সৃষ্টির হক আদায় করুন by মোঃ সাখাওয়াৎ হোসেন

মানুষের আচার-আচরণ, চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়া, নৈতিকতা, মানবতাবোধ, দেশপ্রেম, মানবিক দায়িত্ব-কর্তব্য, কী করা উচিত, কী করা অনুচিত, কী করতে হবে, কী করা যাবে না তার পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা ইসলামে রয়েছে। ইসলাম ইহলোককে প্রথমে স্থান দিয়েছে। পৃথিবীকে বলা হয়েছে পরকালের শস্যক্ষেত্র।


পৃথিবীতে কৃতকর্মের ফল পাওয়া যাবে পরলোকে। জীবনকে শুধু কলেমা, নামাজ, রোজা-হজ-জাকাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না, প্রতিদিনের অন্যান্য কাজেও ইসলামের বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। শুধু আল্লাহর হক আদায় করলেই চলবে না, সৃষ্টির হকও আদায় করতে হবে। আল্লাহর হক আদায় না করার কারণে যে অপরাধ হয় আল্লাহ ইচ্ছা করলে তা মাফ করে দিতে পারেন; কিন্তু কোনো বান্দার হক আদায় না করে তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ করা হলে ওই ব্যক্তি মাফ না করলে আল্লাহ তা মাফ করবেন না, এমন কথা পবিত্র হাদিস শরিফে উলেল্গখ আছে। সুতরাং ইসলাম সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
ইসলামে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে রয়েছে সৎ কাজের আদেশ আর অসৎ কাজের নিষেধ। আজ ইসলাম বিশ্বের অনেক জাতির কাছে অপছন্দের এবং ভয়ের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর জন্য ইসলাম দায়ী নয়। এর জন্য দায়ী কিছু ব্যক্তি, যারা মুসলিম হয়েও মানুষকে বিপদগ্রস্ত, মানব সভ্যতার ক্ষতি করে। মাত্রাতিরিক্ত অনুভূতিপ্রবণ এসব মানুষ সামান্য কিছু হলে তাকে বিশাল একটি কিছু বানিয়ে মুহূর্তের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো গুজব বা কোনো রটনা শুনলেও তারা ঘটনার সত্যতা যাচাই হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে না। শোনামাত্রই আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়ে বসে, যা সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত। আমাদের মনে রাখতে হবে, একজন মুসলিমের দায়িত্ব আইন মেনে চলা; সমাজের শৃঙ্খলা বজায় রাখা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ করা এক দীনদার ব্যক্তির কর্তব্য। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেছেন, নিশ্চই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। যেসব লোক ধৈর্য ধারণ করে না, তাদের প্রতি আল্লাহর সমর্থন থাকে না। আর যাদের প্রতি আল্লাহর সমর্থন নেই, তাদের ডাকে সাড়া দেওয়া মুসলিম উম্মার জন্য পাপ।
আমরা যারা মুসলিম আমাদের ভাবতে হবে ইসলামের আদর্শ কী, মহানবী তার নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বে কী কাজ করেছেন এবং নবুয়ত প্রাপ্তির পরে কী করেছেন, আমাদের জন্য তার কী নির্দেশনা। মহানবী সারাজীবন সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন এবং নিজে নবুয়ত প্রাপ্তি পূর্বেও দ্বন্দ্ব নিরসনে কাজ করেছেন, যা আমরা তার জীবনী বা ইতিহাস পড়লে জানতে পারি। মহানবী সাম্যের বাণী, সম্প্রীতির বাণী প্রচার করেছেন।
shsako@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.