বিশ্ববিদ্যালয় চেয়ারম্যানের অপকীর্তি-কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক

বিশ্ববিদ্যালয় শব্দটির সঙ্গে একটি গাম্ভীর্য, একটি শ্রদ্ধাবোধ জড়িয়ে আছে সর্বকালে, সব দেশেই। কিন্তু প্রায়ই আমাদের দেশে বাণিজ্যিক মনোভাবাপন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমন সব ঘটনার উন্মোচন হয় যে আমরা জাতি হিসেবে লজ্জিত হই, বিব্রত বোধ করি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এসব বাণিজ্যিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বজ্ঞানহীন কিছু কর্তাব্যক্তির দায়


জাতি অপবাদ হিসেবে বইবে কেন? এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চরম কলঙ্কজনক ঘটনার খবর প্রকাশ পেয়েছে দেশের বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রে। জানা গেছে, বহুল পরিচিত নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অপচেষ্টার অভিযোগও তুলেছেন পাবলিক সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের একজন শিক্ষিকা। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং তাঁরা সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ারও জোর দাবি জানিয়েছেন। এ ন্যক্কারজনক ঘটনা খতিয়ে দেখতে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। কমিটির ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করার কথা এবং ১ মার্চ তারা শুনানি গ্রহণ করবেন। উল্লেখ্য, অভিযুক্ত এ চেয়ারম্যানের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে ইতিপূর্বে একজন শিক্ষিকা দেশত্যাগ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
যে প্রতিষ্ঠানের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের সামনে একজন শিক্ষিকা নিরাপদ বোধ করতে পারেন না, সে প্রতিষ্ঠানে কোমলমতি তরুণী শিক্ষার্থীরা কতটা নিরাপদ_এমন প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহলে। বিশ্ববিদ্যালয় একটি পূতপবিত্র প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের অপকর্মের দায় শিক্ষার্থীদের কাঁধে কেন বর্তাবে? আমরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে জোর দাবি জানাই, অচিরে এসব অভিযোগ তদন্তসাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির সুনাম ফিরে আসে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যেন প্রতিষ্ঠানটির ওপর আস্থা ফিরে পায়। কোনো ব্যক্তির লজ্জাকর অভিযোগ কাঁধে নিয়ে অন্তত বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অধিকার নেই বলে আমরা মনে করি। জানা গেছে, নারীঘটিত বিষয়, গ্রেড চেঞ্জ ও আর্থিক দুর্নীতির দায়ে একজন শিক্ষককে এ প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
বর্তমান চেয়ারম্যান সেই শিক্ষককেই আবার উপ-উপাচার্য হিসেবে
ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়েও মঞ্জুরি কমিশনের একটি
নিবিড় তদারকি থাকা প্রয়োজন।

No comments

Powered by Blogger.