সংবিধান সংশোধন-অতীত হয় নূতন পুনরায় by বদিউল আলম মজুমদার

পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে সংসদের উপনেতা বেগম সাজেদা চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত বিশেষ কমিটি কাজ শুরু করেছে। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত কমিটির কো-চেয়ারম্যান। সেনগুপ্ত গণপরিষদেরও সদস্য ছিলেন এবং সংবিধানের খসড়া প্রণয়ন কমিটিতে বিরোধীদলীয় সদস্য হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।


সংবিধানের খসড়া প্রণয়নের পর তিনি চূড়ান্ত খসড়ার বেশ কয়েকটি ধারা সম্পর্কে আট পৃষ্ঠার একটি দীর্ঘ লিখিত আপত্তি প্রদান করেছিলেন। আপত্তিপত্রটির বিষয়বস্তু ছিল আদর্শিক ও নৈতিকতাভিত্তিক এবং এর ভাষা ছিল জোরালো ও শক্ত। বর্তমান প্রেক্ষাপটেও তাঁর আপত্তির অনেকগুলোই প্রাসঙ্গিক বলে আমরা মনে করি। বিশেষ সংশোধনীয় কমিটির কাজকর্ম নিয়ে যখন বিভিন্ন মহলে বিতর্ক হচ্ছে, তখন ৩৮ বছর আগের বিষয়টি পাঠকের কাছে তুলে ধরা আবশ্যক মনে করি।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের প্রথম, সম্ভবত সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আপত্তি ছিল সংবিধানের ‘প্রথম ভাগে’ অন্তর্ভুক্ত ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি’ সম্পর্কে। তিনি দাবি করেন যে ২৩ বছর আগে প্রণীত ভারতীয় সংবিধান ও ১৯৫৬ সালের পাকিস্তানের সংবিধানের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমাদের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিসমূহ—জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা—অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর মতে, অন্য দেশের সংবিধানে আছে বলেই আমাদের সংবিধানে এগুলো রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিগুলোর সঙ্গে খসড়া সংবিধানের ৮(২) অনুচ্ছেদে ‘তবে এই সকল নীতি আদালতের মাধ্যমে বলবৎযোগ্য হইবে না’ যুক্ত করে এগুলোকে নিতান্তই ‘শুভ ইচ্ছা’য় (good wishes) পরিণত করা হয়েছে, যা শুধু ‘এথিক্স’ বা নীতিবিদ্যা ও ধর্মীয় গ্রন্থে স্থান পাওয়া উচিত। আইনের বইয়ে এগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হবে ইচ্ছাকৃতভাবে ও চতুরতার সঙ্গে জনগণকে প্রতারিত করার শামিল। এভাবেই বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে স্বার্থান্বেষীরা রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে কৃষক ও শ্রমিক, তথা সাধারণ জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে পদদলিত করেছে। এগুলো তারা করেছে ‘কৃষকদের স্বাধীনতা’, ‘শ্রমিকদের অধিকার’ এবং ‘সাধারণ জনগণের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ব’ ইত্যাদির মতো ‘মিষ্টি’ ও ‘মনোগ্রাহী’ শব্দ এবং একই সঙ্গে এগুলো ‘আদালতের মাধ্যমে বলবৎ করা যাবে না’র মতো বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে। পাকিস্তানে ইস্কান্দার মির্জা ও আইয়ুব খান জনগণকে এভাবেই শোষণ ও বঞ্চিত করেছেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মনে করেন, এটি অভাবনীয় যে একটি রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও বহু আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে আমরা এসব অতি ঘৃণিত নেতার উদাহরণ অনুসরণ করব। তিনি আরও উল্লেখ করেন, সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রে তো দূরের কথা, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মতো ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সংবিধানেও এমন বিধান নেই।
দুর্ভাগ্যবশত, গত ৩৯ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে এটি সুস্পষ্ট যে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের আশঙ্কা আমাদের বেলায় কানায় কানায় সত্য হয়েছে—আমাদের নীতিনির্ধারকেরা গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ইত্যাদির অনেক ঘুমপাড়ানি গান গেয়ে সাধারণ মানুষকে নিদ্রাচ্ছন্ন রেখেছেন ও তাদের চরমভাবে বঞ্চিত করেছেন।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতে, যেহেতু সমাজতন্ত্র খসড়া সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির অংশ, তাই চূড়ান্ত সংবিধানে সম্পদ ও উৎপাদনযন্ত্রের যৌথ মালিকানার বিধান থাকা প্রয়োজন। তিনি আরও মনে করেন যে সম্পদের ওপর ব্যক্তিমালিকানার সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা দরকার এবং শ্রেণীহীন সমাজ সৃষ্টির লক্ষ্যে ক্রমাগতভাবে সম্পদ সরকারের মালিকানায় আনা আবশ্যক। তাঁর অভিমত অনুযায়ী, সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো আদালত দ্বারা বলবৎযোগ্য নয়, তাই কোনো সরকারই কৃষক, শ্রমিক ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে শোষণমুক্ত করতে বাধ্য থাকবে না। সংবিধানের এই ভাগে অন্তর্ভুক্ত বিধানগুলো সমাজের সাধারণ মানুষদের প্রতি দায়িত্ব থেকে সরকারকে মুক্ত করারই শামিল। তাঁর মতে, চাতুর্যপূর্ণভাবে এসব জনগোষ্ঠীর প্রতি সরকারের দায়িত্ব এড়ানোর এটি একটি ভয়ানক ষড়যন্ত্র। তাই তিনি খসড়া সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত মৌলিক চাহিদাগুলোকে মৌলিক অধিকারে পরিণত করার পক্ষে জোরালো অবস্থান নেন। তিনি মনে করেন, যে সরকার জনগণের মৌলিক চাহিদা—খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের মতো মৌলিক চাহিদা জোগান দিতে অপারগ, সে সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। তিনি শিক্ষাসহ এসব বিষয়কে আদালত দ্বারা বলবৎযোগ্য করার পক্ষে দৃঢ় মত ব্যক্ত করেন।
খসড়া সংবিধানের তৃতীয় ভাগে অন্তর্ভুক্ত মৌলিক অধিকার সম্পর্কেও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের অনেক আপত্তি ছিল। তিনি প্রস্তাবিত ৩২ অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত ‘আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতা হইতে কোনো ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাইবে না’—এ বিধানের প্রবল বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন যে ‘আইনানুযায়ী ব্যতীত’ শব্দদ্বয় ব্যবহার করে অতীতে কোটারি স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা শুধু কালো আইনের মাধ্যমে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারই খর্ব করেনি, তাদের নিপীড়ন ও হয়রানিও করেছে। তাই তিনি কালো আইনের মাধ্যমে সমাজের কোনো অংশেরই মৌলিক অধিকার এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা যাতে খর্ব করা না যায়, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় বিধান সংবিধানে যুক্ত করার সুপারিশ করেন। প্রসঙ্গত, সংবিধান প্রণয়নের এক বছরের মাথায়ই ১৯৭৩ সালে সরকারের নিবর্তনমূলক ও মৌলিক অধিকারপরিপন্থী আইন প্রণয়নের ক্ষমতাপ্রাপ্তির লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধন করা হয়।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ‘জনগণের উদ্দেশ্যসাধনকল্পে আইনের দ্বারা...আবশ্যক’ ক্ষেত্র ছাড়া জবরদস্তিমূলক শ্রম নিষিদ্ধ করা সম্পর্কিত খসড়া সংবিধানের ৩৪ অনুচ্ছেদেরও সমালোচনা করেন। তিনি এ বিধানের প্রথম অংশের ব্যাখ্যা দাবি করেন। তাঁর মতে, ৩৮ অনুচ্ছেদের সংগঠনে স্বাধীনতা-সম্পর্কিত বিধান, বিশেষত ‘যুক্তিসংগত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে’ বিষয়টি অস্পষ্ট। তিনি মিছিল ও ধর্মঘটের আয়োজন ও অংশগ্রহণ করার অধিকারও এ অনুচ্ছেদে সংযোগ করার দাবি জানান। একই সঙ্গে তিনি তফসিলিভুক্ত সম্প্রদায় ও আদিবাসীদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার তথা তাদের সার্বিক জীবনমান উন্নয়নের বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্তের পক্ষে মত প্রকাশ করেন।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতে, চিন্তা ও বিবেক এবং বাকস্বাধীনতা-সম্পর্কিত খসড়া সংবিধানের ৩৯(২) অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত ‘যুক্তিসংগত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে’, ‘জনশৃঙ্খলা’ ও ‘মানহানি’ শব্দসমূহ সন্দেহের উদ্রেক করে। এ ছাড়া মোট সাংসদদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের স্বাক্ষরে অভিযুক্ত হয়ে রাষ্ট্রপতি অভিশংসনের বিধান রাষ্ট্রপতির স্বাধীনতার ওপর হামলা বলে তিনি মতামত ব্যক্ত করেছেন।
উপরন্তু সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতে, প্রস্তাবিত সংবিধানের নিম্নের অনুচ্ছেদগুলো অগণতান্ত্রিক: ৫৩(১)—অসামর্থ্যের কারণে রাষ্ট্রপতির অপসারণ; ৫৮(৪)—প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের কারণে অন্য মন্ত্রীদের পদত্যাগ বা পদচ্যুতি এবং উত্তরাধিকার কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত স্ব স্ব পদে বহাল থাকা; ৬৭(খ)—১৯৭২ সালের বাংলাদেশ ‘কলাবরেটর’ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) অধীনে যেকোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হয়ে এবং অন্য কোনো আইন দ্বারা বা অধীনে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য হওয়া; ৯৩—সংসদে অনুমোদিত না হলে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জারিকৃত অধ্যাদেশ অকার্যকর হওয়া; প্রথম তফসিল (অনুচ্ছেদ ৪৭)—কতিপয় আইনের হেফাজত; এবং চতুর্থ তফসিল (অনুচ্ছেদ ১৫০)—ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলিকে কার্যকারিতা প্রদান।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ৬৫ অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত প্রস্তাবিত ১৫টি সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্তির দাবি করেন। তাঁর মতে, সংরক্ষিত আসনব্যবস্থা নারী-পুরুষের সমতার ধারণার পরিপন্থী এবং এ ধরনের ব্যবস্থায় একে অপরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। তিনি অবশ্য জীবনের সর্বক্ষেত্রে পুরুষদের মতো নারীদের সম-অধিকার প্রদানের পক্ষে মতামত দেন।
সেনগুপ্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব ছিল সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর (অনুচ্ছেদ-৭২) থেকে চার বছরে কমিয়ে আনা। পৃথিবীর বহু দেশেই সংসদের মেয়াদ চার বছর। তাঁর মতে, সংসদের মেয়াদ কম হলে সাংসদেরা জনগণের প্রতি তাঁদের দায়িত্ব সম্পর্কে আরও বেশি সজাগ হবেন। বর্তমানে অনেক চিন্তাশীল নাগরিকও একই দাবি করছেন।
সরকারের অনুমতি ব্যতিরেকে সংসদে কোনো বিল উত্থাপন করা যাবে না—খসড়া সংবিধানের ৮২ অনুচ্ছেদের এ বিধানকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত অগণতান্ত্রিক বলে আখ্যায়িত করেন। যেকোনো সাংসদই যাতে সংসদে বিল উত্থাপন করতে পারেন, এ লক্ষ্যে তিনি বিধানটির পরিবর্তন দাবি করেন। সৌভাগ্যবশত, শুধু অর্থ বিলের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমতির বিধান রেখে অন্য সব ক্ষেত্রে এ বাধ্যবাধকতা রহিত করা হয়েছে।
উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে ১০ বছরের আইন পেশায় অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়োগের বিরুদ্ধে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত জোরালো অবস্থান নেন। তিনি দাবি করেন যে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, এ পদ্ধতিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তিরাই বিচারক পদে নিয়োগ পেয়েছেন। তাঁর মতে, এসব ব্যক্তি জাতীয় স্বার্থের পরিবর্তে ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধার বিবেচনা দ্বারা পরিচালিত এবং তাঁরা মোসাহেবিপনায় লিপ্ত হন। তিনি বিচার বিভাগে এ ধরনের নিয়োগের প্রবল বিরোধিতা করেন। কারণ, অতীতের এ ধরনের নিয়োগেই বিচার বিভাগের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে। তাই তিনি অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে বিচারকার্যে নিয়োজিত বিচারকদের মধ্য থেকে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের পক্ষে মত দেন। তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে নাগরিকের মৌলিক আধিকারের অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষেও দৃঢ় অবস্থান নেন।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত খসড়া সংবিধানের ১১৮ ও ১১৯-এ অন্তর্ভুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে শর্ত আরোপ করার পক্ষে মত দেন। তাঁর সুস্পষ্ট প্রস্তাব: ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারকে ন্যূনপক্ষে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হইতে হইবে।’ অর্থাৎ তিনি শুধু বিচারকদের মধ্য থেকে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ প্রদানের দাবি জানান।
আমরা মনে করি যে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের আপত্তির অনেকগুলোই এখনো প্রাসঙ্গিক। স্বাধীনতার ৩৯ বছর পরও আমাদের দেশে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমাদের সংবিধান কৃষক, শ্রমিক তথা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করতে পারেনি। বরং ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে বারবার বিশ্বাসঘাতকতাই করেছেন। আমাদের নীতিনির্ধারকেরা তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন, এমনকি পদে পদে তাদের মৌলিক অধিকারও হরণ করেছেন। নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নও সত্যিকারার্থে আমাদের দেশে হয়নি। এ ছাড়া আমাদের সংবিধান বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে পারেনি। পারেনি গণতন্ত্রের হূদ্যন্ত্র হিসেবে পরিচিত জাতীয় সংসদকে কার্যকর ও মাননীয় সাংসদদের দায়বদ্ধ করতে। এসব অনভিপ্রেত, বস্তুত লজ্জাকর, অভিজ্ঞতার আলোকেই আজ সংবিধান সংশোধনের কাজে অগ্রসর হতে হবে। আমরা কি এ ক্ষেত্রে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নেতৃত্ব আশা করতে পারি? তিনি কি নিজেকে অতিক্রম করতে পারবেন—পারবেন আমাদের সংকীর্ণ ও স্বার্থপরতার রাজনীতির ধারার ঊর্ধ্বে উঠতে?
ড. বদিউল আলম মজুমদার, সম্পাদক, ‘সুজন—সুশাসনের জন্য নাগরিক’।

No comments

Powered by Blogger.