রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে কিউইদের স্বপ্নপূরণ
একেবারে শেষ মুহূর্তে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন ড্যানিয়েল ভেট্টোরি। আর টস হেরে সিডনির মেঘলা আকাশের নিচে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫০ রানে নিউজিল্যান্ডের গুটিয়ে যাওয়া দেখে ব্রিসবেনের সিক্যুয়াল মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে বলেই ধরে নিয়েছিলেন সবাই। তৃতীয় টেস্ট অধিনায়কত্ব করতে নামা রস টেলর কিংবা ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামা ডগ ব্রেসওয়েলের মনে স্বপ্নের উঁকিঝুঁকি দেখার সময় কোথায় তখন! সে স্বপ্ন পরের দিনই ছড়িয়ে পড়ে হারিয়েও
যায়। টোয়েন্টি টোয়েন্টির গরম বাজারেও টেস্ট উন্মাদনার বারুদ ছিটিয়ে গতকাল মহানায়ক ডগ ব্রেসওয়েল। ২৬ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট ম্যাচ জেতার আনন্দে কিউইরা যখন আনন্দে লাফাচ্ছে, তখন একজন দ্রুত সাজঘরে ফিরছেন। তিনি ডেভিড ওয়ার্নার। ইনিংসের আদ্যন্ত ব্যাট করা, সেঞ্চুরির আনন্দ_সবই যে মাটি ব্রেসওয়েলের শেষ বলটিতে!
নবম উইকেট পতনের সময় জয় থেকে ৪২ রান দূরে অস্ট্রেলিয়া। এক প্রান্তে পাল্টা আক্রমণে লড়াই করে যাওয়া ডেভিড ওয়ার্নার আছেন বটে, তবে এই সেদিনও কিউরেটরের চাকরি করা নাথান লিও আর কতক্ষণই বা সঙ্গ দিতে পারেন? এমন রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের উত্তাপ গায়ে মেখে ব্যাট করার অভিজ্ঞতা ক্লাব পর্যায়েও যে হয়নি অস্ট্রেলিয়ার এ অফস্পিনারের! তবে কারো কারো চাপ সহ্য করার ক্ষমতা বুঝি জন্মগত। নয়তো ২৭তম বলে বোল্ড হওয়ার আগে বার কয়েক অফস্টাম্পের বাইরের বলে চালাতে গিয়ে স্থানীয় দর্শকদের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিলেন বটে লিও, তবে চূড়ান্ত হতাশ করেননি। এর মধ্যে ব্রেসওয়েলকে কাভার দিয়ে মারা একটি বাউন্ডারিও আছে তাঁর। অন্যদিকে শেষ ব্যাটসম্যানকে দেখে অনন্যোপায় ওয়ার্নার পুরোপুরি টোয়েন্টি টোয়েন্টির মেজাজে। তিনি যখন ব্যাটিং ক্রিজে, তখন ফেভারিট অস্ট্রেলিয়া। আবার নাথান লিও'র সময় ম্যাচ ঝুঁকে যায় নিউজিল্যান্ডের দিকে।
এ স্নায়ু টানটান ম্যাচে জল ঢেলে দিয়েছিলেন আম্পায়ার নাইজেল লং। তবে তাঁর দেওয়া এলবিডাবি্লউর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ চান লিও। টিভি রিপ্লে দেখার পর উৎসব ফেলে আবারও ম্যাচে ফিরতে হয় কিউইদের। কিছুক্ষণ পর রিভিউ পদ্ধতির দ্বারস্থ হয় কিউইরা। এবারও লিও'র পাশে দাঁড়ায় প্রযুক্তি। ততক্ষণে জয় থেকে মাত্র ৮ রান দূরে অস্ট্রেলিয়া। ঠিক তখনই স্বপ্নের ওই ইয়র্কারটা দেন ডগ ব্রেসওয়েল। বল লিও'র ব্যাটের তলা দিয়ে স্টাম্প ভাঙতেই চূড়ান্ত উৎসবে নেচে ওঠে নিউজিল্যান্ড। হতাশায় ক্রিজে হাঁটু মুড়ে হয়তো ঈশ্বরের কাছে অনুযোগই করছিলেন নাথান লিও। বলতে গেলে একা লড়াই করেও জিততে না পেরে ওয়ার্নারের বিষাদের কথা তো বলা হয়েছে শুরুতেই। এ বিষাদ কি আর ম্যাচসেরার পুরস্কারে ভুলতে পারবেন ওয়ার্নার?
নিউজিল্যান্ড দল কখনোই মাঠে দর্শক টানেনি। স্যার রিচার্ড হ্যাডলি এবং মার্টিন ক্রোর পর সে অর্থে বড় তারকা ক্রিস কেয়ার্নস কিংবা স্টিফেন ফ্লেমিং পেরিয়ে টেনেটুনে ড্যানিয়েল ভেট্টোরি পর্যন্ত তারকার চাদরটা ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এঁরা সবাই সিডনিতে দর্শক। এমন একটি দল ২৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটাবে, টেস্ট প্রিভিউতে এমন সম্ভাবনার কথা কেউ দুঃসাহস করেও লেখেননি। বরং ব্রিসবেনের পর সিডনিতেও কিউইরা আরো কতটা অজি নির্মমতার শিকার হয়, সে আলোচনাই হয় অস্ট্রেলিয়া প্রথমবার ব্যাটিংয়ে নামার আগে পর্যন্ত। ক্রিস মার্টিন, ট্রেন্ট বোল্ট এবং ব্রেসওয়েলের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ১৩৬ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। স্বাগতিকদের কফিনে শেষ পেরেকটা একাই ঠোকেন ডগ ব্রেসওয়েল। সাবেক কিউই অফস্পিনার জন ব্রেসওয়েলের এ ভাতিজা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কত দূর যাবেন, তা ভবিষ্যৎই জানে। তবে রুদ্ধশাস এ ম্যাচের ৯ উইকেট কিউই ক্রিকেট ইতিহাসে চাচার চেয়ে বড় জায়গা পাইয়ে দিয়েছে ডগ ব্রেসওয়েলকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড ১৫০ ও ২২৬। অস্ট্রেলিয়া ১৩৬ ও ২য় ইনিংস ৬৩.৪ ওভারে ২৩৩/১০ (ওয়ার্নার ১২৩*, খাজা ২৩, অতিরিক্ত ২১, সাউদি ২/৭৭, ব্রেসওয়েল ৬/৪০)।
ম্যাচের ফল : নিউজিল্যান্ড ৭ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : ডেভিড ওয়ার্নার। সিরিজের ফল : ১-১ ম্যাচে ড্র।
ম্যান অব দ্য সিরিজ : জেমস প্যাটিনসন।
নবম উইকেট পতনের সময় জয় থেকে ৪২ রান দূরে অস্ট্রেলিয়া। এক প্রান্তে পাল্টা আক্রমণে লড়াই করে যাওয়া ডেভিড ওয়ার্নার আছেন বটে, তবে এই সেদিনও কিউরেটরের চাকরি করা নাথান লিও আর কতক্ষণই বা সঙ্গ দিতে পারেন? এমন রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের উত্তাপ গায়ে মেখে ব্যাট করার অভিজ্ঞতা ক্লাব পর্যায়েও যে হয়নি অস্ট্রেলিয়ার এ অফস্পিনারের! তবে কারো কারো চাপ সহ্য করার ক্ষমতা বুঝি জন্মগত। নয়তো ২৭তম বলে বোল্ড হওয়ার আগে বার কয়েক অফস্টাম্পের বাইরের বলে চালাতে গিয়ে স্থানীয় দর্শকদের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিলেন বটে লিও, তবে চূড়ান্ত হতাশ করেননি। এর মধ্যে ব্রেসওয়েলকে কাভার দিয়ে মারা একটি বাউন্ডারিও আছে তাঁর। অন্যদিকে শেষ ব্যাটসম্যানকে দেখে অনন্যোপায় ওয়ার্নার পুরোপুরি টোয়েন্টি টোয়েন্টির মেজাজে। তিনি যখন ব্যাটিং ক্রিজে, তখন ফেভারিট অস্ট্রেলিয়া। আবার নাথান লিও'র সময় ম্যাচ ঝুঁকে যায় নিউজিল্যান্ডের দিকে।
এ স্নায়ু টানটান ম্যাচে জল ঢেলে দিয়েছিলেন আম্পায়ার নাইজেল লং। তবে তাঁর দেওয়া এলবিডাবি্লউর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ চান লিও। টিভি রিপ্লে দেখার পর উৎসব ফেলে আবারও ম্যাচে ফিরতে হয় কিউইদের। কিছুক্ষণ পর রিভিউ পদ্ধতির দ্বারস্থ হয় কিউইরা। এবারও লিও'র পাশে দাঁড়ায় প্রযুক্তি। ততক্ষণে জয় থেকে মাত্র ৮ রান দূরে অস্ট্রেলিয়া। ঠিক তখনই স্বপ্নের ওই ইয়র্কারটা দেন ডগ ব্রেসওয়েল। বল লিও'র ব্যাটের তলা দিয়ে স্টাম্প ভাঙতেই চূড়ান্ত উৎসবে নেচে ওঠে নিউজিল্যান্ড। হতাশায় ক্রিজে হাঁটু মুড়ে হয়তো ঈশ্বরের কাছে অনুযোগই করছিলেন নাথান লিও। বলতে গেলে একা লড়াই করেও জিততে না পেরে ওয়ার্নারের বিষাদের কথা তো বলা হয়েছে শুরুতেই। এ বিষাদ কি আর ম্যাচসেরার পুরস্কারে ভুলতে পারবেন ওয়ার্নার?
নিউজিল্যান্ড দল কখনোই মাঠে দর্শক টানেনি। স্যার রিচার্ড হ্যাডলি এবং মার্টিন ক্রোর পর সে অর্থে বড় তারকা ক্রিস কেয়ার্নস কিংবা স্টিফেন ফ্লেমিং পেরিয়ে টেনেটুনে ড্যানিয়েল ভেট্টোরি পর্যন্ত তারকার চাদরটা ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এঁরা সবাই সিডনিতে দর্শক। এমন একটি দল ২৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটাবে, টেস্ট প্রিভিউতে এমন সম্ভাবনার কথা কেউ দুঃসাহস করেও লেখেননি। বরং ব্রিসবেনের পর সিডনিতেও কিউইরা আরো কতটা অজি নির্মমতার শিকার হয়, সে আলোচনাই হয় অস্ট্রেলিয়া প্রথমবার ব্যাটিংয়ে নামার আগে পর্যন্ত। ক্রিস মার্টিন, ট্রেন্ট বোল্ট এবং ব্রেসওয়েলের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ১৩৬ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। স্বাগতিকদের কফিনে শেষ পেরেকটা একাই ঠোকেন ডগ ব্রেসওয়েল। সাবেক কিউই অফস্পিনার জন ব্রেসওয়েলের এ ভাতিজা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কত দূর যাবেন, তা ভবিষ্যৎই জানে। তবে রুদ্ধশাস এ ম্যাচের ৯ উইকেট কিউই ক্রিকেট ইতিহাসে চাচার চেয়ে বড় জায়গা পাইয়ে দিয়েছে ডগ ব্রেসওয়েলকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড ১৫০ ও ২২৬। অস্ট্রেলিয়া ১৩৬ ও ২য় ইনিংস ৬৩.৪ ওভারে ২৩৩/১০ (ওয়ার্নার ১২৩*, খাজা ২৩, অতিরিক্ত ২১, সাউদি ২/৭৭, ব্রেসওয়েল ৬/৪০)।
ম্যাচের ফল : নিউজিল্যান্ড ৭ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : ডেভিড ওয়ার্নার। সিরিজের ফল : ১-১ ম্যাচে ড্র।
ম্যান অব দ্য সিরিজ : জেমস প্যাটিনসন।
No comments