মুম্বাই বিস্ফোরণ-সন্ত্রাসবাদ রুখতেই হবে
বুধবার মুম্বাই আরেকবার সন্ত্রাসবাদী বোমা বিস্ফোরণে রক্তাক্ত হলো। সন্ধ্যা নাগাদ পরপর তিনটি জনবহুল ব্যস্ত স্থানে বোমাগুলো বিস্ফোরিত হলে ভারতের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্রের প্রাণস্পন্দন যেন থেমে যায়। অন্তত দুই ডজন মানুষের মৃত্যু ও শতাধিক আহত হওয়ার খবর জেনে সে দেশের মানুষের সঙ্গে আমরাও হতবিহ্বল।
প্রশ্ন জাগে, এ ধরনের সন্ত্রাসবাদী হামলা আমাদের এবং বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষকে আর কতকাল দেখতে হবে? বুধবার মুম্বাইয়ের সাধারণ মানুষের প্রাণ গেছে, আগামী যে কোনো দিন অন্য কোনো শহর বা জনপদ জঙ্গি বোমায় বিদীর্ণর্ হতে পারে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন সময়ে এমন উগ্রতা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। তাই এ ধরনের সন্ত্রাসবাদী হামলাকে কেবল নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশের বৃত্তের মধ্যে আটকে নাগরিক দায়িত্ব সারা হয়েছে মনে করাটা সমীচীন হবে না। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের প্রতিটি দেশকেই আজ এর বিরুদ্ধে একযোগে সোচ্চার হতে হবে। সন্ত্রাসবাদীরা যেমন এক দেশ থেকে অন্য দেশে গিয়ে হামলা চালায়, এ অঞ্চলের নাগরিকদেরও দেশের ভেদরেখা ভুলে সন্ত্রাসবিরোধী সর্বজনীন দাবি নিয়ে একাট্টা হতে হবে। কোথাও সন্ত্রাসবাদীরা আশ্রয়-প্রশ্রয় না পেলে, এদের বিরুদ্ধে নাগরিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে রাষ্ট্রীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন উদ্যোগে স্বেচ্ছায় শামিল হলে ও সমর্থন জোগালে এ ধরনের হামলার প্রকোপ কমে আসবে। তবে মুম্বাই বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে চলতি মাসে ভারত-পাকিস্তান সচিব ও মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা যেন কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকে উভয় দেশের নেতাদের দৃষ্টি দেওয়া উচিত। এ দুটি দেশ যখনই সম্পর্কোন্নয়নের উদ্যোগ নেয় তখনই দেখা যায় সন্ত্রাসবাদী শক্তি তৎপর হয়ে ওঠে এবং এ কারণে শান্তি প্রক্রিয়া বিঘি্নত হয়। সন্ত্রাসবাদীরা এটাই চায়। আমরা মনে করি, বৈরিতায় নয় বল্পুব্দত্বের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের শুধু নয়, দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীল বিকাশের স্বার্থও জড়িত। মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসবাদী বোমা বিস্ফোরণের তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশের পাশাপাশি আমরা সর্বত্র নাগরিক সমাজকে এর বিরুদ্ধে জোরদার প্রতিরোধ আন্দোলনে একাট্টা হওয়ার আহ্বান জানাই।
No comments