বিশেষ সাক্ষাৎকার: খন্দকার মাহবুব হোসেন-খায়রুল হক নিরপেক্ষ নন by খন্দকার মাহবুব হোসেন
এ বি এম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালনকালে বিচার বিভাগ নিয়ে নানা বিতর্ক হয়েছে। বিতর্ক দেখা দিয়েছে সংবিধানের পঞ্চম, সপ্তম ও ত্রয়োদশ সংশোধনী নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায় নিয়েও। এই প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন ও সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরুর সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হলো।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান ও আশিস সৈকত
প্রথম আলো বিদায়ী প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সাত মাসের কার্যক্রমকে কীভাবে মূল্যায়ন করছেন?
খন্দকার মাহবুব হোসেন বিদায়ী প্রধান বিচারপতি উচ্চ আদালতের সব নিয়মকানুন অগ্রাহ্য করে নিজের পছন্দমতো বেঞ্চ সাজিয়েছেন। অভিজ্ঞ ও দক্ষ বিচারকদের বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত নবীনদের দিয়ে বেঞ্চ গঠন করেছেন। ফলে বিচারপ্রার্থীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আগে যেকোনো ব্যক্তি হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিতে পারতেন। এ বি এম খায়রুল হক তা-ও বন্ধ রেখেছিলেন। আমরা বলেছি, উচ্চ আদালতে আগাম জামিন নিতে তাঁরাই আসেন, যাঁরা রাজনৈতিকভাবে হয়রানিমূলক মামলার শিকার হন। আমাদের দেশে এ ধরনের মামলা যে যথেচ্ছ হয়ে থাকে, তা অস্বীকারের উপায় নেই। আগাম জামিন না পেলে তাঁরা অযথা পুলিশ তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হবেন। আগাম জামিন মানবাধিকার রক্ষার একটি রক্ষাকবচ ছিল। অথচ খায়রুল হক সাহেব সেটি বন্ধ করে গেলেন।
প্রথম আলো বিদায়ী প্রধান বিচারপতি বলেছেন, তিনি বেঞ্চ পুনর্গঠন করে বকেয়া অনেক মামলার নিষ্পত্তি করেছেন। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী?
খন্দকার মাহবুব হোসেন এ বি এম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতি পদে ছিলেন সাত মাস। এই সাত মাসে তাঁর নেতৃত্বে আপিল বিভাগ যেসব মামলার নিষ্পত্তি করেছেন, তার বেশির ভাগই সংবিধানসংক্রান্ত, অর্থাৎ তা রাজনৈতিক। মুন সিনেমা হলের মালিকানা নিয়ে একটি মামলায় হাইকোর্টের বিচারপতি থাকাকালে তিনি পুরো পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে দিলেন। এরপর প্রধান বিচারপতি হয়ে আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায়ের সঙ্গে এমন কতগুলো ধারা যোগ করলেন, সংসদ অনুমোদন না করলে হাইকোর্টে মার্জনা করা অংশগুলোও বাতিল হয়ে যাবে। এখানে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর প্রেক্ষাপট দেখতে হবে। সংবিধানে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় শাসন কায়েম করা হয়েছিল। চারটি বাদে সব সংবাদপত্র বন্ধ রাখা হয়েছিল, সুপ্রিম কোর্টকে নির্বাহী বিভাগের অধীনে আনা হয়েছিল। পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল। অথচ রায়ে চতুর্থ সংশোধনী নিয়ে একটি কথাও বলা হয়নি। এতেই তাঁর রাজনৈতিক পক্ষপাত স্পষ্ট।
এরপর আসি বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বাড়ির মামলা প্রসঙ্গে। তাঁর পক্ষে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলেও আপিল বিভাগের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ না দেওয়া নজিরবিহীন ঘটনা। যে বাড়িতে খালেদা জিয়া ৩৯ বছর ছিলেন, সেই বাড়ি নিয়ে তাঁর অনেক স্মৃতি ও আবেগ রয়েছে। আদালত তা-ও আমলে নেননি। রায়ে সরকারের ইচ্ছেরই প্রতিফলন ঘটেছে। আপিল বিভাগ মামলা গ্রহণ করার পর শুনানির আগে তাঁকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা বেআইনি। কিন্তু সরকার জোরপূর্বক সেই কাজটিই করেছে। সাবেক প্রধান বিচারপতির কাছে আমরা এর প্রতিকার চেয়েও পাইনি।
একইভাবে ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাই বাতিল ঘোষণা করলেন। আবার বললেন, আরও একটি বা দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যাবে। এটি স্ববিরোধী। রায়ে ‘মে বি’ বা ‘হতে পারে’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ সংসদ এ ব্যাপারে আইন পাস না করলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। এতে করে একটি অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হবে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার বিকল্প নেই।
১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী পাস হয়েছিল আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জামায়াতসহ সে সময়কার সব বিরোধী দলের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে। এখন হঠাৎ করে এটি বাতিল করায় রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়বে, নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে। সেই অবস্থা কারও জন্য মঙ্গলজনক হবে না।
প্রথম আলো আপনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চান, অথচ বিদায়ী প্রধান বিচারপতিকে মানতে চান না। এটি কি স্ববিরোধিতা নয়?
খন্দকার মাহবুব হোসেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মূল কথা হলো নির্দলীয়, নিরপেক্ষ থাকা। এ বি এম খায়রুল হক নিজেকে নিরপেক্ষ প্রমাণ করতে পারেননি। তাঁর দেওয়া প্রতিটি রায় রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট। তা ছাড়া বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগও সাবেক প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান করার বিরোধিতা করেছিল এবং শেষ পর্যন্ত তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হননি। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি ছাড়াও তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে বিকল্প রয়েছে। সাবেক বিচারপতি আছেন, তা ছাড়া সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিও আছেন। তাঁদের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নেওয়া যেতে পারে।
প্রথম আলো বিরোধী দলের দাবি, এ বি এম খায়রুল হককে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করা যাবে না। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে নিয়ে সরকার গঠন করতে হবে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি ঠিক করতেও তো সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। কিন্তু তারা আলোচনায় বসছে না। সংবিধান সংশোধনে গঠিত সংসদের বিশেষ কমিটির আমন্ত্রণেও সাড়া দিচ্ছে না।
খন্দকার মাহবুব হোসেন নির্বাচন হবে এখন থেকে আড়াই বছর পর। সে ক্ষেত্রে আমি মনে করি, বসার সময় এখনো পার হয়ে যায়নি। সংসদে এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সংসদের বাইরেও আলোচনা হতে পারে। অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই যদি উদ্দেশ্য হয়, তাহলে সরকারের উচিত হবে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনায় বসে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সবকিছু চাপিয়ে দেওয়ার ফল ভালো হতে পারে না।
প্রথম আলো আপনারা বলছেন, বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক নিরপেক্ষ নন। কিন্তু তিনিই বলেছেন, সরকার বিচার বিভাগের হাত-পা বেঁধে রেখেছে। তাতে কি প্রমাণিত হয়, তিনি সরকারের আস্থাভাজন লোক ছিলেন?
খন্দকার মাহবুব হোসেন এই স্বীকারোক্তির মাধ্যমে এ বি এম খায়রুল হক প্রমাণ করেছেন, তাঁর আমলে যত রায় হয়েছে, সেগুলো স্বাধীনভাবে হয়নি। যাঁদের কাছে তাঁর হাত-পা বাঁধা ছিল, তাঁদের ইচ্ছেই রায়ে প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ।
খন্দকার মাহবুব হোসেন ধন্যবাদ।
প্রথম আলো বিদায়ী প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সাত মাসের কার্যক্রমকে কীভাবে মূল্যায়ন করছেন?
খন্দকার মাহবুব হোসেন বিদায়ী প্রধান বিচারপতি উচ্চ আদালতের সব নিয়মকানুন অগ্রাহ্য করে নিজের পছন্দমতো বেঞ্চ সাজিয়েছেন। অভিজ্ঞ ও দক্ষ বিচারকদের বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত নবীনদের দিয়ে বেঞ্চ গঠন করেছেন। ফলে বিচারপ্রার্থীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আগে যেকোনো ব্যক্তি হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিতে পারতেন। এ বি এম খায়রুল হক তা-ও বন্ধ রেখেছিলেন। আমরা বলেছি, উচ্চ আদালতে আগাম জামিন নিতে তাঁরাই আসেন, যাঁরা রাজনৈতিকভাবে হয়রানিমূলক মামলার শিকার হন। আমাদের দেশে এ ধরনের মামলা যে যথেচ্ছ হয়ে থাকে, তা অস্বীকারের উপায় নেই। আগাম জামিন না পেলে তাঁরা অযথা পুলিশ তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হবেন। আগাম জামিন মানবাধিকার রক্ষার একটি রক্ষাকবচ ছিল। অথচ খায়রুল হক সাহেব সেটি বন্ধ করে গেলেন।
প্রথম আলো বিদায়ী প্রধান বিচারপতি বলেছেন, তিনি বেঞ্চ পুনর্গঠন করে বকেয়া অনেক মামলার নিষ্পত্তি করেছেন। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী?
খন্দকার মাহবুব হোসেন এ বি এম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতি পদে ছিলেন সাত মাস। এই সাত মাসে তাঁর নেতৃত্বে আপিল বিভাগ যেসব মামলার নিষ্পত্তি করেছেন, তার বেশির ভাগই সংবিধানসংক্রান্ত, অর্থাৎ তা রাজনৈতিক। মুন সিনেমা হলের মালিকানা নিয়ে একটি মামলায় হাইকোর্টের বিচারপতি থাকাকালে তিনি পুরো পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে দিলেন। এরপর প্রধান বিচারপতি হয়ে আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায়ের সঙ্গে এমন কতগুলো ধারা যোগ করলেন, সংসদ অনুমোদন না করলে হাইকোর্টে মার্জনা করা অংশগুলোও বাতিল হয়ে যাবে। এখানে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর প্রেক্ষাপট দেখতে হবে। সংবিধানে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় শাসন কায়েম করা হয়েছিল। চারটি বাদে সব সংবাদপত্র বন্ধ রাখা হয়েছিল, সুপ্রিম কোর্টকে নির্বাহী বিভাগের অধীনে আনা হয়েছিল। পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল। অথচ রায়ে চতুর্থ সংশোধনী নিয়ে একটি কথাও বলা হয়নি। এতেই তাঁর রাজনৈতিক পক্ষপাত স্পষ্ট।
এরপর আসি বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বাড়ির মামলা প্রসঙ্গে। তাঁর পক্ষে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলেও আপিল বিভাগের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ না দেওয়া নজিরবিহীন ঘটনা। যে বাড়িতে খালেদা জিয়া ৩৯ বছর ছিলেন, সেই বাড়ি নিয়ে তাঁর অনেক স্মৃতি ও আবেগ রয়েছে। আদালত তা-ও আমলে নেননি। রায়ে সরকারের ইচ্ছেরই প্রতিফলন ঘটেছে। আপিল বিভাগ মামলা গ্রহণ করার পর শুনানির আগে তাঁকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা বেআইনি। কিন্তু সরকার জোরপূর্বক সেই কাজটিই করেছে। সাবেক প্রধান বিচারপতির কাছে আমরা এর প্রতিকার চেয়েও পাইনি।
একইভাবে ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাই বাতিল ঘোষণা করলেন। আবার বললেন, আরও একটি বা দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যাবে। এটি স্ববিরোধী। রায়ে ‘মে বি’ বা ‘হতে পারে’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ সংসদ এ ব্যাপারে আইন পাস না করলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। এতে করে একটি অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হবে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার বিকল্প নেই।
১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী পাস হয়েছিল আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জামায়াতসহ সে সময়কার সব বিরোধী দলের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে। এখন হঠাৎ করে এটি বাতিল করায় রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়বে, নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে। সেই অবস্থা কারও জন্য মঙ্গলজনক হবে না।
প্রথম আলো আপনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চান, অথচ বিদায়ী প্রধান বিচারপতিকে মানতে চান না। এটি কি স্ববিরোধিতা নয়?
খন্দকার মাহবুব হোসেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মূল কথা হলো নির্দলীয়, নিরপেক্ষ থাকা। এ বি এম খায়রুল হক নিজেকে নিরপেক্ষ প্রমাণ করতে পারেননি। তাঁর দেওয়া প্রতিটি রায় রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট। তা ছাড়া বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগও সাবেক প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান করার বিরোধিতা করেছিল এবং শেষ পর্যন্ত তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হননি। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি ছাড়াও তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে বিকল্প রয়েছে। সাবেক বিচারপতি আছেন, তা ছাড়া সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিও আছেন। তাঁদের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নেওয়া যেতে পারে।
প্রথম আলো বিরোধী দলের দাবি, এ বি এম খায়রুল হককে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করা যাবে না। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে নিয়ে সরকার গঠন করতে হবে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি ঠিক করতেও তো সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। কিন্তু তারা আলোচনায় বসছে না। সংবিধান সংশোধনে গঠিত সংসদের বিশেষ কমিটির আমন্ত্রণেও সাড়া দিচ্ছে না।
খন্দকার মাহবুব হোসেন নির্বাচন হবে এখন থেকে আড়াই বছর পর। সে ক্ষেত্রে আমি মনে করি, বসার সময় এখনো পার হয়ে যায়নি। সংসদে এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সংসদের বাইরেও আলোচনা হতে পারে। অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই যদি উদ্দেশ্য হয়, তাহলে সরকারের উচিত হবে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনায় বসে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সবকিছু চাপিয়ে দেওয়ার ফল ভালো হতে পারে না।
প্রথম আলো আপনারা বলছেন, বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক নিরপেক্ষ নন। কিন্তু তিনিই বলেছেন, সরকার বিচার বিভাগের হাত-পা বেঁধে রেখেছে। তাতে কি প্রমাণিত হয়, তিনি সরকারের আস্থাভাজন লোক ছিলেন?
খন্দকার মাহবুব হোসেন এই স্বীকারোক্তির মাধ্যমে এ বি এম খায়রুল হক প্রমাণ করেছেন, তাঁর আমলে যত রায় হয়েছে, সেগুলো স্বাধীনভাবে হয়নি। যাঁদের কাছে তাঁর হাত-পা বাঁধা ছিল, তাঁদের ইচ্ছেই রায়ে প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ।
খন্দকার মাহবুব হোসেন ধন্যবাদ।
No comments