ভয়ংকর আসামির জামিন

অভিযোগ গুরুতর, ধর্ষণ শেষে একটি মেয়েকে টুকরো টুকরো করে কেটে বস্তায় ভরে ফেলে দেওয়া! মামলা হয়েছে ধর্ষিতা বিউটিকে হত্যার অভিযোগে। সংগত কারণেই প্রত্যাশা ছিল, এই অভিযুক্তর বিচার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার আগে আসামি ছাড়া পাবে না। কিন্তু প্রত্যাশার বাইরেই ঘটনা ঘটল।


উচ্চ আদালত থেকে এই আসামি জামিন পেয়ে যায়। আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন তদন্ত প্রতিবেদন এবং কেঁৗসুলিদের উপস্থাপিত যুক্তির নিরিখে। সে ক্ষেত্রে আদালতের এমন নির্দেশ প্রদানের পেছনে আইনি যৌক্তিকতা আছে বিধায় তা কার্যকর হয়েছে। কিন্তু সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে আরেকটি অস্বাভাবিক ঘটনার কথা। বলা হয়েছে, আসামিপক্ষের কেঁৗসুলি আদালতে ভুল তথ্য দিয়ে আসামিকে ছাড়িয়ে আনতে সাহায্য করেছেন। সংবাদের আলোকে তাই বলা যায়, আসামিকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য তাঁর কেঁৗসুলি অশুভ পথ বেছে নিয়েছেন। আর এ থেকে নতুন করে ভাবনার বিষয় হলো, একজন আইনজীবী তাঁর মক্কেলকে জামিন পাইয়ে দেওয়ার জন্য কী কী কাজ করতে পারেন। আইনজীবী কি অসীম স্বাধীনতা পাবেন নিজের মক্কেলের পক্ষে রায় নেওয়ার জন্য? আইনের ফাঁকে অনেক জঘন্য অপরাধের আসামিও মুক্তি পেয়ে যায়। এসব ঘটনার পেছনে বেশির ভাগ সময়ই তদন্ত প্রতিবেদনের দুর্বলতা কিংবা অস্বচ্ছতা থাকে। তখন আদালত আইন অনুযায়ী কাজ না করে পারেন না। সে ক্ষেত্রে 'আদালত অন্ধ' বলে যে প্রবাদ আছে, তা-ই কার্যকর হয়। কিন্তু আদালতকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করা কোনো আইনজীবীর কাজ হতে পারে না। তদন্ত সাপেক্ষে এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আদালতকে শুধু ভুল তথ্য দেওয়াই নয়, আদালতকে বিলম্বিত করার পেছনেও বিবাদীপক্ষের আইনজীবী অস্বাভাবিক কৌশল হিসেবে আদালতের কাছ থেকে বারবার সময় চেয়ে নিয়েছেন। এই অভিযোগ করেছেন স্পেশাল পিপি। এসব ক্ষেত্রে আমরা আইনজীবীদের কাছ থেকে নৈতিকতাও প্রত্যাশা করি।
অভিযুক্ত ব্যক্তি আদৌ মুক্তি পাবে, নাকি সাজা ভোগ করবে_এটা নির্ধারিত হবে আদালতের চূড়ান্ত রায়ের পর। তাই রায় বিষয়ে কথা বলার আগে সামাজিক প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে। কারণ জঘন্য খুনের আসামি যদি আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায়, তাহলে সুবিচার পাওয়ার ব্যাপারে জনমনে আস্থার সংকট তৈরি হবে।

No comments

Powered by Blogger.