চরাচর-ক্রিকেটের আদি পিতা by আরাফাত শাহরিয়ার
জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ তাঁর এক লেখায় ডাংগুলিকে বলেছেন 'ক্রিকেটের আদি পিতা'। কেন বলেছেন তা খেলাটির নিয়মকানুন ব্যাখ্যা করলেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তাঁর মতে, ভারতবর্ষের ডাংগুলি খেলা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ব্রিটিশরা ক্রিকেট খেলা শুরু করে- এমন মনে হওয়া মোটেই বিচিত্র নয়।
বাংলাদেশের অতি প্রাচীন খেলার একটি এই ডাংগুলি। এ সময়কার তুমুল জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেটের সঙ্গে এর অনেক মিল। ক্রিকেটের ব্যাট ও বলের মতো ডাংগুলিতে আছে 'ডাণ্ডা' ও 'গুলি'। আরো মজার ব্যাপার, এখানেও ক্যাচ ধরা বা ডাণ্ডায় আঘাত করে আউট করার নিয়ম আছে। দুই থেকে পাঁচ-ছয়জন করে দুই দলে ভাগ হয়ে খেলতে পারে। খেলার উপকরণ প্রায় দেড় হাত লম্বা একটি লাঠি, একে বলে ডাণ্ডা। আরো লাগে এক বিঘাত পরিমাণ বা তিন-চার ইঞ্চি সমান একটি শক্ত কাঠি, যা 'গুলি', 'ফুলুক' বা 'ফুত্তি' নামে পরিচিত।
খোলা মাঠে একটি ছোট্ট গর্ত করা হয় খেলার শুরুতেই। প্রথম দান পাওয়া দলের একজন খেলোয়াড় গর্তের ওপর ছোট কাঠিটি রেখে বড় লাঠির আগা দিয়ে সেটিকে যতদূর সম্ভব দূরে ছুড়ে মারে। মাঠের চারদিকে 'ফিল্ডিংয়ে' থাকা প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা সেটিকে লুফে নেওয়ার চেষ্টা করে। ধরতে পারলেই 'আউট'। অন্যথায় খেলোয়াড় বড় লাঠিটিকে আড়াআড়িভাবে রাখে। ছোট কাঠিটি যে জায়গায় পড়েছে সেখান থেকে গর্তের দিকে ছুড়ে মারে প্রতিপক্ষ। ছোট কাঠিটি বড় লাঠিটিতে লাগলেই আউট। তা না হলে প্রথম খেলোয়াড় পড়ে থাকা কাঠির কাছে গিয়ে বড় লাঠি দিয়ে বিশেষ কায়দায় আঘাত করে সেটিকে শূন্যে তোলে। শূন্যে থাকা অবস্থায় সেটিকে দূরে পাঠায় বড় লাঠি দিয়ে আঘাত করে।
আগের মতোই প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়রা সেটা ক্যাচ ধরে আউট করার চেষ্টা করে। আউট না হলে প্রথম খেলোয়াড় বড় লাঠিটি আড়াআড়িভাবে রাখে গর্তের ওপর। দূর থেকে অন্যপক্ষ কাঠিটি ছুড়ে যদি বড় লাঠিকে আঘাত করতে পারে, তাহলেও মূল খেলোয়াড় আউট।
দ্বিতীয় দফায় যেখানে পড়ল ছোট কাঠিটি, সেখান থেকে গর্তের দূরত্ব মাপা হয় লম্বা লাঠি দিয়ে। দূরত্বের পরিমাপ অনুসারে এই গোনাগুনতির আছে হরেক নাম- মুনা, ধুনা, তিনা, চারা, পাঁচা, ছৈ, গৈ। খেলা শেষে চূড়ান্ত হিসাব-নিকাশের ওপরই নির্ধারিত হয় খেলার জয়-পরাজয়।
ক্রিকেটের সঙ্গে এ খেলার অমিল, এখানে কোনো বোলার নেই। আউট না হওয়া পর্যন্ত একজন খেলোয়াড় খেলতে পারে। আউট হলে দ্বিতীয় খেলোয়াড় খেলা শুরু করে। এভাবে দলের সবাই আউট হলে বিপক্ষ দল দান পেয়ে খেলা শুরু করে।
ডাংগুলিকে ক্রিকেটের গ্রাম্য সংস্করণও বলা যেতে পারে। অঞ্চলভেদে এ খেলা 'ডাংবাড়ি', 'গুটবাড়ি', 'ট্যামডাং', 'ভ্যাটাডাণ্ডা' ইত্যাদি নামে পরিচিত। তবে ডাংগুলি নামেই এটি বেশি পরিচিত।
আরাফাত শাহরিয়ার
খোলা মাঠে একটি ছোট্ট গর্ত করা হয় খেলার শুরুতেই। প্রথম দান পাওয়া দলের একজন খেলোয়াড় গর্তের ওপর ছোট কাঠিটি রেখে বড় লাঠির আগা দিয়ে সেটিকে যতদূর সম্ভব দূরে ছুড়ে মারে। মাঠের চারদিকে 'ফিল্ডিংয়ে' থাকা প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা সেটিকে লুফে নেওয়ার চেষ্টা করে। ধরতে পারলেই 'আউট'। অন্যথায় খেলোয়াড় বড় লাঠিটিকে আড়াআড়িভাবে রাখে। ছোট কাঠিটি যে জায়গায় পড়েছে সেখান থেকে গর্তের দিকে ছুড়ে মারে প্রতিপক্ষ। ছোট কাঠিটি বড় লাঠিটিতে লাগলেই আউট। তা না হলে প্রথম খেলোয়াড় পড়ে থাকা কাঠির কাছে গিয়ে বড় লাঠি দিয়ে বিশেষ কায়দায় আঘাত করে সেটিকে শূন্যে তোলে। শূন্যে থাকা অবস্থায় সেটিকে দূরে পাঠায় বড় লাঠি দিয়ে আঘাত করে।
আগের মতোই প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়রা সেটা ক্যাচ ধরে আউট করার চেষ্টা করে। আউট না হলে প্রথম খেলোয়াড় বড় লাঠিটি আড়াআড়িভাবে রাখে গর্তের ওপর। দূর থেকে অন্যপক্ষ কাঠিটি ছুড়ে যদি বড় লাঠিকে আঘাত করতে পারে, তাহলেও মূল খেলোয়াড় আউট।
দ্বিতীয় দফায় যেখানে পড়ল ছোট কাঠিটি, সেখান থেকে গর্তের দূরত্ব মাপা হয় লম্বা লাঠি দিয়ে। দূরত্বের পরিমাপ অনুসারে এই গোনাগুনতির আছে হরেক নাম- মুনা, ধুনা, তিনা, চারা, পাঁচা, ছৈ, গৈ। খেলা শেষে চূড়ান্ত হিসাব-নিকাশের ওপরই নির্ধারিত হয় খেলার জয়-পরাজয়।
ক্রিকেটের সঙ্গে এ খেলার অমিল, এখানে কোনো বোলার নেই। আউট না হওয়া পর্যন্ত একজন খেলোয়াড় খেলতে পারে। আউট হলে দ্বিতীয় খেলোয়াড় খেলা শুরু করে। এভাবে দলের সবাই আউট হলে বিপক্ষ দল দান পেয়ে খেলা শুরু করে।
ডাংগুলিকে ক্রিকেটের গ্রাম্য সংস্করণও বলা যেতে পারে। অঞ্চলভেদে এ খেলা 'ডাংবাড়ি', 'গুটবাড়ি', 'ট্যামডাং', 'ভ্যাটাডাণ্ডা' ইত্যাদি নামে পরিচিত। তবে ডাংগুলি নামেই এটি বেশি পরিচিত।
আরাফাত শাহরিয়ার
No comments