চোরাই ভিওআইপি বাড়ছে by কাজী হাফিজ

প্রতিদিন বৈধ পথে আসা কমপক্ষে এক কোটি মিনিট বৈদেশিক টেলিফোন কলের কোনো হদিস নেই। বিটিআরসির হিসাবে দেশের চারটি ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ের (আইজিডাব্লিউ) মাধ্যমে যেখানে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে চার কোটি মিনিট বৈদেশিক কল আসার কথা, সেখানে আসছে মাত্র সাড়ে তিন কোটি মিনিট।


গত অক্টোবর থেকে এই অবস্থা চলছে। পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে বলে বিটিআরসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আশঙ্কা। তাঁরা বলছেন, গত বছর দেশে আরো ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ের লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে অক্টোবরে এ বিষয়ে আবেদনপত্র আহ্বান করার পরপরই বৈদেশিক কলের এ বিপর্যয় শুরু হয় এবং এখনো তা বহাল রয়েছে। ভিওআইপির (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল) অবৈধ কারবারিরা যে পুরো মাত্রায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, তারই প্রমাণ এভাবে বৈদেশিক কল কমে যাওয়া। বৈধ পথে কল কমছে মানেই ভিওআইপির অবৈধ পথে কল বাড়ছে। আর সরকার বিপুল পরিমাণে রাজস্ব ফাঁকির মধ্যে পড়ছে।
এক হিসাবে জানা গেছে, ধরা পড়া এক কোটি মিনিটের কারণেই সরকার প্রতিদিন প্রায় দেড় কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। তবে দেশের টেলিকম বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন বিদেশ থেকে দেশে আসা এ টেলিফোন কলের পরিমাণ আরো বেশি। বৈধ পথের বাইরে ভিওআইপির মাধ্যমে আরো কয়েক গুণ কল বিটিআরসি বা সরকারের হিসাবের বাইরেই থেকে যাচ্ছে।
আইজিডাব্লিউগুলো থেকে সংগৃহীত বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালের মার্চে ভিওআইপি কারবারের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে দেশের পাঁচটি ল্যান্ডফোন অপারেটরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৈদেশিক কলের পরিমাণ বেড়ে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে চার কোটি মিনিটে স্থির ছিল। আবার গত অক্টোবরের শেষের দিকে এ কলের পরিমাণ তিন কোটি মিনিটে নেমে আসে।
কয়েক বছর ধরে এ কারবারে সবচেয়ে বেশি অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। এ প্রতিষ্ঠানের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে বিষয়টি নিয়ে হতাশা এখন চরমে। তাঁদের ধারণা, প্রভাবশালী একটি মহলের ছত্রচ্ছায়ায় বিটিসিএলের কর্মকর্তাদেরই একটি দুর্নীতিবাজ চক্র এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী। ওই চক্রটির দুর্নীতির কারণেই সরকার প্রতিদিন প্রায় তিন কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। বিদেশি ক্যারিয়াররা শত শত কোটি টাকা বকেয়া রেখে লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বিটিসিএলের একজন প্রকৌশলীর মন্তব্য, দেশে ভিওআইপির অবৈধ কারবারের সূচনা হয় বিটিটিবি বা আজকের বিটিসিএলের মাধ্যমে। এক যুগ আগে এর শুরুটা ছিল হাতের আঙুলে সুচ ফুটিয়ে রক্ত নেওয়ার মতো। পরে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে হাতের রগ থেকে রক্ত নেওয়ার অবস্থা ঘটে। আর এখন সরাসরি হৃৎপিণ্ড থেকে রক্ত নেওয়া হচ্ছে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, 'ভিওআইপির অবৈধ কারবার রোধে আমরা সচেষ্ট। এ বিষয়ে আমাদের কোনো দুর্বলতা নেই। আমরা বৈদেশিক কলের পরিমাণ দিনে পাঁচ কোটি মিনিটের ওপরে নিয়ে এসেছিলাম। তা কেন কমল, সেটা জানার চেষ্টা হচ্ছে।'
তিনি জানান, ভিওআইপির অবৈধ কারবারে বিভিন্ন মোবাইল কম্পানির সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। বিটিআরসি এসব সিমে কোন পদ্ধতিতে, কোথা থেকে কল আসছে তা বিস্তারিত জানার ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলার খেসারত : বিটিসিএলের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাইদ খান গত বছরের ২২ নভেম্বর জাতীয় সংসদের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অভিযোগ করেন, ভিওআইপির অবৈধ কারবারিরা তাঁদের কম্পানিতেই রয়েছে, কিন্তু ক্ষমতাধর হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা যাচ্ছে না। তিনি নিজের জীবনের হুমকির মুখে রয়েছেন। এই অভিযোগের পর তাঁকে শাস্তিমূলকভাবে বিটিসিএল থেকে সরিয়ে টেলিফোন শিল্প সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এদিকে আবু সাইদ খানের ওই অভিযোগ সংবাদমাধ্যমে প্রচার পেলে এবং বৈদেশিক কলের পরিমাণ কমে যাওয়াতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিষয়টি তদন্তের জন্য গত বছরের শেষ দিকে বিটিআরসির কমিশনার এ টি এম মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেয়। কিন্তু কমিটিতে তথ্য-প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ না দেওয়ায় সদস্যরা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে পারেননি। কমিটি গত ২২ ফেব্রুয়ারি তাদের এই অপারগতার কথা উল্লেখ করে সংক্ষিপ্ত একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। তাতে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে ত্রিপক্ষীয় টাস্কফোর্স গঠনের সুপারিশ করা হয়। বলা হয়, বিটিআরসি, মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ে এ টাস্কফোর্স গঠন করা যেতে পারে। সামগ্রিকভাবে নজরদারি না করায় দেশে ভিওআইপির অবৈধ ব্যবসা বেড়েছে বলেও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
এ ছাড়া বিটিসিএলে কল ডিটেইল রেকর্ডস (সিডিআর) মুছে ফেলার প্রমাণ মিলেছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, এ প্রতিষ্ঠানসহ সব অপারেটরের ওপর নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারি আরো না বাড়ালে বৈদেশিক টেলিফোন কল থেকে সরকার এখনো যে কয়েক হাজার কোটি টাকা আয় করে তার পুরোটাই লোপাট হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ওই কমিটি সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দিয়েছে। তাতে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে যে, তাদের তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি।
এদিকে বিটিসিএল সম্পর্কে এসব অভিযোগের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজুল ইসলাম গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিটিসিএলের কর্মকর্তাদের ভিওআইপির অবৈধ কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে আমি নিশ্চিত নই। গত সপ্তাহে এ বিষয়ে বিটিসিএলের জিএম ট্রান্সমিশনের নেতৃত্বে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রযুক্তিগত কোনো সমস্যার কারণে বিটিসিএলের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উঠছে কি না, তা ওই কমিটি খতিয়ে দেখবে। সম্ভবত আমাদের আইটিএক্স-৫-এ কিছুটা সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যা দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।'
এদিকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, বিটিসিএলের আন্তর্জাতিক অঞ্চলের যথাযথ অডিট হলে গত তিন বছরের কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির তথ্য বের হয়ে আসবে। সম্প্রতি এই তথ্য মিলেছে যে, বৈদেশিক কলের ক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের সঙ্গে বিটিসিএলের কয়েকটি বিলের পার্থক্য হয়েছে প্রায় ২৬ কোটি টাকা, যা সংশ্লিষ্ট কলগুলোর মোট রাজস্বের ২০ শতাংশ মাত্র। বিটিসিএলের আন্তর্জাতিক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে আসা যে পরিমাণ বিদেশি কল গ্রামীণফোনের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে পেঁৗছেছিল তা থেকে এ হিসাব মিলেছে। এ ক্ষেত্রে গ্রামীণফোনের হিসাবটি সঠিক হলে বিটিসিএলের আন্তর্জাতিক এক্সচেঞ্জের কারচুপিতে ওই সব কল থেকে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে ১৩০ কোটি টাকা। আর অন্য সব মোবাইল অপারেটর এবং গত দুই বছরের হিসাব টানলে রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এ ধরনের দুর্নীতির আলামত পেয়ে সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন সব মোবাইল অপারেটরের কাছে বিটিসিএলের মাধ্যমে পাওয়া বিদেশি কলের হিসাব চেয়েছে।
বিদেশি ক্যারিয়ারের ফাঁকিবাজি বন্ধে নতুন পরিকল্পনা : বিটিসিএলের তথ্য অনুসারে, বিদেশি ক্যারিয়ারদের কাছে তাদের গত ১৫ মে পর্যন্ত প্রদর্শিত পাওনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এই টাকার বেশির ভাগই যে উদ্ধার হবে না, সে বিষয়টি নিশ্চিত। পাওনা পরিশোধ না করায় গত দেড় বছরে ১২টি ক্যারিয়ারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এই ১২টি ক্যারিয়ারের কাছে বিটিসিএলের পাওনা ২৪৪ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ওই ১২ কম্পানির ব্যাংক গ্যারান্টি ছিল মাত্র ৮৫ কোটি টাকা। কিন্তু ওই ব্যাংক গ্যারান্টির টাকা জব্দ করতে গিয়ে পাওয়া যায় আরো হতাশাজনক তথ্য। সিঙ্গাপুর থেকে পরিচালিত আই-পাওয়ার নামের একটি কম্পানি ৩৫ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার যে ব্যাংক গ্যারান্টি দিয়েছিল তা ভুয়া। সোনালী ব্যাংকের বাড্ডা শাখা থেকে এই অপকর্ম করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ রয়েছে। ব্যাংকটির প্রধান শাখা থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের কাছে এই ব্যাংক গ্যারান্টির কোনো তথ্য নেই। আই-পাওয়ারের কাছে বিটিসিএলের মোট পাওনা রয়েছে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৯ কোটি টাকা। আর যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে পরিচালিত ১৫টি কম্পানি ১৪৫ কোটি টাকা বাকি রেখে যোগাযোগের বাইরে চলে গেছে। এই ১৫টি কম্পানির মধ্যে দুটি কম্পানির ব্যাংক গ্যারান্টি ছিল বাংলাদেশি মুদ্রায় মাত্র ৫৬ লাখ টাকা। শুধু পাওনা টাকা পাওয়ার আশা রয়েছে ২৩টি বিদেশি জাতীয় ক্যারিয়ারের কাছ থেকে। এদের কাছে পাওনা রয়েছে ৩০৮ কোটি টাকা।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, প্রভাবশালী একটি মহলের ছত্রচ্ছায়ায় বিটিসিএল কর্মকর্তাদের অসাধু একটি চক্রের ভিওআইপির বেপরোয়া অবৈধ কারবারের করণেই এই হতাশাজনক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিটিসিএলের প্রদর্শিত এ হিসাবের বাইরেও প্রতিদিন বৈদেশিক কল থেকে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
চুক্তি অনুসারে বৈদেশিক ইনকামিং কলের জন্য বিদেশি ক্যারিয়ারদের বিটিসিএলকে প্রতি মিনিট কলের জন্য তিন সেন্ট করে পরিশোধ করার কথা। বিটিসিএলের নীতিমালা অনুসারে বিদেশি ক্যারিয়ারদের সঙ্গে চুক্তির অন্যতম শর্ত হচ্ছে জামানত হিসেবে ইউএস ডলারে ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে হবে। কিন্তু অসাধু চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ওই নীতিমালার ব্যত্যয় ঘটিয়ে পরিকল্পিতভাবে স্থানীয় মুদ্রায় এবং কিছু ক্ষেত্রে ভুয়া ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে বিটিসিএলের সঙ্গে কথিত বিদেশি ক্যারিয়ারদের চুক্তির সুযোগ করে দেয়। নামে বিদেশি ক্যারিয়ার কিন্তু বাস্তবে দেশি ভিওআইপি কারবারিরাই ওই সব ক্যারিয়ারের চালক। অভিযোগ রয়েছে, এক বছর আগে আবেদন করে অনেক বিদেশি ক্যারিয়ার বিটিসিএলে সংযোগ না পেলেও প্রভাবশালী মহলের সুপারিশে কিছু ক্যারিয়ার রাতারাতি সংযোগ পেয়ে গেছে। কিছু ক্যারিয়ারকে সংযোগ দেওয়া হয়েছে ব্যাংক গ্যারান্টি ছাড়াই। আবার যেসব ক্যারিয়ার টাকা বাকি রেখে কেটে পড়ছে, রহস্যজনক কারণে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, 'আগামী মাস থেকে আমরা বিদেশি ক্যারিয়ারদের জন্য প্রি-পেইড ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছি। এতে ব্যাংক গ্যারান্টিরও প্রয়োজন হবে না। সব ধরনের ফাঁকিবাজি বন্ধ হয়ে যাবে।
বিটিসিএলের যে স্থাপনার দিকে সবার নজর : আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে বিটিসিএলের দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হচ্ছে মহাখালী/কড়াইলস্থ আইটিএক্স-৫ ও ৭ এবং মগবাজারের আইটিএক্স-৩ ও ৬। এর মধ্যে মহাখালী/কড়াইলস্থ আইটিএক্স দুটি ভিওআইপির অবৈধ কারবারিদের 'ছিটমহল' হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এই স্থাপনা মূলত পরিচালিত হচ্ছে একটি বিশেষ চক্রের মাধ্যমে। বিটিসিএল কর্তৃপক্ষের এবং দেশের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের এ স্থাপনায় কোন কর্তৃত্ব কাজ করছে না। এখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীদের একটি চক্র আন্তর্জাতিক এক্সচেঞ্জের কল রেকর্ড ইচ্ছামতো মুছে দিচ্ছেন বা কল বাইপাস করছেন। কলের প্রকৃত যে হিসাব বিটিসিএলের পাওয়ার কথা, তা পাচ্ছে না। প্রতিদিন কল ভলিউম প্রতিবেদন পাওয়ার কথা থাকলেও এই 'ছিটমহল' থেকে তা পাওয়া যাচ্ছে না। মাঝেমধ্যে পাওয়া যাচ্ছে গোঁজামিল প্রতিবেদন। অজুহাত দেখানো হচ্ছে যান্ত্রিক ও কারিগরি ত্রুটির।
বিটিসিএলের উদ্বিগ্ন কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, স্থানীয়ভাবে গ্রাহক পর্যায়ে কল রেকর্ড বা বিল মুছে ফেলার ঘটনা তাঁদের প্রতিষ্ঠানে নতুন নয়। তবে পার্থক্য হচ্ছে, স্থানীয় এসব কল রেকর্ড মুছে ফেললে সরকারের ক্ষতি লাখের অঙ্ক ছাড়ায় না। কিন্তু আন্তর্জাতিক কল রেকর্ড মুছে দিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে শত শত কোটি টাকার।

No comments

Powered by Blogger.