নিউটন অনলাইনে

স্যার আইজ্যাক নিউটন_একই অঙ্গে অনেক রূপ। প্রখ্যাত এই ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী একাধারে গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, প্রাকৃতিক দার্শনিক এবং আলকেমিস্ট। এই মহামানবের লেখা দুর্লভ গ্রন্থই শুধু নয়, তাঁর হাতে লেখা অনেক গ্রন্থের মূল পাণ্ডুলিপিও এখন অনায়াসেই পাওয়া যাচ্ছে অনলাইনে। আর তা সবার জন্য গতকালই উন্মুক্ত করেছে ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি। লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইউনিভার্সিটির ডিজিটাল লাইব্রেরি নামে নতুন এ


ওয়েবসাইটে নিউটনের লেখা গুরুত্বপূর্ণ চার হাজারের বেশি পৃষ্ঠা গতকাল আপলোড করা হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নিউটনের যাবতীয় রচনা, হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি, নোটবুক ও টিকাটিপ্পনী ওয়েবসাইটে আপলোড করা যাবে বলে মনে করছে ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ। যে কেউ ওয়েবসাইটটিতে ঢুকে এগুলো দেখতে এবং ডাউনলোড করতে পারবেন। পর্যায়ক্রমে ডারউইন থেকে আর্নেস্ট রাদারফোর্ডের মতো বিখ্যাত বিজ্ঞানীদের রচনাও এ ওয়েবসাইটে যুক্ত করা হবে।
নিউটন মূলত মহাকর্ষ ও গতি সূত্রের আবিষ্কারের জন্যই বেশি পরিচিত। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থের নাম 'ফিলোসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা'। বইটি ১৬৮৭ সালের ৫ জুলাই প্রকাশিত হয়। পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিষয় এতে আলোচিত হয়েছে। যথা_এক. নিউটনের গতিসূত্র, যা চিরায়ত বলবিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করে। দুই. সার্বজনীন মহাকর্ষ তত্ত্ব এবং তিন. কেপলারের গ্রহীয় গতি সম্পর্কিত সূত্রের প্রমাণ।
গণিতের জগতেও নিউটনের জুড়ি মেলা ভার। নিউটন ও লাইবনিজ যৌথভাবে ক্যালকুলাস নামে গণিতের একটি নতুন শাখার পত্তন ঘটান। এই নতুন শাখাটিই আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জগতে বিপ্লব সাধনে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে।
২০১০ সালে ডিজিটাল লাইব্রেরির কাজ শুরু করে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর উদ্দেশ্য হলো, জগতের বিখ্যাত লেখক, বিজ্ঞানীদের রচনা এতে সংযুক্ত করা, যাতে বিশ্বের যে কেউ যে কোনো স্থান থেকে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রয়োজনে এগুলো পেতে পারে। প্রতিদিন ২০০ পৃষ্ঠার মতো রচনা এ ওয়েবসাইটে (http://cudl.lib.cam.ac.uk) আপলোড করছে কর্তৃপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরিয়ান এনি জারভিস বলেন, 'আমাদের লাইব্রেরিতে ছয়ের দশকের বিশ্বখ্যাত রচনাবলির কয়েক ডজন ভলিউম রয়েছে। এগুলোর মধ্যে মানবজাতির কল্পনা ও চেষ্টা এবং বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক বিবর্তনগুলো উন্মোচিত হয়েছে।
নিউটনের রচনাবলি ডিজিটাল ওয়েবসাইটে লোড করতে আনুমানিক ১.৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হবে। আর এ টাকা দেবে পলোনস্কি ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশন শিক্ষা ও শিল্প-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অনুদান দিয়ে থাকে।
ডিজিটাল লাইব্রেরির ম্যানেজার গ্রান্ড ইয়ং বলেন, বিশ্বের বিজ্ঞানের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দুষ্প্রাপ্য রচনা ও ডকুমেন্টগুলো আমরা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করব। এতে নিউটনের প্রিন্সিপিয়া, নোটবুক, ওয়েস্ট বক এবং তাঁর হাতের লেখা বিভিন্ন পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করা হবে। সূত্র : ডেইলি মেইল, গার্ডিয়ান ও উইকিপিডিয়া (অনলাইন)।

No comments

Powered by Blogger.