কাজটা তথ্য জানানোর by জিয়াউর রহমান চৌধুরী
তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে পৃথিবীটা এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। তাই তো কোনো পণ্য বা সেবার বিপণনও এখন অনেকটাই প্রযুক্তিবান্ধব হয়ে উঠেছে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কেবল একটি ফোনেই চলে আসে সব তথ্য। যা সংঘটিত হয় কল সেন্টারের মাধ্যমে। আর কল সেন্টার হলো তথ্য জানার কেন্দ্র।
গ্রাহকদের কাছে দ্রুত বিশ্বের নানা প্রান্তের পণ্য ও সেবা বিপণনের তথ্য পৌঁছে দেওয়ার সুবাদে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কল সেন্টার।
বাংলাদেশেও বিপণন বা সেবার এ নতুন পন্থাটি দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। বিকাশমান এ খাতে ইতিমধ্যেই বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও কাজের সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কল সেন্টার খাতে কাজের সুযোগ, যোগ্যতা, আয় প্রভৃতি দিক নিয়ে এই উপস্থাপনা।
কী এই কল সেন্টার
এ প্রসঙ্গে এটিএন কল সেন্টারের প্রকল্প নির্বাহী সৈয়দ ফেরদৌস বলেন, কল সেন্টার মূলত একজন গ্রাহক আর একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী। অর্থাৎ কল সেন্টার একটি তৃতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে। কোনো কোম্পানির পণ্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহককে জানানো বা সামগ্রিক তথ্য দেওয়ার কাজই করে থাকে কল সেন্টার।
সৈয়দ ফেরদৌস আরও বলেন, ‘অনেকে মোবাইল কোম্পানির কাস্টমার কেয়ার গ্রাহক সেবা বিভাগকেই কল সেন্টার মনে করেন। আসলে কল সেন্টার এখন আর শুধু টেলিকমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ভোগ্য পণ্য, টেলিকম, এয়ারলাইনস থেকে শুরু করে সেবাদানকারী সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেরই কল সেন্টার হয়ে থাকে। এককথায় কল সেন্টার এখন টেলি মার্কেটিংয়ে রূপ নিয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ২০০৮ সালে ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে কল সেন্টারের নিবন্ধন দেয়। এরপর বাংলাদেশে কল সেন্টার বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠতে শুরু করে। সৈয়দ ফেরদৌস জানান, টেলিকম, ভোগ্যপণ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় তিন শতাধিক কল সেন্টার রয়েছে। কল সেন্টারগুলোকে সিসি বা কন্ট্রাক্ট সেন্টারও বলা হয়। এগুলো মূলত বিপিও (বিজনেস প্রমোশনাল অর্গানাইজেশন) হিসেবে কাজ করে।
কল সেন্টারের ধরন
বর্তমানে বাংলাদেশে নানা ধরনের কল সেন্টার রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ডমেস্টিক বা অভ্যন্তরীণ ও ইন্টারন্যাশনাল বা আন্তর্জাতিক কল সেন্টার। অভ্যন্তরীণ কল সেন্টারগুলো দেশের ভেতরের প্রতিষ্ঠানের হয়ে আর আন্তর্জাতিক কল সেন্টার দেশের বাইরের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করে। তবে কিছু কল সেন্টার উভয় ধরনের কাজই করে।
কাজটা যেমন
কল সেন্টারগুলো তথ্য নিয়েই কাজ করে।কল সেন্টারের একজন কর্মীকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহকদের জানানো, গ্রাহকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, গ্রাহকের কল গ্রহণ করা (আন বাউন্ড), পণ্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহককে ফোন করে জানানো (আউট বাউন্ড), কথোপকথনের মাধ্যমে জরিপ করা ইত্যাদি কাজ করতে হয়। এ বিষয়ে কিউবি কল সেন্টারের গ্রাহক সেবা বিভাগের সাপোর্ট সহযোগী মেহেদী গোলাম রহমান বলেন, বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপনে অনেক সময় বিস্তারিত তথ্য দেওয়া থাকে না। বিস্তারিত জানার জন্য ফোন নম্বর দেওয়া থাকে। ওই নম্বরে ফোন করলে যাঁরা তথ্য দেন তাঁরা হলেন কল সেন্টারের কর্মী।
কাজের ধরন
দেশের কল সেন্টারগুলোতে পূর্ণকালীন ও খণ্ডকালীন দুই ধরনের কাজেরই সুযোগ রয়েছে। তবে এ খাতে খণ্ডকালীন কর্মীর সংখ্যাই বেশি বলে জানিয়েছেন মেহেদী গোলাম রহমান। তিনি বলেন, ‘এ খাতে কাজের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা মুখ্য নয়। কল সেন্টারে কাজের জন্য যে গুণগুলো প্রয়োজনীয়: সুন্দর বাচনভঙ্গি, প্রাঞ্জলতা ও শুদ্ধ উচ্চারণ ইত্যাদি। এ খাতে শিক্ষানবিশদের প্রাধান্য দেওয়া হয়।
আয়টা যেমন
কল সেন্টার খাতে প্রতিষ্ঠানভেদে আয়ের সামান্য তারতম্য হতে পারে। যেমন ডমেস্টিক কল সেন্টারের চেয়ে ইন্টারন্যাশনাল কল সেন্টারে বেতন বেশি। এ বিষয়ে সৈয়দ ফেরদৌস বলেন, কল সেন্টারগুলোতে পূর্ণকালীন কাজে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা দিয়ে বেতন শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে এটি দুই লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আর খণ্ডলীন কাজে বেতন দেওয়া হয় ঘণ্টা হিসেবে। প্রতি ঘণ্টা কাজের জন্য ১০০-২০০ টাকা দেওয়া হয়।
কাজটা যখন
বেতনের মতো কল সেন্টারগুলোতে কাজের সময়েও তারতম্য রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল কল সেন্টারে সাধারণত রাতেই কাজ করতে হয়। আর ডমেস্টিক কল সেন্টারগুলো দেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ করে বলে তাদের মূলত দিনের বেলায়ই অফিস খোলা রাখতে হয়। তবে হাসপাতাল, টেলিকমসহ কিছু কল সেন্টার ২৪ ঘণ্টাই সেবা ও তথ্য প্রদানে নিয়োজিত থাকে।
ভালো করতে হলে
এই পেশায় নিয়োজিত কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, কল সেন্টারে কাজ করে ভালো ক্যারিয়ার বা কর্মজীবন গড়তে হলে সততা, সময়ানুবর্তিতা আর বিনয়—এসব গুণ থাকতে হবে। মানুষের সঙ্গে ধৈর্য নিয়ে কথা বলার মানসিকতাও থাকতে হবে। গ্রাহক কখনো উত্তেজিত হয়ে কথা বললেও তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। জানালেন সৈয়দ ফেরদৌস। এগুলোর পাশাপাশি এ পেশায় কাজ করতে হলে শুদ্ধ ও সুন্দর উচ্চারণ, ভালো বাচনভঙ্গির অধিকারী হতে হবে। আর কম্পিউটারের অফিস প্রোগ্রামগুলো জানাটাও অতি জরুরি। সেই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির নতুন দিকগুলো, যেমন ইন্টারনেট, ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি ব্যবহার করে যোগাযোগেও পারঙ্গম হতে হবে।
বাংলাদেশেও বিপণন বা সেবার এ নতুন পন্থাটি দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। বিকাশমান এ খাতে ইতিমধ্যেই বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও কাজের সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কল সেন্টার খাতে কাজের সুযোগ, যোগ্যতা, আয় প্রভৃতি দিক নিয়ে এই উপস্থাপনা।
কী এই কল সেন্টার
এ প্রসঙ্গে এটিএন কল সেন্টারের প্রকল্প নির্বাহী সৈয়দ ফেরদৌস বলেন, কল সেন্টার মূলত একজন গ্রাহক আর একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী। অর্থাৎ কল সেন্টার একটি তৃতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে। কোনো কোম্পানির পণ্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহককে জানানো বা সামগ্রিক তথ্য দেওয়ার কাজই করে থাকে কল সেন্টার।
সৈয়দ ফেরদৌস আরও বলেন, ‘অনেকে মোবাইল কোম্পানির কাস্টমার কেয়ার গ্রাহক সেবা বিভাগকেই কল সেন্টার মনে করেন। আসলে কল সেন্টার এখন আর শুধু টেলিকমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ভোগ্য পণ্য, টেলিকম, এয়ারলাইনস থেকে শুরু করে সেবাদানকারী সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেরই কল সেন্টার হয়ে থাকে। এককথায় কল সেন্টার এখন টেলি মার্কেটিংয়ে রূপ নিয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ২০০৮ সালে ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে কল সেন্টারের নিবন্ধন দেয়। এরপর বাংলাদেশে কল সেন্টার বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠতে শুরু করে। সৈয়দ ফেরদৌস জানান, টেলিকম, ভোগ্যপণ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় তিন শতাধিক কল সেন্টার রয়েছে। কল সেন্টারগুলোকে সিসি বা কন্ট্রাক্ট সেন্টারও বলা হয়। এগুলো মূলত বিপিও (বিজনেস প্রমোশনাল অর্গানাইজেশন) হিসেবে কাজ করে।
কল সেন্টারের ধরন
বর্তমানে বাংলাদেশে নানা ধরনের কল সেন্টার রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ডমেস্টিক বা অভ্যন্তরীণ ও ইন্টারন্যাশনাল বা আন্তর্জাতিক কল সেন্টার। অভ্যন্তরীণ কল সেন্টারগুলো দেশের ভেতরের প্রতিষ্ঠানের হয়ে আর আন্তর্জাতিক কল সেন্টার দেশের বাইরের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করে। তবে কিছু কল সেন্টার উভয় ধরনের কাজই করে।
কাজটা যেমন
কল সেন্টারগুলো তথ্য নিয়েই কাজ করে।কল সেন্টারের একজন কর্মীকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহকদের জানানো, গ্রাহকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, গ্রাহকের কল গ্রহণ করা (আন বাউন্ড), পণ্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহককে ফোন করে জানানো (আউট বাউন্ড), কথোপকথনের মাধ্যমে জরিপ করা ইত্যাদি কাজ করতে হয়। এ বিষয়ে কিউবি কল সেন্টারের গ্রাহক সেবা বিভাগের সাপোর্ট সহযোগী মেহেদী গোলাম রহমান বলেন, বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপনে অনেক সময় বিস্তারিত তথ্য দেওয়া থাকে না। বিস্তারিত জানার জন্য ফোন নম্বর দেওয়া থাকে। ওই নম্বরে ফোন করলে যাঁরা তথ্য দেন তাঁরা হলেন কল সেন্টারের কর্মী।
কাজের ধরন
দেশের কল সেন্টারগুলোতে পূর্ণকালীন ও খণ্ডকালীন দুই ধরনের কাজেরই সুযোগ রয়েছে। তবে এ খাতে খণ্ডকালীন কর্মীর সংখ্যাই বেশি বলে জানিয়েছেন মেহেদী গোলাম রহমান। তিনি বলেন, ‘এ খাতে কাজের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা মুখ্য নয়। কল সেন্টারে কাজের জন্য যে গুণগুলো প্রয়োজনীয়: সুন্দর বাচনভঙ্গি, প্রাঞ্জলতা ও শুদ্ধ উচ্চারণ ইত্যাদি। এ খাতে শিক্ষানবিশদের প্রাধান্য দেওয়া হয়।
আয়টা যেমন
কল সেন্টার খাতে প্রতিষ্ঠানভেদে আয়ের সামান্য তারতম্য হতে পারে। যেমন ডমেস্টিক কল সেন্টারের চেয়ে ইন্টারন্যাশনাল কল সেন্টারে বেতন বেশি। এ বিষয়ে সৈয়দ ফেরদৌস বলেন, কল সেন্টারগুলোতে পূর্ণকালীন কাজে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা দিয়ে বেতন শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে এটি দুই লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আর খণ্ডলীন কাজে বেতন দেওয়া হয় ঘণ্টা হিসেবে। প্রতি ঘণ্টা কাজের জন্য ১০০-২০০ টাকা দেওয়া হয়।
কাজটা যখন
বেতনের মতো কল সেন্টারগুলোতে কাজের সময়েও তারতম্য রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল কল সেন্টারে সাধারণত রাতেই কাজ করতে হয়। আর ডমেস্টিক কল সেন্টারগুলো দেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ করে বলে তাদের মূলত দিনের বেলায়ই অফিস খোলা রাখতে হয়। তবে হাসপাতাল, টেলিকমসহ কিছু কল সেন্টার ২৪ ঘণ্টাই সেবা ও তথ্য প্রদানে নিয়োজিত থাকে।
ভালো করতে হলে
এই পেশায় নিয়োজিত কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, কল সেন্টারে কাজ করে ভালো ক্যারিয়ার বা কর্মজীবন গড়তে হলে সততা, সময়ানুবর্তিতা আর বিনয়—এসব গুণ থাকতে হবে। মানুষের সঙ্গে ধৈর্য নিয়ে কথা বলার মানসিকতাও থাকতে হবে। গ্রাহক কখনো উত্তেজিত হয়ে কথা বললেও তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। জানালেন সৈয়দ ফেরদৌস। এগুলোর পাশাপাশি এ পেশায় কাজ করতে হলে শুদ্ধ ও সুন্দর উচ্চারণ, ভালো বাচনভঙ্গির অধিকারী হতে হবে। আর কম্পিউটারের অফিস প্রোগ্রামগুলো জানাটাও অতি জরুরি। সেই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির নতুন দিকগুলো, যেমন ইন্টারনেট, ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি ব্যবহার করে যোগাযোগেও পারঙ্গম হতে হবে।
No comments