ফিরিয়ে আনা হচ্ছে ভারতে সমাহিত মুক্তিযোদ্ধাদের দেহাবশেষ-প্রতিনিধিদলে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ নেই! by আশরাফুল হক রাজীব
দেশের জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়ে ভারতের মাটিতে সমাহিত হওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের দেহাবশেষ আনা হচ্ছে দেশে। তাঁদের দেহাবশেষ নতুন করে সমাহিত করা হবে দেশের মাটিতে। একই সঙ্গে বর্ণিল আলোকচ্ছটায় নতুন সমাধিস্থলে এই বীরসেনাদের জীবন উৎসর্গ করার কাহিনী উপস্থাপন করা হবে।
ফুলে ফুলে শোভিত হবে তাঁদের সমাধি রাষ্ট্রীয় বিশেষ দিনগুলোয়। এ লক্ষ্যে সরকারের উদ্যোগও অনেকটা এগিয়েছে। ইতিমধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল কয়েক দফা ভারত সফর করেছে।
জানা গেছে, ভারতে সমাহিত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে চার সদস্যের প্রতিনিধিদলটি এখন ভারতের শিলংয়ে অবস্থান করছে। এর আগে তারা কলকাতা, আগরতলা গিয়েছে। কৌশল নির্ধারণের জন্য গিয়েছিল নয়াদিল্লিও। দলটিতে কোনো ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ না থাকায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, দ্বিতীয় দফায় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ পাঠানোর প্রয়োজন হবে বলে, মহতী এই উদ্যোগটির বাস্তবায়নে বিলম্বের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
ভারত সফরকারী প্রতিনিধিদলটিতে রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, লেখক ও গবেষক কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক; মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. গোলাম মোস্তফা, উপসচিব মো. এনামুল কাদের খান ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর একান্ত সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল। গত ১ জুন তাঁরা ভারতে যান। আগামী সোমবার তাঁদের ফেরার কথা।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া বীর সেনানীদের দেহাবশেষ ভারত থেকে ফিরিয়ে আনতে একটি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার লক্ষ্যেই প্রতিনিধিদলটি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অবসরপ্রাপ্ত তাজুল ইসলাম। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রতিনিধিদলটি ভারত সীমান্তে এবং ভারতের অভ্যন্তরে সমাহিত শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধীস্থলগুলো চিহ্নিতকরণ এবং তাঁদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার বিষয়টি ইতিমধ্যে দুই দেশের সরকারপ্রধানের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। গত বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় বিষয়টি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা কমিটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়। এর আগে ২০০৬ সালের ২৫ জুন চারদলীয় জোট সরকার পাকিস্তানের করাচি থেকে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনে। ২০০৭ সালের ১০ ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভারত থেকে ফিরিয়ে আনে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের মরদেহ। তাঁদের দেহাবশেষ নতুন করে মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস অ্যান্ড ফাইন্ডিং কমিটির সভাপতি ড. এম এ হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ অবশ্যই ভালো। কিন্তু প্রশ্ন হলো- প্রতিনিধিদলে কোনো ফরেনসিক বিশেষজ্ঞকে কেন রাখা হলো না। শুরু থেকেই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞকে রাখা উচিত ছিল। এতে সরকারের খরচ বেঁচে যেত। আর অনেক প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ হতো। বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেল। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদলে না রেখে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি আনাড়ি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মিজানুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, যে দলটি ভারতে পাঠানো হয়েছে সেখানে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ রাখা হয়নি প্রাথমিক দল বলে। পরে যখন দেহাবশেষ উত্তোলনের বিষয় আসবে, তখন অবশ্যই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ থাকবে। তিনি জানান, যাঁদের কবর ভারতে সুরক্ষিত রয়েছে, তাঁদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন না-ও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে যাঁদের কবর অরক্ষিত ও অযত্নে পড়ে আছে তাঁদেরটা। নোম্যান্সল্যান্ডে থাকা দেহাবশেষ অগ্রাধিকার পাবে বলেও তিনি জানান।
মুক্তিযোদ্ধা শাহরিয়ার কবীর বলেন, ভারতে সমাহিত মুক্তিযোদ্ধাদের এসব সমাধির প্রতিটির সঙ্গে করুণ কাহিনী জড়িয়ে আছে। শহীদ এসব মুক্তিযোদ্ধার অনেকে চিকিৎসারত অবস্থায় ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে মারা গেছেন। অনেকে যুদ্ধক্ষেত্রে মারা গেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে শহীদ হওয়া সহযোদ্ধাকে বহন করে ভারতে নিয়ে কবর দেওয়া হয়েছে। ভারতে কবর সংরক্ষণ করা হয় না। তাই শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের দেহাবশেষ দেশে ফিরিয়ে এনে সমাহিত করতে পারলে তা জাতির জন্য একটি বড় কাজ হবে।
জানা গেছে, ভারতে সমাহিত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে চার সদস্যের প্রতিনিধিদলটি এখন ভারতের শিলংয়ে অবস্থান করছে। এর আগে তারা কলকাতা, আগরতলা গিয়েছে। কৌশল নির্ধারণের জন্য গিয়েছিল নয়াদিল্লিও। দলটিতে কোনো ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ না থাকায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, দ্বিতীয় দফায় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ পাঠানোর প্রয়োজন হবে বলে, মহতী এই উদ্যোগটির বাস্তবায়নে বিলম্বের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
ভারত সফরকারী প্রতিনিধিদলটিতে রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, লেখক ও গবেষক কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক; মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. গোলাম মোস্তফা, উপসচিব মো. এনামুল কাদের খান ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর একান্ত সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল। গত ১ জুন তাঁরা ভারতে যান। আগামী সোমবার তাঁদের ফেরার কথা।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া বীর সেনানীদের দেহাবশেষ ভারত থেকে ফিরিয়ে আনতে একটি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার লক্ষ্যেই প্রতিনিধিদলটি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অবসরপ্রাপ্ত তাজুল ইসলাম। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রতিনিধিদলটি ভারত সীমান্তে এবং ভারতের অভ্যন্তরে সমাহিত শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধীস্থলগুলো চিহ্নিতকরণ এবং তাঁদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার বিষয়টি ইতিমধ্যে দুই দেশের সরকারপ্রধানের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। গত বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় বিষয়টি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা কমিটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়। এর আগে ২০০৬ সালের ২৫ জুন চারদলীয় জোট সরকার পাকিস্তানের করাচি থেকে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনে। ২০০৭ সালের ১০ ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভারত থেকে ফিরিয়ে আনে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের মরদেহ। তাঁদের দেহাবশেষ নতুন করে মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস অ্যান্ড ফাইন্ডিং কমিটির সভাপতি ড. এম এ হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ অবশ্যই ভালো। কিন্তু প্রশ্ন হলো- প্রতিনিধিদলে কোনো ফরেনসিক বিশেষজ্ঞকে কেন রাখা হলো না। শুরু থেকেই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞকে রাখা উচিত ছিল। এতে সরকারের খরচ বেঁচে যেত। আর অনেক প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ হতো। বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেল। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদলে না রেখে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি আনাড়ি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মিজানুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, যে দলটি ভারতে পাঠানো হয়েছে সেখানে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ রাখা হয়নি প্রাথমিক দল বলে। পরে যখন দেহাবশেষ উত্তোলনের বিষয় আসবে, তখন অবশ্যই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ থাকবে। তিনি জানান, যাঁদের কবর ভারতে সুরক্ষিত রয়েছে, তাঁদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন না-ও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে যাঁদের কবর অরক্ষিত ও অযত্নে পড়ে আছে তাঁদেরটা। নোম্যান্সল্যান্ডে থাকা দেহাবশেষ অগ্রাধিকার পাবে বলেও তিনি জানান।
মুক্তিযোদ্ধা শাহরিয়ার কবীর বলেন, ভারতে সমাহিত মুক্তিযোদ্ধাদের এসব সমাধির প্রতিটির সঙ্গে করুণ কাহিনী জড়িয়ে আছে। শহীদ এসব মুক্তিযোদ্ধার অনেকে চিকিৎসারত অবস্থায় ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে মারা গেছেন। অনেকে যুদ্ধক্ষেত্রে মারা গেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে শহীদ হওয়া সহযোদ্ধাকে বহন করে ভারতে নিয়ে কবর দেওয়া হয়েছে। ভারতে কবর সংরক্ষণ করা হয় না। তাই শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের দেহাবশেষ দেশে ফিরিয়ে এনে সমাহিত করতে পারলে তা জাতির জন্য একটি বড় কাজ হবে।
No comments