তিনটি বাঘের বাচ্চা উদ্ধার
সুন্দরবনের ২০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছিল তাদের বাড়ি। সেখান থেকে তুলে এনে তাদের রাখা হয়েছিল তিন ফুট বাই চার ফুট আয়তনের একটি খাঁচায়। তারা তিন বাঘের বাচ্চা, বেঙ্গল টাইগারের ছানা। গতকাল তাদের উদ্ধার করা হয়েছে রাজধানীর শ্যামলীর একটি বাড়ি থেকে।
সংঘবদ্ধ চক্র পাচারের জন্য বাঘের বাচ্চাগুলো সুন্দরবন থেকে ধরে এনেছে বলে র্যাবের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে।
পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে জাকির হোসেন ও তাঁর মা জাহানারা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-২-এর কর্মকর্তারা। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা এই দুজনকে দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। তবে মূল পাচারকারী জাহানারা বেগমের স্বামী আবদুল কাদের ও তাঁর ছেলে মাসুদ রানাকে ধরা যায়নি, তাঁরা পলাতক।
ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ সায়েন্সের ছাত্র গ্রেপ্তার হওয়া জাকির (১৯) জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, ১৫ দিন আগে বাঘের বাচ্চা তিনটি আনা হয়েছে বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক তপন কুমার দের জন্য। সাতক্ষীরার সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকার জেলেদের কাছ থেকে এগুলো আনা হয়। বন বিভাগের এই শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে বাচ্চা তিনটি কিনবেন—এমন আশ্বাসও দিয়েছেন।
জাকির জানান, তাঁর বাবা আবদুল কাদের ২০ বছর ধরে বন্য প্রাণী ও পাখির ব্যবসায় যুক্ত আছেন। ২০০২ সালে রাজধানীর কাঁটাবন এলাকায় একটি চিতা বাঘসহ তিনি গ্রেপ্তার হন। দেড় মাস জেল খেটে বের হয়ে আবার এ পেশায় ফিরে যান। তিনি বলেন, সুন্দরবনসহ দেশের বেশির ভাগ বনে তাঁদের বন্য প্রাণী ধরার লোক বা পোচার আছে। তারা প্রাণীগুলো ধরে কাদেরকে খবর দিলে তিনি গিয়ে বাসে করে ঢাকায় নিয়ে আসেন।
২০০২ সালে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক স্থাপনের সময় কাদের বন সংরক্ষক তপন দের কাছে ঘড়িয়াল, হরিণ, কুমির, শজারুসহ বিভিন্ন প্রাণী বিক্রি করেছেন বলে দাবি করেন জাকির। গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে সরবরাহের কথা বলে তপন দে তাঁদের তিনটি বাঘের বাচ্চা এনে দিতে বলেন। তপন দে ও তাঁর ভাগনে পরিচয়দানকারী তাপস এসে বাচ্চাগুলো দেখেও গেছেন।
তপন কুমার দের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘অপরাধীরা নিজেরা বাঁচার জন্য আমার নাম ব্যবহার করছে। বন্য প্রাণী রক্ষায় আমি কাজ করি, আর আমাকে বন্য প্রাণী পাচারকারী বানানোর চেষ্টা চলছে।’
প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুস আলী এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তপন দে যদি এই বাঘ পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকেন এবং তা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক মনিরুল খান বাঘের বাচ্চা উদ্ধারের বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো মা-বাঘকে না মেরে তার কোনো বাচ্চাকে ধরে আনা খুব কঠিন। শক্তিশালী কোনো চক্র এবং তাদের পেছনে প্রভাবশালী মহল ছাড়া সুন্দরবন থেকে জীবন্ত বাঘ ধরে গাড়িতে করে এনে ঢাকায় ১৫ দিন রাখতে পারার কথা নয়। বিশ্বজুড়ে বিপন্নপ্রায় এই প্রাণী এভাবে পাচার হওয়া বিপর্যয়কর। সরকারকে অবশ্যই বিষয়টি যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে।’
গতকাল বেলা ১১টায় শ্যামলী ২ নম্বর সড়কের ১৩/১২ নম্বর বাসার নিচতলার ফ্ল্যাটে র্যাব-২-এর উপ-অধিনায়ক সাইফুল করিম ও মেজর সৈয়দ আশিকুর রহমান এবং জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান অভিযানে যান। আবদুল কাদেরের বাসায় একটি কক্ষে প্রায় ২০টি খাঁচা রাখা। তার একটি থেকে বাঘের বাচ্চাগুলো উদ্ধার করা হয়।
গতকাল বিকেল পর্যন্ত বন বিভাগ বা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ কেউই তিন মাস বয়সী এই বাঘের বাচ্চাগুলোর দায়িত্ব নিতে রাজি হয়নি। বন বিভাগ থেকে বাচ্চাগুলোকে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ রোগ-জীবাণু আছে কি না বা শারীরিকভাবে বাঘগুলো সুস্থ আছে কি না, সেই পরীক্ষা ছাড়া কোনো বন্য প্রাণী নেয় না বলে জানিয়ে দিয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় বাঘের বাচ্চাগুলো হাতিরপুলে একটি ব্যক্তিগত ছোট চিড়িয়াখানায় রাখা হয়েছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।
পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে জাকির হোসেন ও তাঁর মা জাহানারা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-২-এর কর্মকর্তারা। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা এই দুজনকে দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। তবে মূল পাচারকারী জাহানারা বেগমের স্বামী আবদুল কাদের ও তাঁর ছেলে মাসুদ রানাকে ধরা যায়নি, তাঁরা পলাতক।
ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ সায়েন্সের ছাত্র গ্রেপ্তার হওয়া জাকির (১৯) জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, ১৫ দিন আগে বাঘের বাচ্চা তিনটি আনা হয়েছে বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক তপন কুমার দের জন্য। সাতক্ষীরার সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকার জেলেদের কাছ থেকে এগুলো আনা হয়। বন বিভাগের এই শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে বাচ্চা তিনটি কিনবেন—এমন আশ্বাসও দিয়েছেন।
জাকির জানান, তাঁর বাবা আবদুল কাদের ২০ বছর ধরে বন্য প্রাণী ও পাখির ব্যবসায় যুক্ত আছেন। ২০০২ সালে রাজধানীর কাঁটাবন এলাকায় একটি চিতা বাঘসহ তিনি গ্রেপ্তার হন। দেড় মাস জেল খেটে বের হয়ে আবার এ পেশায় ফিরে যান। তিনি বলেন, সুন্দরবনসহ দেশের বেশির ভাগ বনে তাঁদের বন্য প্রাণী ধরার লোক বা পোচার আছে। তারা প্রাণীগুলো ধরে কাদেরকে খবর দিলে তিনি গিয়ে বাসে করে ঢাকায় নিয়ে আসেন।
২০০২ সালে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক স্থাপনের সময় কাদের বন সংরক্ষক তপন দের কাছে ঘড়িয়াল, হরিণ, কুমির, শজারুসহ বিভিন্ন প্রাণী বিক্রি করেছেন বলে দাবি করেন জাকির। গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে সরবরাহের কথা বলে তপন দে তাঁদের তিনটি বাঘের বাচ্চা এনে দিতে বলেন। তপন দে ও তাঁর ভাগনে পরিচয়দানকারী তাপস এসে বাচ্চাগুলো দেখেও গেছেন।
তপন কুমার দের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘অপরাধীরা নিজেরা বাঁচার জন্য আমার নাম ব্যবহার করছে। বন্য প্রাণী রক্ষায় আমি কাজ করি, আর আমাকে বন্য প্রাণী পাচারকারী বানানোর চেষ্টা চলছে।’
প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুস আলী এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তপন দে যদি এই বাঘ পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকেন এবং তা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক মনিরুল খান বাঘের বাচ্চা উদ্ধারের বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো মা-বাঘকে না মেরে তার কোনো বাচ্চাকে ধরে আনা খুব কঠিন। শক্তিশালী কোনো চক্র এবং তাদের পেছনে প্রভাবশালী মহল ছাড়া সুন্দরবন থেকে জীবন্ত বাঘ ধরে গাড়িতে করে এনে ঢাকায় ১৫ দিন রাখতে পারার কথা নয়। বিশ্বজুড়ে বিপন্নপ্রায় এই প্রাণী এভাবে পাচার হওয়া বিপর্যয়কর। সরকারকে অবশ্যই বিষয়টি যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে।’
গতকাল বেলা ১১টায় শ্যামলী ২ নম্বর সড়কের ১৩/১২ নম্বর বাসার নিচতলার ফ্ল্যাটে র্যাব-২-এর উপ-অধিনায়ক সাইফুল করিম ও মেজর সৈয়দ আশিকুর রহমান এবং জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান অভিযানে যান। আবদুল কাদেরের বাসায় একটি কক্ষে প্রায় ২০টি খাঁচা রাখা। তার একটি থেকে বাঘের বাচ্চাগুলো উদ্ধার করা হয়।
গতকাল বিকেল পর্যন্ত বন বিভাগ বা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ কেউই তিন মাস বয়সী এই বাঘের বাচ্চাগুলোর দায়িত্ব নিতে রাজি হয়নি। বন বিভাগ থেকে বাচ্চাগুলোকে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ রোগ-জীবাণু আছে কি না বা শারীরিকভাবে বাঘগুলো সুস্থ আছে কি না, সেই পরীক্ষা ছাড়া কোনো বন্য প্রাণী নেয় না বলে জানিয়ে দিয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় বাঘের বাচ্চাগুলো হাতিরপুলে একটি ব্যক্তিগত ছোট চিড়িয়াখানায় রাখা হয়েছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।
No comments