বিশেষ সাক্ষাৎকার: আবদুল মতিন খসরু-সুবিধাভোগীরাই সমালোচক by আবদুল মতিন খসরু
এ বি এম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালনকালে বিচার বিভাগ নিয়ে নানা বিতর্ক হয়েছে। বিতর্ক দেখা দিয়েছে সংবিধানের পঞ্চম, সপ্তম ও ত্রয়োদশ সংশোধনী নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায় নিয়েও। এই প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন ও সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরুর সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হলো।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান ও আশিস সৈকত
প্রথম আলো এ বি এম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতি হিসেবে সাত মাস দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময়ে সংবিধান বিষয়ে অনেক রায় হয়েছে, যা রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। আপনার মূল্যায়ন কী?
আবদুল মতিন খসরু প্রধান বিচারপতি হিসেবে এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ যেসব রায় দিয়েছেন, তা নিয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। এসব ঐতিহাসিক রায় ছিল সংবিধানের বিভিন্ন সময়ে করা সংশোধনীগুলোর বৈধতা নিয়ে। সামরিক শাসনকে কোনো সময়ই সংবিধান গ্রহণ করতে পারে না। কিন্তু নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে বিভিন্ন সময় ক্ষমতা দখলকারী সেনাশাসকেরা তাঁদের সুবিধামতো সংবিধান সংশোধন করেছেন, যা সংবিধান ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। ফলে সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন এসব সংশোধনীর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত সঠিক রায়ই দিয়েছেন। এ নিয়ে একমাত্র সেনাশাসকদের অবৈধ সুবিধাভোগীরাই প্রশ্ন তুলতে পারেন। সংবিধানের পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনীর মাধ্যমে ওই সব অবৈধ কাজকেই বৈধতা দেওয়া হয়েছিল। ফলে এসব অবৈধ কাজের জন্য আনা সংশোধনী বাতিল হবেই। যেকোনো আদালতে গেলে সংবিধান অনুসারে এসব সংশোধনী বাতিলের কোনো বিকল্প নেই।
প্রথম আলো বিদায়ী প্রধান বিচারপতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা দিলেও তাঁদের হাত-পা বাঁধা। সে ক্ষেত্রে বিচার বিভাগ কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন?
আবদুল মতিন খসরু এখানে প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে। হাত-পা বাঁধা মানে বিচারকদের বিবেক বাঁধা—এ কথা তিনি বলেননি। প্রয়োজনীয় জনবল, কম্পিউটার, প্রশাসনিক দক্ষতা, যানবাহন সমস্যা থাকার বিষয়টিকে তিনি বিচারালয়ের সংকট বলে উল্লেখ করেছেন। বিচারকদের বেতন-ভাতাও কম। কারণ, একজন আইনজ্ঞ মামলা পরিচালনা করলে মাসে যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারেন, বিচারপতি হলে এর দশ ভাগের এক ভাগও পান না। এটিও একটি সংকট। যে কারণে লাখো মামলা আদালতে থাকলেও তা নিষ্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। আমার মূল্যায়ন হলো, বিচার বিভাগ এখন স্বাধীনভাবেই কাজ করছে। কারও দিকে তাকিয়ে তাঁদের রায় দিতে হয় না।
প্রথম আলো বিদায়ী প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ পুনর্গঠন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। আইনজীবী সমিতির দাবি, এর মাধ্যমে তিনি দক্ষ বিচারকদের নিষ্ক্রিয় করে রেখেছেন।
আবদুল মতিন খসরু এ ধরনের সমালোচনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারা এসব সমালোচনা করছেন, তা দেখলেই বিষয়টি সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠবে। পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনীর সুবিধা পেয়ে যাঁরা হালুয়া-রুটি পেয়েছিলেন, তাঁরা সাবেক প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ গঠন নিয়ে সমালোচনা করবেন, এটাই স্বাভাবিক। আসলে অপরাধীদের প্রাণভোমরায় আঘাত লেগেছে বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ে। এরা দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বহাল থাকুক, তা চায় না।
প্রথম আলো সংবিধান নিয়ে আপিল বিভাগের রায় নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। অনেকে একে রাজনৈতিক পক্ষপাত বলেও অভিযোগ করছেন?
আবদুল মতিন খসরু পৃথিবীর কোনো দেশে এভাবে উচ্চ আদালতের রায় প্রত্যাখ্যান করার নজির নেই। দেশের সব নাগরিক উচ্চ আদালতের রায় মানবেন, এটাই শিষ্টাচার। কেউ কোনো রায়ে ক্ষুব্ধ হলে তিনি তাঁর কথা বলতে পারেন। কিন্তু এভাবে সংবাদ সম্মেলন করে একটি রাজনৈতিক দলের রায় প্রত্যাখ্যান নজিরবিহীন ঘটনা। মজার খবর হলো, আইনজীবী সমিতিও এ রায় প্রত্যাখ্যান করেছে। আসলে এ রায়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি, যাদের জন্ম হয়েছিল সামরিক শাসনের মধ্যে। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জনগণের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, কারা এ সংশোধনীর সুবিধাভোগী। কারণ, এ রায়ে দেশে অবৈধ ক্ষমতা দখলদারদের আসার পথ রুদ্ধ হয়েছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুদৃঢ় হয়েছে। তাই এ রায় নিয়ে সমালোচনা তাঁরাই করেন, যাঁরা অগণতান্ত্রিক সরকারের দোসর বা যাঁরা মনে মনে অসাংবিধানিক পথে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন।
প্রথম আলো বিরোধী দলের দাবি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা রাখতে হবে। কিন্তু বিদায়ী প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে প্রধান উপদেষ্টা করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে তাঁরা কে এম হাসানের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের বিরোধিতার উদাহরণ দেন। এ সমস্যার সমাধান কী?
আবদুল মতিন খসরু বিচারপতি কে এম হাসান ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক-বিষয়ক সম্পাদক। বয়স বাড়ানোর কৌশল করে তাঁকে বিএনপি সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করতে চেয়েছিল বলেই প্রশ্ন উঠেছিল। আর বিচারপতি খায়রুল হক তো কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য নন। বিবেকবান একজন মানুষ। কোনো কৌশল করে তাঁকে কিছু বানানোর চেষ্টাও করা হয়নি। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান আগামী আড়াই বছর পর কে হবেন, সেটা অনেক পরের বিষয়। এখন সংবিধান সংশোধনের কাজ চলছে। এরই মধ্যে বিচারপতি ও আইনজ্ঞেরা দাবি জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা পদে সাবেক প্রধান বিচারপতিদের রাখার বিধান রদ করতে। সংসদ চাইলে বিষয়টি রদ করতে পারে। সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটিও বিষয়টি নজরে রেখেছে। তাই আগামী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান যে সাবেক প্রধান বিচারপতিও হবেন, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারবেন না।
প্রথম আলো আদালতের রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে সংসদে নতুন করে আইন পাস করতে হবে কি?
আবদুল মতিন খসরু রায়ে বলা হয়েছে, সংবিধান অনুসারে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবৈধ। কিন্তু দেশ-জাতির নিরাপত্তা ও বাস্তবতার স্বার্থেই আদালত আরও দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার সুযোগ রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী আদালতের রায় অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কমিটিকে পরামর্শ দিয়েছেন। কমিটি এ ব্যাপারে এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করেছে। সংসদের নবম অধিবেশনেই সংবিধান সংশোধনের কাজটি শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমেই সব আলোচনা-জটিলতার অবসান ঘটবে বলে আশা করি। দুর্ভাগ্যজনক যে, বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও বিরোধী দল সংবিধান সংশোধন কমিটিতে তাদের প্রতিনিধি দেয়নি, এমনকি তারা বিশেষ কমিটির সভায় এসে তাদের মত জানায়নি। এর পরও তারা সংসদে এসে সংবিধান সংশোধনের আলোচনায় অংশ নিতে পারে। তাদের কোনো যুক্তি গ্রহণযোগ্য হলে অবশ্যই সরকার তা গ্রহণ করবে।
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ।
আবদুল মতিন খসরু ধন্যবাদ।
প্রথম আলো এ বি এম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতি হিসেবে সাত মাস দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময়ে সংবিধান বিষয়ে অনেক রায় হয়েছে, যা রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। আপনার মূল্যায়ন কী?
আবদুল মতিন খসরু প্রধান বিচারপতি হিসেবে এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ যেসব রায় দিয়েছেন, তা নিয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। এসব ঐতিহাসিক রায় ছিল সংবিধানের বিভিন্ন সময়ে করা সংশোধনীগুলোর বৈধতা নিয়ে। সামরিক শাসনকে কোনো সময়ই সংবিধান গ্রহণ করতে পারে না। কিন্তু নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে বিভিন্ন সময় ক্ষমতা দখলকারী সেনাশাসকেরা তাঁদের সুবিধামতো সংবিধান সংশোধন করেছেন, যা সংবিধান ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। ফলে সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন এসব সংশোধনীর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত সঠিক রায়ই দিয়েছেন। এ নিয়ে একমাত্র সেনাশাসকদের অবৈধ সুবিধাভোগীরাই প্রশ্ন তুলতে পারেন। সংবিধানের পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনীর মাধ্যমে ওই সব অবৈধ কাজকেই বৈধতা দেওয়া হয়েছিল। ফলে এসব অবৈধ কাজের জন্য আনা সংশোধনী বাতিল হবেই। যেকোনো আদালতে গেলে সংবিধান অনুসারে এসব সংশোধনী বাতিলের কোনো বিকল্প নেই।
প্রথম আলো বিদায়ী প্রধান বিচারপতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা দিলেও তাঁদের হাত-পা বাঁধা। সে ক্ষেত্রে বিচার বিভাগ কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন?
আবদুল মতিন খসরু এখানে প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে। হাত-পা বাঁধা মানে বিচারকদের বিবেক বাঁধা—এ কথা তিনি বলেননি। প্রয়োজনীয় জনবল, কম্পিউটার, প্রশাসনিক দক্ষতা, যানবাহন সমস্যা থাকার বিষয়টিকে তিনি বিচারালয়ের সংকট বলে উল্লেখ করেছেন। বিচারকদের বেতন-ভাতাও কম। কারণ, একজন আইনজ্ঞ মামলা পরিচালনা করলে মাসে যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারেন, বিচারপতি হলে এর দশ ভাগের এক ভাগও পান না। এটিও একটি সংকট। যে কারণে লাখো মামলা আদালতে থাকলেও তা নিষ্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। আমার মূল্যায়ন হলো, বিচার বিভাগ এখন স্বাধীনভাবেই কাজ করছে। কারও দিকে তাকিয়ে তাঁদের রায় দিতে হয় না।
প্রথম আলো বিদায়ী প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ পুনর্গঠন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। আইনজীবী সমিতির দাবি, এর মাধ্যমে তিনি দক্ষ বিচারকদের নিষ্ক্রিয় করে রেখেছেন।
আবদুল মতিন খসরু এ ধরনের সমালোচনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারা এসব সমালোচনা করছেন, তা দেখলেই বিষয়টি সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠবে। পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনীর সুবিধা পেয়ে যাঁরা হালুয়া-রুটি পেয়েছিলেন, তাঁরা সাবেক প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ গঠন নিয়ে সমালোচনা করবেন, এটাই স্বাভাবিক। আসলে অপরাধীদের প্রাণভোমরায় আঘাত লেগেছে বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ে। এরা দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বহাল থাকুক, তা চায় না।
প্রথম আলো সংবিধান নিয়ে আপিল বিভাগের রায় নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। অনেকে একে রাজনৈতিক পক্ষপাত বলেও অভিযোগ করছেন?
আবদুল মতিন খসরু পৃথিবীর কোনো দেশে এভাবে উচ্চ আদালতের রায় প্রত্যাখ্যান করার নজির নেই। দেশের সব নাগরিক উচ্চ আদালতের রায় মানবেন, এটাই শিষ্টাচার। কেউ কোনো রায়ে ক্ষুব্ধ হলে তিনি তাঁর কথা বলতে পারেন। কিন্তু এভাবে সংবাদ সম্মেলন করে একটি রাজনৈতিক দলের রায় প্রত্যাখ্যান নজিরবিহীন ঘটনা। মজার খবর হলো, আইনজীবী সমিতিও এ রায় প্রত্যাখ্যান করেছে। আসলে এ রায়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি, যাদের জন্ম হয়েছিল সামরিক শাসনের মধ্যে। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জনগণের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, কারা এ সংশোধনীর সুবিধাভোগী। কারণ, এ রায়ে দেশে অবৈধ ক্ষমতা দখলদারদের আসার পথ রুদ্ধ হয়েছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুদৃঢ় হয়েছে। তাই এ রায় নিয়ে সমালোচনা তাঁরাই করেন, যাঁরা অগণতান্ত্রিক সরকারের দোসর বা যাঁরা মনে মনে অসাংবিধানিক পথে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন।
প্রথম আলো বিরোধী দলের দাবি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা রাখতে হবে। কিন্তু বিদায়ী প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে প্রধান উপদেষ্টা করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে তাঁরা কে এম হাসানের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের বিরোধিতার উদাহরণ দেন। এ সমস্যার সমাধান কী?
আবদুল মতিন খসরু বিচারপতি কে এম হাসান ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক-বিষয়ক সম্পাদক। বয়স বাড়ানোর কৌশল করে তাঁকে বিএনপি সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করতে চেয়েছিল বলেই প্রশ্ন উঠেছিল। আর বিচারপতি খায়রুল হক তো কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য নন। বিবেকবান একজন মানুষ। কোনো কৌশল করে তাঁকে কিছু বানানোর চেষ্টাও করা হয়নি। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান আগামী আড়াই বছর পর কে হবেন, সেটা অনেক পরের বিষয়। এখন সংবিধান সংশোধনের কাজ চলছে। এরই মধ্যে বিচারপতি ও আইনজ্ঞেরা দাবি জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা পদে সাবেক প্রধান বিচারপতিদের রাখার বিধান রদ করতে। সংসদ চাইলে বিষয়টি রদ করতে পারে। সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটিও বিষয়টি নজরে রেখেছে। তাই আগামী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান যে সাবেক প্রধান বিচারপতিও হবেন, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারবেন না।
প্রথম আলো আদালতের রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে সংসদে নতুন করে আইন পাস করতে হবে কি?
আবদুল মতিন খসরু রায়ে বলা হয়েছে, সংবিধান অনুসারে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবৈধ। কিন্তু দেশ-জাতির নিরাপত্তা ও বাস্তবতার স্বার্থেই আদালত আরও দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার সুযোগ রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী আদালতের রায় অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কমিটিকে পরামর্শ দিয়েছেন। কমিটি এ ব্যাপারে এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করেছে। সংসদের নবম অধিবেশনেই সংবিধান সংশোধনের কাজটি শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমেই সব আলোচনা-জটিলতার অবসান ঘটবে বলে আশা করি। দুর্ভাগ্যজনক যে, বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও বিরোধী দল সংবিধান সংশোধন কমিটিতে তাদের প্রতিনিধি দেয়নি, এমনকি তারা বিশেষ কমিটির সভায় এসে তাদের মত জানায়নি। এর পরও তারা সংসদে এসে সংবিধান সংশোধনের আলোচনায় অংশ নিতে পারে। তাদের কোনো যুক্তি গ্রহণযোগ্য হলে অবশ্যই সরকার তা গ্রহণ করবে।
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ।
আবদুল মতিন খসরু ধন্যবাদ।
No comments