ধুনটের নদী-অবৈধ ড্রেজিংয়ের বিপদ
অনেকের কাছে মনে হতে পারে, নদ-নদীতে চর পড়লেই ভালো। তাতে বসত বাড়ি কিংবা চাষাবাদের জমি মেলে। এসব প্রাকৃতিক জলাধার শুকিয়ে গেলে তো আরও মওকা। এ ধারণা ভ্রান্ত প্রমাণিত হচ্ছে। পরিবেশ সচেতনতার যুগে ভিন্নভাবে দেখা হচ্ছে এ সম্পদকে। একইভাবে নদ-নদীর বালু তোলা নিয়েও ধারণা বদলাচ্ছে।
নির্মাণ কাজে বালুর প্রয়োজন পড়ে এবং তার বড় জোগানদাতা হচ্ছে নদ-নদী। সমুদ্র থেকেও বালু মেলে। এটা ঠিক যে, নদী থেকে বালু তোলা হলে সেখানে পানি ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়ে। কিন্তু অপরিকল্পিত ও নির্বিচারে বালু তোলা অনুচিত। বিশেষ করে যেখানে সেতু রয়েছে, সেখানে বালু তুলতে আপত্তি থাকে সেতুর ডিজাইনারের। কিন্তু এমনটি ঘটছে নিয়মিত। এ নিয়ে আপত্তি করলেও কাজ হচ্ছে না। বালু ব্যবসায়ীরা আঁতাত গড়ে তোলে প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। পরিবেশ এবং সেতু অন্যান্য স্থাপনার চেয়ে বড় হয়ে ওঠে ব্যক্তিগত অর্থনীতির স্বার্থ। শুক্রবার সমকালে 'অবৈধভাবে বালু উত্তোলন :ধুনটে ১০ গ্রাম ও কোটি টাকার সেতু হুমকির মুখে' শিরোনামের সংবাদে বলা হয়েছে, মাসের পর মাস ধরে অবৈধভাবে ড্রেজার ব্যবহার করে বালু তোলা হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগের পর একজনকে গ্রেফতার করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাতেও বালু ব্যবসায়ীরা নিবৃত্ত হয়নি। তারা স্থানীয়ভাবে ম্যানেজ করে চলার কৌশল শিখে গেছে। ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমকালকে বলেছেন, 'বাঙালি নদীর কয়েকটি পয়েন্টে বালু তোলার অভিযোগ শুনেছেন এবং খুব শিগগির ব্যবস্থা নেবেন।' সমকালের প্রতিবেদনের সঙ্গে যে ছবি ছাপা হয়েছে, তাতে দেখা যায়, ড্রেজার বসিয়ে অনেক লোক কাজ করছে। নদীর ওপরে বেড়েরবাড়ি সেতু এবং এ থেকে স্পষ্ট যে, এটি চলাচলের সড়কের সংযোগের জন্যই নির্মিত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কি এ পথে চলাচল নেই? নদীতে কী ঘটছে_ সেটা জানানোর মতো কোনো মেকানিজম কি তিনি গড়ে তোলেননি? এ ক্ষেত্রে উত্তর যদি না-সূচক হয়, তাহলে সরেজমিন পরিদর্শন এবং নামকাওয়াস্তে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার জন্য অপেক্ষায় থাকতে পারি বৈকি।
No comments