শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে অনিয়মঃ অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা উদ্দেশ্যমূলক
শেষ পর্যন্ত নিজের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের নিয়মবহির্ভূত ঘটনার জন্ম দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সরকারের প্রভাবশালী বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খানের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপের দুটি কোম্পানিকে সরাসরি তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জে।
অথচ অর্থ মন্ত্রণালয়ই কয়েক মাস আগে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সরাসরি তালিকাভুক্তি নিষিদ্ধ করেছিল। শেয়ারবাজার নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির যে অভিযোগ শোনা যেত, সেটা এখন আর অস্বীকার করার উপায় রইল না।
আমাদের শেয়ারবাজারে পুঁজির পরিমাণের তুলনায় কারসাজির সুযোগ অবারিত, সংশ্লিষ্টরা সেটা ভালো করেই জানেন। দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতির দীর্ঘ মন্দাবস্থা বিনিয়োগকারী বিশেষ করে ক্ষুদে বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারে টেনে এনেছে। অল্প সময়ে লাভের আশায় তাদের আগমনে বাজারে শেয়ারের লেনদেনে প্রতিদিনই রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। কোম্পানির শেয়ারের দরপতনের পরও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক বেড়েছে, এমন ঘটনাও দেখা গেছে। কোনো কোনো কোম্পানির শেয়ারের বাজারদর শেয়ারপ্রতি আয়ের ৫০ গুণ পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে। এমন অবস্থা শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হলেও শেয়ার বিক্রি করা প্রতিষ্ঠানের সামনে মুনাফা লোটার দরজা খুলে দেয়। লেনদেন বৃদ্ধির সুযোগে তারা দাঁও মেরে কেটে পড়লে ক্ষুদে বিনিয়োগকারীদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।
গত আগস্ট মাসে নাভানা সিএনজি সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে শেয়ার ছেড়ে সুযোগমত বাজার থেকে বিশাল অঙ্কের টাকা তুলে নিয়েছে। এ ধরনের ঘটনার বিপদ এড়াতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সরাসরি তালিকাভুক্তি বন্ধ করে দেয়। কিছুটা দেরি করে হলেও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্তির বিধান পরিবর্তন করে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষার পদক্ষেপ নেয়। তারা সম্ভবত ১৯৯৬ সালের বিপর্যয় এড়াতেই এটা করেছে। তত্কালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পুঁজিবাজারের ঊর্ধ্বগতির মুখে কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান টাকা তুলে নেয়ায় হাজার হাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে পথে বসে পড়ে। সব দিক বিবেচনা করে অর্থ মন্ত্রণালয়ও গত ৫ নভেম্বর বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের সরাসরি তালিকাভুক্তি নিষিদ্ধ করে ঘোষণা দেয়।
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য এ ঘোষণা স্বস্তিদায়ক হলেও সবাই তা মেনে নিতে পারেনি। প্রভাবশালীদের তদবিরেই এখন অর্থ মন্ত্রণালয় নিজেদের অবস্থান পাল্টেছে এটা জোর দিয়ে বলা যায়। ১ ফেব্রুয়ারি দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিয়ে তারা চিঠি পাঠিয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জে। প্রতিষ্ঠান দুটি বাণিজ্যমন্ত্রীর পারিবারিক মালিকানাধীন সামিট গ্রুপের। এভাবে শেয়ারবাজারের ওপর সরকারের সরাসরি নগ্ন হস্তক্ষেপ তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।
নির্দিষ্টভাবে মন্ত্রীর পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকায় প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। এটাকে বড় ধরনের দুর্নীতির দৃষ্টান্ত বলা যায়। নির্দিষ্ট নিয়ম-পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির এখতিয়ার পুরোপুরি স্টক এক্সচেঞ্জের। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের যে কোনো হস্তক্ষেপই উদ্দেশ্যমূলক বিবেচিত হবে। নিষেধাজ্ঞা জারির আগে বা পরে আবেদনের যুক্তি প্রদর্শন খুবই হাস্যকর। মন্ত্রণালয় নীতিগত সিদ্ধান্ত না দিয়ে কেন বিশেষ দুটি কোম্পানির জন্য সুপারিশ করেছে, সেটা সহজভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা হয় না বলেই এ সুযোগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখন জেনেশুনে যে কোনো অজুহাতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি তালিকাভুক্তির সুপারিশ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়ার শামিল, অস্বীকার করা যাবে না। কোনো নীতি-নৈতিকতাতেই এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
অবশ্য এদেশে ক্ষুদে বিনিয়োগকারীরা সর্বত্রই মার খায়। ছোটদের নিঃস্ব করেই কিছু লোক বড় হয়। তারা যখন রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী হন, তখন সেই শক্তিকে রোখার কেউ থাকে না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা সেটা আবারও প্রমাণ করল।
আমাদের শেয়ারবাজারে পুঁজির পরিমাণের তুলনায় কারসাজির সুযোগ অবারিত, সংশ্লিষ্টরা সেটা ভালো করেই জানেন। দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতির দীর্ঘ মন্দাবস্থা বিনিয়োগকারী বিশেষ করে ক্ষুদে বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারে টেনে এনেছে। অল্প সময়ে লাভের আশায় তাদের আগমনে বাজারে শেয়ারের লেনদেনে প্রতিদিনই রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। কোম্পানির শেয়ারের দরপতনের পরও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক বেড়েছে, এমন ঘটনাও দেখা গেছে। কোনো কোনো কোম্পানির শেয়ারের বাজারদর শেয়ারপ্রতি আয়ের ৫০ গুণ পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে। এমন অবস্থা শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হলেও শেয়ার বিক্রি করা প্রতিষ্ঠানের সামনে মুনাফা লোটার দরজা খুলে দেয়। লেনদেন বৃদ্ধির সুযোগে তারা দাঁও মেরে কেটে পড়লে ক্ষুদে বিনিয়োগকারীদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।
গত আগস্ট মাসে নাভানা সিএনজি সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে শেয়ার ছেড়ে সুযোগমত বাজার থেকে বিশাল অঙ্কের টাকা তুলে নিয়েছে। এ ধরনের ঘটনার বিপদ এড়াতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সরাসরি তালিকাভুক্তি বন্ধ করে দেয়। কিছুটা দেরি করে হলেও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্তির বিধান পরিবর্তন করে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষার পদক্ষেপ নেয়। তারা সম্ভবত ১৯৯৬ সালের বিপর্যয় এড়াতেই এটা করেছে। তত্কালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পুঁজিবাজারের ঊর্ধ্বগতির মুখে কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান টাকা তুলে নেয়ায় হাজার হাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে পথে বসে পড়ে। সব দিক বিবেচনা করে অর্থ মন্ত্রণালয়ও গত ৫ নভেম্বর বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের সরাসরি তালিকাভুক্তি নিষিদ্ধ করে ঘোষণা দেয়।
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য এ ঘোষণা স্বস্তিদায়ক হলেও সবাই তা মেনে নিতে পারেনি। প্রভাবশালীদের তদবিরেই এখন অর্থ মন্ত্রণালয় নিজেদের অবস্থান পাল্টেছে এটা জোর দিয়ে বলা যায়। ১ ফেব্রুয়ারি দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিয়ে তারা চিঠি পাঠিয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জে। প্রতিষ্ঠান দুটি বাণিজ্যমন্ত্রীর পারিবারিক মালিকানাধীন সামিট গ্রুপের। এভাবে শেয়ারবাজারের ওপর সরকারের সরাসরি নগ্ন হস্তক্ষেপ তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।
নির্দিষ্টভাবে মন্ত্রীর পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকায় প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। এটাকে বড় ধরনের দুর্নীতির দৃষ্টান্ত বলা যায়। নির্দিষ্ট নিয়ম-পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির এখতিয়ার পুরোপুরি স্টক এক্সচেঞ্জের। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের যে কোনো হস্তক্ষেপই উদ্দেশ্যমূলক বিবেচিত হবে। নিষেধাজ্ঞা জারির আগে বা পরে আবেদনের যুক্তি প্রদর্শন খুবই হাস্যকর। মন্ত্রণালয় নীতিগত সিদ্ধান্ত না দিয়ে কেন বিশেষ দুটি কোম্পানির জন্য সুপারিশ করেছে, সেটা সহজভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা হয় না বলেই এ সুযোগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখন জেনেশুনে যে কোনো অজুহাতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি তালিকাভুক্তির সুপারিশ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়ার শামিল, অস্বীকার করা যাবে না। কোনো নীতি-নৈতিকতাতেই এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
অবশ্য এদেশে ক্ষুদে বিনিয়োগকারীরা সর্বত্রই মার খায়। ছোটদের নিঃস্ব করেই কিছু লোক বড় হয়। তারা যখন রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী হন, তখন সেই শক্তিকে রোখার কেউ থাকে না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা সেটা আবারও প্রমাণ করল।
No comments