রং চড়ানো ইতিহাস-৫ by মাহমুদ শামসুল হক
কোনো মানুষই নিরপেক্ষ নয়—এ ধরনের বাজারচলতি যুক্তি একজন ইতিহাস লেখকের বেলায় খাটে না। ঐতিহাসিকদের জন্য অনিবার্য শর্ত হচ্ছে, নিরপেক্ষতা। এক্ষেত্রে কোনো লেস-মাইনাস, কমিশন-কনসেশন, রিবেট-রিডাকশনের প্রশ্নই অবান্তর।
তিনি ভাষাশৈলী নিয়ে খেলতে পারেন কিন্তু তথ্য নিয়ে নয়। তথ্য উপস্থাপনে বিন্দুমাত্র চালাকি ইতিহাসবিদ, বিশ্লেষক ও গবেষকের জন্য নিষিদ্ধ। কেননা তিনি দলিল লিখছেন, সাহিত্য নয়। তথ্য বিকৃতি তো বটেই, কৌশলে বা মোহান্ধ হয়ে যিনি খণ্ডিত করে বা কিয়দংশ গোপন করে ইতিহাস নামের গ্রন্থ লেখেন তিনি মানুষের শত্রু। তাকে এবং তার রচনাবলীকে শনাক্ত করার প্রয়োজন অনিবার্য। নইলে মিথ্যাচারের অন্ধকার খাদে চিত্পটাং পড়ে যেতেই পারে মনুষ্যত্ব তথা মানব-সংহতি। তার ঢের দৃষ্টান্ত রয়েছে আমাদের চারপাশে।
এর আগের একটি পর্বে আমি প্রমাণ করার চেষ্টা করেছি, সুলতান মাহমুদ রাজনৈতিক কারণে মন্দির-মসজিদ দুই-ই ভেঙেছেন। তার সামরিক বাহিনীতে অনেক হিন্দুও ছিলেন। বাজার চলতি ইতিহাসে মাহমুদকে হিন্দুধর্ম বিদ্বেষী বলা হয়। এও ঠিক যে, তিনি হিন্দু প্রেমিক ছিলেন না। ইতিহাসসম্মত সত্য হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রয়োজনে সুলতান মাহমুদ অগ্রাহ্য করেছিলেন ধর্মীয় বিচার-বিবেচনা। সম্ভবত মাহমুদের পরেই সম্রাট আওরঙ্গজেবকে চরম হিন্দুবিদ্বেষী এবং মন্দির ধ্বংসকারী হিসেবে ধরে নেয়া হয়। অন্তত পাঠ্য ইতিহাসে এ রকমই লেখা হয়ে থাকে। আবার মন্দির ভাঙার বিষয়কে সামনে রেখে কেউ কেউ তার প্রশস্তিও রচনা করেছেন। অথচ ইতিহাস গবেষকরা প্রমাণ করেছেন, আওরঙ্গজেব শুধু মন্দির ভাঙেননি, নির্মাণের ব্যবস্থাও করেছেন। তার বাহিনী শিবমন্দির নামে খ্যাত কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির ভেঙেছিল। এ তথ্য যেমন অভ্রান্ত, তেমনি এও সত্য যে, ওই শহরেই জঙ্গমবাড়ি শিবমন্দিরকে দান করেছিলেন একাধিক জায়গির। সেকালে উজ্জয়িনীর মহাকাল মন্দিরে দিনরাত জ্বালিয়ে রাখা হতো ঘিয়ের প্রদীপ। এই বিপুল পরিমাণ ঘিয়ের খরচ আসত জায়গির থেকে। আর এ জায়গির দিয়েছিলেন সম্রাট আওরঙ্গজেব। এসব তথ্য দিয়েছেন ইতিহাস বিশ্লেষক বি.এন পাণ্ডে তার গবেষণামূলক গ্রন্থে। বিভিন্ন সূত্র থেকে এসব তথ্য উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে যে, আওরঙ্গজেব আরও অনেক মন্দিরকে শাহী ফরমান জারির মাধ্যমে জায়গির দান করেছিলেন। যেমন, অযোধ্যার দন্তধাবন মন্দির, এলাহাবাদের সোমেশ্বর নামের মহাদেব মন্দির, গুয়াহাটির উমানন্দ মন্দির, মহারাষ্ট্রের নানদেড় জেলার মোহনপুরের দত্তাত্রেয় গুরুমন্দির, আহমেদাবাদের শত্রুঞ্জয় জৈনমন্দির। ভারতের কয়েকটি প্রাচীনতম মন্দিরের জন্যও সম্রাট জায়গির বরাদ্দ দেন। সেগুলো হচ্ছে—গয়ার মন্দির, জুনাগড়ের মন্দির, নাগেশ্বর মন্দির, আবু পাহাড়ের মন্দির। কয়েকটি শিখ গুরুদুয়ারার জন্য জায়গির দান করেছিলেন তিনি। স্কুলপাঠ্য ইতিহাসে এসব তথ্য নেই। ইতিহাসকে নিরঞ্জন রাখার স্বার্থে থাকা উচিত, আওরঙ্গজেবকে জোর করে হিন্দু-সুহৃদ বানানোর উদ্দেশে নয়।
একালের হিন্দুত্ববাদী কিছু রাজনৈতিক নেতা এবং ধর্মগুরুরা বলছেন, অযোধ্যায় রামমন্দির ভেঙে তুর্কি-মোগলরা বাবরি মসজিদ বানিয়েছিলেন। এই ভুল তথ্য প্রচার করে স্রেফ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাবরি মসজিদ ভেঙেছেন মতলববাজ নেতারা। কিন্তু ইসলাম বিধ্বস্ত মন্দিরের উপর নির্মিত কোনো মসজিদে নামাজ পড়াকে সিদ্ধ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। দখলিকৃত জায়গায় মসজিদ নির্মাণ ইসলামের অনুশাসন বিরোধী। তুর্কি-মোগল মুসলমান শাসকরা কেন সেই ভুলটি করবেন? করেননি, ইতিহাস গবেষকরা তা প্রমাণ করেছেন। যদি কেউ করে থাকেন তা হিন্দুরা ভাঙার আগে নিষ্ঠাবান মুসলমানরাই ভেঙে ফেলতেন। কোনো কোনো পুরাণ অনুসারে, অবতার রাম বনবাসে গিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের সীমান্ত অঞ্চলের চিত্রকুটে। মজার তথ্য হচ্ছে, এখানে সম্রাট আওরঙ্গজেবের নির্দেশে নির্মাণ করা হয়েছিল একটি রাম মন্দির। শুধু তাই নয়, আড়াইশ’ বিঘা জমি জায়গির দিয়েছিলেন এই মন্দিরের নামে। পাঠ্য ইতিহাসে সম্রাটের মন্দির ভাঙার বিবরণের পাশাপাশি এসব তথ্য যুক্ত হওয়া দরকার। নইলে রাজনীতি-ধর্মনীতি একাকার হয়ে মিথ্যার ধূম্রজাল সৃষ্টি হতেই থাকবে, সে জালে আটকে যাবে সাধারণ মানুষের ধর্মবিশ্বাস, আর তাকে পুঁজি করে ব্যবসা করবে ধুরন্ধর রাজনীতিকরা।
হিন্দু রাজরাজড়া কি মন্দির ভাঙেননি? ভেঙেছেন এবং রাজনৈতিক কারণে। তামিলনাড়ু, কর্নাটক, অন্ধ্র ইত্যাদি রাজ্যে শৈব রাজাদের সঙ্গে বৌদ্ধদের বিরোধের সময় ধ্বংস হয়েছিল প্রচুর বৌদ্ধ মঠ। এমনি আরও বিস্তর দৃষ্টান্ত রয়েছে। জৈন মন্দিরও ভাঙা হয়েছে। এসব ঘটনা স্কুলপাঠ্য ইতিহাসের বাইরে রাখা হয়েছে। যা প্রচলিত এবং বহুল পঠিত তা নিয়েই কেবল তর্ক বেঁধেছে, ক্ষেত্রবিশেষে মিথ্যার ওপরে দেয়া হয়েছে রং চড়ানো সত্যের প্রলেপ।
লুকানোর কোনো উপায় নেই যে, ভারতের কিছু মসজিদ ও মাজারে মন্দিরের চিহ্নবাহী পাথর লাগানো রয়েছে। এসব নিদর্শনকে সামনে রেখে অনেকেই বলেন, এখানে আগে মন্দির ছিল। মসজিদ-মাজার বসানো হয়েছে মন্দিরের ভগ্নস্তূপে। বিষয়টি তারা এর বেশি তলিয়ে দেখতে চান না, চাননি। কিন্তু হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে ইতিহাস গবেষকরা প্রমাণ করেছেন, জীর্ণ হয়ে অনেক মন্দির ভেঙে গিয়েছিল। বিশেষত উত্তর ভারতের কিছু মসজিদে মাজারে এসব প্রাকৃতিক কারণে ভেঙে পড়া মন্দিরের পরিত্যক্ত পাথর ব্যবহৃত হয়েছে। এ নিয়েও ঢের ইতিহাস বিকৃতির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বিশ্রুত ঐতিহাসিকদের একজনও বলেননি যে, এসব পাথর কোনো মন্দির ভেঙে বা সেখান থেকে খসিয়ে আনা হয়েছে। সবই রাজনৈতিক কূটচাল, ক্ষমতা, প্রতিপত্তি কূটনৈতিক লাভালাভের সঙ্গে জড়িত। এসব বোঝার দরকার এজন্য যে, না হলে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ক্রমেই ধূমায়িত হবে, ধূর্ত রাজনীতিকরা এসব ঘটনাকে রং মেখে উসকে দেবে সাধারণ মানুষকে। অতঃপর হাসিল করবে নিজেদের লক্ষ্যবস্তু। কাজেই ইতিহাসকে আর হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ হতে দেয়া ঠিক হবে না। নইলে আওরঙ্গজেবের নামে, সুলতান মাহমুদের নামে, শিবাজির নামে, রণজিত্ সিংয়ের নামে, টিপু সুলতানের নামে রঞ্জিত ইতিহাসকে শিখণ্ডী করে হানাহানি বাড়াতেই থাকবে চতুর লোকেরা। তা থেকে রক্তাক্ত প্রতিশোধের স্পৃহা উসকে উঠবে, বন্ধ হবে না। এর বিপরীতে মানব-শৃঙ্খল রচনা জরুরি, মানব মনের শৃঙ্খলাও।
এর আগের একটি পর্বে আমি প্রমাণ করার চেষ্টা করেছি, সুলতান মাহমুদ রাজনৈতিক কারণে মন্দির-মসজিদ দুই-ই ভেঙেছেন। তার সামরিক বাহিনীতে অনেক হিন্দুও ছিলেন। বাজার চলতি ইতিহাসে মাহমুদকে হিন্দুধর্ম বিদ্বেষী বলা হয়। এও ঠিক যে, তিনি হিন্দু প্রেমিক ছিলেন না। ইতিহাসসম্মত সত্য হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রয়োজনে সুলতান মাহমুদ অগ্রাহ্য করেছিলেন ধর্মীয় বিচার-বিবেচনা। সম্ভবত মাহমুদের পরেই সম্রাট আওরঙ্গজেবকে চরম হিন্দুবিদ্বেষী এবং মন্দির ধ্বংসকারী হিসেবে ধরে নেয়া হয়। অন্তত পাঠ্য ইতিহাসে এ রকমই লেখা হয়ে থাকে। আবার মন্দির ভাঙার বিষয়কে সামনে রেখে কেউ কেউ তার প্রশস্তিও রচনা করেছেন। অথচ ইতিহাস গবেষকরা প্রমাণ করেছেন, আওরঙ্গজেব শুধু মন্দির ভাঙেননি, নির্মাণের ব্যবস্থাও করেছেন। তার বাহিনী শিবমন্দির নামে খ্যাত কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির ভেঙেছিল। এ তথ্য যেমন অভ্রান্ত, তেমনি এও সত্য যে, ওই শহরেই জঙ্গমবাড়ি শিবমন্দিরকে দান করেছিলেন একাধিক জায়গির। সেকালে উজ্জয়িনীর মহাকাল মন্দিরে দিনরাত জ্বালিয়ে রাখা হতো ঘিয়ের প্রদীপ। এই বিপুল পরিমাণ ঘিয়ের খরচ আসত জায়গির থেকে। আর এ জায়গির দিয়েছিলেন সম্রাট আওরঙ্গজেব। এসব তথ্য দিয়েছেন ইতিহাস বিশ্লেষক বি.এন পাণ্ডে তার গবেষণামূলক গ্রন্থে। বিভিন্ন সূত্র থেকে এসব তথ্য উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে যে, আওরঙ্গজেব আরও অনেক মন্দিরকে শাহী ফরমান জারির মাধ্যমে জায়গির দান করেছিলেন। যেমন, অযোধ্যার দন্তধাবন মন্দির, এলাহাবাদের সোমেশ্বর নামের মহাদেব মন্দির, গুয়াহাটির উমানন্দ মন্দির, মহারাষ্ট্রের নানদেড় জেলার মোহনপুরের দত্তাত্রেয় গুরুমন্দির, আহমেদাবাদের শত্রুঞ্জয় জৈনমন্দির। ভারতের কয়েকটি প্রাচীনতম মন্দিরের জন্যও সম্রাট জায়গির বরাদ্দ দেন। সেগুলো হচ্ছে—গয়ার মন্দির, জুনাগড়ের মন্দির, নাগেশ্বর মন্দির, আবু পাহাড়ের মন্দির। কয়েকটি শিখ গুরুদুয়ারার জন্য জায়গির দান করেছিলেন তিনি। স্কুলপাঠ্য ইতিহাসে এসব তথ্য নেই। ইতিহাসকে নিরঞ্জন রাখার স্বার্থে থাকা উচিত, আওরঙ্গজেবকে জোর করে হিন্দু-সুহৃদ বানানোর উদ্দেশে নয়।
একালের হিন্দুত্ববাদী কিছু রাজনৈতিক নেতা এবং ধর্মগুরুরা বলছেন, অযোধ্যায় রামমন্দির ভেঙে তুর্কি-মোগলরা বাবরি মসজিদ বানিয়েছিলেন। এই ভুল তথ্য প্রচার করে স্রেফ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাবরি মসজিদ ভেঙেছেন মতলববাজ নেতারা। কিন্তু ইসলাম বিধ্বস্ত মন্দিরের উপর নির্মিত কোনো মসজিদে নামাজ পড়াকে সিদ্ধ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। দখলিকৃত জায়গায় মসজিদ নির্মাণ ইসলামের অনুশাসন বিরোধী। তুর্কি-মোগল মুসলমান শাসকরা কেন সেই ভুলটি করবেন? করেননি, ইতিহাস গবেষকরা তা প্রমাণ করেছেন। যদি কেউ করে থাকেন তা হিন্দুরা ভাঙার আগে নিষ্ঠাবান মুসলমানরাই ভেঙে ফেলতেন। কোনো কোনো পুরাণ অনুসারে, অবতার রাম বনবাসে গিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের সীমান্ত অঞ্চলের চিত্রকুটে। মজার তথ্য হচ্ছে, এখানে সম্রাট আওরঙ্গজেবের নির্দেশে নির্মাণ করা হয়েছিল একটি রাম মন্দির। শুধু তাই নয়, আড়াইশ’ বিঘা জমি জায়গির দিয়েছিলেন এই মন্দিরের নামে। পাঠ্য ইতিহাসে সম্রাটের মন্দির ভাঙার বিবরণের পাশাপাশি এসব তথ্য যুক্ত হওয়া দরকার। নইলে রাজনীতি-ধর্মনীতি একাকার হয়ে মিথ্যার ধূম্রজাল সৃষ্টি হতেই থাকবে, সে জালে আটকে যাবে সাধারণ মানুষের ধর্মবিশ্বাস, আর তাকে পুঁজি করে ব্যবসা করবে ধুরন্ধর রাজনীতিকরা।
হিন্দু রাজরাজড়া কি মন্দির ভাঙেননি? ভেঙেছেন এবং রাজনৈতিক কারণে। তামিলনাড়ু, কর্নাটক, অন্ধ্র ইত্যাদি রাজ্যে শৈব রাজাদের সঙ্গে বৌদ্ধদের বিরোধের সময় ধ্বংস হয়েছিল প্রচুর বৌদ্ধ মঠ। এমনি আরও বিস্তর দৃষ্টান্ত রয়েছে। জৈন মন্দিরও ভাঙা হয়েছে। এসব ঘটনা স্কুলপাঠ্য ইতিহাসের বাইরে রাখা হয়েছে। যা প্রচলিত এবং বহুল পঠিত তা নিয়েই কেবল তর্ক বেঁধেছে, ক্ষেত্রবিশেষে মিথ্যার ওপরে দেয়া হয়েছে রং চড়ানো সত্যের প্রলেপ।
লুকানোর কোনো উপায় নেই যে, ভারতের কিছু মসজিদ ও মাজারে মন্দিরের চিহ্নবাহী পাথর লাগানো রয়েছে। এসব নিদর্শনকে সামনে রেখে অনেকেই বলেন, এখানে আগে মন্দির ছিল। মসজিদ-মাজার বসানো হয়েছে মন্দিরের ভগ্নস্তূপে। বিষয়টি তারা এর বেশি তলিয়ে দেখতে চান না, চাননি। কিন্তু হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে ইতিহাস গবেষকরা প্রমাণ করেছেন, জীর্ণ হয়ে অনেক মন্দির ভেঙে গিয়েছিল। বিশেষত উত্তর ভারতের কিছু মসজিদে মাজারে এসব প্রাকৃতিক কারণে ভেঙে পড়া মন্দিরের পরিত্যক্ত পাথর ব্যবহৃত হয়েছে। এ নিয়েও ঢের ইতিহাস বিকৃতির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বিশ্রুত ঐতিহাসিকদের একজনও বলেননি যে, এসব পাথর কোনো মন্দির ভেঙে বা সেখান থেকে খসিয়ে আনা হয়েছে। সবই রাজনৈতিক কূটচাল, ক্ষমতা, প্রতিপত্তি কূটনৈতিক লাভালাভের সঙ্গে জড়িত। এসব বোঝার দরকার এজন্য যে, না হলে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ক্রমেই ধূমায়িত হবে, ধূর্ত রাজনীতিকরা এসব ঘটনাকে রং মেখে উসকে দেবে সাধারণ মানুষকে। অতঃপর হাসিল করবে নিজেদের লক্ষ্যবস্তু। কাজেই ইতিহাসকে আর হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ হতে দেয়া ঠিক হবে না। নইলে আওরঙ্গজেবের নামে, সুলতান মাহমুদের নামে, শিবাজির নামে, রণজিত্ সিংয়ের নামে, টিপু সুলতানের নামে রঞ্জিত ইতিহাসকে শিখণ্ডী করে হানাহানি বাড়াতেই থাকবে চতুর লোকেরা। তা থেকে রক্তাক্ত প্রতিশোধের স্পৃহা উসকে উঠবে, বন্ধ হবে না। এর বিপরীতে মানব-শৃঙ্খল রচনা জরুরি, মানব মনের শৃঙ্খলাও।
No comments