রাজধানীতে বাস ডাকাতিঃ অপরাধ কমছে না কিছুতেই
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে কোনো মূল্যে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার বড়গলায় বলা এই কথায় কোনো কাজ হয়নি। রাজধানীতে ক্রমাগতভাবে অপরাধ বেড়েই চলেছে। গত শনিবার রাতে তিন দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার বাস ডাকাতি এবং নিত্যদিন ছিনতাইসহ সন্ত্রাসী ঘটনা এ কথার সত্যতা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট।
ঢাকা মহানগরীতে নিয়মিত চলাচলকারী বাসে মাঝেমধ্যেই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। বাসে সর্বশেষ ডাকাতি চলাকালে জনৈক পুলিশ কর্মকর্তার তাত্ক্ষণিক তত্পরতায় ঘটনাস্থল থেকে ৫ ডাকাতকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। একই দিনে সন্ত্রাসীরা পল্লবীতে গুলি করে ও বিজয়নগরে ছুরিকাঘাত করে দুই ব্যক্তির কাছ থেকে যথাক্রমে সাড়ে ৩ লাখ এবং ২১ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে। এ রকম ঘটনার মুখে নিত্যদিনই পড়তে হচ্ছে রাজধানীর বাসিন্দাদের। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্রের এ অবস্থা থেকে সারাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কী রকম, তা সহজেই অনুমান করা যায়।
রাজধানী ক্রমাগত বড় হচ্ছে। বাড়ছে জনসংখ্যা। প্রায় দেড় কোটি মানুষের এই নগরীতে এখন থানার সংখ্যা বেড়ে ৪০-এ দাঁড়িয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে থানা-পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি সুফল বয়ে আনেনি। সংঘটিত অপরাধের সংখ্যাই এটা প্রমাণ করে। এখানে বিভিন্ন থানায় এখন প্রতিদিন মামলা হচ্ছে প্রায় ৮০টি। গত বছর মামলা হয়েছে ২৪ হাজারের মতো। ২০০৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ২৩ হাজারের কিছু বেশি। মামলা না হওয়া অপরাধের সংখ্যাও কম নয়। সরকার পরিবর্তন হলেও অপরাধ পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষণ নেই। ফলে মানুষকে নিরাপত্তাহীনতা মেনে নিয়েই চলতে হচ্ছে। এমন অবস্থা অপরাধীদের জন্য স্বস্তিদায়ক বলা ভুল হবে না।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের অদক্ষতা, সীমাবদ্ধতার কথা সবার জানা থাকলেও এসব দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। অনেক পরিকল্পনার কথা বলা হলেও বাস্তবে তার দেখা মেলেনি। বর্তমান সরকারও চাহিদা পূরণে উল্লেখ করার মতো কিছু করেনি। পুলিশ প্রশাসনে রাজনৈতিক প্রভাব কমেছে, এমন কথা বলা যাবে না। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলি চলছেই। রাজধানীর ৪০টি থানার ওসি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বেশিরভাগ একটি বিশেষ জেলার বাসিন্দা, যাদের দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে—এই একটি তথ্যই পুলিশ প্রশাসনের বর্তমান অবস্থা বোঝার জন্য যথেষ্ট বলা যায়। এছাড়া অপরাধীদের রাজনৈতিকভাবে লালনপালনের পুরনো ধারাও অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান সরকারের প্রথম বছরই বিগত আমলের গ্রেফতারকৃত রাজধানীর প্রায় ৪ হাজারের মতো দাগি এবং তালিকাভুক্ত অপরাধী বিভিন্নভাবে মুক্তি পেয়েছে। তারা নতুন করে দল গুছিয়ে অপরাধ তত্পরতায় মেতে উঠেছে, তা বলাই বাহুল্য। এমন অবস্থার পরিবর্তন ছাড়া শুধু মুখের কথায় অপরাধ কমে যাবে, এটা কে বিশ্বাস করবেন? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বক্তব্য থেকেও তা আঁচ করা যায়। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা স্বীকার করে নিয়েছে সংসদীয় কমিটি। অর্থাত্ সংসদীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ কার্যকর হলেও পাশাপাশি যদি প্রশাসন সময়ের চাহিদা মেটাতে সক্ষম না হয়, তবে সবকিছুর মতো আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও স্বাভাবিক থাকবে না—এটাই বাস্তবতা।
তবে আলোচিত বাস ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের পরিচয় ও বক্তব্য বিষয়টিকে আরও গভীর করে তুলেছে। আটক বাস ডাকাতরা সবাই পরিবহন শ্রমিক। তারা দিনে পেশাগত কাজে ব্যস্ত থাকলেও রাতে ডাকাতি করার কথা স্বীকার করেছে। তাদের একজন অভাবের তাড়নায় ডাকাতির পথ বেছে নেয়ার কথাও বলেছে। গাড়ি চালিয়ে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালানো যায় না বলেই ভিন্ন পথ ধরতে হয়েছে। পুলিশ অবশ্য তাদের পেশাগত ডাকাত বলেছে। এ নিয়ে বিতর্ক না করেও বলা যায়, সমাজে ক্রমেই অপরাধ বেড়ে যাওয়ার কারণ শনাক্ত করে যথাযথ আইনের প্রয়োগ জরুরি। ডাকাতি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, দুর্নীতির পেছনের বিরাজমান আর্থসামাজিক কারণ দূর করা সম্ভব হলে অপরাধ প্রবণতা কমবে। পাশাপাশি বাড়াতে হবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তত্পরতা।
রাজধানী ক্রমাগত বড় হচ্ছে। বাড়ছে জনসংখ্যা। প্রায় দেড় কোটি মানুষের এই নগরীতে এখন থানার সংখ্যা বেড়ে ৪০-এ দাঁড়িয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে থানা-পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি সুফল বয়ে আনেনি। সংঘটিত অপরাধের সংখ্যাই এটা প্রমাণ করে। এখানে বিভিন্ন থানায় এখন প্রতিদিন মামলা হচ্ছে প্রায় ৮০টি। গত বছর মামলা হয়েছে ২৪ হাজারের মতো। ২০০৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ২৩ হাজারের কিছু বেশি। মামলা না হওয়া অপরাধের সংখ্যাও কম নয়। সরকার পরিবর্তন হলেও অপরাধ পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষণ নেই। ফলে মানুষকে নিরাপত্তাহীনতা মেনে নিয়েই চলতে হচ্ছে। এমন অবস্থা অপরাধীদের জন্য স্বস্তিদায়ক বলা ভুল হবে না।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের অদক্ষতা, সীমাবদ্ধতার কথা সবার জানা থাকলেও এসব দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। অনেক পরিকল্পনার কথা বলা হলেও বাস্তবে তার দেখা মেলেনি। বর্তমান সরকারও চাহিদা পূরণে উল্লেখ করার মতো কিছু করেনি। পুলিশ প্রশাসনে রাজনৈতিক প্রভাব কমেছে, এমন কথা বলা যাবে না। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলি চলছেই। রাজধানীর ৪০টি থানার ওসি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বেশিরভাগ একটি বিশেষ জেলার বাসিন্দা, যাদের দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে—এই একটি তথ্যই পুলিশ প্রশাসনের বর্তমান অবস্থা বোঝার জন্য যথেষ্ট বলা যায়। এছাড়া অপরাধীদের রাজনৈতিকভাবে লালনপালনের পুরনো ধারাও অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান সরকারের প্রথম বছরই বিগত আমলের গ্রেফতারকৃত রাজধানীর প্রায় ৪ হাজারের মতো দাগি এবং তালিকাভুক্ত অপরাধী বিভিন্নভাবে মুক্তি পেয়েছে। তারা নতুন করে দল গুছিয়ে অপরাধ তত্পরতায় মেতে উঠেছে, তা বলাই বাহুল্য। এমন অবস্থার পরিবর্তন ছাড়া শুধু মুখের কথায় অপরাধ কমে যাবে, এটা কে বিশ্বাস করবেন? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বক্তব্য থেকেও তা আঁচ করা যায়। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা স্বীকার করে নিয়েছে সংসদীয় কমিটি। অর্থাত্ সংসদীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ কার্যকর হলেও পাশাপাশি যদি প্রশাসন সময়ের চাহিদা মেটাতে সক্ষম না হয়, তবে সবকিছুর মতো আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও স্বাভাবিক থাকবে না—এটাই বাস্তবতা।
তবে আলোচিত বাস ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের পরিচয় ও বক্তব্য বিষয়টিকে আরও গভীর করে তুলেছে। আটক বাস ডাকাতরা সবাই পরিবহন শ্রমিক। তারা দিনে পেশাগত কাজে ব্যস্ত থাকলেও রাতে ডাকাতি করার কথা স্বীকার করেছে। তাদের একজন অভাবের তাড়নায় ডাকাতির পথ বেছে নেয়ার কথাও বলেছে। গাড়ি চালিয়ে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালানো যায় না বলেই ভিন্ন পথ ধরতে হয়েছে। পুলিশ অবশ্য তাদের পেশাগত ডাকাত বলেছে। এ নিয়ে বিতর্ক না করেও বলা যায়, সমাজে ক্রমেই অপরাধ বেড়ে যাওয়ার কারণ শনাক্ত করে যথাযথ আইনের প্রয়োগ জরুরি। ডাকাতি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, দুর্নীতির পেছনের বিরাজমান আর্থসামাজিক কারণ দূর করা সম্ভব হলে অপরাধ প্রবণতা কমবে। পাশাপাশি বাড়াতে হবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তত্পরতা।
No comments