নদীর সেতু-অপরিণামদর্শী কাজের ফল
বুধবার সমকালে লোকালয় পৃষ্ঠায় একটি সংবাদ শিরোনাম ছিল :'পুনর্স্থাপনের সপ্তাহ ব্যবধানে ভেঙে পড়ল বেইলি সেতু'। এর সঙ্গে প্রকাশিত ছবিটি নিদারুণ উদ্বেগের_ সেতুতে উঠে পড়া একটি ট্রাক সেতুসহ নদীতে ভেঙে পড়েছে। এ ঘটনা ১ মের। এর আগে ২৪ এপ্রিল এবং ২০ মার্চ দুই দফায় সেতুটি ভেঙে পড়ে।
বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত সেতুটিতে অতিরিক্ত মালবোঝাই করা ট্রাক উঠে পড়াতেই এমন বিপত্তি। কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছিল_ পাঁচ টনের বেশি মালবাহী ট্রাক সেতুতে উঠতে পারবে না। কিন্তু তা মানা হয়নি। আইন না মানার পরিণতি কখনও শুভ হয় না। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে দু'বার দুর্ঘটনা ঘটলেও ট্রাকচালকরা সেটা মানতে চায়নি। আইন না মানলে তা মানানোর জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা সড়কপথের কর্মীদের তৎপরতা থাকে। এ ক্ষেত্রে তার ব্যত্যয় ঘটেছে। ২৫-৩০ টন মালপত্র নিয়ে ট্রাক উঠে পড়েছে সেতুতে। কিন্তু আইনের প্রয়োগ ঘটেনি। সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ। এখানে মালবাহী ভারী ট্রাক চলবে, এটাই স্বাভাবিক। চেলাখালী নদীর সেতুটি পুরনো। এটি পাকাপোক্ত করে নির্মাণের দাবি বহুদিনের, তবে তা রাতারাতি পূরণ হওয়ার নয়। ট্রাকচালকদের এটা না বোঝার কথা নয়। কিন্তু এখন বিপদ হবে অনেকের। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেছেন, এ সড়কে যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনের কাজ দারুণভাবে ব্যাহত হবে। এর দায় কে বহন করবে? কতদিন দুর্ভোগ চলবে? কথায় বলে, ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না। সরকার এখন সংশ্লিষ্ট ট্রাকচালক ও মালিকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে পারে। তবে তাতে সাধারণের দুর্ভোগ কমবে না। এ কারণে দ্রুত সেতুটি মেরামতের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কাজের মান সর্বোত্তম হওয়া বাঞ্ছনীয়। একই সঙ্গে নতুন সেতু নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত যেন চালকরা নির্ধারিত ওজনসীমার বেশি মাল নিয়ে ট্রাক না চালায় সেটাও নিশ্চিত করা চাই। শেরপুর সড়ক বিভাগ ৩০ টন ক্ষমতার নতুন একটি বেইলি সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করেছে। এটি বাস্তবায়ন করাই সর্বোত্তম হবে বলে আমরা মনে করি।
No comments