যা নিয়ে আছি-অদৃশ্য প্রতিযোগিতায় মেতে উঠি

মামুনুর রশীদ প্রথিতযশা নাট্যকার, নির্দেশক ও অভিনেতা। আরণ্যক নাট্যদলের প্রধান। তাঁর রচিত ও নির্দেশিত উল্লেখযোগ্য নাটক হলো: ওরা কদম আলী, ইবলিশ, জয়জয়ন্তী, রাঢ়াঙ প্রভৃতি। একুশে পদকসহ পেয়েছেন দেশ-বিদেশের উল্লেখযোগ্য নানা পুরস্কার।


বারবার পড়তে ইচ্ছা করে ‘ইস্পাত’
আমি টানা বই পড়ি। যখন যেটা ধরি, সেটা শেষ করেই অন্যটা পড়ি। এখন পড়ছি ওরহান পামুকের লেখা। প্রিয় বই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্পসমগ্র, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস দেবী চৌধুরানী, শেক্সপিয়ারের নাটকসমগ্র। বারবার পড়তে ইচ্ছে করে নিকোলাই অস্তভস্কির ইস্পাত। আমি সাধারণত ভোর থেকে শুরু করে সকাল ১০-১১টা পর্যন্ত লেখালেখি করি। শুটিং থাকলে হয় না। এখন মুক্তিযুদ্ধের একটি নাটকের রচনা ও নির্দেশনার কাজ করছি।

আমার হাত ধরে...
আমি ভীষণ গানপ্রিয় মানুষ। বাসা ও গাড়িতে গান শুনি। রবীন্দ্র-নজরুল দুটোই আমার প্রিয়। এখন শুনছি আগ্রা ঘরানার শিল্পী মোহন সিংয়ের গান। তাঁর উচ্চারণ আমাকে মুগ্ধ করেছে। গান শুনলে আমার হূদয়-মন পূর্ণ হয়ে যায়। এডিনবরা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পণ্ডিত রবিশঙ্করের কনসার্ট শুনে ভীষণ মুগ্ধ হয়েছিলাম। রজনীকান্ত, অতুলপ্রসাদের গান বেশি শুনি। আমার ভাগনি ফারজানা শাওনের গানও ভালো লাগে। বারবার শুনি ‘আমার হাত ধরে তুমি নিয়ে চলো সখা’, ‘লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ’ প্রভৃতি।

যত্রতত্র ঘুরেছি
পৃথিবীর অর্ধেক দেশ আমি দেখেছি। বাংলাদেশও ঘুরেছি যত্রতত্র। দেশে রাঙামাটি, দিনাজপুর আমার সবচেয়ে প্রিয়। বিদেশে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো বেশি ভালো লাগে। বারবার যেতে ইচ্ছে করে হাভানা, কিউবা। মানুষ যে কত ভালো হতে পারে, তা আমি কিউবায় গিয়ে বুঝেছি।

আড্ডা বাঁচিয়ে রেখেছে
আমি আড্ডাপাগল মানুষ। আড্ডা আমাকে বাঁচিয়ে রাখে। আড্ডা দিতে না পারলে অসহায় বোধ করি। নাটকের বাইরে কবি, ঔপন্যাসিক, চিত্রশিল্পীদের সঙ্গেও আমি নিয়মিত আড্ডা দিই। আড্ডাকে আমি সৃজনশীলতার অংশ বলে মনে করি। তরুণদের সঙ্গে আড্ডা দিতে ভালো লাগে। কারণ, তখন আমি অদৃশ্য এক প্রতিযোগিতায় মেতে উঠি।

সর্বশেষ দেখেছি ‘আবহমান’
সুযোগ নেই বলে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র দেখা হয় না। হলিউড, বলিউড ও জাপানের ছবি বেশি দেখি। ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবি ভালো লাগে। সর্বশেষ দেখেছি আবহমান। কয়েক দিন আগে দেখলাম পেইজ নাম্বার এইট ও দ্য আর্টিস্ট।

স্বপ্ন দেখি, এক দিন সব ঠিক হয়ে যাবে
স্বপ্ন দেখি, আগেও দেখেছি। কিন্তু সব স্বপ্নই যেন ভেঙে খান খান হয়ে যাচ্ছে। একটা মানবিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন ছিল, যেটা আজও হলো না। তবু স্বপ্ন দেখি, এক দিন সব ঠিক হয়ে যাবে। নদীগুলো নাব্য হবে। সৃজনশীল মানুষের মূল্যায়ন করা হবে। সাহিত্যে-শিল্পে উৎকর্ষতা বৃদ্ধি পাবে।
 সাক্ষাৎকার গ্রহণ: আহমেদ হোসেন

No comments

Powered by Blogger.