বিন লাদেন-পরবর্তী বিশ্বরাজনীতির চালচিত্র by তারেক শামসুর রেহমান
ওসামা বিন লাদেনের হত্যাকাণ্ডের পর অনেক প্রশ্ন এখন বিভিন্ন মহলে আলোচিত হচ্ছে। খোদ মার্কিন মুল্লুকেই এখন বলা হচ্ছে, লাদেন 'অপরাধী' হতে পারেন; কিন্তু কমান্ডো পাঠিয়ে তাঁকে হত্যা করা কোনো ধরনের আইনের মধ্যে পড়ে না। দোষীকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে_এটাই আন্তর্জাতিক আইনের ব্যাখ্যা।
যাঁরাই মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছেন (নাজি যুদ্ধাপরাধী, বসনিয়া, রুয়ান্ডা কিংবা লাইবেরিয়ার যুদ্ধাপরাধী) তাঁদের বিচার হয়েছে। লাদেনের ক্ষেত্রে তেমনটি হয়নি। উপরন্তু অ্যাবোটাবাদের বাড়িতে যে মার্কিনি অপারেশন পরিচালিত হবে, তা পাকিস্তানি প্রশাসন জানত। Global Post-এর ১২ মের সংখ্যায় বলা হয়েছে, ওসামা বিন লাদেন যে বাড়িতে থাকতেন, অপারেশনের দুই ঘণ্টা আগে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন এসে আশপাশের সব বাড়ির লোকজনকে বলে গিয়েছিল বাড়ির সব আলো নিভিয়ে রাখতে। পার্শ্ববর্তী এলাকা 'বিশাল টাউন'-এ বসবাসকারীরাও জানিয়েছেন, তাঁরা গভীর রাতের অপারেশনের আগে ওই এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা লক্ষ করেছেন। অর্থাৎ পরিকল্পনা করেই পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে (হতে পারে সেটা সেনাবাহিনীর একটা অংশ) জানিয়েই অপারেশন Geronimo (বিন লাদেনকে হত্যা) পরিচালিত হয়েছিল। পাঁচ বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন জানত ওসামা কোথায় আছেন (Foreign Policy Magayine ও গত ৪ মে প্রকাশিত একটি ছবি তার বড় প্রমাণ)। তাই সংগত কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, কেন মার্কিন প্রশাসন এত দিন তাঁকে বাঁচিয়ে রাখল এবং বিচারের জন্য হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মুখোমুখি করল না। তবে তাঁর হত্যাকাণ্ডের পর এখন নানা প্রশ্ন উঠেছে। প্রথমত, বিন লাদেনের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ'-এর যে সূচনা যুক্তরাষ্ট্র করেছিল, তার অবসান হবে কি না। এর জবাব হচ্ছে-না। যুক্তরাষ্ট্র এ ধারণা পরিত্যাগ করবে না। বরং বেশ কিছু মুসলমান অধ্যুষিত রাষ্ট্রকে 'অকার্যকর বা সন্ত্রাসীদের মদদদাতা' আখ্যায়িত করে যুক্তরাষ্ট্র তথা পশ্চিমা রাষ্ট্র ওইসব রাষ্ট্রকে এক ধরনের চাপের মুখে রাখতে পারে। একই সঙ্গে আল-কায়েদার তৎপরতা বন্ধ হবে বলেও মনে হয় না। AQI (ইরাক), AQIM (Al-Qaeda in Islamic Maghreb) কিংবা GSPC (Salafist Group for Preaching & Combat, Algeria), AQAP (AL-Qaeda in the Arabian Peninsula)-এর মতো সংগঠনের তৎপরতা বাড়বে। মৃত ওসামা তাদের জন্য এখন একটি আদর্শ। 'জিহাদি' তৎপরতা উত্তর আফ্রিকার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। দ্বিতীয়ত, 'Operation Geronimo' নিঃসন্দেহে একটি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে। আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। এটা যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্ব ও ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করল। এখন যেকোনো রাষ্ট্রের ভেতরে যুক্তরাষ্ট্র (অথবা অন্য কোনো রাষ্ট্র) হামলা চালাতে পারে। এ ধরনের প্রবণতা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোনো অবদান রাখবে না। তৃতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, ওসামার মৃত্যুর পর এখন আফগানিস্তান থেকে খুব দ্রুত সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে; কিন্তু এটি হবে না। কারণ আফগানিস্তানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে। এ অঞ্চল থেকে মধ্য এশিয়ার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ। মধ্য এশিয়ায় রয়েছে গ্যাস ও তেলের বড় রিজার্ভ। এ তেল ও গ্যাসের ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল অয়েল কম্পানিগুলোর (আইওসি)। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি আইওসি (বিলি, মবিল, ইউনিকল, শেল, টোটাল) এ অঞ্চলে গ্যাস ও তেল উত্তোলনে নিয়োজিত রয়েছে। মধ্য এশিয়ার এই জ্বালানি সম্পদের কারণে আগামী দিনে এ অঞ্চলে 'আঞ্চলিক যুদ্ধের' সূচনা হতে পারে। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে সখ্য তা ভেঙে যেতে পারে মধ্য এশিয়ার এই জ্বালানি সম্পদের কারণে। ভারত ও চীনেরও আগ্রহ রয়েছে এই জ্বালানি সম্পদের ব্যাপারে। মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে চীন ইতিমধ্যে 'সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন' গড়ে তুলেছে, যেখানে রাশিয়াও সদস্য। মধ্য এশিয়ার এই তেল ও গ্যাস চীন বা রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে যাক, এটা যুক্তরাষ্ট্র চাইবে না। তাই আফগানিস্তানে তার উপস্থিতি দীর্ঘায়িত হবে। প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র তালেবানের সঙ্গে এক ধরনের সমঝোতায় যাবে। চতুর্থত, ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এখন প্রশ্নের মুখে। প্রতিবছর পাকিস্তানকে তিন মিলিয়ন ডলার সাহায্য দেয় যুক্তরাষ্ট্র শুধু সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ড রোধ করতে। এখন মার্কিনি কংগ্রেস এই অর্থ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিন লাদেনের ঘটনায় দুই রাষ্ট্রের মধ্যে আস্থার ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। পাকিস্তানের জন্য সামনের দিনগুলো খারাপ। পাকিস্তানি রাজনৈতিক নেতারা যদি নিজেদের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক বাড়াতে না পারেন, তাহলে তা পাকিস্তানের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলতে পারে। সন্ত্রাসীদের হাতে পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণভার চলে যেতে পারে, এই যুক্তি তুলে IAEA পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণভার নিজেদের হাতে রাখার একটি উদ্যোগ নিতে পারে। স্পষ্টতই বিন লাদেনের ঘটনায় প্রমাণিত হলো, পাকিস্তান সন্ত্রাসীদের লালন করে ও প্রশ্রয় দেয়। এ ঘটনায় পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বড় ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়ল। ভারত এখন পাকিস্তানকে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করার আন্তর্জাতিক উদ্যোগ নিতে পারে। ভারত যদি এটা করে, তাহলে তা উপমহাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা আরো বাড়াবে মাত্র। পঞ্চমত, বারাক ওবামা ২০০৯ সালের জুন মাসে কায়রোতে যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তাতে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন সূচনার কথা তিনি বলেছিলেন। এখন বিন লাদেনকে হত্যার পর এ আস্থায় চিড় ধরতে বাধ্য। কোনো মুসলিম দেশই এখন নিজেদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কথা বিবেচনা করে প্রকাশ্যে মার্কিন প্রশাসনের কর্মকাণ্ড সমর্থন করবে না। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের Woodrow Wilson Center-এর গবেষকরাও বলেছেন, বিন লাদেনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর আরব বিশ্বে ইসলামপন্থীদের উত্থান রোধ করা সম্ভব হবে না। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একটা সমঝোতা হবে, এটাও বিশ্বাসযোগ্য নয়। এখন ইসরায়েলের আগ্রাসী তৎপরতা আরো বাড়তে পারে। মিসরে ইসলামপন্থী হিসেবে পরিচিত 'ইসলামিক ব্রাদারহুড' পার্টি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা বলেছে। বোঝাই যায়, বিন লাদেনের হত্যাকাণ্ড যে 'সহানুভূতির ঢেউ' সৃষ্টি করেছে, তা থেকে ফায়দা ওঠাতে চাচ্ছে আরব বিশ্বের ইসলামিক দলগুলো। ষষ্ঠত, লাদেনের মৃত্যুর পর এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা একটি নতুন মাত্রা পাবে। এ অঞ্চল ন্যাটোর এশীয়করণ হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যের তথা পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের কয়েকটি দেশ এবং ভারতের সমন্বয়ে গঠিত হতে পারে ন্যাটোর এশীয় সংস্করণ, যা কি না তথাকথিত 'নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা'র স্বার্থে এ অঞ্চলে মোতায়েন করা হতে পারে। মনে রাখতে হবে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে ১৯৪৮ সালে এভাবেই ন্যাটো গঠিত হয়েছিল। এ ধরনের যেকোনো সিদ্ধান্ত এ অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়াবে। চীনও বিষয়টি সহজভাবে দেখবে না। সপ্তমত, বিন লাদেনের হত্যাকাণ্ডের পর খুব দ্রুত ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কাবুল সফর প্রমাণ করে, যুক্তরাষ্ট্র চায় পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারত একটা বড় ভূমিকা পালন করুক। ভারতের বড় বিনিয়োগ রয়েছে আফগানিস্তানে। খুব স্বাভাবিকভাবেই ভারত চাইবে সুবিধা আদায় করে নিতে। অষ্টমত, যুক্তরাষ্ট্রের 'মোস্ট ওয়ানটেড পারসন' বিন লাদেনকে হত্যা করে ওবামা যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছেন। ওই ঘটনার পর এক জরিপে দেখা গেছে, ওবামার জনপ্রিয়তা এখন ৬০ শতাংশের ঊর্ধ্বে। আগামী বছর সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ওবামা দ্বিতীয় টার্মের জন্য তাঁর জয় নিশ্চিত করলেন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে মানুষ যখন তাঁর 'স্বাস্থ্য পরিকল্পনা' নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত, তখন ওসামা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে ওবামা দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিলেন। মানুষ এখন আর স্বাস্থ্য খাত নয়, বরং ওসামা নিয়েই বেশি উৎসাহী এবং তাঁর হত্যাকাণ্ডে তারা খুশিও। যুক্তরাষ্ট্র এটাই চেয়েছে এবং তাতে সফল হয়েছে। নবমত, বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্ব করার এ প্রবণতা যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকে বারবার বিতর্কিত করছে। Humanitarian Intervention-এর নামে লিবিয়ায় বোমাবর্ষণের নির্দেশ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র পরোক্ষভাবে জানিয়ে দিল, লিবিয়ায় গাদ্দাফিপরবর্তী নেতৃত্বকে তারা দেখতে চায়। লিবিয়ার তেলসম্পদ একদিকে যেমন তাদের আগ্রহ সৃষ্টি করেছে, ঠিক তেমনি রয়েছে উত্তর আফ্রিকার (শাদ, নাইজার) বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের (তেল, গ্যাস, ইউরেনিয়াম, কোবাল্ট, ম্যাঙ্গানিজ, প্লাটিনাম) ওপর একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। লিবিয়া হচ্ছে 'গেটওয়ে'-এখান থেকে উত্তর আফ্রিকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা সম্ভব। এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো তার সামরিক কমান্ড AFRICOM প্রতিষ্ঠা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র একুশ শতকে নতুন এক আফ্রিকাকে দেখতে চায়। একসময় যে অঞ্চলগুলো ছিল ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের উপনিবেশ (১৮৮৪ সালের বার্লিন সম্মেলন অনুযায়ী), সেই অঞ্চলগুলো এখন পরিণত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের উপনিবেশে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ ২০০১ সালে প্রণয়ন করেছিলেন Great Middle East Project। আজকে সমগ্র আরব বিশ্বে যে পরিবর্তনের ঢেউ, তার পেছনে রয়েছে এই মহাপরিকল্পনা। লিবিয়ায় Humanitarian Intervention ও বিন লাদেনের হত্যাকাণ্ড মূলত একই সূত্রে গাথা, একটির সঙ্গে অন্যটির সম্পর্ক রয়েছে।
বিন লাদেনকে হত্যা করার পর তাঁর বিচার করার আর কোনো সুযোগ থাকল না। ঠিক তেমনি তাঁর মুখ থেকে নাইন-ইলেভেনের ঘটনার প্রেক্ষাপটও জানা গেল না। কিন্তু পেন্টাগন যখন বেশ কিছু ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করে, তখন তাদের 'আসল উদ্দেশ্য'টি ফাঁস হয়ে যায়। প্রশ্ন ওঠে, যে ব্যক্তিকে সারা বিশ্বের মানুষ বাড়িতে বসে ভিডিওতে দেখছে, এটা কি সম্ভব? তিন স্ত্রী এবং ১৭ সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন_এটা কি কল্পনা করা যায়? কোনো ইন্টারনেট বা ফোন ছিল না। তাহলে আল-কায়েদাকে পরিচালনা করতেন কিভাবে? এর জবাব এখন নেই। কিন্তু ভবিষ্যতে সত্য বেরিয়ে আসবেই। এক দিন (১৯৭৯) ওসামাকে পেন্টাগনই সৃষ্টি করেছিল। তারাই তাঁকে এত দিন বাঁচিয়ে রেখেছিল। এখন তাঁর প্রয়োজনীয়তা আর নেই। তাই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হলো। যুক্তরাষ্ট্র যে শুধু ওসামা বিন লাদেনের ক্ষেত্রে এমনটি করল, তা নয়। বরং ইতিহাসে এর প্রমাণ আরো আছে। একজন মৃত বিন লাদেন বরং জিহাদি আন্দোলনকে আরো শক্তিশালী ও উৎসাহী করবে মাত্র।
লেখক : অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বাবিদ্যালয়
www.tsrahmanbd.blogspot.com
বিন লাদেনকে হত্যা করার পর তাঁর বিচার করার আর কোনো সুযোগ থাকল না। ঠিক তেমনি তাঁর মুখ থেকে নাইন-ইলেভেনের ঘটনার প্রেক্ষাপটও জানা গেল না। কিন্তু পেন্টাগন যখন বেশ কিছু ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করে, তখন তাদের 'আসল উদ্দেশ্য'টি ফাঁস হয়ে যায়। প্রশ্ন ওঠে, যে ব্যক্তিকে সারা বিশ্বের মানুষ বাড়িতে বসে ভিডিওতে দেখছে, এটা কি সম্ভব? তিন স্ত্রী এবং ১৭ সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন_এটা কি কল্পনা করা যায়? কোনো ইন্টারনেট বা ফোন ছিল না। তাহলে আল-কায়েদাকে পরিচালনা করতেন কিভাবে? এর জবাব এখন নেই। কিন্তু ভবিষ্যতে সত্য বেরিয়ে আসবেই। এক দিন (১৯৭৯) ওসামাকে পেন্টাগনই সৃষ্টি করেছিল। তারাই তাঁকে এত দিন বাঁচিয়ে রেখেছিল। এখন তাঁর প্রয়োজনীয়তা আর নেই। তাই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হলো। যুক্তরাষ্ট্র যে শুধু ওসামা বিন লাদেনের ক্ষেত্রে এমনটি করল, তা নয়। বরং ইতিহাসে এর প্রমাণ আরো আছে। একজন মৃত বিন লাদেন বরং জিহাদি আন্দোলনকে আরো শক্তিশালী ও উৎসাহী করবে মাত্র।
লেখক : অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বাবিদ্যালয়
www.tsrahmanbd.blogspot.com
No comments