ভাষা প্রতিযোগ-দেশকে ভালোবাসো, ভালোবাসো বাংলাকে by মো. কামরুজ্জামান
সকালের সূর্য তখনো উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেনি। এর আগেই ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের প্রধান ফটকে জড়ো হতে থাকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আসা পরীক্ষার্থীরা। ওরা এসেছে ভাষা প্রতিযোগে অংশ নিতে। কিন্তু জিলা স্কুলের ফটকে দাঁড়িয়ে বিলম্ব যেন আর তাদের সইছিল না।
শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসভরা উৎসবের এমন চিত্র ছিল গতকাল শনিবার ময়মনসিংহ জিলা স্কুলে। বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলা—ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলার ৭৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক হাজার ২৪ জন শিক্ষার্থী চারটি বিভাগে অংশ নেয় এইচএসবিসি-প্রথম আলো ভাষা প্রতিযোগ ২০১২-তে।
সকাল সাড়ে নয়টায় প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যদের পরিবেশিত জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইউনুছ ফারুকী। এ সময় ভাষা প্রতিযোগের পতাকা উত্তোলন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ইউনুছ ফারুকী বলেন, ‘মাতৃভাষাকে সমৃদ্ধ করতে এইচএসবিসি ব্যাংক ও প্রথম আলোর এ আয়োজন অনেক বড় একটি কাজ। আর এ কাজের সঙ্গে আমরা থাকতে পারছি, এটাও অনেক বড় বিষয়। মাতৃভাষার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ আরও বাড়াতে হবে।’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ৩০ মিনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
পরীক্ষা শেষে ভাষা প্রতিযোগ পর্ষদ ২০১২-এর সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক তারিক মনজুরের উপস্থাপনায় শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী তনুশ্রী ভৌমিক জানতে চায়, ‘অ’ মাঝে মাঝে কেন ‘ও’-এর মতো উচ্চারিত হয়? জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মেহজাবীন মুস্তারীর প্রশ্ন, সার্টিফিকেট না লিখে কেন অভিজ্ঞানপত্র লেখা হয়েছে। এ ছাড়া, পৃথিবীতে ভাষার সংখ্যা আড়াই হাজার না সাড়ে তিন হাজার? ‘বাংলা’ না ‘বাঙলা’—কোনটি সঠিক শব্দ? মাতৃভাষা কেন বলা হয়, পিতৃভাষা কেন বলা হয় না? মহাকাব্য চেনার উপায় কী?—এমন সব মজার ও বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ, নাট্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তারেক রেজা, প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ, এইচএসবিসি ব্যাংকের কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, আনন্দ মোহন কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আফজালুর রহমান, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহানারা জামান ও প্রভাষক মাকসুদুল আলম।
প্রশ্নোত্তর পর্বের ফাঁকে ফাঁকে চলে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা। অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘দেশকে ভালোবাসো, মানুষকে ভালোবাসো। আমরা হয়তো থাকব না। বাংলাদেশ যত দিন থাকবে, এসব কাজ করার জন্য প্রথম আলো তত দিন থাকবে।’
এইচএসবিসি ব্যাংকের কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘তোমাদের চোখ খুলে দেওয়ার জন্যই এ আয়োজন। চোখ খুললেই বড় হবে, পড়ালেখা করে দেশের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় কাজগুলো করতে পারবে।’
প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা বড় হও, অনেক বড়। দেশকে ভালোবাসো, বাংলা ভাষাকে ভালোবাসো। তবেই এ আয়োজন সার্থক হবে।’
এ পর্বে আরও বক্তব্য দেন ময়মনসিংহ শহরের রাধাসুন্দরী উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক কমরেড আবদুল আজিজ তালুকদার।
এ সময় আয়েশা আক্তার নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘বাংলা ভাষা সম্পর্কে আমার সন্তান যেন অনেক কিছু জানতে পারে তাই তাকে নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছি।’
প্রশ্নোত্তর পর্বের পর সাংস্কৃতিক পর্বে ময়মনসিংহ বন্ধুসভার সদস্যরা বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলা ও প্রথম আলোকে নিয়ে রচিত জারিগান পরিবেশন করে। পরে শৈলীর নাচ, অভির কৌতুক, রবিন-পিয়াস-আকাশের গানের সঙ্গে ক্লোজআপ ওয়ান তারকা পরানের পরিবেশিত দেশাত্মবোধক গান শ্রোতাদের মাতিয়ে রাখে।
ফলাফল: প্রাথমিক বিভাগে প্রথম হয়েছে জামালপুর জিলা স্কুলের মাহমুদুল হাসান, দ্বিতীয় ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের তাসনাদ আনোয়ার এবং তৃতীয় হয়েছে বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মোস্তাকিমা জান্নাত নুসরাহ। নিম্নমাধ্যমিক বিভাগে ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের সানজিদ আনোয়ার প্রথম, বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সানজিদা আফরিন দ্বিতীয় এবং জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের রুদাবা আদনীন তৃতীয় হয়। মাধ্যমিক বিভাগে প্রথম ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের রুবাইয়াত আশফাক, দ্বিতীয় ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড উচ্চবিদ্যালয়ের মোহসীনা শারমীন এবং তৃতীয় হয়েছে মিতালী উচ্চবিদ্যালয়ের সায়মা আক্তার। উচ্চমাধ্যমিক বিভাগে প্রথম মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের সাদিয়া তাবাসসুম, দ্বিতীয় আনন্দ মোহন কলেজের নাফিস ইরতিজা এবং তৃতীয় হয়েছে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের মাহাথির এ কে মাহমুদ। আর চারটি বিভাগের মধ্যে সেরাদের সেরা হয়েছে জামালপুর জিলা স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র মাহমুদুল হাসান।
সকাল সাড়ে নয়টায় প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যদের পরিবেশিত জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইউনুছ ফারুকী। এ সময় ভাষা প্রতিযোগের পতাকা উত্তোলন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ইউনুছ ফারুকী বলেন, ‘মাতৃভাষাকে সমৃদ্ধ করতে এইচএসবিসি ব্যাংক ও প্রথম আলোর এ আয়োজন অনেক বড় একটি কাজ। আর এ কাজের সঙ্গে আমরা থাকতে পারছি, এটাও অনেক বড় বিষয়। মাতৃভাষার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ আরও বাড়াতে হবে।’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ৩০ মিনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
পরীক্ষা শেষে ভাষা প্রতিযোগ পর্ষদ ২০১২-এর সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক তারিক মনজুরের উপস্থাপনায় শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী তনুশ্রী ভৌমিক জানতে চায়, ‘অ’ মাঝে মাঝে কেন ‘ও’-এর মতো উচ্চারিত হয়? জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মেহজাবীন মুস্তারীর প্রশ্ন, সার্টিফিকেট না লিখে কেন অভিজ্ঞানপত্র লেখা হয়েছে। এ ছাড়া, পৃথিবীতে ভাষার সংখ্যা আড়াই হাজার না সাড়ে তিন হাজার? ‘বাংলা’ না ‘বাঙলা’—কোনটি সঠিক শব্দ? মাতৃভাষা কেন বলা হয়, পিতৃভাষা কেন বলা হয় না? মহাকাব্য চেনার উপায় কী?—এমন সব মজার ও বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ, নাট্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তারেক রেজা, প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ, এইচএসবিসি ব্যাংকের কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, আনন্দ মোহন কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আফজালুর রহমান, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহানারা জামান ও প্রভাষক মাকসুদুল আলম।
প্রশ্নোত্তর পর্বের ফাঁকে ফাঁকে চলে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা। অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘দেশকে ভালোবাসো, মানুষকে ভালোবাসো। আমরা হয়তো থাকব না। বাংলাদেশ যত দিন থাকবে, এসব কাজ করার জন্য প্রথম আলো তত দিন থাকবে।’
এইচএসবিসি ব্যাংকের কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘তোমাদের চোখ খুলে দেওয়ার জন্যই এ আয়োজন। চোখ খুললেই বড় হবে, পড়ালেখা করে দেশের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় কাজগুলো করতে পারবে।’
প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা বড় হও, অনেক বড়। দেশকে ভালোবাসো, বাংলা ভাষাকে ভালোবাসো। তবেই এ আয়োজন সার্থক হবে।’
এ পর্বে আরও বক্তব্য দেন ময়মনসিংহ শহরের রাধাসুন্দরী উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক কমরেড আবদুল আজিজ তালুকদার।
এ সময় আয়েশা আক্তার নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘বাংলা ভাষা সম্পর্কে আমার সন্তান যেন অনেক কিছু জানতে পারে তাই তাকে নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছি।’
প্রশ্নোত্তর পর্বের পর সাংস্কৃতিক পর্বে ময়মনসিংহ বন্ধুসভার সদস্যরা বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলা ও প্রথম আলোকে নিয়ে রচিত জারিগান পরিবেশন করে। পরে শৈলীর নাচ, অভির কৌতুক, রবিন-পিয়াস-আকাশের গানের সঙ্গে ক্লোজআপ ওয়ান তারকা পরানের পরিবেশিত দেশাত্মবোধক গান শ্রোতাদের মাতিয়ে রাখে।
ফলাফল: প্রাথমিক বিভাগে প্রথম হয়েছে জামালপুর জিলা স্কুলের মাহমুদুল হাসান, দ্বিতীয় ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের তাসনাদ আনোয়ার এবং তৃতীয় হয়েছে বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মোস্তাকিমা জান্নাত নুসরাহ। নিম্নমাধ্যমিক বিভাগে ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের সানজিদ আনোয়ার প্রথম, বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সানজিদা আফরিন দ্বিতীয় এবং জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের রুদাবা আদনীন তৃতীয় হয়। মাধ্যমিক বিভাগে প্রথম ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের রুবাইয়াত আশফাক, দ্বিতীয় ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড উচ্চবিদ্যালয়ের মোহসীনা শারমীন এবং তৃতীয় হয়েছে মিতালী উচ্চবিদ্যালয়ের সায়মা আক্তার। উচ্চমাধ্যমিক বিভাগে প্রথম মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের সাদিয়া তাবাসসুম, দ্বিতীয় আনন্দ মোহন কলেজের নাফিস ইরতিজা এবং তৃতীয় হয়েছে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের মাহাথির এ কে মাহমুদ। আর চারটি বিভাগের মধ্যে সেরাদের সেরা হয়েছে জামালপুর জিলা স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র মাহমুদুল হাসান।
No comments