সড়ক ভবনে গুলি-অবাধ দুর্নীতিই নষ্টের গোড়া
টেন্ডারবাজদের দৌরাত্ম্য কতটা বেড়েছে মঙ্গলবার রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সড়ক ভবনে এলোপাতাড়ি গোলাগুলি তার খণ্ডচিত্র। সরকার কিংবা কর্তা বদলের পর বিভিন্ন খাতের সুবিধাভোগীদের মধ্যে আধিপত্যের লড়াই নতুন নয়। কিন্তু এভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে, মোবাইল ফোন মেসেজের মাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে হামলার নজির আছে কি?
সন্দেহ নেই যে, হামলাকারীরা সরকার সমর্থক শ্রমিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলেই এতটা সাহস পেয়েছে। আমরা মনে করি, ক্ষমতাসীন দলের উচিত হবে অবিলম্বে সন্ত্রাসী এই গোষ্ঠীর সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক প্রকাশ্য ছিন্ন করা। স্বার্থে আঘাত লেগেছে বলে যারা আরেকটি সহ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর গুলি চালাতে পেরেছে, একই ধরনের পরিস্থিতিতে তাদের কাছে কেউই নিরাপদ থাকতে পারে না। সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্যও এমন অস্ত্রবাজি উদ্বেগজনক। আমরা আশা করি, অবিলম্বে দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনা হবে। কারা গোলাগুলির সঙ্গে যুক্ত ছিল, প্রশাসন আন্তরিক হলে তা শনাক্ত করা কঠিন নয়। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রে তাদের নাম-পরিচয়ও ছাপা হয়েছে। অভিযুক্তদের একজন খোদ সড়ক ভবনের অফিস সহকারী বলে জানা যাচ্ছে। জানা যাচ্ছে, নিম্নশ্রেণীর এই কর্মচারীর উচ্চবিত্ত ও বৈভবের কথা। তার আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার বিষয়টি দুদকসহ সংশ্লিষ্টদের চোখে কেন পড়েনি আমাদের বোধগম্য নয়। এখন তারা তৎপর হবেন বলে প্রত্যাশা। দেখা যাচ্ছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগও তাদের এই অফিস সহকারীকে দাফতরিক কাজে নিয়োজিত রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। অবশ্য কর্মচারী যখন রাজনীতির কল্যাণে কর্মকর্তার দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হয়ে দাঁড়ায়, তখন কী-ইবা করার থাকে! এই অরাজকতা আর চলতে দেওয়া যায় না। আধিপত্য বিস্তারের লড়াই কেন শুরু হয়, সুশাসনের প্রয়োজনে তাও খতিয়ে দেখার অবকাশ নেই। সড়ক ভবন যে কারও কারও কাছে টাকার খনি, সেটা কে না জানে? সেখানে বহুমাত্রিক দুর্নীতির অবারিত সুযোগ বন্ধ না করা গেলে লড়াই ও রক্তপাতের ঝুঁকি থেকেই যাবে। তার থেকেও বড় কথা হচ্ছে, জনগণের টাকা এভাবে বার ভূতের ভোগ ও কাজিয়ার রসদ হতে পারে না।
No comments