ডাক বিভাগের প্যাকিং মেশিন-অদক্ষতার মাত্রা আর যেন না বাড়ে
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের দুর্দিন চলছে। তারা বেসরকারি খাতের দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পারছে না। একটি চিঠি পাঠাতে হলে এমনকি গ্রামের সাধারণ মানুষও ভরসা করে কুরিয়ার সার্ভিসের ওপর। তারা মনি অর্ডারও গ্রহণ এবং বিলি করে। এক সময় এসব কাজ ছিল ডাক বিভাগের একচেটিয়া।
কিন্তু ভালো মানের সেবা প্রদানে ব্যর্থতা তাদের পিছিয়ে দিচ্ছে। জনসাধারণ তাদের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। এ অবস্থায় প্রয়োজন হচ্ছে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানো। এ জন্য আন্তরিক সেবাদানে যেমন আগ্রহ থাকতে হবে, তেমনি প্রযুক্তিগত উৎকর্ষও অপরিহার্য। দেশের ছয়টি বিভাগীয় শহরে প্রধান ডাকঘরে অটোপ্যাকেজিং মেশিন স্থাপনকে আমরা এ লক্ষ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ধরে নিতে পারতাম। ইতিমধ্যে অনেক দাম দিয়ে এসব মেশিন কেনা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট ছয়টি পোস্ট অফিসে পাঠানোও হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সমকালের লোকালয় পাতায় প্রকাশিত 'চট্টগ্রামে পার্সেল সেবা, ভেস্তে যাচ্ছে কোটি টাকার প্রকল্প' শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রামে দুটি মেশিন বসানো হলেও কর্মীদের প্রশিক্ষণ না থাকায় তা কাজ করছে না। আর ঢাকার জিপিওতে বসানো মেশিন কাজ করছে আংশিকভাবে। অথচ দেশে-বিদেশে পার্সেল পাঠানোর জন্য চালু থাকা এক্সপ্রেস মেইল সার্ভিসের গ্রাহকদের মানসম্পন্ন সেবা প্রদানের জন্য আধুনিক প্যাকেজিং সুবিধা অপরিহার্য। কাদের ব্যর্থতায় এ আয়োজন ভেস্তে যেতে বসেছে, এর অনুসন্ধান জরুরি। চট্টগ্রাম পোস্ট অফিসে মেশিন চালু ও বন্ধ করার 'দক্ষ কর্মী' রয়েছে, কিন্তু তারা প্যাকিং প্রক্রিয়া সম্পর্কে অজ্ঞ। প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান না ডাক বিভাগের সেটা স্পষ্ট নয় বলেই সমস্যা হচ্ছে। এর সমাধান দ্রুত হওয়া দরকার। প্যাকিং কাজ খুব জটিল কিছু হওয়ার কথা নয়। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির ব্যাখ্যা ও দায়দায়িত্ব নিয়ে বিরোধ মিটিয়ে ফেলার জন্য ডাক বিভাগকেই উদ্যোগ নিতে হবে। এতে বিলম্ব ঘটার আশঙ্কা থাকলে তারা নিজেরা প্রশিক্ষক এনে মেশিনগুলো চালু রাখার ব্যবস্থা করতে পারে। যদি দেখা যায়, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কারণেই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তাহলে তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই প্যাকিং মেশিন যেন অকেজো পড়ে না থাকে।
No comments