এ সপ্তাহের বিজ্ঞানী-লুডভিগ বোলৎজম্যান
১৮৪৪ সালে জন্ম নেওয়া পদার্থবিদ বোলৎজম্যান পারমাণবিক তত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যা বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। গ্যাসের গতিতত্ত্বের ওপর তাঁর এই ডিগ্রির তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন অস্ট্রিয়ার বিখ্যাত পদার্থবিদ জোসেফ স্টেফান।
স্টেফানের উৎসাহেই বোলৎজম্যান ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৮৬৯ সালে তিনি গার্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। এ সময়ই তিনি তাঁর বিখ্যাত গবেষণা নিবন্ধ ‘গ্যাস অণুর তাপীয় সাম্যাবস্থা বিষয়ে নতুন গবেষণা’ প্রকাশ করেন। পরমাণুর বিশৃঙ্খল অবস্থানকে এনট্রপির মাধ্যমে তিনি গাণিতিক ভাষায় প্রথম প্রকাশ করেন। গবেষণাপত্রে বোলৎজমান গ্যাস অণুর বণ্টন নিয়ে একটি সমীকরণ প্রকাশ করেন, যা বোলৎজম্যান সমীকরণ নামে পরিচিত। ম্যাক্স প্লাংক, জন ডাল্টনের মতো বিজ্ঞানীরা বোলৎজম্যানের গতিতত্ত্ব গবেষণাকে ভিত্তি ধরেই গবেষণা করেছেন। বোলৎজম্যানকে কোয়ান্টাম মেকানিকসের ধারণার প্রবর্তকদের অন্যতম বলে ধরা হয়। তিনি ১৮৭৭ সালে তাঁর গবেষণা প্রবন্ধে পদার্থে শক্তিবিন্যাস বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে পারে বলে তত্ত্ব দেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর এই পদার্থবিজ্ঞানীকে তৎকালীন সমাজ ও গবেষকেরা অবমূল্যায়ন করেছিলেন। হতাশায় ও বৈজ্ঞানিক মহল থেকে সহযোগিতা না পেয়ে ১৯০৬ সালে তিনি আত্মহননের পথ বেছে নেন। পদার্থবিজ্ঞানে বিশেষ করে পারিসাংখ্যিক বলবিজ্ঞানে লুডভিগ বোলৎজম্যানের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বোলৎজম্যান ধ্রুবক নামকরণ করা হয়েছে। এটি এমন একটি মৌলিক ধ্রুবসংখ্যা, যা তাপমাত্রা ও শক্তির এককের মধ্যে সংযোগ হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ এই ধ্রুবকটির মাধ্যমে শক্তিকে তাপমাত্রার এককে প্রকাশ করা যায়।
জাহিদ হোসাইন
জাহিদ হোসাইন
No comments