ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ ভবন-আতঙ্ক বৃদ্ধি নয়, উপযুক্ত পদক্ষেপ চাই
কথাটা সম্ভবত একেবারে মিথ্যা নয়, 'রাজউক কর্মীদের শানশওকত বাড়ে, আর রাজধানীবাসীর আতঙ্ক বাড়ে।' আর সেই আতঙ্কের ঢোল খোদ মন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজউকের কর্মকর্তারা পর্যন্ত বাজিয়ে যান। আমরাও আতঙ্কিত হয়ে শুনি। কিন্তু কেন এই আতঙ্ক বাড়ছে, তা কোনো দিন খতিয়ে দেখি না। গতকাল ছিল জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস।
এই দিনে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঢাকায় যে তিন লাখ ২৬ হাজার পাকা বাড়ি রয়েছে, তার মধ্যে এক লাখ ৬৩ হাজার ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। হিসাবটি খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীন কম্প্রিহেনসিভ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম বা সিডিএমপির। অর্থাৎ একটু বড় ধরনের ভূমিকম্প হলেই এগুলো ভেঙে পড়বে। কী সাংঘাতিক ব্যাপার! অতএব প্রতিবছর শত শত কোটি টাকার উদ্ধারকারী যন্ত্রপাতি কিনে মজুদ করা প্রয়োজন। গত বছর সরকারি হিসাবেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছিল ৭৫ হাজার। বর্তমান হিসাবে তা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
অবশ্য আমরা এর আগে দেখেছি, রাজধানীতে ভবন ধসে পড়তে ভূমিকম্পেরও প্রয়োজন হয় না। ২০১০ সালের জুন মাসে কোনো রকম দুর্যোগ ছাড়াই বেগুনবাড়ীতে একটি পাঁচ তলা ভবন ধসে ২০ জন মারা গিয়েছিল এবং আহত হয়েছিল অনেকে। এ রকম ভবনধসের ঘটনা আগেও কয়েকটি ঘটেছে। বিনা কারণে ভবনে ফাটল ধরা বা কাত হয়ে পড়ার ঘটনাও কম নয়। বেগুনবাড়ীতে ভবনধসের সময় পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা গিয়েছিল, ভবনটি নির্মাণের আগে মালিক রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউকের অনুমোদন নেয়নি, ইমারত নির্মাণ বিধিমালাও মানা হয়নি। আরো জানা গিয়েছিল, কেবল বেগুনবাড়ীতেই এ ধরনের অনুমোদনহীন ৭২টি ভবন রয়েছে এবং সারা ঢাকায় এ রকম অন্তত ১০ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। কিন্তু গত দুই বছরে কয়েকটি ভবনের কিছু অংশ ভেঙে দেওয়া ছাড়া এই ভবনগুলোর বিরুদ্ধে আর কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। আজ পর্যন্ত কোনো ভবনধসের কারণে কিংবা কোনো অননুমোদিত ভবন তৈরির জন্য কোনো মালিককে কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। যতদূর জানা যায়, রাজধানীতে প্রতিদিনই এ রকম অনেক ভবন তৈরি হচ্ছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউকের সেসব রোধ বা তদারকি করার কথা থাকলেও কার্যত তারা কিছুই করে না। এ ব্যাপারে রাজউকের সঙ্গে কথা বললে তারা যে সহজ উত্তরটি দেয় তা হলো, তাদের পর্যাপ্ত লোকবল নেই। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, এই কম লোকবলের এতই দাপট যে নকশাবহির্ভূত একটি ভবনও তাদের অজান্তে কিংবা তাদের উৎকোচ না দিয়ে তৈরি করা সম্ভব নয়। এই মৃত্যুকূপ তৈরির প্রতিযোগিতা সবার আগে থামানো প্রয়োজন। রাজধানীর যেসব গলিপথ দিয়ে একটি ছোট গাড়ি পর্যন্ত ঢুকতে পারে না, সেখানে ক্রেনযুক্ত বিশাল গাড়ি ঢোকার প্রশ্নই ওঠে না। তাই গলিপথগুলো প্রশস্ত করা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সামান্য কিছু বাড়তি ব্যয় করলে রাজধানীর অনেক ভবনই ভূমিকম্প প্রতিরোধক করা সম্ভব। তাহলে সে চেষ্টাটিও একই সঙ্গে করতে হবে। তা না করে কেবল তালিকা স্ফীত করে আতঙ্ক বাড়িয়ে লাভ নেই। পাশাপাশি ইমারত নির্মাণ বিধিমালার যথার্থ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। ভবনের নামে কোথাও যাতে আর একটিও মৃত্যুকূপ তৈরি হতে না পারে, সেদিকে আমাদের সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে। বিধিমালা লঙ্ঘনের জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি ভবনে ভূমিকম্প প্রতিরোধী সার্টিফিকেট ঝুলিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে, যা দেখে ভাড়াটিয়ারা নিশ্চিত হয়ে বাড়িভাড়া নিতে পারেন। নির্মাণকাজের মান নিয়েও অনেক প্রশ্ন আছে। সে বিষয়েও তদারকি জোরদার করতে হবে।
অবশ্য আমরা এর আগে দেখেছি, রাজধানীতে ভবন ধসে পড়তে ভূমিকম্পেরও প্রয়োজন হয় না। ২০১০ সালের জুন মাসে কোনো রকম দুর্যোগ ছাড়াই বেগুনবাড়ীতে একটি পাঁচ তলা ভবন ধসে ২০ জন মারা গিয়েছিল এবং আহত হয়েছিল অনেকে। এ রকম ভবনধসের ঘটনা আগেও কয়েকটি ঘটেছে। বিনা কারণে ভবনে ফাটল ধরা বা কাত হয়ে পড়ার ঘটনাও কম নয়। বেগুনবাড়ীতে ভবনধসের সময় পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা গিয়েছিল, ভবনটি নির্মাণের আগে মালিক রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউকের অনুমোদন নেয়নি, ইমারত নির্মাণ বিধিমালাও মানা হয়নি। আরো জানা গিয়েছিল, কেবল বেগুনবাড়ীতেই এ ধরনের অনুমোদনহীন ৭২টি ভবন রয়েছে এবং সারা ঢাকায় এ রকম অন্তত ১০ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। কিন্তু গত দুই বছরে কয়েকটি ভবনের কিছু অংশ ভেঙে দেওয়া ছাড়া এই ভবনগুলোর বিরুদ্ধে আর কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। আজ পর্যন্ত কোনো ভবনধসের কারণে কিংবা কোনো অননুমোদিত ভবন তৈরির জন্য কোনো মালিককে কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। যতদূর জানা যায়, রাজধানীতে প্রতিদিনই এ রকম অনেক ভবন তৈরি হচ্ছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউকের সেসব রোধ বা তদারকি করার কথা থাকলেও কার্যত তারা কিছুই করে না। এ ব্যাপারে রাজউকের সঙ্গে কথা বললে তারা যে সহজ উত্তরটি দেয় তা হলো, তাদের পর্যাপ্ত লোকবল নেই। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, এই কম লোকবলের এতই দাপট যে নকশাবহির্ভূত একটি ভবনও তাদের অজান্তে কিংবা তাদের উৎকোচ না দিয়ে তৈরি করা সম্ভব নয়। এই মৃত্যুকূপ তৈরির প্রতিযোগিতা সবার আগে থামানো প্রয়োজন। রাজধানীর যেসব গলিপথ দিয়ে একটি ছোট গাড়ি পর্যন্ত ঢুকতে পারে না, সেখানে ক্রেনযুক্ত বিশাল গাড়ি ঢোকার প্রশ্নই ওঠে না। তাই গলিপথগুলো প্রশস্ত করা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সামান্য কিছু বাড়তি ব্যয় করলে রাজধানীর অনেক ভবনই ভূমিকম্প প্রতিরোধক করা সম্ভব। তাহলে সে চেষ্টাটিও একই সঙ্গে করতে হবে। তা না করে কেবল তালিকা স্ফীত করে আতঙ্ক বাড়িয়ে লাভ নেই। পাশাপাশি ইমারত নির্মাণ বিধিমালার যথার্থ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। ভবনের নামে কোথাও যাতে আর একটিও মৃত্যুকূপ তৈরি হতে না পারে, সেদিকে আমাদের সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে। বিধিমালা লঙ্ঘনের জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি ভবনে ভূমিকম্প প্রতিরোধী সার্টিফিকেট ঝুলিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে, যা দেখে ভাড়াটিয়ারা নিশ্চিত হয়ে বাড়িভাড়া নিতে পারেন। নির্মাণকাজের মান নিয়েও অনেক প্রশ্ন আছে। সে বিষয়েও তদারকি জোরদার করতে হবে।
No comments