ফুলবাড়ী-বড়পুকুরিয়ায় লিফলেট বিতরণ-এশিয়া এনার্জির বিরুদ্ধে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনে গোপন তৎপরতার অভিযোগ by আরিফুজ্জামান তুহিন
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী ও বড়পুকুরিয়ায় গোপনে লিফলেট বিতরণ তৎপরতা শুরু হয়েছে। তবে সরাসরি কারো হাতে নয়, লিফলেটের বান্ডিল রাতের আঁধারে ফেলে রাখা হচ্ছে স্কুলের বারান্দা, রাস্তার মোড়, মসজিদের বারান্দাসহ লোকজনের আনাগোনা রয়েছে এমন জায়গাগুলোতে। খনি থেকে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের পক্ষে জনমত গড়তে এশিয়া এনার্জি এ তৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ফুলবাড়ী খনি থেকে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের পক্ষে বরাবরই সক্রিয় এশিয়া এনার্জি। এ জন্য তারা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দৌড়ঝাঁপ করছে। অভিযোগ উঠেছে, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে দেনদরবারের পাশাপাশি খনি এলাকায় গোপনে একাধিক লিফলেট বিতরণ করছে প্রতিষ্ঠানটি। দুই মাস ধরে রাতের আঁধারে অত্যন্ত গোপনে তারা স্থানীয় নিজস্ব লোকজন দিয়ে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে খনি উন্নয়ন করতে 'প্রস্তাবিত খনি এলাকার সাধারণ জনগণ' নামে লিফলেট বিতরণ করে চলেছে। বড়পুকুরিয়ায়ও একই ধরনের বক্তব্যসংবলিত লিফলেট বিতরণ চলছে। এ নিয়ে এলাকায় শুরু হয়েছে নানামুখী গুঞ্জন।
ফুলবাড়ীর সাধারণ মানুষ জানায়, দেড় মাস আগে এক সকালে 'দিনাজপুর ফুলবাড়ী কয়লা খনি এলাকার জনস্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ' শিরোনামে স্কুল, মসজিদ ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে লিফলেটের বান্ডিল পাওয়া যায়। লিফলেটে বলা হয়েছে, 'প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে আমরা বলতে চাই, আপনি আপনার সরকারের সিদ্ধান্তে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে খনি উত্তোলনের কথা প্রকাশ করেছেন। তাই আমরা এখন নির্দ্বিধায় জানাতে চাই যে সরকার সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রীকে দিনাজপুর ফুলবাড়ীর জনসাধারণের পক্ষ থেকে জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন। সরকার উন্মুক্ত পদ্ধতিতে চলতি বছরের শেষের দিকে খনি চালুর কথা ভাবছে। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে যে খনিগুলোতে কাজ শুরু হবে, তার মধ্যে ফুলবাড়ী কয়লা খনি অন্যতম। অবশ্য বড়পুকুরিয়ার পরবর্তী কার্যক্রম ও নবাবগঞ্জ পুকুরপাড় একই পদ্ধতিতে চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।'
লিফলেটে ছয়টি দাবিও তুলে ধরা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'দেশের স্বার্র্থে উন্মুক্ত খনি করতে এখানকার বাসিন্দাদের বাজার মূল্যে জমি ও বাড়ির দাম পরিশোধ, দরিদ্র পরিবারের একজন করে চাকরির নিশ্চয়তা এবং পুনর্বাসনের জন্য প্রস্তাবিত নতুন এলাকায় সব সুযোগ-সুবিধা করে দিলে আগামীতে এখানে আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।'
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতা এবং ফুলবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবলু গতকাল মঙ্গলবার টেলিফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, এশিয়া এনার্জি তাদের নিজস্ব কিছু দালাল দিয়ে রাতের আঁধারে লিফলেটের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। জনগণ এশিয়া এনার্জিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ কারণে তারা দিনের বেলা প্রকাশ্যে আসছে না। ফুলবাড়ীর মতো বড়পুকুরিয়া এলাকায়ও একই কায়দায় লিফলেট দিচ্ছে তারা। তিনি বলেন, 'আমরা উন্নয়নের বিরোধী নই; কিন্তু উন্মুক্ত খনি কোনোভাবেই আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে হয় না।'
প্রথম দফা লিফলেট বিতরণের পর গত ৬ মে একই নামে আবারও লিফলেট বিতরণ করা হয়। দ্বিতীয় লিফলেটটি দিনের বেলায় একটি মাইক্রোবাস থেকে ফুলবাড়ী বাজারে ফেলে যাওয়া হয়। এই লিফলেটে জাতীয় তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য রয়েছে। বলা হয়েছে, 'জাতীয় কমিটিকে অতি দ্রুততার সঙ্গে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে। তারা এলাকার জনগণের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে প্রতি সপ্তাহে অবৈধভাবে যেখানে সেখানে সভা-সমাবেশ চালাচ্ছে। এতে করে এলাকার জীবনযাত্রার মান ব্যাহত হচ্ছে।' লিফলেটের ৯ নম্বর দাবিতে বলা হয়েছে, 'বিদ্যুতের কারণে দেশে কৃষিকাজ একেবারেই অচল হয়ে পড়েছে। তার ওপর প্রতিবছর দুই-তিনবার করে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এ অবস্থায় ফুলবাড়ী খনি এলাকার জনগণ খনির কার্যক্রম শুরু করতে সরকারকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছে। সরকার খনির কার্যক্রম শুরু করলে আমরা কোনো বাধা দেব না।' অভিযোগ রয়েছে, বড়পুকুরিয়ায়ও একইভাবে উন্মুক্ত খনির পক্ষে লিফলেট বিতরণ করছে এশিয়া এনার্জি।
এ বিষয়ে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার সদস্য শাহরিয়ার সানি গতকাল টেলিফোনে জানান, একটি মাইক্রোবাসে করে দ্বিতীয় লিফলেট বিতরণ করা হয়। গাড়িটি বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিংয়ের। এটির গায়ে চীনা ভাষায় লেখা ছিল। দ্রুত স্থান ত্যাগ করায় মাইক্রোবাসটি আটক করা যায়নি।
স্থানীয় একাধিক সূত্র অভিযোগ করে, এশিয়া এনার্জি শুধু লিফলেট বিতরণ নয়, ফুলবাড়ী খনি অঞ্চলে তাদের দুটি বন্ধ থাকা অফিসে পাঁচজন দারোয়ান নিয়োগ করেছে। গভীর রাতে মাঝেমধ্যে এসব অফিসে লোকজন যাতায়াত করে। রাতের আঁধারে লিফলেট বিতরণের দায়ে এলাকাবাসী যেকোনো সময় এশিয়া এনার্জির স্থানীয় কার্যালয়ে হামলা চালাতে পারে।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে মতামত জানতে এশিয়া এনার্জি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করা হলেও সাড়া মেলেনি। একাধিকবার লিখিতভাবে প্রশ্ন দেওয়া হলেও প্রতিষ্ঠানটি সাড়া দেয়নি। এ ব্যাপারে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে প্রতিষ্ঠানটির তথ্য কর্মকর্তা মাহামুদ হাফিজ সরাসরি তাঁদের কার্যালয়ে যেতে বলেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, 'এ ব্যাপারে তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। আর আমরা মিডিয়া ফেস করি না।'
এদিকে গত ২৩ এপ্রিল এশিয়া এনার্জি করপোরেশনের মূল কম্পানি গ্লোবাল কোল ম্যানেজমেন্ট (জিসিএম) রিসোর্সেস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী কয়লা খনি উন্নয়নের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নতুন করে সরকারের সঙ্গে তারা আলাপ-আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে। এ জন্য কম্পানির ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনাসহ নতুন করে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এশিয়া এনার্জির নতুন উদ্যোগ : সম্প্রতি দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত জিসিএমের বোর্ড সভায় চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এশিয়া এনার্জির (বাংলাদেশ) চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী গ্যারি লাইকে একই সঙ্গে জিসিএমের নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, জিসিএম বোর্ড বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এশিয়া এনার্জির অব্যাহত কার্যক্রম পর্যালোচনা করে বোর্ডে এ পরিবর্তন এনেছে। জিসিএম এখন সরকারের সঙ্গে আলোচনায় চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দিতে চায়। সেগুলো হলো- ফুলবাড়ী খনির কয়লা দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে চার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফুলবাড়ী খনির কয়লার দাম আমদানি করা কয়লার চেয়ে কম পড়বে, খনিমুখে বিদ্যুৎকেন্দ্র করলে উৎপাদন অত্যন্ত সহজ হবে এবং দেশে কয়লা উত্তোলনে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান, বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধি ও রাষ্ট্রীয় আয়-ব্যয়ে ভারসাম্য আসবে।
এদিকে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির একটি অংশে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের সক্রিয় চিন্তা করছে সরকার। এ জন্য ইতিমধ্যে খনি কর্তৃপক্ষ একটি প্রস্তাবনা সরকারের কাছে জমা দিয়েছে।
সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৬ সাল নাগাদ সাত হাজার এবং ২০৩০ সালে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে। এর মধ্যে প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেশের কয়লায় উৎপাদন করা হবে।
ফুলবাড়ীর সাধারণ মানুষ জানায়, দেড় মাস আগে এক সকালে 'দিনাজপুর ফুলবাড়ী কয়লা খনি এলাকার জনস্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ' শিরোনামে স্কুল, মসজিদ ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে লিফলেটের বান্ডিল পাওয়া যায়। লিফলেটে বলা হয়েছে, 'প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে আমরা বলতে চাই, আপনি আপনার সরকারের সিদ্ধান্তে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে খনি উত্তোলনের কথা প্রকাশ করেছেন। তাই আমরা এখন নির্দ্বিধায় জানাতে চাই যে সরকার সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রীকে দিনাজপুর ফুলবাড়ীর জনসাধারণের পক্ষ থেকে জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন। সরকার উন্মুক্ত পদ্ধতিতে চলতি বছরের শেষের দিকে খনি চালুর কথা ভাবছে। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে যে খনিগুলোতে কাজ শুরু হবে, তার মধ্যে ফুলবাড়ী কয়লা খনি অন্যতম। অবশ্য বড়পুকুরিয়ার পরবর্তী কার্যক্রম ও নবাবগঞ্জ পুকুরপাড় একই পদ্ধতিতে চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।'
লিফলেটে ছয়টি দাবিও তুলে ধরা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'দেশের স্বার্র্থে উন্মুক্ত খনি করতে এখানকার বাসিন্দাদের বাজার মূল্যে জমি ও বাড়ির দাম পরিশোধ, দরিদ্র পরিবারের একজন করে চাকরির নিশ্চয়তা এবং পুনর্বাসনের জন্য প্রস্তাবিত নতুন এলাকায় সব সুযোগ-সুবিধা করে দিলে আগামীতে এখানে আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।'
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতা এবং ফুলবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবলু গতকাল মঙ্গলবার টেলিফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, এশিয়া এনার্জি তাদের নিজস্ব কিছু দালাল দিয়ে রাতের আঁধারে লিফলেটের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। জনগণ এশিয়া এনার্জিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ কারণে তারা দিনের বেলা প্রকাশ্যে আসছে না। ফুলবাড়ীর মতো বড়পুকুরিয়া এলাকায়ও একই কায়দায় লিফলেট দিচ্ছে তারা। তিনি বলেন, 'আমরা উন্নয়নের বিরোধী নই; কিন্তু উন্মুক্ত খনি কোনোভাবেই আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে হয় না।'
প্রথম দফা লিফলেট বিতরণের পর গত ৬ মে একই নামে আবারও লিফলেট বিতরণ করা হয়। দ্বিতীয় লিফলেটটি দিনের বেলায় একটি মাইক্রোবাস থেকে ফুলবাড়ী বাজারে ফেলে যাওয়া হয়। এই লিফলেটে জাতীয় তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য রয়েছে। বলা হয়েছে, 'জাতীয় কমিটিকে অতি দ্রুততার সঙ্গে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে। তারা এলাকার জনগণের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে প্রতি সপ্তাহে অবৈধভাবে যেখানে সেখানে সভা-সমাবেশ চালাচ্ছে। এতে করে এলাকার জীবনযাত্রার মান ব্যাহত হচ্ছে।' লিফলেটের ৯ নম্বর দাবিতে বলা হয়েছে, 'বিদ্যুতের কারণে দেশে কৃষিকাজ একেবারেই অচল হয়ে পড়েছে। তার ওপর প্রতিবছর দুই-তিনবার করে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এ অবস্থায় ফুলবাড়ী খনি এলাকার জনগণ খনির কার্যক্রম শুরু করতে সরকারকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছে। সরকার খনির কার্যক্রম শুরু করলে আমরা কোনো বাধা দেব না।' অভিযোগ রয়েছে, বড়পুকুরিয়ায়ও একইভাবে উন্মুক্ত খনির পক্ষে লিফলেট বিতরণ করছে এশিয়া এনার্জি।
এ বিষয়ে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার সদস্য শাহরিয়ার সানি গতকাল টেলিফোনে জানান, একটি মাইক্রোবাসে করে দ্বিতীয় লিফলেট বিতরণ করা হয়। গাড়িটি বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিংয়ের। এটির গায়ে চীনা ভাষায় লেখা ছিল। দ্রুত স্থান ত্যাগ করায় মাইক্রোবাসটি আটক করা যায়নি।
স্থানীয় একাধিক সূত্র অভিযোগ করে, এশিয়া এনার্জি শুধু লিফলেট বিতরণ নয়, ফুলবাড়ী খনি অঞ্চলে তাদের দুটি বন্ধ থাকা অফিসে পাঁচজন দারোয়ান নিয়োগ করেছে। গভীর রাতে মাঝেমধ্যে এসব অফিসে লোকজন যাতায়াত করে। রাতের আঁধারে লিফলেট বিতরণের দায়ে এলাকাবাসী যেকোনো সময় এশিয়া এনার্জির স্থানীয় কার্যালয়ে হামলা চালাতে পারে।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে মতামত জানতে এশিয়া এনার্জি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করা হলেও সাড়া মেলেনি। একাধিকবার লিখিতভাবে প্রশ্ন দেওয়া হলেও প্রতিষ্ঠানটি সাড়া দেয়নি। এ ব্যাপারে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে প্রতিষ্ঠানটির তথ্য কর্মকর্তা মাহামুদ হাফিজ সরাসরি তাঁদের কার্যালয়ে যেতে বলেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, 'এ ব্যাপারে তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। আর আমরা মিডিয়া ফেস করি না।'
এদিকে গত ২৩ এপ্রিল এশিয়া এনার্জি করপোরেশনের মূল কম্পানি গ্লোবাল কোল ম্যানেজমেন্ট (জিসিএম) রিসোর্সেস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী কয়লা খনি উন্নয়নের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নতুন করে সরকারের সঙ্গে তারা আলাপ-আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে। এ জন্য কম্পানির ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনাসহ নতুন করে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এশিয়া এনার্জির নতুন উদ্যোগ : সম্প্রতি দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত জিসিএমের বোর্ড সভায় চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এশিয়া এনার্জির (বাংলাদেশ) চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী গ্যারি লাইকে একই সঙ্গে জিসিএমের নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, জিসিএম বোর্ড বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এশিয়া এনার্জির অব্যাহত কার্যক্রম পর্যালোচনা করে বোর্ডে এ পরিবর্তন এনেছে। জিসিএম এখন সরকারের সঙ্গে আলোচনায় চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দিতে চায়। সেগুলো হলো- ফুলবাড়ী খনির কয়লা দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে চার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফুলবাড়ী খনির কয়লার দাম আমদানি করা কয়লার চেয়ে কম পড়বে, খনিমুখে বিদ্যুৎকেন্দ্র করলে উৎপাদন অত্যন্ত সহজ হবে এবং দেশে কয়লা উত্তোলনে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান, বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধি ও রাষ্ট্রীয় আয়-ব্যয়ে ভারসাম্য আসবে।
এদিকে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির একটি অংশে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের সক্রিয় চিন্তা করছে সরকার। এ জন্য ইতিমধ্যে খনি কর্তৃপক্ষ একটি প্রস্তাবনা সরকারের কাছে জমা দিয়েছে।
সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৬ সাল নাগাদ সাত হাজার এবং ২০৩০ সালে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে। এর মধ্যে প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেশের কয়লায় উৎপাদন করা হবে।
No comments