চারুশিল্প-বসন্তে অরণ্য by মোবাশ্বির আলম মজুমদার
১. ঋতুরাজ বসন্ত আমাদের জন্য নিয়ে আসে উজ্জ্বল উৎসবমুখর রঙের বার্তা। উজ্জ্বল রঙা প্রকৃতির সাজ আমাদের নিয়ে যায় মায়াময় রঙের ভুবনে। প্রকৃতি থেকে পাওয়া রঙের সাহায্যে নানা নকশা ও সুতার বুননে কাপড় তৈরি করে ‘অরণ্য’। দৃশ্যত পোশাক মনে হলেও শিল্পগুণ বিচারে প্রদর্শনীর কাপড় ও উপকরণগুলো প্রকৃতি থেকে আহরিত রঙের বৈচিত্র্যের
কথা বলে দেয়। প্রাচীন গুহাচিত্রে ব্যবহূত রং তৈরির ধারণা কালক্রমে আধুনিক চিত্রকলায় পোশাক-পরিচ্ছদে নানা আঙ্গিক ব্যবহূত হতে থাকে। বাংলাদেশে আশির দশকে প্রাকৃতিক রঙের নিরীক্ষা শুরু হয়। সিন্ধু সভ্যতা থেকে সুতা ও কাপড়ে প্রাকৃতিক রঙের ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রাচীন মহেনজোদারো সভ্যতায় ব্যবহূত নিদর্শন থেকে প্রাকৃতিক রং সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। বিভিন্ন সময় চিত্রকলায়ও প্রকৃতি থেকে আহরিত রঙের ব্যবহার লক্ষণীয়। ২৪ মার্চ বেঙ্গল গ্যালারি অব ফাইন আর্টসে ‘বসন্তে অরণ্য’ শিরোনামে শুরু হয় প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করে তৈরি শাড়ি, কাপড় ও তৈরি পোশাকের প্রদর্শনী। প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য বিপণনের বাইরে শিল্প ও দৈনন্দিন ব্যবহার্য সামগ্রী পোশাকের শিল্পিত উপস্থাপনা। বাংলাদেশে রং উৎপাদন করা যায় এমন গাছের বিপুল সমাহার রয়েছে। কৃত্রিম রঙের প্রভাবে বর্তমানে প্রাকৃতিক রং ব্যবহারের প্রথা বিলুপ্তপ্রায়। ‘অরণ্য’ বিলুপ্তপ্রায় প্রাকৃতিক রঙের সংরক্ষণ, নিরীক্ষা ও ব্যবহার করে উৎপাদন করছে দৃষ্টিনন্দন নানা সামগ্রী। এ পর্যন্ত ৩০টি রঙের ব্যবহার করা হয়েছে। রঙের উৎসগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো—গাছের ছাল, পিণ্ড, পুষ্পগুচ্ছ, ক্যাকটাস ও লাক্ষা। ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশরা প্রথম কৃত্রিম রঙের ব্যবহার শুরু করে।
২.
তখনই ভেষজ রঙের ব্যবহার কমতে থাকে। বাংলাদেশে প্রাকৃতিক রংগুলো আহরিত হয় খয়েরের কষ, কাঁঠাল কাঠের ভুসি, লটকন ফলের বীজ, ডালিমের খোসা, গাবফল, শিউলি ফুলের পাপড়ি, গাঁদা ফুলের পাপড়ি, বাবলাগাছের ছাল, হরীতকী, অর্জুনের ছাল, নীলপাতার কষ, সুপারি, ইউক্যালিপটাসের পাতা, এলাচ পাতা, ঝাউগাছ, পাতাবাহারের ছাল, কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি, তুলসী ও চা-পাতা। এসব উপকরণ থেকে সংগৃহীত হয় মৌলিক রংসহ নানা উষ্ণ ও শীতল রং। যেমন, হলুদ, কমলা, মেরুন, গোলাপি, গাঢ় সোনালি, বাদামি নীল ও সবুজ, ধূসর হালকা বাদামি ও হালকা জলপাই রং। দুই দশক ধরে ‘অরণ্যে’র সঙ্গে কাজ করছেন শিল্পী বদরুন নেসা মায়া। তিনি গতানুগতিক বাজারের কৃত্রিম রঙে রঞ্জিত কাপড়ের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর মনে করেন। প্রাকৃতিক রঙের ব্যবহারে তৈরি কাপড় শিল্পসৌকর্যের সঙ্গে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশবান্ধব হিসেবে বিবেচ্য। প্রকৃতি থেকে সংগৃহীত উপাদান থেকে রং আহরণের প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। কাপড়ের উপাদান ও সময় মেপে প্রাকৃতিক রঙে কাজ করতে হয়। ‘অরণ্য’ বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারের চাহিদার পাশাপাশি দেশের বাইরেও পণ্য রপ্তানি করছে। শিল্পসম্মত প্রাকৃতিক রঙের সাজে সাজানো এ প্রদর্শনী চলে ২৮ মার্চ পর্যন্ত।
২.
তখনই ভেষজ রঙের ব্যবহার কমতে থাকে। বাংলাদেশে প্রাকৃতিক রংগুলো আহরিত হয় খয়েরের কষ, কাঁঠাল কাঠের ভুসি, লটকন ফলের বীজ, ডালিমের খোসা, গাবফল, শিউলি ফুলের পাপড়ি, গাঁদা ফুলের পাপড়ি, বাবলাগাছের ছাল, হরীতকী, অর্জুনের ছাল, নীলপাতার কষ, সুপারি, ইউক্যালিপটাসের পাতা, এলাচ পাতা, ঝাউগাছ, পাতাবাহারের ছাল, কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি, তুলসী ও চা-পাতা। এসব উপকরণ থেকে সংগৃহীত হয় মৌলিক রংসহ নানা উষ্ণ ও শীতল রং। যেমন, হলুদ, কমলা, মেরুন, গোলাপি, গাঢ় সোনালি, বাদামি নীল ও সবুজ, ধূসর হালকা বাদামি ও হালকা জলপাই রং। দুই দশক ধরে ‘অরণ্যে’র সঙ্গে কাজ করছেন শিল্পী বদরুন নেসা মায়া। তিনি গতানুগতিক বাজারের কৃত্রিম রঙে রঞ্জিত কাপড়ের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর মনে করেন। প্রাকৃতিক রঙের ব্যবহারে তৈরি কাপড় শিল্পসৌকর্যের সঙ্গে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশবান্ধব হিসেবে বিবেচ্য। প্রকৃতি থেকে সংগৃহীত উপাদান থেকে রং আহরণের প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। কাপড়ের উপাদান ও সময় মেপে প্রাকৃতিক রঙে কাজ করতে হয়। ‘অরণ্য’ বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারের চাহিদার পাশাপাশি দেশের বাইরেও পণ্য রপ্তানি করছে। শিল্পসম্মত প্রাকৃতিক রঙের সাজে সাজানো এ প্রদর্শনী চলে ২৮ মার্চ পর্যন্ত।
No comments