শিক্ষার্থী নির্যাতন-শিক্ষকসুলভ নয়
উচ্চতর আদালতের নির্দেশনা এবং সংশ্লিষ্ট দুটি মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জারিসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার পরও শিক্ষার্থী, বিশেষ করে শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর শিক্ষকদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন বন্ধ হয়নি। মঙ্গলবার সমকালের লোকালয় পাতায় 'আশুগঞ্জে শিক্ষকের বেত্রাঘাতে ১৫ ছাত্র আহত : ক্লাস বর্জন' শিরোনামের সংবাদটি
শিক্ষায়তনগুলোতে শিক্ষার্থী নির্যাতন অব্যাহত থাকার খণ্ডচিত্র মাত্র। এভাবে প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিক নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। নির্যাতনের শিকার অনেক শিক্ষার্থী, বিশেষ করে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্থায়ী মানসিক চাপের মধ্যে পড়ে যায়। যার পরিণতিতে ওই শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে কারণে আধুনিক বিশ্বে এ ধরনের নির্যাতনকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে দায়ী শিক্ষকদের শাস্তি দেওয়ার বিধানও করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সামাজিক ও নাগরিক সচেতনতা এবং শাস্তির বিধান কার্যকর থাকায় উন্নত বিশ্বে সাধারণত শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থী নির্যাতনের হার উন্নয়নশীল ও অনুন্নত বিশ্বের তুলনায় অনেক কম। এটা ঠিক যে, আইন করে শিক্ষার্থীদের ওপর শিক্ষকদের নির্যাতন পুরোপুরি রোধ করা যাবে না। এ ব্যাপারে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলা জরুরি। মানবাধিকার ও শিশু অধিকার বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা এবং এ বিষয়টি শিক্ষকের মান নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা দরকার। সমাজ ও আইন একসঙ্গে ক্রিয়া করলে শিক্ষকরা শিক্ষার্থী নির্যাতনের কৌশল ত্যাগ করে সমমর্যাদার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীকে পাঠদানে অধিক উৎসাহী হবেন। তবে শিক্ষার্থী নির্যাতনের মাত্রা হ্রাস করার জন্য এ ব্যাপারে আদালতের নির্দেশনা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনগুলো যাতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তামিল করে তার ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। আশুগঞ্জের ঘটনাটির ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিলে এ ধরনের ঘটনা কমে আসবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ওপর শিক্ষকদের নির্যাতন পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে একই সঙ্গে শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্ক উন্নয়ন ও সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি জরুরি।
No comments