পদ্মায় ভাঙন-বাঁধ ঠিকভাবে নির্মিত হয় তো?

নদীর দেশে নদীভাঙন স্বাভাবিক। পদ্মা প্রমত্ত নদী। ফারাক্কা বাঁধের কারণে অনেক স্থানে এমনকি বর্ষা মৌসুমে শীর্ণকায় হলেও তার ভয়ঙ্কর রূপ আমরা অনেক স্থানে প্রত্যক্ষ করি। যেমনটি ঘটেছে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে। বৃহস্পতিবার সমকালের লোকালয় পাতায় 'শতকোটি টাকার বাঁধ পদ্মায়' শিরোনামের খবরের মূল প্রতিপাদ্যও এটাই।


এতে বলা হয়, ভাঙনের তীব্রতায় নদীতীরের বাসিন্দারা পিতৃপুরুষের ভিটা হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন। একজন সাবেক সংসদ সদস্য তিন দফা ভাঙনের কারণে বাপ-দাদার বসতভিটা হারিয়েছেন। আগামী বর্ষায় ভাঙনকবলিত বাঁধ সংস্কার করা না হলে হাসাইল-বানারী এলাকার পুরোটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়েছে। বিদ্যমান বাঁধটি আরও সম্প্রসারণ করার দাবিও প্রবল। কর্তৃপক্ষের নজর পড়ূক এদিকে, এটা প্রত্যাশিত। একই সঙ্গে মনে রাখা চাই_ পানিতে টাকা ঢালার ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে। পানি উন্নয়ন বোর্ড দেশের অনেক স্থানে ভাঙনরোধে বাঁধ দেয় কিংবা বোল্ডার ফেলে। মাটি কাটার কাজও হয়। এতে যে সুফল একেবারে হয় না, সেটা বলা যাবে না। কিন্তু এ ধরনের প্রকল্প ঠিকাদার ও প্রভাবশালীদের পকেট ভারী করারও চমৎকার উপায় হয়ে রয়েছে বহুকাল ধরে। অনেক স্থানে নিম্নমানের কাজ হয়। যতটা বোল্ডার ফেলার কথা, সেটা হয় না। প্রয়োজনের তুলনায় কম সিমেন্ট ব্যবহার হয়। পানির নিচে কী ফেলা হচ্ছে, সেটা সাধারণের দেখার সুযোগ মেলে না। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের কমকর্তারা সেটা যাচাই করতে পারে। আর এখানেই যত বিপদ। ঘুষের প্রভাবে দিন রাতে পরিণত হয়ে যায়। রাজনৈতিক প্রভাবে অযোগ্য ঠিকাদারকে কাজ প্রদানেও সমস্যা সৃষ্টি হয়। টঙ্গিবাড়ী এলাকার বাঁধেও এমনটি ঘটেনি, সেটা জোর গলায় বলার উপায় নেই। সমকালে খবরের সঙ্গে যে ছবিটি প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা যায়, নদীর ছোবলে বাঁধ ভেঙে বিলীন হচ্ছে নদীতে। বাঁধটি কি সঠিকভাবে নির্মিত হয়েছিল? নতুন করে যে কাজ হবে, তাতে নজরদারি থাকুক যথাযথ, সে দাবি তোলা থাকল। দেখা যাক, কেউ কর্ণপাত করে কি-না।

No comments

Powered by Blogger.