নদীর অন্তিম দশা-অবিলম্বে দখলমুক্ত করা হোক
টাঙ্গাইল শহরের বুকজুড়ে প্রবাহিত যে নদীটি, তার নাম লৌহজং। কয়েক দশক আগেও যে নদীতে যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক নৌকার ভিড় ছিল, সেটি এখন নামেই নদী। বাস্তবে সেটি একটি মৃত খালে পরিণত হয়েছে। ক্রমাগতভাবে দখল ও ভরাট হতে হতে এর অস্তিত্বই মুছে যেতে বসেছে।
সিএস রেকর্ডেও যে নদীর প্রস্থ ছিল দেড় শ ফুটের বেশি, তা এখন ১০ থেকে ২০ ফুটের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছে। বাড়িঘরের ময়লা তো পড়ছেই, সেই সঙ্গে হাজারখানেক বাড়ির ল্যাট্রিনের পাইপ নামিয়ে দেওয়া হয়েছে নদীতে। ফলে এলাকার পরিবেশও মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়েছে। নদী দখলমুক্ত করার কিংবা নদী বাঁচানোর কোনো উদ্যোগ তো নেই-ই, উপরন্তু দখলকারীদের অনেকেই জমি বরাদ্দ নিয়ে বাড়িঘর করছে। আমরা যে কত বড় অপশাসনের মধ্যে আছি, নদীর জায়গা বরাদ্দ দেওয়াই তার প্রমাণ।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের অস্তিত্বের জন্যই নদী বাঁচানো প্রয়োজন, নদী না বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে না- প্রতিনিয়ত এমন কত কথাই না আমরা শুনে আসছি। নদী মরে যাওয়ার অনেক কুফলও আমরা দেখতে পাচ্ছি। সর্বোচ্চ আদালত থেকে বেশ কিছু অতিজরুরি নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছিল ব্রিটিশ আমলে সম্পাদিত সিএস রেকর্ড অনুযায়ী নদীর সীমানা নির্ধারণ করা। কিন্তু কে কার কথা শোনে! যার দায়িত্ব ছিল কথা শোনানোর, সেই সরকারও প্রকারান্তরে নদী দখলে ইন্ধন জোগাচ্ছে। তা না হলে নদীর জায়গা ব্যক্তিকে বাড়িঘর করার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় কিভাবে? নদী না বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে না, এর চেয়ে বড় সত্য আর নেই। কৃষিতে ধস নামবে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নামতে নামতে মরুকরণ প্রক্রিয়া আমাদের ধ্বংস করবে। উপর্যুপরি বন্যা ও ভাঙনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কেবল বাড়তেই থাকবে। আমাদের সব রকম উন্নয়ন প্রচেষ্টা থমকে যাবে। সেই নদী নিয়ে সীমাহীন উদাসীনতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বর্তমান সরকার দেড় ডজনের মতো ড্রেজার সংগ্রহের যে উদ্যোগ নিয়েছিল, তাতে আমরা কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছিলাম। কিন্তু সে আশাও স্থায়ী হয়নি। বাস্তবতা আমাদের কেবল হতাশার অন্ধকারেই নিক্ষেপ করছে। নদী খনন অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ একটি কাজ। বাংলাদেশের মতো একটি গরিব দেশের পক্ষে এত বিপুল ব্যয় নির্বাহ করা অনেক কঠিন কাজ। প্রধান প্রধান নদীর ড্রেজিং কবে নাগাদ সম্ভব হবে, তাও আমরা বলতে পারছি না। সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা হাজারখানেক নদী খনন করা তো রীতিমতো অসম্ভব ব্যাপার। সে কারণে নদী খননের চেয়ে অনেক সহজ কাজ ছিল নদীগুলো আর যাতে দখল ও ভরাট করা না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা। কিন্তু অতীতের সরকারগুলোর মতো বর্তমান সরকারও এ ব্যাপারে পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা চাই, নদী-খাল-জলাশয়গুলো যেটি যে অবস্থায় আছে সেটিকে প্রথমে সেভাবে রক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করা হোক। তারপর হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী সেগুলোর সীমানা নির্ধারণ, পুনরুদ্ধার ও সংস্কারের ব্যবস্থা করা হোক। একই সঙ্গে নদীর যেসব জায়গা লিজ দেওয়া হয়েছে, সেসব লিজ বাতিল করতে হবে। আমরা আমাদের নিজেদের প্রকৃতি ও প্রতিবেশ ব্যবস্থায় সুস্থভাবে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা চাই।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের অস্তিত্বের জন্যই নদী বাঁচানো প্রয়োজন, নদী না বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে না- প্রতিনিয়ত এমন কত কথাই না আমরা শুনে আসছি। নদী মরে যাওয়ার অনেক কুফলও আমরা দেখতে পাচ্ছি। সর্বোচ্চ আদালত থেকে বেশ কিছু অতিজরুরি নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছিল ব্রিটিশ আমলে সম্পাদিত সিএস রেকর্ড অনুযায়ী নদীর সীমানা নির্ধারণ করা। কিন্তু কে কার কথা শোনে! যার দায়িত্ব ছিল কথা শোনানোর, সেই সরকারও প্রকারান্তরে নদী দখলে ইন্ধন জোগাচ্ছে। তা না হলে নদীর জায়গা ব্যক্তিকে বাড়িঘর করার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় কিভাবে? নদী না বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে না, এর চেয়ে বড় সত্য আর নেই। কৃষিতে ধস নামবে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নামতে নামতে মরুকরণ প্রক্রিয়া আমাদের ধ্বংস করবে। উপর্যুপরি বন্যা ও ভাঙনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কেবল বাড়তেই থাকবে। আমাদের সব রকম উন্নয়ন প্রচেষ্টা থমকে যাবে। সেই নদী নিয়ে সীমাহীন উদাসীনতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বর্তমান সরকার দেড় ডজনের মতো ড্রেজার সংগ্রহের যে উদ্যোগ নিয়েছিল, তাতে আমরা কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছিলাম। কিন্তু সে আশাও স্থায়ী হয়নি। বাস্তবতা আমাদের কেবল হতাশার অন্ধকারেই নিক্ষেপ করছে। নদী খনন অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ একটি কাজ। বাংলাদেশের মতো একটি গরিব দেশের পক্ষে এত বিপুল ব্যয় নির্বাহ করা অনেক কঠিন কাজ। প্রধান প্রধান নদীর ড্রেজিং কবে নাগাদ সম্ভব হবে, তাও আমরা বলতে পারছি না। সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা হাজারখানেক নদী খনন করা তো রীতিমতো অসম্ভব ব্যাপার। সে কারণে নদী খননের চেয়ে অনেক সহজ কাজ ছিল নদীগুলো আর যাতে দখল ও ভরাট করা না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা। কিন্তু অতীতের সরকারগুলোর মতো বর্তমান সরকারও এ ব্যাপারে পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা চাই, নদী-খাল-জলাশয়গুলো যেটি যে অবস্থায় আছে সেটিকে প্রথমে সেভাবে রক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করা হোক। তারপর হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী সেগুলোর সীমানা নির্ধারণ, পুনরুদ্ধার ও সংস্কারের ব্যবস্থা করা হোক। একই সঙ্গে নদীর যেসব জায়গা লিজ দেওয়া হয়েছে, সেসব লিজ বাতিল করতে হবে। আমরা আমাদের নিজেদের প্রকৃতি ও প্রতিবেশ ব্যবস্থায় সুস্থভাবে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা চাই।
No comments