চরাচর-হারিয়ে যাচ্ছে কালমেঘ by আলম শাইন
স্বল্প আয়তনের এ দেশটিতে প্রচুর ঔষধি গাছগাছড়া জন্মে থাকে। যার অধিকাংশ মাঠে-ঘাটে কিংবা বনবাদাড়ে অবহেলায়-অযত্নে বেড়ে ওঠে। কোনো ধরনের পরিচর্যা না থাকায় এসব ভেষজ উদ্ভিদ দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে। যেমন হারিয়ে যেতে বসেছে কালমেঘ নামের ভেষজ উদ্ভিদটি।
কালমেঘের আয়ুষ্কাল মাত্র এক বছর। কোনো প্রকার চাষাবাদ ছাড়াই পতিত জমিতে এ গাছ জন্মে থাকে। গোলাপি ছোপযুক্ত সাদা পুষ্পধারী এ গাছটি আকৃতিতে খুব বেশি বড় নয়। মাত্র দুই ফুট উঁচু হয়। প্রকৃতি গাছটিকে রক্ষা করতে মূল, কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফলে তেতো স্বাদ লেপে দিয়েছে। ফলে গরু, ছাগল কালমেঘ নামের উদ্ভিদটিকে মোটেই পছন্দ করে না। গাছটি নিজেই নিজেকে গবাদিপশুর কবল থেকে রক্ষা করতে পারলেও মানুষের হাত থেকে তার নিস্তার নেই। কারণ কালমেঘ একটি বর্ষজীবী উদ্ভিদ। পতিত জমিতেই যার জন্ম। বাংলাদেশে বছরব্যাপী পতিত জমি খুব কমই পড়ে থাকে। এ জমি কোনো না কোনোভাবে মানুষের হাতে চাষাবাদ অথবা সংস্কার হতে দেখা যায়। ফলে কালমেঘ তার আয়ুষ্কাল পূর্ণ করতে বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং খুব দ্রুতই বংশবিস্তার রোধ হয়ে যায়। অথচ একটু সময় পেলেই গাছটার ফল পেকে ফেটে পড়ত ধরণীতে। আর সেখান থেকে গজিয়ে উঠত উপকারী এ বন্ধু গাছটির শত-হাজার বংশধর। সে সুযোগটি চিরতরে বন্ধ করে দিচ্ছে একমাত্র মানুষই। সোজা কথা, কালমেঘ মানুষকে বাঁচিয়ে রাখলেও মানুষ তাকে বাঁচতে দিচ্ছে না।
ইতিপূর্বে চিকিৎসাশাস্ত্রে কালমেঘের ব্যবহার আয়ুর্বেদে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে তা ব্যবহৃত হচ্ছে অ্যালোপ্যাথি ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায়। শুধু তা-ই নয়, গ্রামগঞ্জের কবিরাজরা এখনো চিকিৎসায় প্রচুর কালমেঘের ব্যবহার করে থাকেন। কারো পেটে কৃমির উৎপাত হলে কালমেঘের টাটকা পাতার রস চিনির সঙ্গে মিশিয়ে সেবন করতে দেন। এ ছাড়া যকৃতের রোগে, বহুমূত্র, পেটফাঁপা, অগি্নমান্দ্য, অজীর্ণ, রক্তামাশয়, উদরাময় ও জ্বরে কালমেঘের পাতার রস সকাল-বিকেল সেবন করতে দেন। নিয়ম করে সাত দিন খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে আধুনিক বিশ্বেও কালমেঘের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়নি বরং এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। কাজেই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত কালমেঘ নামের এ ভেষজ উদ্ভিদকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করা। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষের দ্বারে দ্বারে কালমেঘের গুণাগুণ বর্ণনা করে গাছটিকে ভালোমতো চিনিয়ে সচেতন করা কর্তব্য মনে করি। অবশ্য এ কর্তব্য কাজটি প্রচার করতে হবে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা মন্ত্রণালয় থেকে। প্রয়োজনে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে মানুষকে। তাহলে হয়তো কালমেঘ এ যাত্রায় রক্ষা পাবে।
আলম শাইন
ইতিপূর্বে চিকিৎসাশাস্ত্রে কালমেঘের ব্যবহার আয়ুর্বেদে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে তা ব্যবহৃত হচ্ছে অ্যালোপ্যাথি ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায়। শুধু তা-ই নয়, গ্রামগঞ্জের কবিরাজরা এখনো চিকিৎসায় প্রচুর কালমেঘের ব্যবহার করে থাকেন। কারো পেটে কৃমির উৎপাত হলে কালমেঘের টাটকা পাতার রস চিনির সঙ্গে মিশিয়ে সেবন করতে দেন। এ ছাড়া যকৃতের রোগে, বহুমূত্র, পেটফাঁপা, অগি্নমান্দ্য, অজীর্ণ, রক্তামাশয়, উদরাময় ও জ্বরে কালমেঘের পাতার রস সকাল-বিকেল সেবন করতে দেন। নিয়ম করে সাত দিন খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে আধুনিক বিশ্বেও কালমেঘের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়নি বরং এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। কাজেই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত কালমেঘ নামের এ ভেষজ উদ্ভিদকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করা। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষের দ্বারে দ্বারে কালমেঘের গুণাগুণ বর্ণনা করে গাছটিকে ভালোমতো চিনিয়ে সচেতন করা কর্তব্য মনে করি। অবশ্য এ কর্তব্য কাজটি প্রচার করতে হবে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা মন্ত্রণালয় থেকে। প্রয়োজনে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে মানুষকে। তাহলে হয়তো কালমেঘ এ যাত্রায় রক্ষা পাবে।
আলম শাইন
No comments