বিরোধী দলের সংসদ ত্যাগ করা কাম্য নয় by আবুল হাসান চৌধুরী

প্রথমত, দেশের জনগণের প্রত্যাশা একটি সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশ যেন অব্যাহত থাকে। কিছু কমন বিষয়ে দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে মিল থাকা প্রয়োজন। সেই জায়গাগুলো তৈরি করা গেলে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।


যেকোনো রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয় থাকে। অভ্যন্তরীণ নানা দৃষ্টিভঙ্গির কারণে সিদ্ধান্ত বা মত পরিবর্তন করতে দেখা যেতে পারে। আবার এ কথাও ঠিক, বিরোধী দলের প্রতি যারা নমনীয়, তাদের মধ্যে একটি বড় অংশ হরতাল-জ্বালাও-পোড়াও বা সহিংসতার রাজনীতি সমর্থন করে না। ফলে দলীয় নানা সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনতে হয়। হয়তো সেটাই হয়েছে বিএনপির সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণার বেলায়।
স্বাভাবিকভাবেই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধী দল নানা দাবি-দাওয়া তুলবে, আন্দোলন করবে, মিটিং-মিছিল-সমাবেশ করবে। কিন্তু সেটা করার পাশাপাশি সংসদেও যেতে হবে। সংসদ ত্যাগ করা কোনোক্রমেই কাম্য নয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর মাথায় রাখতে হবে, দেশের মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে আছে। তারা ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কিত। দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য অবাধে চলতে দেওয়া, স্কুল-কলেজে লেখাপড়ায় বিঘ্ন না ঘটানো, প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ মানুষকে আরো সমস্যায় না ফেলার কথা চিন্তায় রেখেই হয়তো আন্দোলনের কর্মসূচি কিছুটা নমনীয় হয়েছে। এটাকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে দুই দলের কাছাকাছি আসা প্রয়োজন। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও আরো ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে।
বর্তমান প্রশাসনিক কাজে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হয়েছে, তাকে খণ্ডিতভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকেই নির্দেশনা পেয়ে থাকেন এবং সে অনুসারে কাজ করেন। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহনশীল সংস্কৃতি গড়ে তোলা দরকার। শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহনশীলতা, কোনো কোনো কমন বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হলেই প্রশাসনযন্ত্রের অরাজকতা বন্ধ হবে। বাংলাদেশের জনগণ এখন গণতান্ত্রিক পরিবেশ এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দেখতে চায়। সেদিকে সঠিকভাবে নজর দিতে পারলে দেশে সহনশীল রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি হতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.