রাসায়নিক গুদামগুলো কি সরানো যায় না?-গণবিধ্বংসী মৃত্যুফাঁদ

ধন্য আমাদের সহনশীলতা! ঢাকার নিমতলীতে বীভৎসভাবে আগুনে পুড়ে ১১৭ জন মানুষের মৃত্যু থেকে আমরা কিছুই শিখিনি। সেই মর্মান্তিক ট্র্যাজেডির পর চার মাস পার হয়ে গেলেও সেখানকার রাসায়নিক গুদামগুলোর একটিও সরিয়ে নেওয়া হয়নি।


ব্যক্তি মানুষ খুন হলে খুনি হয় পালিয়ে বেড়ায়, নয়তো বিচারে শাস্তি পায়; কিন্তু গণমানুষের মৃত্যুর কারণগুলো উপেক্ষিতই হয়। নিমতলীর ঘটনার শিক্ষা এটাই বললে কি ভুল বলা হয়? নইলে এতগুলো মানুষের মৃত্যু এবং আরও অনেকের দগ্ধ হওয়া, সম্পদ ধ্বংসসহ অপূরণীয় ক্ষতি হলো, সেই গুদামগুলো যেমন ছিল, তেমনই থাকতে পারছে কীভাবে?
গত সোমবারের প্রথম আলোর খবরে জানা গেছে, ভ্রাম্যমাণ আদালত নিমতলীতে দুটি গুদামে অগ্নিনির্বাপণ-ব্যবস্থা না থাকার জন্য তিন লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। সেখানে অজস্র গুদাম, এর বেশির ভাগই অগ্নিনির্বাপণের সরঞ্জামহীন। এটা অবশ্যই জরিমানাযোগ্য অপরাধ। কিন্তু নিমতলীর বেলায় প্রশ্নটা গুদামে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা থাকা না-থাকা নিয়ে নয়; আবাসিক এলাকায় এ রকম দাহ্য রাসায়নিক পদার্থের গুদাম রাখা হবে কি হবে না, প্রশ্ন সেটাই। যেকোনো সময় বড় আকারের আগুন ছড়িয়ে পড়ার সব আশঙ্কা সেখানে বর্তমান। নিমতলী ট্র্যাজেডির পর এ বিষয়ে কোনো গড়িমসিই সহ্য করার কথা নয়। কিন্তু সরকার কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি।
কেবল নিমতলীর বেলায়ই নয়, যেকোনো আবাসিক এলাকায় বিপজ্জনক উপাদানের গুদাম থাকতে পারে না। এটা কোনো বিরাট চাওয়া নয়, ন্যূনতম জ্বলন্ত প্রয়োজন। এটুকু করার জন্য কোনো দক্ষযজ্ঞেরও প্রয়োজন পড়ে না। আশা করি, সরকার পুরান ঢাকাসহ সব জায়গায়ই আবাসিক এলাকায় বিপজ্জনক কারখানা, গুদাম উচ্ছেদ এবং মানব পরিবেশবিধ্বংসী তৎপরতা বন্ধে কঠোর হবে।

No comments

Powered by Blogger.