রম শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, দুর্যোগে-দুর্ঘটনায়-বিপদে পাশে দাঁড়ানোসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তামূলক কাজে ছড়িয়ে যায়। পেশাগত ব্যস্ততার পাশাপাশি সবাই মিলে ভালো কিছু করার চেষ্টা, যা মানুষের কাজে লাগবে। শীতকালে শীতবস্ত্র বিতরণ, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বাসস্থান বা পুনর্বাসনে সহায়তা, দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের ও দুরারোগ্য অসুস্থতায় পাশে দাঁড়ানো, জন্মগতভাবে হূদরোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসাসহ আরও বিভিন্ন ধরনের কাজে ট্রাই ফাউন্ডেশন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা তাঁদের স্বাচ্ছন্দ্যের সামান্য অংশ যদি এগিয়ে দিতে পারেন, কত মানুষ সেটা ভাগাভাগি করে নিতে পারে! অন্তত ঈদ-উৎসব সামনে রেখেও অপেক্ষাকৃত সচ্ছল ব্যক্তিরা যদি এটাকে নৈতিক দায়িত্ব বা ভালো লাগা হিসেবে পালন করেন, তবে অজস্র মুখে হাসির বন্যা বয়ে যেতে পারে। ট্রাই ফাউন্ডেশন প্রতিবছর প্রতীকী কার্যক্রম হিসেবে রাজধানীর বাইরের কার্যক্রমের পাশাপাশি ঈদের আগে বা শীতকালের নববর্ষে গভীর রাতে তরুণ প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার রাস্তায়, বস্তিতে ঘুমিয়ে থাকা মানুষের মধ্যে খাবার কিংবা কম্বল বিতরণ করে আসছে। এই শুভকামনা ও ভাগাভাগির ইচ্ছাগুলো যেন ছড়িয়ে পড়ে দেশময় সচেতন মানুষের মধ্যে।
এ দেশে ধনী-দরিদ্রের মাঝখানে বিশাল পার্থক্যের মাপ কমবেশি সবারই জানা। রয়েছে বিশাল সচেতন-সহূদয় জনগোষ্ঠী। প্রয়োজন দিকনির্দেশনা, কার্যক্রম, উদ্যোগী মানুষ এবং সংগঠনের বিশ্বাসের ভিত ও কর্মকাণ্ডের স্বচ্ছতা। আমরা যে যার কাজ করি, উপার্জন করি, সচ্ছলতা উপভোগ করি। হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও যার যার অবস্থান থেকে যদি একটু মানবতাবাদী কর্মকাণ্ডে এগিয়ে আসি, সেটা খুব কঠিন বিষয় নয়। অবশ্যই সচ্ছলতা, স্বাচ্ছন্দ্য ও বিলাসিতা উপভোগ করব, কিন্তু তার সামান্য ভাগ অন্যদের বিলিয়ে দেব, এই মানসিকতা অধিকাংশ মানুষের ভেতরেই হয়তো আছে, অনেকে উপায় খুঁজে পায় না। কীভাবে দেব? কোথায় দেব? ঠিকমতো মানুষের হাতে পৌঁছাবে কি না—এটাই অনেক বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়। এ জন্য দরকার বিভিন্ন উদ্যোগ। নানা পেশাজীবী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একযোগে অন্তত এসব উৎসবের সময় এগিয়ে এলে অসংখ্য মানুষ উপকৃত হতে পারে।
অসংখ্য মানুষ অভিজাত শপিং মল থেকে ঈদের কেনাকাটা করে, একটা পর্যায়ে যদি ভাবে, থাক আর না, অনেক হয়েছে, যেটুকু বাকি আছে, তা থেকে চলো ভাগাভাগি করি বঞ্চিত মানুষের সঙ্গে। ঈদে টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন এমন দুজন জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রী মনে করলেন, এবার ঈদে কাজের পাশাপাশি সহকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করি। বিনোদনের সঙ্গে এই ঈদ-উৎসব সামনে রেখে মানুষের জন্য কিছু করি। আমরা ডাকলে সবাই সাড়া দেবে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ডাকলেন ছাত্রছাত্রীদের, এসো, তোমরা চলো, একসঙ্গে কিছু করি। শপিং মলের দোকানমালিকেরা একজোট হয়ে লটারি পুরস্কারের পাশে ব্যানার ঝুলিয়ে দিলেন, চলুন, আমাদের আনন্দের খানিক অংশ ভাগাভাগি করি বঞ্চিত মানুষের সঙ্গে। অভিজাত এলাকার কোটিপতিরা জাকাতের প্রকৃত পরিমাণ অর্থ দিতে তৎপর হয়ে ভাবলেন, আয়কর দিতে পারি না আসল অঙ্কে, তাই বলে ধর্মকে তো আর ফাঁকি দেওয়া যাবে না। জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা এককাতারে দাঁড়িয়ে বললেন, আপনারা সবাই খুশি ছড়িয়ে দিলে সেটা আমাদের নতুন করে শক্তি জোগাবে। এসব অসংখ্য আহ্বান জানালে নিশ্চয়ই দলে দলে মানুষ সাড়া দেবে। কারণ, সবার ভেতরেই কমবেশি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ এবং সমাজ দেখার স্বপ্ন কাজ করে। কাজ-ব্যস্ততা থাকবে, ঝামেলা থাকবে, এর মধ্যেই সামান্য কিছুটা সময় বের করে সবারটা জোড়া লাগাতে পারলে অনেক সময়, অনেক শক্তি।
সবাই ভালো থাকবেন।
যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা তাঁদের স্বাচ্ছন্দ্যের সামান্য অংশ যদি এগিয়ে দিতে পারেন, কত মানুষ সেটা ভাগাভাগি করে নিতে পারে! অন্তত ঈদ-উৎসব সামনে রেখেও অপেক্ষাকৃত সচ্ছল ব্যক্তিরা যদি এটাকে নৈতিক দায়িত্ব বা ভালো লাগা হিসেবে পালন করেন, তবে অজস্র মুখে হাসির বন্যা বয়ে যেতে পারে। ট্রাই ফাউন্ডেশন প্রতিবছর প্রতীকী কার্যক্রম হিসেবে রাজধানীর বাইরের কার্যক্রমের পাশাপাশি ঈদের আগে বা শীতকালের নববর্ষে গভীর রাতে তরুণ প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার রাস্তায়, বস্তিতে ঘুমিয়ে থাকা মানুষের মধ্যে খাবার কিংবা কম্বল বিতরণ করে আসছে। এই শুভকামনা ও ভাগাভাগির ইচ্ছাগুলো যেন ছড়িয়ে পড়ে দেশময় সচেতন মানুষের মধ্যে।
এ দেশে ধনী-দরিদ্রের মাঝখানে বিশাল পার্থক্যের মাপ কমবেশি সবারই জানা। রয়েছে বিশাল সচেতন-সহূদয় জনগোষ্ঠী। প্রয়োজন দিকনির্দেশনা, কার্যক্রম, উদ্যোগী মানুষ এবং সংগঠনের বিশ্বাসের ভিত ও কর্মকাণ্ডের স্বচ্ছতা। আমরা যে যার কাজ করি, উপার্জন করি, সচ্ছলতা উপভোগ করি। হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও যার যার অবস্থান থেকে যদি একটু মানবতাবাদী কর্মকাণ্ডে এগিয়ে আসি, সেটা খুব কঠিন বিষয় নয়। অবশ্যই সচ্ছলতা, স্বাচ্ছন্দ্য ও বিলাসিতা উপভোগ করব, কিন্তু তার সামান্য ভাগ অন্যদের বিলিয়ে দেব, এই মানসিকতা অধিকাংশ মানুষের ভেতরেই হয়তো আছে, অনেকে উপায় খুঁজে পায় না। কীভাবে দেব? কোথায় দেব? ঠিকমতো মানুষের হাতে পৌঁছাবে কি না—এটাই অনেক বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়। এ জন্য দরকার বিভিন্ন উদ্যোগ। নানা পেশাজীবী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একযোগে অন্তত এসব উৎসবের সময় এগিয়ে এলে অসংখ্য মানুষ উপকৃত হতে পারে।
অসংখ্য মানুষ অভিজাত শপিং মল থেকে ঈদের কেনাকাটা করে, একটা পর্যায়ে যদি ভাবে, থাক আর না, অনেক হয়েছে, যেটুকু বাকি আছে, তা থেকে চলো ভাগাভাগি করি বঞ্চিত মানুষের সঙ্গে। ঈদে টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন এমন দুজন জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রী মনে করলেন, এবার ঈদে কাজের পাশাপাশি সহকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করি। বিনোদনের সঙ্গে এই ঈদ-উৎসব সামনে রেখে মানুষের জন্য কিছু করি। আমরা ডাকলে সবাই সাড়া দেবে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ডাকলেন ছাত্রছাত্রীদের, এসো, তোমরা চলো, একসঙ্গে কিছু করি। শপিং মলের দোকানমালিকেরা একজোট হয়ে লটারি পুরস্কারের পাশে ব্যানার ঝুলিয়ে দিলেন, চলুন, আমাদের আনন্দের খানিক অংশ ভাগাভাগি করি বঞ্চিত মানুষের সঙ্গে। অভিজাত এলাকার কোটিপতিরা জাকাতের প্রকৃত পরিমাণ অর্থ দিতে তৎপর হয়ে ভাবলেন, আয়কর দিতে পারি না আসল অঙ্কে, তাই বলে ধর্মকে তো আর ফাঁকি দেওয়া যাবে না। জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা এককাতারে দাঁড়িয়ে বললেন, আপনারা সবাই খুশি ছড়িয়ে দিলে সেটা আমাদের নতুন করে শক্তি জোগাবে। এসব অসংখ্য আহ্বান জানালে নিশ্চয়ই দলে দলে মানুষ সাড়া দেবে। কারণ, সবার ভেতরেই কমবেশি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ এবং সমাজ দেখার স্বপ্ন কাজ করে। কাজ-ব্যস্ততা থাকবে, ঝামেলা থাকবে, এর মধ্যেই সামান্য কিছুটা সময় বের করে সবারটা জোড়া লাগাতে পারলে অনেক সময়, অনেক শক্তি।
সবাই ভালো থাকবেন।
No comments