'পটেটো মুভমেন্ট' by অনির্বাণ
গ্রিসের নাগরিকদের 'পটেটো মুভমেন্ট' সেখানকার কৃষিপণ্যের ওপর মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য অবসানে 'ক্যাট অ্যান্ড মাউস' খেলার অবতারণা করে। নাগরিকরা দেশের এবং নিজেদের অর্থনৈতিক শোচনীয় অবস্থার প্রেক্ষাপটে সস্তায় ভোগ্যপণ্য ক্রয়ের উপায় সন্ধান করলেন।
তারা দেখলেন, মূল উৎপাদকদের কাছ থেকে সরাসরি ভোগ্যপণ্য কিনতে পারলে তারা ক্ষেত্রভেদে বাজারে প্রচলিত দামের চেয়ে অর্ধেক দামে তা পেতে পারেন। এতে লাভ উৎপাদক ও ভোক্তা উভয়েরই। এই অতিপ্রয়োজনীয়তার তাগিদ থেকেই সেখানে ব্যাপকভাবে শুরু হয় 'পটেটো মুভমেন্ট'। আলুর সঙ্গে অন্যান্য ভোগ্যপণ্যও উৎপাদকদের কাছ থেকে সরাসরি ভোক্তাদের কাছে বিক্রির ব্যবস্থা হতে লাগল। এই নতুন ব্যবস্থায় উপকৃত হয়ে অধিক হারে নাগরিকরা এতে যোগ দিতে লাগলেন। স্থানীয় পরিষদগুলো এই আন্দোলনের সমর্থনে এগিয়ে আসে তাদের সঙ্গে নাগরিকদের সরাসরি সম্পৃক্ততার কারণে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে এই আন্দোলনের প্রতি তেমন সমর্থন পাওয়া যায়নি। এখানে গ্রিসের রাজনৈতিক দল এবং আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক অদ্ভুত মিল দেখা যায়। সারা দুনিয়ার রাজনৈতিক ক্লাসের মূল দৃষ্টিভঙ্গি কি অভিন্ন? নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতির তুবড়ি ছুটিয়ে কেবল ক্ষমতা দখলই তাদের মোক্ষ?
আমাদের এখানে গ্রিস অর্থনীতির মতো ঘোরতর সংকট নেই। কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে নাগরিক জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বৃদ্ধি পায় গ্রিসের মতোই। সে কারণে আমাদের দেশের মানুষও গ্রিসবাসীর মতো চান কম দামে প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য ক্রয়ের সুবিধা। এটা উৎপাদকরাও চান। তাহলে তাদের ভাগেও লাভের একটা অংশ আসবে। কিন্তু এ ব্যবস্থা মধ্যস্বত্বভোগীরা চান না। তারা নিশ্চয়ই প্রাণপণে এই ব্যবস্থা কার্যকর হতে দিতে চাইবেন না। গ্রিসেও এই মধ্যস্বত্বভোগীরা নানা কৌশলে এ আন্দোলনকে ভণ্ডুল করতে চেয়েছে। তারা প্যাকেজিং এবং সটিং পদ্ধতির ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ থাকায় এসবের ব্যয় বৃদ্ধি করে ভোগ্যপণ্যের দামে ঊর্ধ্বগতি বজায় রাখতে সচেষ্ট। এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলার জন্য গ্রিসের ভোক্তা আন্দোলনকে নিজেদের প্যাকেজিং ও সটিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা ভাবতে হতে পারে।
আমাদের দেশে এই আন্দোলনের কলকে পাওয়ার পথে বাধার প্রাচীরটি গ্রিসের চেয়ে কোনো অংশে কম উঁচু নয়। এখানকার মধ্যস্বত্বভোগীদের বিরাট অংশ প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নানাভাবে জড়িত। তারা শক্তি প্রয়োগ ও প্রশাসন যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে এই আন্দোলনকে ভণ্ডুল করে দেওয়ার চেষ্টা নিতে পারে। এখানেই প্লেটোর রিপাবলিকে বর্ণিত প্রায় সবকিছুর সঙ্গে রাজনীতির সংযোগের অনিবার্যতাকে স্বীকার করে নিতে হয়। আর যেহেতু ভোগ্যপণ্যের বাজারকে মধ্যস্বত্বভোগীদের কবলমুক্ত করে উৎপাদকদের বাজারের ওপর ন্যস্ত করার প্রসঙ্গ রয়েছে তাই এখানে রাজনৈতিক সংযোগ মোটা দাগে থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও প্রশাসন যাতে এ আন্দোলনকে সমর্থন দিতে বাধ্য হয় তার জন্যও ব্যাপক নাগরিক আন্দোলনের দরকার পড়বে। আমাদের দেশে অনেক কিছু নিয়ে নাগরিক আন্দোলনের দেখা মিললেও উৎপাদকদের কাছ থেকে সরাসরি ভোগ্যপণ্য ক্রয়ের ব্যবস্থা করার বিষয়টি এখনও বক্তৃতা ও সেমিনারেই সীমাবদ্ধ।
আমাদের এখানে কি এমন কেউ নেই যিনি বা যারা এ জন্য নাগরিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেন! আসুন না, সামনে এগিয়ে এসেই দেখুন না, বাংলার সাধারণ মানুষ আপনাদের বিমুখ করবে না।
গ্রিসের পটেটো মুভমেন্ট সেখানে ঘোরতর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও মানুষের মধ্যে নিজেদের শক্তিতে টিকে থাকার পক্ষে যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে তা থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি অসংকোচে।
আমাদের এখানে গ্রিস অর্থনীতির মতো ঘোরতর সংকট নেই। কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে নাগরিক জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বৃদ্ধি পায় গ্রিসের মতোই। সে কারণে আমাদের দেশের মানুষও গ্রিসবাসীর মতো চান কম দামে প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য ক্রয়ের সুবিধা। এটা উৎপাদকরাও চান। তাহলে তাদের ভাগেও লাভের একটা অংশ আসবে। কিন্তু এ ব্যবস্থা মধ্যস্বত্বভোগীরা চান না। তারা নিশ্চয়ই প্রাণপণে এই ব্যবস্থা কার্যকর হতে দিতে চাইবেন না। গ্রিসেও এই মধ্যস্বত্বভোগীরা নানা কৌশলে এ আন্দোলনকে ভণ্ডুল করতে চেয়েছে। তারা প্যাকেজিং এবং সটিং পদ্ধতির ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ থাকায় এসবের ব্যয় বৃদ্ধি করে ভোগ্যপণ্যের দামে ঊর্ধ্বগতি বজায় রাখতে সচেষ্ট। এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলার জন্য গ্রিসের ভোক্তা আন্দোলনকে নিজেদের প্যাকেজিং ও সটিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা ভাবতে হতে পারে।
আমাদের দেশে এই আন্দোলনের কলকে পাওয়ার পথে বাধার প্রাচীরটি গ্রিসের চেয়ে কোনো অংশে কম উঁচু নয়। এখানকার মধ্যস্বত্বভোগীদের বিরাট অংশ প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নানাভাবে জড়িত। তারা শক্তি প্রয়োগ ও প্রশাসন যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে এই আন্দোলনকে ভণ্ডুল করে দেওয়ার চেষ্টা নিতে পারে। এখানেই প্লেটোর রিপাবলিকে বর্ণিত প্রায় সবকিছুর সঙ্গে রাজনীতির সংযোগের অনিবার্যতাকে স্বীকার করে নিতে হয়। আর যেহেতু ভোগ্যপণ্যের বাজারকে মধ্যস্বত্বভোগীদের কবলমুক্ত করে উৎপাদকদের বাজারের ওপর ন্যস্ত করার প্রসঙ্গ রয়েছে তাই এখানে রাজনৈতিক সংযোগ মোটা দাগে থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও প্রশাসন যাতে এ আন্দোলনকে সমর্থন দিতে বাধ্য হয় তার জন্যও ব্যাপক নাগরিক আন্দোলনের দরকার পড়বে। আমাদের দেশে অনেক কিছু নিয়ে নাগরিক আন্দোলনের দেখা মিললেও উৎপাদকদের কাছ থেকে সরাসরি ভোগ্যপণ্য ক্রয়ের ব্যবস্থা করার বিষয়টি এখনও বক্তৃতা ও সেমিনারেই সীমাবদ্ধ।
আমাদের এখানে কি এমন কেউ নেই যিনি বা যারা এ জন্য নাগরিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেন! আসুন না, সামনে এগিয়ে এসেই দেখুন না, বাংলার সাধারণ মানুষ আপনাদের বিমুখ করবে না।
গ্রিসের পটেটো মুভমেন্ট সেখানে ঘোরতর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও মানুষের মধ্যে নিজেদের শক্তিতে টিকে থাকার পক্ষে যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে তা থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি অসংকোচে।
No comments