ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়-সমাবর্তনের সকালে by ইমাম হাসান

১৯ ফেব্রুয়ারি। বসন্তের সকাল। ঋতুতেই যে শুধু বসন্ত, তা নয়। এদিন যেন আলাদা বসন্ত ছিল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০৫ শিক্ষার্থীর জন্য; বিশেষ করে, যাঁরা বিদায়ী বছরে পাস করেছেন। আর তাঁদের বসন্তের দিনটি সুন্দরভাবে উদ্যাপনের দায়িত্ব নেন ব্র্যাকের বর্তমান শিক্ষার্থীরা।


তাহলে খোলাসা করেই বলি। এদিন ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ছিল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান। আর নিজের উচ্চশিক্ষার সনদ নিতে শিক্ষার্থীরা ছিলেন একই সাজ-পোশাকে। নীল রঙের গাউনে ছিল এই সমাবর্তন বসন্ত! কি, চমকে উঠলেন নীল রং শুনে?
হ্যাঁ। নীল ছিল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের গাউনের রং। সমাবর্তন মানেই কালো গাউনের সঙ্গে কালো হ্যাট। সচরাচর এই ধারা দেখে এলেও প্রথাটি ভাঙল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। আর এর জবাব মিলল বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য আইনুন নিশাতের কাছে। ‘সমাবর্তনে এখন যে গাউন পরা হয়, এটি মূলত ঔপনিবেশিক একটি ধারা। আমরা এই ধারার বাইরে আসতে চেয়েছি। আমাদের গাউনটি অনেকটা বাইরের গির্জার পুরোহিতদের মতো করে করার চেষ্টা করেছি। আর তার সঙ্গে যোগ করেছি নকশিকাঁথার নকশা।’
সমাবর্তনে এসে সবাই যেন হারিয়ে গেছে ক্লাসের ফাঁকে আড্ডার মতো। আর তাই তো মূল মিলনায়তনের অনুষ্ঠান শুরু হতে গেলেও আড্ডা চলছে অনেকের মধ্যে। কেউ আবার তখনই হ্যাট উড়িয়ে ছবি তুলছেন।
অধিকাংশ শিক্ষার্থীই এসেছেন মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে। তেমনি একজন শাহ নাবিলা কাশফি। কাশফি বলেন, ‘মনে হচ্ছে, এই সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। অথচ আজ অনার্স শেষ করে সনদ নিতে এসেছি। তবে ভালো লাগছে এই ভেবে যে আমি বড় হয়ে গেছি।’
সামিনা আলম তো গাউন পেয়েই খুশি। তাঁর মতে, ‘অনেক সাধনার পর এই গাউন পরলাম। খুশি তো লাগবেই।’ মার্কেটিং নিয়ে ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছা সামিনার। সমাবর্তনে স্বর্ণপদক পাওয়া শিক্ষার্থী মারিয়া মতিন বলেন, ‘ভর্তির সময় বিষয় বাছাই করেছিলাম অর্থনীতি। আমি বড় অর্থনীতিবিদ হতে চাই। এবার আমি ভালো ফলাফলের জন্য স্বর্ণপদক পেলাম। সামনে আরও বড় সম্মান বয়ে আনতে চাই দেশের জন্য।’ মারিয়া ছাড়াও এ বছর সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া আরও দুজন শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান ও নওরিন পান স্বর্ণপদক। অনুষ্ঠানে মোট ৬০৫ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হয়।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তব্য দেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

No comments

Powered by Blogger.