‘জানতাম, প্রমাণ করতে হবে ২২ গজেই’
এশিয়া কাপের অভিজ্ঞতা আসলে কেমন হলো? তামিম ইকবাল: অসাধারণ, আসলে এমন সময় খুব বেশি আসে না আমাদের! টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচের পরই আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। পাকিস্তানের ২৬২ তাড়া করে জিতে যাচ্ছিলাম। এরপর আমি আর সাকিব আলাপ করছিলাম যে ভারতকে ২৮০-৯০ রানে আটকাতে পারলেও আমরা জিতে যাব।
সবার ভাবনাটাই ছিল এমন। শেষ পর্যন্ত হলোও তা-ই। একটা বিশ্বাস চলে এসেছিল সবার মাঝে। তুমুল আত্মবিশ্বাসের ফসল এই সাফল্য।
এই আত্মবিশ্বাসের উৎস কী ছিল?
তামিম: আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে পরস্পরের সাফল্য উপভোগ করা। আগেও ছিল এটা, তবে এমন প্রকাশ্য ছিল না। আরও কিছু ব্যাপার ছিল, যেমন-একজন আরেকজনের পাশে দাঁড়ানো। আমার অভিজ্ঞতাটাই বলি, টুর্নামেন্টের আগে যে কারণেই হোক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে আমাকে নিয়ে। কিন্তু দলে ফেরার পর কেউ আমাকে এটা নিয়ে কিছুই বলেনি, কেউ বুঝতেই দেয়নি।
ফাইনালের হতাশা কেটেছে?
তামিম: এখনো কাটেনি। জিততে পারলে প্রায় বিশ্বকাপ জয়ের অনভূতি হতো। বলতে পারতাম, আমরা এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন! তবে কোচ আমাদের বলেছেন, ‘একবার ভেবে দেখো, দুই সপ্তাহ আগে তোমরা কোথায় ছিলে, এখন কোথায়।’ যা পেয়েছি, এটাই কম কী!
আপনি বড় কিছু করলে হয়তো শিরোপাই আসত, এমন আক্ষেপ হয়নি?
তামিম: হয়েছে তো অবশ্যই। বড় ব্যাটসম্যানরা এই বড় উপলক্ষগুলো নিজের করে নেয়। ভালো শুরু পেলে বড় কিছু করে। বলতে দ্বিধা নেই, এই জায়গাটায় আমার কিছু ঘাটতি আছে। ক্যারিয়ারে অনেকবার এক শ করার সুযোগ নষ্ট করেছি। তবে এখনো বয়স বেশি হয়নি, প্রতিদিনই কিছু শিখছি। আমি ঠিক করেছি নান্নু ভাই (মিনহাজুল আবেদিন), আকরাম চাচ্চু (আকরাম খান), সুমন ভাই (হাবিবুল বাশার), আশরাফুল ভাইদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলব।
আপনার চার ফিফটির একটি অন্তত সেঞ্চুরি হতে পারত...
তামিম: অবশ্যই, একটা ম্যাচ অন্তত নিজে জেতাতে পারলে ভালো লাগত। প্রথম তিন ম্যাচের আউট যদি দেখেন, ভাগ্যটাও ঠিক সঙ্গ দেয়নি। ফাইনালে বাজে শট খেলেছি। সব মিলিয়ে পারফরম্যান্সে খুব তৃপ্ত নই আমি।
প্রথম দুই ম্যাচে নিজেকে তো খানিকটা গুটিয়ে রেখেছিলেন, পরের দুটোয় সহজাত...
তামিম: বিশ্বাস করবেন না, টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচের দিন সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আমি কাঁপছি! জীবনে কখনো এমন হয়নি। ক্যারিয়ারে এত চাপেও কখনো ছিলাম না। তবে ক্রিকেট নিয়ে রিলাক্সড ছিলাম। ‘রান করতেই হবে’—এই ভাবনা প্রশ্রয় দিইনি। আগেই ঠিক করেছিলাম, একটু সময় নেব। প্রথম দুটো ইনিংসে এ জন্যই একটু বেশি সাবধানী ছিলাম। পরে আত্মবিশ্বাস পেয়ে স্বাভাবিক খেলেছি।
ওই চাপের মূল কারণ তো টুর্নামেন্টের আগের নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা?
তামিম: দলে নেই, খবরটা শোনার পর খুব অবাক হয়েছিলাম। কষ্টও লেগেছিল। জেদ ঠিক বলব না। তবে জানতাম, মুখে হাজার কথা বলেও লাভ নেই, সবকিছু ভুল প্রমাণ করতে হবে ব্যাট দিয়েই। আমার হাতে ওই একটা অস্ত্রই আছে। জানতাম, প্রমাণ করতে হবে ২২ গজেই। তবে আমার পরিবার, সতীর্থ, বন্ধুরা সবাই সাহায্য করেছে।
কোচ সেদিন বললেন, এশিয়া কাপের জন্য আপনার প্রস্তুতিটা ছিল দারুণ...
তামিম: ডিসেম্বরের পাকিস্তান সিরিজের পর একটা রুটিনের মতো করেছিলাম। শুধু নেটে ৪০-৪৫ মিনিট ব্যাটিং করে গেলাম, এমন নয়। অনুশীলনে সবকিছু কাভার করেছি; পেস-স্পিন, শর্ট বল, নিজের শট খেলা...ম্যাচের আগের দিন নেটে ব্যাটিং করি না, ছোটবেলার অভ্যাস। এ ছাড়া রুটিনটা প্রতিদিনই চালিয়ে গেছি। স্টুয়ার্ট ল বলেছে, এটা সব সময় চালিয়ে যেতে। আর মানসিকভাবে রিলাক্সড থাকার চেষ্টা করেছি।
সাবেক কোচ জেমি সিডন্সের কথা বলেছিলেন শ্রীলঙ্কা ম্যাচের পর, জেমি কী বলেছেন?
তামিম: বাদ পড়ার খবর পেয়ে জেমিই আমাকে ফোন করেছিল। মোটামুটি নিয়মিতই ফোন করে, এসএমএস দেয়। যেমন, ‘নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো’ বা ‘ভুলে যেয়ো না তুমি কোন মাপের ব্যাটসম্যান, কী করেছ, কী পারো’...এসব। জেমি বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটিং কোচ, ওর মতো একজনের কাছ থেকে এসব শুনলে অনুপ্রেরণা তো হয়ই। আর একটা মানসিক সম্পর্ক তো আছেই। সীমিত সামর্থ্যের ব্যাটসম্যান থেকে আমার এত উন্নতির পেছনে ওর অবদান অনেক।
স্টুয়ার্ট ল-র সঙ্গে সম্পর্কটা কি এমন?
তামিম: সম্পর্ক ভালো অবশ্যই। টেকনিক্যাল ব্যাপারে ল সব সময় বলে, ‘আমার কথা পছন্দ হলে তবেই চেষ্টা করবে।’ তো দু-একটি টেকনিক্যাল বিষয়ে কাজ করছি। হয়তো এই চারটা ইনিংসে সেটা কিছুটা কাজেও লেগেছে। আর মানসিক ব্যাপারটা তো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হবে।
ব্যাটিংয়ের মতো আলোচিত আপনার উদ্যাপনও। আপনি কি উদ্যাপন নিয়ে পরিকল্পনা করেন?
তামিম: মোটেও না। প্রথম ম্যাচে ফিফটি করার পর ওভাবে ব্যাট দেখানো আবেগের বহিঃপ্রকাশ। মনে হলো, নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছি। ফাইনালে চার আঙুল দেখিয়েছিলাম প্রথমবার টানা চার ফিফটি করেছি বলে। একবারই আমি শুধু প্ল্যান করে উদ্যাপন করেছিলাম, লর্ডসের সেঞ্চুরিটা। ম্যাচের দিন সকালে ভেবেছিলাম সেঞ্চুরি পেলে ওভাবে দেখাব।
এই উদ্যাপন নিয়ে তো আপনার সমালোচনাও হয়...
তামিম: আমার কোনো উদ্যাপন কাউকে ‘মিন’ করার জন্য নয় বা কষ্ট দেওয়ার জন্য নয়। আমি খুব ভালো করে জানি, ক্রিকেটে আজ ভালো করব, কাল খারাপ। আমি স্রেফ ওই মুহূর্তের সাফল্যটাকে উপভোগ করতে চাই। নতুন কিছু করে উদ্যাপন করলে সতীর্থরাও মজা পায়। এখন যেখানেই যাচ্ছি, সবাই শুধু চারটা আঙুল দেখাচ্ছে। জানতে চাইছে, কাকে দেখিয়েছি। বিশ্বাস করুন, আমি কাউকে দেখাতে চাইনি, শুধু উদ্যাপন করেছি।
বারবারই নানা বিতর্কে আপনার নাম এসেছে। ভাবমূর্তিও সবার কাছে ঠিক একরকম নয়...
তামিম: আমার দায় যে একভাগও নেই, বলব না। আমিও তো মানুষ, বয়সও বেশি নয়। তবে খুব বড় কিছুও যে করে ফেলেছি, সেটাও নয়। বিভিন্ন সময়ে মিডিয়ায় অনেক কিছু এসেছে, যাতে আমার দায় ছিল না। খারাপ লেগেছে। আমি তো জনে জনে গিয়ে বলতে পারি না, ভাই, আমি আসলে এটা করিনি। অবশ্য ওসব নিয়ে আমার ক্ষোভ নেই, ভাবনাও নেই। জানি, ব্যাট হাতে ভালো করাটাই আসল। একটা কথা সবাইকে বলতে চাই, আমি এত খারাপ নই, আই অ্যাম নট অ্যারোগ্যান্ট।
ওই সব ঘটনা নিশ্চয়ই অনেক শিক্ষা দিয়েছে?
তামিম: অবশ্যই, অনেক শিখেছি। খারাপ বা ভুল যতটুকু করেছি, আর করতে চাই না। আমাদের সংস্কৃতির অংশ হলো, ছোট ভাই ভুল করলে বড় ভাই ক্ষমা করে দেয়। ছোট ভাইয়ের উচিত সেই ভুল আর না করা। আমিও চাই না টুকটাক ওই ভুলগুলো করতে। আমার ধারণা, আমি আগের চেয়ে একটু হলেও অন্য মানুষ, একটু পরিণত।
সামনের লম্বা ফাঁকা সময়টায় কী করবেন?
তামিম: চোটের কারণে প্রিমিয়ার লিগে বেশির ভাগটাই খেলতে পারব না। তবে শিগগিরই আবার ট্রেনিং শুরু করব। পাকিস্তান সিরিজের চেয়ে এশিয়া কাপে ছয় কেজি ওজন কমিয়েছি। নিজেকে আরও ফিট করে নিজের ব্যাটিং নিয়ে কাজ করতে চাই। কানাডায় অলস্টার টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে এশিয়া একাদশে খেলব। আফ্রিদি, জয়াসুরিয়া, লারারাও খেলবে ওই টুর্নামেন্টে।
এই আত্মবিশ্বাসের উৎস কী ছিল?
তামিম: আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে পরস্পরের সাফল্য উপভোগ করা। আগেও ছিল এটা, তবে এমন প্রকাশ্য ছিল না। আরও কিছু ব্যাপার ছিল, যেমন-একজন আরেকজনের পাশে দাঁড়ানো। আমার অভিজ্ঞতাটাই বলি, টুর্নামেন্টের আগে যে কারণেই হোক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে আমাকে নিয়ে। কিন্তু দলে ফেরার পর কেউ আমাকে এটা নিয়ে কিছুই বলেনি, কেউ বুঝতেই দেয়নি।
ফাইনালের হতাশা কেটেছে?
তামিম: এখনো কাটেনি। জিততে পারলে প্রায় বিশ্বকাপ জয়ের অনভূতি হতো। বলতে পারতাম, আমরা এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন! তবে কোচ আমাদের বলেছেন, ‘একবার ভেবে দেখো, দুই সপ্তাহ আগে তোমরা কোথায় ছিলে, এখন কোথায়।’ যা পেয়েছি, এটাই কম কী!
আপনি বড় কিছু করলে হয়তো শিরোপাই আসত, এমন আক্ষেপ হয়নি?
তামিম: হয়েছে তো অবশ্যই। বড় ব্যাটসম্যানরা এই বড় উপলক্ষগুলো নিজের করে নেয়। ভালো শুরু পেলে বড় কিছু করে। বলতে দ্বিধা নেই, এই জায়গাটায় আমার কিছু ঘাটতি আছে। ক্যারিয়ারে অনেকবার এক শ করার সুযোগ নষ্ট করেছি। তবে এখনো বয়স বেশি হয়নি, প্রতিদিনই কিছু শিখছি। আমি ঠিক করেছি নান্নু ভাই (মিনহাজুল আবেদিন), আকরাম চাচ্চু (আকরাম খান), সুমন ভাই (হাবিবুল বাশার), আশরাফুল ভাইদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলব।
আপনার চার ফিফটির একটি অন্তত সেঞ্চুরি হতে পারত...
তামিম: অবশ্যই, একটা ম্যাচ অন্তত নিজে জেতাতে পারলে ভালো লাগত। প্রথম তিন ম্যাচের আউট যদি দেখেন, ভাগ্যটাও ঠিক সঙ্গ দেয়নি। ফাইনালে বাজে শট খেলেছি। সব মিলিয়ে পারফরম্যান্সে খুব তৃপ্ত নই আমি।
প্রথম দুই ম্যাচে নিজেকে তো খানিকটা গুটিয়ে রেখেছিলেন, পরের দুটোয় সহজাত...
তামিম: বিশ্বাস করবেন না, টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচের দিন সকালে ঘুম ভেঙে দেখি আমি কাঁপছি! জীবনে কখনো এমন হয়নি। ক্যারিয়ারে এত চাপেও কখনো ছিলাম না। তবে ক্রিকেট নিয়ে রিলাক্সড ছিলাম। ‘রান করতেই হবে’—এই ভাবনা প্রশ্রয় দিইনি। আগেই ঠিক করেছিলাম, একটু সময় নেব। প্রথম দুটো ইনিংসে এ জন্যই একটু বেশি সাবধানী ছিলাম। পরে আত্মবিশ্বাস পেয়ে স্বাভাবিক খেলেছি।
ওই চাপের মূল কারণ তো টুর্নামেন্টের আগের নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা?
তামিম: দলে নেই, খবরটা শোনার পর খুব অবাক হয়েছিলাম। কষ্টও লেগেছিল। জেদ ঠিক বলব না। তবে জানতাম, মুখে হাজার কথা বলেও লাভ নেই, সবকিছু ভুল প্রমাণ করতে হবে ব্যাট দিয়েই। আমার হাতে ওই একটা অস্ত্রই আছে। জানতাম, প্রমাণ করতে হবে ২২ গজেই। তবে আমার পরিবার, সতীর্থ, বন্ধুরা সবাই সাহায্য করেছে।
কোচ সেদিন বললেন, এশিয়া কাপের জন্য আপনার প্রস্তুতিটা ছিল দারুণ...
তামিম: ডিসেম্বরের পাকিস্তান সিরিজের পর একটা রুটিনের মতো করেছিলাম। শুধু নেটে ৪০-৪৫ মিনিট ব্যাটিং করে গেলাম, এমন নয়। অনুশীলনে সবকিছু কাভার করেছি; পেস-স্পিন, শর্ট বল, নিজের শট খেলা...ম্যাচের আগের দিন নেটে ব্যাটিং করি না, ছোটবেলার অভ্যাস। এ ছাড়া রুটিনটা প্রতিদিনই চালিয়ে গেছি। স্টুয়ার্ট ল বলেছে, এটা সব সময় চালিয়ে যেতে। আর মানসিকভাবে রিলাক্সড থাকার চেষ্টা করেছি।
সাবেক কোচ জেমি সিডন্সের কথা বলেছিলেন শ্রীলঙ্কা ম্যাচের পর, জেমি কী বলেছেন?
তামিম: বাদ পড়ার খবর পেয়ে জেমিই আমাকে ফোন করেছিল। মোটামুটি নিয়মিতই ফোন করে, এসএমএস দেয়। যেমন, ‘নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো’ বা ‘ভুলে যেয়ো না তুমি কোন মাপের ব্যাটসম্যান, কী করেছ, কী পারো’...এসব। জেমি বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটিং কোচ, ওর মতো একজনের কাছ থেকে এসব শুনলে অনুপ্রেরণা তো হয়ই। আর একটা মানসিক সম্পর্ক তো আছেই। সীমিত সামর্থ্যের ব্যাটসম্যান থেকে আমার এত উন্নতির পেছনে ওর অবদান অনেক।
স্টুয়ার্ট ল-র সঙ্গে সম্পর্কটা কি এমন?
তামিম: সম্পর্ক ভালো অবশ্যই। টেকনিক্যাল ব্যাপারে ল সব সময় বলে, ‘আমার কথা পছন্দ হলে তবেই চেষ্টা করবে।’ তো দু-একটি টেকনিক্যাল বিষয়ে কাজ করছি। হয়তো এই চারটা ইনিংসে সেটা কিছুটা কাজেও লেগেছে। আর মানসিক ব্যাপারটা তো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হবে।
ব্যাটিংয়ের মতো আলোচিত আপনার উদ্যাপনও। আপনি কি উদ্যাপন নিয়ে পরিকল্পনা করেন?
তামিম: মোটেও না। প্রথম ম্যাচে ফিফটি করার পর ওভাবে ব্যাট দেখানো আবেগের বহিঃপ্রকাশ। মনে হলো, নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছি। ফাইনালে চার আঙুল দেখিয়েছিলাম প্রথমবার টানা চার ফিফটি করেছি বলে। একবারই আমি শুধু প্ল্যান করে উদ্যাপন করেছিলাম, লর্ডসের সেঞ্চুরিটা। ম্যাচের দিন সকালে ভেবেছিলাম সেঞ্চুরি পেলে ওভাবে দেখাব।
এই উদ্যাপন নিয়ে তো আপনার সমালোচনাও হয়...
তামিম: আমার কোনো উদ্যাপন কাউকে ‘মিন’ করার জন্য নয় বা কষ্ট দেওয়ার জন্য নয়। আমি খুব ভালো করে জানি, ক্রিকেটে আজ ভালো করব, কাল খারাপ। আমি স্রেফ ওই মুহূর্তের সাফল্যটাকে উপভোগ করতে চাই। নতুন কিছু করে উদ্যাপন করলে সতীর্থরাও মজা পায়। এখন যেখানেই যাচ্ছি, সবাই শুধু চারটা আঙুল দেখাচ্ছে। জানতে চাইছে, কাকে দেখিয়েছি। বিশ্বাস করুন, আমি কাউকে দেখাতে চাইনি, শুধু উদ্যাপন করেছি।
বারবারই নানা বিতর্কে আপনার নাম এসেছে। ভাবমূর্তিও সবার কাছে ঠিক একরকম নয়...
তামিম: আমার দায় যে একভাগও নেই, বলব না। আমিও তো মানুষ, বয়সও বেশি নয়। তবে খুব বড় কিছুও যে করে ফেলেছি, সেটাও নয়। বিভিন্ন সময়ে মিডিয়ায় অনেক কিছু এসেছে, যাতে আমার দায় ছিল না। খারাপ লেগেছে। আমি তো জনে জনে গিয়ে বলতে পারি না, ভাই, আমি আসলে এটা করিনি। অবশ্য ওসব নিয়ে আমার ক্ষোভ নেই, ভাবনাও নেই। জানি, ব্যাট হাতে ভালো করাটাই আসল। একটা কথা সবাইকে বলতে চাই, আমি এত খারাপ নই, আই অ্যাম নট অ্যারোগ্যান্ট।
ওই সব ঘটনা নিশ্চয়ই অনেক শিক্ষা দিয়েছে?
তামিম: অবশ্যই, অনেক শিখেছি। খারাপ বা ভুল যতটুকু করেছি, আর করতে চাই না। আমাদের সংস্কৃতির অংশ হলো, ছোট ভাই ভুল করলে বড় ভাই ক্ষমা করে দেয়। ছোট ভাইয়ের উচিত সেই ভুল আর না করা। আমিও চাই না টুকটাক ওই ভুলগুলো করতে। আমার ধারণা, আমি আগের চেয়ে একটু হলেও অন্য মানুষ, একটু পরিণত।
সামনের লম্বা ফাঁকা সময়টায় কী করবেন?
তামিম: চোটের কারণে প্রিমিয়ার লিগে বেশির ভাগটাই খেলতে পারব না। তবে শিগগিরই আবার ট্রেনিং শুরু করব। পাকিস্তান সিরিজের চেয়ে এশিয়া কাপে ছয় কেজি ওজন কমিয়েছি। নিজেকে আরও ফিট করে নিজের ব্যাটিং নিয়ে কাজ করতে চাই। কানাডায় অলস্টার টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে এশিয়া একাদশে খেলব। আফ্রিদি, জয়াসুরিয়া, লারারাও খেলবে ওই টুর্নামেন্টে।
No comments