চরাচর-শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস by বিশ্বজিৎ পাল বাবু
আজকের শিশুই আগামীর কর্ণধার। শিশুরা একটি সমাজ, পরিবার ও দেশ-জাতির মহামূল্যবান সম্পদ। তাদের হাতেই দেশের সমৃদ্ধি নির্ভরশীল। শিশুদের সুশিক্ষা দিয়ে দেশের ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধিকে নিশ্চিত করা সম্ভব; কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমাদের দেশে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশুই তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়।
১০ থেকে ১৪ বছরের মধ্যেই তাদের যুক্ত হতে হয় কঠিন শ্রমের সঙ্গে। পারিবারিক অসচ্ছলতা তাদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নামাতে বাধ্য করে, যা শিশুর মানসিক ও দৈহিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে বিরত রাখতে বিশ্বসমাজ এখন ঐক্যবদ্ধ।
আজ বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) উদ্যোগে ২০০২ সালের ১২ জুন প্রথম দিবসটি পালিত হয়। এ সময় আইএলও ঘোষণা করে প্রতিবছর ১২ জুন বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হবে। সেই থেকে বাংলাদেশেও প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়। লক্ষ্য ২০১৬ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন করা।
কেমন আছে বাংলাদেশের শিশুরা? কতটা ঝুঁকিতে জীবন বাঁচিয়ে রাখছে তারা। কিই-বা তাদের ভবিষ্যৎ। এসব প্রশ্নের উত্তর নেই অনেকের কাছেই। তবে পরিসংখ্যান ব্যুরো ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের এক জরিপে দেখা যায় শিশুশ্রমের ভয়াবহ চিত্র। বাংলাদেশে মোট চার কোটি ২৩ লাখ ৬৭ হাজার শিশুশ্রমিক রয়েছে। এর মধ্যে ১৭.৫ শতাংশ অর্থাৎ ৭৪ লাখ ২৩ হাজার কর্মজীবী শিশু। ছেলের সংখ্যা ৫৪ লাখ ৭১ হাজার এবং মেয়ের সংখ্যা ১৯ লাখ ৫২ হাজার। এর মধ্যে ৩২ লাখ শিশুশ্রমিক ও ১৩ লাখ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। বিশ্ব খ্যাদ্য সংস্থার এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৭ শতাংশ শিশু শ্রম দিচ্ছে কেবল খাদ্যের বিনিময়ে এবং এ জন্য তাদের পারিশ্রমিকও দেওয়া হচ্ছে না। ২৩.৭ শতাংশ শিশুকে মজুরি দেওয়া হয়, যার পরিমাণ খুবই নগণ্য।
বাংলাদেশে অভাবের তাড়নায় শিশুরা রাস্তায় ইট-পাথর ভাঙে, গার্মেন্টে চাকরি করে, ঠেলাগাড়ি চালায়, কাগজ কুড়ায়, পার্কে ফুলের মালা বিক্রি করে। এরা ভালোভাবে বেড়ে ওঠার কোনো স্বপ্ন দেখে না। কোনোমতে খেয়ে-পরে বাঁচতে পারলেই খুশি। আইএলওর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের শিশুশ্রমিকরা প্রায় ৩৪৮ ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে ৪৭ ধরনের কাজকে ঝুঁকিপূর্ণ ও ১৩ ধরনের কাজকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অনেক শিশু ঝালাই কারখানা, ঢালাই কারখানা, রি-রোলিং মিলে লোহা গলানোর কাজে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ২০০৯-১০ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রাজধানীতে পাঁচ শতাধিক শিশু রয়েছে, যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সরাসরি জড়িত। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ সব ধরনের অপকর্মে তারা লিপ্ত। মাদক বেচাকেনায় জড়িয়ে পড়ছে শিশুরা। ছোট অস্ত্র বহনের কাজেও শিশুদের ব্যবহার বেড়ে গেছে। অনেক শিশুই হয়ে উঠেছে মাদকসেবী।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে হয়তো শিশুশ্রম পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। কেননা অনেক শিশুর বেঁচে থাকার পূর্বশর্ত হচ্ছে শ্রম বিনিয়োগ করা। তার পারিবারিক অসচ্ছলতা তাকে বাধ্য হয়ে শ্রমিক করে তোলে। আসুন, শিশুশ্রম প্রতিরোধ করি, অন্তত শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমের বিপক্ষে দাঁড়াই।
বিশ্বজিৎ পাল বাবু
আজ বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) উদ্যোগে ২০০২ সালের ১২ জুন প্রথম দিবসটি পালিত হয়। এ সময় আইএলও ঘোষণা করে প্রতিবছর ১২ জুন বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হবে। সেই থেকে বাংলাদেশেও প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়। লক্ষ্য ২০১৬ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন করা।
কেমন আছে বাংলাদেশের শিশুরা? কতটা ঝুঁকিতে জীবন বাঁচিয়ে রাখছে তারা। কিই-বা তাদের ভবিষ্যৎ। এসব প্রশ্নের উত্তর নেই অনেকের কাছেই। তবে পরিসংখ্যান ব্যুরো ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের এক জরিপে দেখা যায় শিশুশ্রমের ভয়াবহ চিত্র। বাংলাদেশে মোট চার কোটি ২৩ লাখ ৬৭ হাজার শিশুশ্রমিক রয়েছে। এর মধ্যে ১৭.৫ শতাংশ অর্থাৎ ৭৪ লাখ ২৩ হাজার কর্মজীবী শিশু। ছেলের সংখ্যা ৫৪ লাখ ৭১ হাজার এবং মেয়ের সংখ্যা ১৯ লাখ ৫২ হাজার। এর মধ্যে ৩২ লাখ শিশুশ্রমিক ও ১৩ লাখ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। বিশ্ব খ্যাদ্য সংস্থার এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৭ শতাংশ শিশু শ্রম দিচ্ছে কেবল খাদ্যের বিনিময়ে এবং এ জন্য তাদের পারিশ্রমিকও দেওয়া হচ্ছে না। ২৩.৭ শতাংশ শিশুকে মজুরি দেওয়া হয়, যার পরিমাণ খুবই নগণ্য।
বাংলাদেশে অভাবের তাড়নায় শিশুরা রাস্তায় ইট-পাথর ভাঙে, গার্মেন্টে চাকরি করে, ঠেলাগাড়ি চালায়, কাগজ কুড়ায়, পার্কে ফুলের মালা বিক্রি করে। এরা ভালোভাবে বেড়ে ওঠার কোনো স্বপ্ন দেখে না। কোনোমতে খেয়ে-পরে বাঁচতে পারলেই খুশি। আইএলওর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের শিশুশ্রমিকরা প্রায় ৩৪৮ ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে ৪৭ ধরনের কাজকে ঝুঁকিপূর্ণ ও ১৩ ধরনের কাজকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অনেক শিশু ঝালাই কারখানা, ঢালাই কারখানা, রি-রোলিং মিলে লোহা গলানোর কাজে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ২০০৯-১০ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রাজধানীতে পাঁচ শতাধিক শিশু রয়েছে, যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সরাসরি জড়িত। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ সব ধরনের অপকর্মে তারা লিপ্ত। মাদক বেচাকেনায় জড়িয়ে পড়ছে শিশুরা। ছোট অস্ত্র বহনের কাজেও শিশুদের ব্যবহার বেড়ে গেছে। অনেক শিশুই হয়ে উঠেছে মাদকসেবী।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে হয়তো শিশুশ্রম পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। কেননা অনেক শিশুর বেঁচে থাকার পূর্বশর্ত হচ্ছে শ্রম বিনিয়োগ করা। তার পারিবারিক অসচ্ছলতা তাকে বাধ্য হয়ে শ্রমিক করে তোলে। আসুন, শিশুশ্রম প্রতিরোধ করি, অন্তত শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমের বিপক্ষে দাঁড়াই।
বিশ্বজিৎ পাল বাবু
No comments