ত্রিপোলির চ্যালেঞ্জ-বিদ্রোহীরা কি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারবে? by আলীয়া আলানা
যুদ্ধের ফল যাই হোক না কেন বিদ্রোহীরা নিজেদের ঐক্যবদ্ধ রাখার ক্ষেত্রে মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে। প্রথমত, পূর্বাঞ্চলীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। গাদ্দাফি পশ্চিমাঞ্চলীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে আনুকূল্য দেখান এবং পূর্বাঞ্চলীয়দের অবহেলা করেন
কিছু সময়ের জন্য মনে হয়েছিল যুদ্ধের ধূম্রজাল বুঝিবা পরিষ্কার হয়েছে। তখন শ্মশ্রুমণ্ডিত হাসিখুশি সাইফ-আল গাদ্দাফিকে দেখা গেল ত্রিপোলি হোটেলের কাছে জনতাকে সম্ভাষণ জানাতে। সমর্থকরা তাকে ঘিরেই ছিল, তাদের কারও কারও হাতে ছিল নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড। এই সমর্থকরা এক সময় আত্মগোপন করেছিল। এ দৃশ্য দেখা যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টারও কম সময় আগে বিদ্রোহীরা গাদ্দাফির উত্তরসূরি হিসেবে পরিচিত সাইফকে আটক করার ঘোষণা দিয়েছিল। ছয় মাস আগে 'ওডিসি ডন' শুরু হওয়ার পর এখন অস্ত্রের ঝনঝনানির মধ্যে অনেক বিভ্রান্তি ও গুজবে লিবিয়ার বাতাস ভারী হয়ে আছে।
ফোনে আলাপকালে গাদ্দাফির একজন সহযোগী মোহাম্মেদ সারজাইনি বলেন, 'এখানে কী ঘটছে কেউ জানে না।' লিবিয়ার যে কোনো স্থানে গাদ্দাফি থেকে থাকতে পারেন। বিদ্রোহীদের সাফল্য সত্ত্বেও গাদ্দাফি শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়ে যাবেন এবং তার বিশ্বস্ত অনুগামীরা তাকেই অনুসরণ করবেন বলে সারজাইনি উল্লেখ করেন। লিবিয়ায় যুদ্ধ গত ১৩ মার্চে শুরু হওয়ার পর এক সপ্তাহ আগে ত্রিপোলির মাত্র ৪৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পূর্বাঞ্চলীয় শহর জাবিয়া বিদ্রোহীদের দখলে আসার মধ্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে পেঁৗছে। জাবিয়া গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি ত্রিপোলি ও গাদ্দাফি সমর্থকদের গ্যাসোলিন সরবরাহের একমাত্র উৎস। এ শহরের পতন ও সরকারি সৈন্যদের পালিয়ে যাওয়ার ফলে বিদ্রোহীদের ত্রিপোলিতে প্রবেশ করা সহজ হয়।
বিদ্রোহীদের অপেক্ষমাণ সরকার-ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিল (এনটিসি) তখন তড়িঘড়ি করে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনে উল্লাস প্রকাশ করে লিবিয়ার জনগণকে অভিনন্দন জানাল। আর এটা তারা এমন সময় ঘোষণা দিল যখন হোটেল রিক্সোসে অবস্থানকারী সরকারি মুখপাত্র গাদ্দাফি এখনও ৬৫ হাজার সৈন্যকে কমান্ড করছেন বলে উল্লেখ করেন। এ অপারেশনের অগ্রভাগে থাকা ফ্রান্স বিদ্রোহীদের বিজয়ে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা প্রেরণ করে। গাদ্দাফির ৪২ বছরের শাসন ও যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটির পুনর্গঠনে সাহায্যের জন্য আহূত লিবিয়ার সহমর্মী দেশগুলোর পরবর্তী বৈঠকটি প্যারিসেই অনুষ্ঠিত হবে। আরও কয়েকটি লিবীয় দূতাবাসে এনটিসি পতাকা উড্ডীন করা হয়েছে।
কিন্তু গাদ্দাফি কোথায়? গত মে মাসে তাকে শেষবারের মতো জনসমক্ষে দেখা গিয়েছিল। এরপর থেকে তার একের পর এক অডিওবার্তা সম্প্রচার করা হয়েছে। গত কিছুদিন ধরে এই অডিও বার্তা বেশি করে সম্প্রচারিত হয়েছে। ১৫ আগস্ট ত্রিপোলি বিদ্রোহী হামলার মুখে পড়ার পর তার কণ্ঠে জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান শোনা যায়, 'অস্ত্র হাতে তুলে নাও।' এর ১৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে সম্প্রচারিত আর এক বার্তায় তিনি ট্রাইবাল নেতাদের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শামিল হওয়ার জন্য আহ্বান জানান। সারারাত ধরে তার কণ্ঠে শোনা যায় বারবার জনতাকে লড়াই করার আহ্বান জানাতে। তিনি বলেন, 'আপনারা কি ত্রিপোলিকে বাগদাদের মতো ভস্মীভূত হতে দেবেন?'
তবে এখনও তিনি জনগণের দৃষ্টিসীমার বাইরে রয়েছেন। কেউ জল্পনা করছেন গাদ্দাফি এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, আলজিরিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করছেন এমন কথাও বলাবলি হচ্ছে। এমনও রটনা রয়েছে যে, দক্ষিণ আফ্রিকার একটি বিমান তাকে নিয়ে গেছে বা উড়ানের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি মাল্টা, এমনকি ভেনিজুয়েলায় পালিয়ে থাকতে পারেন বলেও কেউ কেউ মনে করছেন। আবার মরুভূমিতেও তার গা-ঢাকা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও কারও কারও ধারণা। আমাদের জানার মধ্যে এখন যেটা রয়েছে সেটা হলো উল্কার বেগে বিদ্রোহীরা ত্রিপোলিতে ঢুকে পড়েছে। তাদের ন্যাটো বিমান সহায়তা দেওয়া হয়। জঙ্গি বিমানগুলো গাদ্দাফির গুরুত্বপূর্ণর্ স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা পরিচালনা করে। যুদ্ধের ভারসাম্য এর ফলে বিদ্রোহীদের দিকে হেলে যায়। যেসব সৈন্য সম্মুখ সমরে অংশ নিয়েছে তাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রসজ্জিত করার কাজটি ব্রিটেন ও ফ্রান্স সম্পন্ন করে। এভাবে গ্রাউন্ড ফোর্স রেডি করায় তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা গাদ্দাফির সেনাবাহিনীর অবকাঠামোই শুধু ধ্বংস করেনি, একই সঙ্গে এ বাহিনীকে দুর্বলও করে দেয়। এ কারণে গাদ্দাফি বাহিনী পুনঃসরবরাহ লাভ করতে ব্যর্থ হয়।
কিন্তু ত্রিপোলির পতনের খবর প্রকাশ করাটা আগাম হয়ে গেল কিনা সেটা ভাবার বিষয়। অধিকাংশ বিদেশি সাংবাদিকই এখনও ত্রিপোলিতে ভবনের মধ্যে আটকা পড়ে আছেন। কেবল স্কাই নিউজের অ্যালেক্স ক্রফোর্ড ত্রিপোলিতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাই এখান থেকে ভাসা ভাসা সংবাদ ছাড়া বিস্তারিত ও নির্ভরযোগ্য খবর মিলছে না। যুদ্ধ আদৌ শেষ হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে কেউ বলতে পারছেন না।
যুদ্ধের ফল যাই হোক না কেন বিদ্রোহীরা নিজেদের ঐক্যবদ্ধ রাখার ক্ষেত্রে মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে। প্রথমত, পূর্বাঞ্চলীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। গাদ্দাফি পশ্চিমাঞ্চলীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে আনুকূল্য দেখান এবং পূর্বাঞ্চলীয়দের অবহেলা করেন। বহুলাংশে পূর্বাঞ্চলীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর লোকজন নিয়ে গঠিত এনটিসি কী করে বাদবাকিদের তাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ করার কাজটি করবে? তবে এনটিসিতে পশ্চিম-ঝোঁকা বুদ্ধিজীবী, ব্যবসায়ী ও ইসলামপন্থিরাও রয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানবিহীন অবস্থায় ব্যালটবাক্সে ভোটদান এবং রাজনৈতিক দল গঠন বা করার অভিজ্ঞতা যেখানে নেই, সেই দেশকে এনটিসি ঐক্যবদ্ধ করবে?
গাদ্দাফি তার উদ্দেশ্য সাধনে বিভিন্ন শক্তি নিপুণভাবে ব্যবহার করায় ওস্তাদ ছিলেন। তিনি মেগ্রাহা ও ওয়ারফালা উপজাতির সঙ্গে সমঝোতা করে ক্ষমতা টিকিয়ে রেখেছিলেন। এসব উপজাতি দেশের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে রয়েছে, এরা তার প্রতি অনুগত এবং তারা ইতিমধ্যেই প্রতিশোধও নিয়েছে। এরপর গাদ্দাফির মতো উপজাতির কথা উল্লেখ করা যায়। এরা গাদ্দাফির আনুকূল্য পেয়ে আসছে। প্রশ্ন হলো, ক্ষমতা বণ্টনে পুনঃভারসাম্য কী করে এনটিসির নতুন সরকার আনবে?
বেনগাজি থেকে আনা ভিডিওতে দেখা যায়, বিদ্রোহীরা প্রায় সবাই বেসামরিক পোশাকেই যুদ্ধ করেছে। প্রশ্ন হলো, তাদের ক্রোধের লক্ষ্যবস্তু নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পর তারা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারবে তো?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস থেকে ভাষান্তর সুভাষ সাহা
ফোনে আলাপকালে গাদ্দাফির একজন সহযোগী মোহাম্মেদ সারজাইনি বলেন, 'এখানে কী ঘটছে কেউ জানে না।' লিবিয়ার যে কোনো স্থানে গাদ্দাফি থেকে থাকতে পারেন। বিদ্রোহীদের সাফল্য সত্ত্বেও গাদ্দাফি শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়ে যাবেন এবং তার বিশ্বস্ত অনুগামীরা তাকেই অনুসরণ করবেন বলে সারজাইনি উল্লেখ করেন। লিবিয়ায় যুদ্ধ গত ১৩ মার্চে শুরু হওয়ার পর এক সপ্তাহ আগে ত্রিপোলির মাত্র ৪৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পূর্বাঞ্চলীয় শহর জাবিয়া বিদ্রোহীদের দখলে আসার মধ্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে পেঁৗছে। জাবিয়া গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি ত্রিপোলি ও গাদ্দাফি সমর্থকদের গ্যাসোলিন সরবরাহের একমাত্র উৎস। এ শহরের পতন ও সরকারি সৈন্যদের পালিয়ে যাওয়ার ফলে বিদ্রোহীদের ত্রিপোলিতে প্রবেশ করা সহজ হয়।
বিদ্রোহীদের অপেক্ষমাণ সরকার-ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিল (এনটিসি) তখন তড়িঘড়ি করে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনে উল্লাস প্রকাশ করে লিবিয়ার জনগণকে অভিনন্দন জানাল। আর এটা তারা এমন সময় ঘোষণা দিল যখন হোটেল রিক্সোসে অবস্থানকারী সরকারি মুখপাত্র গাদ্দাফি এখনও ৬৫ হাজার সৈন্যকে কমান্ড করছেন বলে উল্লেখ করেন। এ অপারেশনের অগ্রভাগে থাকা ফ্রান্স বিদ্রোহীদের বিজয়ে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা প্রেরণ করে। গাদ্দাফির ৪২ বছরের শাসন ও যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটির পুনর্গঠনে সাহায্যের জন্য আহূত লিবিয়ার সহমর্মী দেশগুলোর পরবর্তী বৈঠকটি প্যারিসেই অনুষ্ঠিত হবে। আরও কয়েকটি লিবীয় দূতাবাসে এনটিসি পতাকা উড্ডীন করা হয়েছে।
কিন্তু গাদ্দাফি কোথায়? গত মে মাসে তাকে শেষবারের মতো জনসমক্ষে দেখা গিয়েছিল। এরপর থেকে তার একের পর এক অডিওবার্তা সম্প্রচার করা হয়েছে। গত কিছুদিন ধরে এই অডিও বার্তা বেশি করে সম্প্রচারিত হয়েছে। ১৫ আগস্ট ত্রিপোলি বিদ্রোহী হামলার মুখে পড়ার পর তার কণ্ঠে জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান শোনা যায়, 'অস্ত্র হাতে তুলে নাও।' এর ১৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে সম্প্রচারিত আর এক বার্তায় তিনি ট্রাইবাল নেতাদের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শামিল হওয়ার জন্য আহ্বান জানান। সারারাত ধরে তার কণ্ঠে শোনা যায় বারবার জনতাকে লড়াই করার আহ্বান জানাতে। তিনি বলেন, 'আপনারা কি ত্রিপোলিকে বাগদাদের মতো ভস্মীভূত হতে দেবেন?'
তবে এখনও তিনি জনগণের দৃষ্টিসীমার বাইরে রয়েছেন। কেউ জল্পনা করছেন গাদ্দাফি এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, আলজিরিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করছেন এমন কথাও বলাবলি হচ্ছে। এমনও রটনা রয়েছে যে, দক্ষিণ আফ্রিকার একটি বিমান তাকে নিয়ে গেছে বা উড়ানের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি মাল্টা, এমনকি ভেনিজুয়েলায় পালিয়ে থাকতে পারেন বলেও কেউ কেউ মনে করছেন। আবার মরুভূমিতেও তার গা-ঢাকা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও কারও কারও ধারণা। আমাদের জানার মধ্যে এখন যেটা রয়েছে সেটা হলো উল্কার বেগে বিদ্রোহীরা ত্রিপোলিতে ঢুকে পড়েছে। তাদের ন্যাটো বিমান সহায়তা দেওয়া হয়। জঙ্গি বিমানগুলো গাদ্দাফির গুরুত্বপূর্ণর্ স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা পরিচালনা করে। যুদ্ধের ভারসাম্য এর ফলে বিদ্রোহীদের দিকে হেলে যায়। যেসব সৈন্য সম্মুখ সমরে অংশ নিয়েছে তাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রসজ্জিত করার কাজটি ব্রিটেন ও ফ্রান্স সম্পন্ন করে। এভাবে গ্রাউন্ড ফোর্স রেডি করায় তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা গাদ্দাফির সেনাবাহিনীর অবকাঠামোই শুধু ধ্বংস করেনি, একই সঙ্গে এ বাহিনীকে দুর্বলও করে দেয়। এ কারণে গাদ্দাফি বাহিনী পুনঃসরবরাহ লাভ করতে ব্যর্থ হয়।
কিন্তু ত্রিপোলির পতনের খবর প্রকাশ করাটা আগাম হয়ে গেল কিনা সেটা ভাবার বিষয়। অধিকাংশ বিদেশি সাংবাদিকই এখনও ত্রিপোলিতে ভবনের মধ্যে আটকা পড়ে আছেন। কেবল স্কাই নিউজের অ্যালেক্স ক্রফোর্ড ত্রিপোলিতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাই এখান থেকে ভাসা ভাসা সংবাদ ছাড়া বিস্তারিত ও নির্ভরযোগ্য খবর মিলছে না। যুদ্ধ আদৌ শেষ হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে কেউ বলতে পারছেন না।
যুদ্ধের ফল যাই হোক না কেন বিদ্রোহীরা নিজেদের ঐক্যবদ্ধ রাখার ক্ষেত্রে মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে। প্রথমত, পূর্বাঞ্চলীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। গাদ্দাফি পশ্চিমাঞ্চলীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে আনুকূল্য দেখান এবং পূর্বাঞ্চলীয়দের অবহেলা করেন। বহুলাংশে পূর্বাঞ্চলীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর লোকজন নিয়ে গঠিত এনটিসি কী করে বাদবাকিদের তাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ করার কাজটি করবে? তবে এনটিসিতে পশ্চিম-ঝোঁকা বুদ্ধিজীবী, ব্যবসায়ী ও ইসলামপন্থিরাও রয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানবিহীন অবস্থায় ব্যালটবাক্সে ভোটদান এবং রাজনৈতিক দল গঠন বা করার অভিজ্ঞতা যেখানে নেই, সেই দেশকে এনটিসি ঐক্যবদ্ধ করবে?
গাদ্দাফি তার উদ্দেশ্য সাধনে বিভিন্ন শক্তি নিপুণভাবে ব্যবহার করায় ওস্তাদ ছিলেন। তিনি মেগ্রাহা ও ওয়ারফালা উপজাতির সঙ্গে সমঝোতা করে ক্ষমতা টিকিয়ে রেখেছিলেন। এসব উপজাতি দেশের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে রয়েছে, এরা তার প্রতি অনুগত এবং তারা ইতিমধ্যেই প্রতিশোধও নিয়েছে। এরপর গাদ্দাফির মতো উপজাতির কথা উল্লেখ করা যায়। এরা গাদ্দাফির আনুকূল্য পেয়ে আসছে। প্রশ্ন হলো, ক্ষমতা বণ্টনে পুনঃভারসাম্য কী করে এনটিসির নতুন সরকার আনবে?
বেনগাজি থেকে আনা ভিডিওতে দেখা যায়, বিদ্রোহীরা প্রায় সবাই বেসামরিক পোশাকেই যুদ্ধ করেছে। প্রশ্ন হলো, তাদের ক্রোধের লক্ষ্যবস্তু নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পর তারা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারবে তো?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস থেকে ভাষান্তর সুভাষ সাহা
No comments