পরিবেশ-নিজের সচেতনতা সবার আগে by উপমা মাহবুব
সরকারকে দোষারোপ না করে যত দ্রুত আমরা নিজেদের নোংরা করার অভ্যাসগুলো বদলাতে পারব ততই মঙ্গল
আমরা নিজেরাই নিজেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নোংরা করি আর অন্য কেউ নোংরা করতে না চাইলে তার অতিসচেতনতা নিয়ে হাসাহাসি করি। এ শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র নয়, কেউ রাস্তার ধারে ময়লা ফেলছি, কেউ দুই বিল্ডিংয়ের মধ্যে সামান্য ফাঁকা জায়গায়। থুথু, পানের পিক আর চকোলেটের প্যাকেট ফেলতে তো কোনো নির্দিষ্ট জায়গাই লাগে না,
আমরা নিজেরাই নিজেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নোংরা করি আর অন্য কেউ নোংরা করতে না চাইলে তার অতিসচেতনতা নিয়ে হাসাহাসি করি। এ শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র নয়, কেউ রাস্তার ধারে ময়লা ফেলছি, কেউ দুই বিল্ডিংয়ের মধ্যে সামান্য ফাঁকা জায়গায়। থুথু, পানের পিক আর চকোলেটের প্যাকেট ফেলতে তো কোনো নির্দিষ্ট জায়গাই লাগে না,
ফুটপাত আছে কী করতে! আরও সুবিধাজনক হলো যে কোনো জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়ে প্রাকৃতিক কাজ সারা যায়, এমন উদার মানসিকতার দেশ পৃথিবীতে সম্ভবত বিরল। এখানে ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত কোনো ভেদাভেদ নেই, শুধু পুরুষ হলেই হবে। এ তো গেল সাধারণ মানুষের কথা। বড় বড় রাঘববোয়ালরা শিল্পকারখানার বর্জ্য নদীতে ফেলে নদীগুলোর বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে। শহরাঞ্চলে গৃহস্থালির সব পয়োবর্জ্য নালা, নর্দমা, খাল বেয়ে চলে যাচ্ছে নদীতে। বুড়িগঙ্গার পানি এতই দূষিত যে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
মানুষের জানার পরিধি বা সচেতনতার মাত্রায় পার্থক্য থাকতেই পারে। আমরা কেউই পারফেক্ট নই। বাংলাদেশে বসবাস করে 'আমি জীবনে কোনো দিনও ডাস্টবিন ছাড়া অন্য কোথাও ময়লা ফেলিনি' এই দাবি কেউ করতে পারবেন না বোধকরি। বাধ্য হয়েই কাজটি করতে হয়। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে কখনোই ভাবে না যে, কাজটি করা তার ঠিক হয়নি। পিকনিকে গিয়ে, লেকে নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর সময় খাবারের প্যাকেট, বাদামের খোসা, পানির বোতল ফেলে এলাকা নোংরা করতে আমাদের এতটুকুও বাধে না। আমি ইচ্ছামতো নোংরা করব আর সরকার সারাদিন লোক দিয়ে পরিষ্কার করাবে এটি খুবই নিম্নশ্রেণীর মানসিকতা। আমরা বিদেশে গিয়ে ভদ্র হয়ে যাই, অথবা ভদ্র হতে বাধ্য হই। আর দেশে ফেরার আনন্দ উপভোগ উদ্বোধন করি বিমানবন্দর নোংরা করার মধ্য দিয়ে। ধরেই নিই যে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা আমার অধিকার আর তা পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব বিমানবন্দর প্রশাসনের! যেখানে 'ময়লা ফেলা নিষেধ' সেখানেই ময়লা ফেলে আমরা মজা পাই, মানুষের দুর্ভোগ আর পরিবেশ নিয়ে চিন্তা করি না।
জানি, অধিকাংশই বলবেন যে, যথেষ্ট পরিমাণ ডাস্টবিন নেই তাই রাস্তায় ময়লা ফেলি। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, যেসব ব্যক্তি এই অজুহাত দেন তাদের বড় অংশই আইসক্রিম খাওয়ার সময় আশপাশে ডাস্টবিন আছে কি নেই সেটি লক্ষ্য করেই দেখেন না। অনেকেই রাস্তায় ইচ্ছামতো থুথু ফেলেন। পুরুষরা জায়গায়-অজায়গায় প্রাকৃতিক কাজও সারেন। মহিলারা বাড়ির ময়লা রাস্তার পাশের খোলা নর্দমায় ফেলেন। যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা আমাদের চর্চিত অভ্যাসেরই একটি অংশ। এটিকে আমরা খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা হিসেবে ধরে নিয়েছি, কাজেই কাছাকাছি ময়লা ফেলার জায়গা থাকলেও কিছু আসে যায় না। আমাদের রাস্তার পাশের ডাস্টবিনগুলো দেখলেই তা বোঝা যায়। ডাস্টবিনের ভেতরটা অনেকখানি ফাঁকা থাকে আর বিনের চারপাশে রাস্তার ওপর সব আবর্জনা ফেলা হয়! তাই সরকারকে দোষারোপ না করে যত দ্রুত আমরা নিজেদের নোংরা করার অভ্যাসগুলো বদলাতে পারব ততই মঙ্গল।
উপমা মাহবুব :উন্নয়নকর্মী
সথঁঢ়ড়সধ@ুধযড়ড়.পড়স
মানুষের জানার পরিধি বা সচেতনতার মাত্রায় পার্থক্য থাকতেই পারে। আমরা কেউই পারফেক্ট নই। বাংলাদেশে বসবাস করে 'আমি জীবনে কোনো দিনও ডাস্টবিন ছাড়া অন্য কোথাও ময়লা ফেলিনি' এই দাবি কেউ করতে পারবেন না বোধকরি। বাধ্য হয়েই কাজটি করতে হয়। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে কখনোই ভাবে না যে, কাজটি করা তার ঠিক হয়নি। পিকনিকে গিয়ে, লেকে নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর সময় খাবারের প্যাকেট, বাদামের খোসা, পানির বোতল ফেলে এলাকা নোংরা করতে আমাদের এতটুকুও বাধে না। আমি ইচ্ছামতো নোংরা করব আর সরকার সারাদিন লোক দিয়ে পরিষ্কার করাবে এটি খুবই নিম্নশ্রেণীর মানসিকতা। আমরা বিদেশে গিয়ে ভদ্র হয়ে যাই, অথবা ভদ্র হতে বাধ্য হই। আর দেশে ফেরার আনন্দ উপভোগ উদ্বোধন করি বিমানবন্দর নোংরা করার মধ্য দিয়ে। ধরেই নিই যে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা আমার অধিকার আর তা পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব বিমানবন্দর প্রশাসনের! যেখানে 'ময়লা ফেলা নিষেধ' সেখানেই ময়লা ফেলে আমরা মজা পাই, মানুষের দুর্ভোগ আর পরিবেশ নিয়ে চিন্তা করি না।
জানি, অধিকাংশই বলবেন যে, যথেষ্ট পরিমাণ ডাস্টবিন নেই তাই রাস্তায় ময়লা ফেলি। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, যেসব ব্যক্তি এই অজুহাত দেন তাদের বড় অংশই আইসক্রিম খাওয়ার সময় আশপাশে ডাস্টবিন আছে কি নেই সেটি লক্ষ্য করেই দেখেন না। অনেকেই রাস্তায় ইচ্ছামতো থুথু ফেলেন। পুরুষরা জায়গায়-অজায়গায় প্রাকৃতিক কাজও সারেন। মহিলারা বাড়ির ময়লা রাস্তার পাশের খোলা নর্দমায় ফেলেন। যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা আমাদের চর্চিত অভ্যাসেরই একটি অংশ। এটিকে আমরা খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা হিসেবে ধরে নিয়েছি, কাজেই কাছাকাছি ময়লা ফেলার জায়গা থাকলেও কিছু আসে যায় না। আমাদের রাস্তার পাশের ডাস্টবিনগুলো দেখলেই তা বোঝা যায়। ডাস্টবিনের ভেতরটা অনেকখানি ফাঁকা থাকে আর বিনের চারপাশে রাস্তার ওপর সব আবর্জনা ফেলা হয়! তাই সরকারকে দোষারোপ না করে যত দ্রুত আমরা নিজেদের নোংরা করার অভ্যাসগুলো বদলাতে পারব ততই মঙ্গল।
উপমা মাহবুব :উন্নয়নকর্মী
সথঁঢ়ড়সধ@ুধযড়ড়.পড়স
No comments