টুকিটাকি

সাগরতলে রেকর্ড গড়বেন জেমস ক্যামেরন বিশ্বের খ্যাতনামা ব্যক্তিদের থাকে আজব আজব শখ। কখনো কখনো সে শখের তীব্রতা নেশায় পরিণত হয়। সাগরতলের রহস্য সন্ধানে ঘুরে বেড়ানোর শখ থেকে অ্যাভাটর, টাইটানিক-এর মতো বিখ্যাত ছবির নির্মাতা জেমস ক্যামেরন এ মাসে পরিকল্পনা করেছেন সমুদ্রের সাত মাইল গভীরে পাড়ি দেওয়ার।

শৈশব থেকেই গভীর সাগরতলের অসীম রহস্যের প্রতি তীব্র আকর্ষণ ক্যামেরনের। ডুবুরিবেশে কিংবা একক ডুবোজাহাজ নিয়ে বহুবার গেছেন সাগরের রহস্য সন্ধানে। তুলেছেন হাজার হাজার ছবি, করেছেন অসংখ্য ভিডিও।
এ পর্যন্ত ৭২ বার সাগরতলে নামা ক্যামেরন সাগরতলে চষে বেড়ানোর নেশা থেকেই ১৯৯৭ সালে নির্মাণ করেছিলেন টাইটানিক। এ ছবি তাঁকে এনে দিয়েছিল ব্লকব্লাস্টার সাফল্য। শুধু টাইটানিক নির্মাণ করার জন্যই ৩৩ বার সাগরতলে নেমেছিলেন ক্যামেরন। উল্লেখ্য, টাইটানিক ছবির থ্রি-ডি ভার্সন আসছে আগামী ৪ এপ্রিল।
অবসরপ্রাপ্ত ডুবুরি আলফ্রেড ম্যাকলরেন এ প্রসঙ্গে বলেছেন, এটি খুবই বুদ্ধিদীপ্ত একটি কাজ। এর আগে কেউ এ ধরনের দুঃসাহসিক অভিযানে যায়নি। এটি সত্যিই অসাধারণ। বন্দুকের গুলি যেমন যাওয়ার পথে অনবরত ঘুরতে থাকে, তেমনি ক্যামেরনের ডুবোজাহাজ এর উলম্ব অক্ষের চারদিকে ঘুরতে থাকে। ইতিমধ্যে একটি পরীক্ষামূলক ভ্রমণে পাপুয়া নিউগিনির পার্শ্ববর্তী প্রশান্ত মহাসাগরে পাঁচ হাজার মাইলের বেশি পাড়ি দিয়ে তিনি পরীক্ষামূলক যানবাহনের আধুনিক রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন। সাগরতলে অনুসন্ধান মহাশূন্যে অনুসন্ধানের তুলনায় অনেক বেশি কঠিন। সাগরতলের পানি সব সময়ই ক্ষতিকর, প্রায় সময়ই ধ্বংসাবশেষে পূর্ণ এবং আলো ও রেডিও তরঙ্গের জন্য অস্বচ্ছ।
এবার তিনি রীতিমতো ঘোষণা দিয়ে নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙার উদ্যোগ নিয়েছেন। ক্যামেরন জানান, তিনি গুয়াম থেকে ২০০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত প্রশান্ত মহাসাগরের মারিয়ানা ট্রেঞ্চের চ্যালেঞ্জার ডিপ নামক জায়গায় যাবেন এ মাসের শেষের দিকে, যেখানে এ পর্যন্ত মাত্র একবার মানুষের পদচিহ্ন পড়েছে। ১৯৬০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুজন নৌসেনা মাত্র ২০ মিনিটের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন। সাগরের তলদেশের এ জায়গাটি ৬ দশমিক ৮ মাইল গভীর (১১ কি.মি.)।
মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এই স্থানটিতে যাওয়ার জন্য ক্যামেরন ব্যবহার করবেন ১২ টন ওজনের ডুবোজাহাজ ডিপ-সি চ্যালেঞ্জার। তাঁর সঙ্গে এ যাত্রায় অংশীদার হচ্ছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি সোসাইটি। পাপুয়া নিউগিনিতে পরীক্ষামূলক সমুদ্রভ্রমণের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে জেমস ক্যামেরন বলেন, ‘এটি সত্যিই মজার। আমার পৃথিবীতে এর চেয়ে বড় কিছু নেই। সমুদ্রে থাকাকালে শরীরের ওপর যত না চাপ থাকে, তার চেয়ে মনের ওপর চাপ বেশি থাকে।’
দেখা যাক, এই দুঃসাহসিক অভিযানের মাধ্যমে ক্যামেরন মানুষকে কী উপহার দিতে পারেন।

No comments

Powered by Blogger.