বধ্যভূমি-সংরক্ষণে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে
জঙ্গলের ভেতরে হয়তো এক টুকরো উঁচু ঢিবি। কিংবা বাঁশঝাড়ের ভেতরে অনেক দূর কোথাও একটু নিচু জায়গা। এমনি চিহ্নিত হতে পারে মুক্তিযুদ্ধকালে তৈরি হওয়া অসংখ্য বধ্যভূমি। বর্ণনামতেই বোঝা যায়, এই চিহ্ন খুঁজে পাওয়া প্রত্যক্ষদর্শী ছাড়া অন্যদের পক্ষে সম্ভব নয়। এই প্রজন্ম তাই ওগুলোকে জঙ্গল কিংবা বাঁশঝাড়ের চেয়ে বেশি কিছু হিসেবে দেখতে চাইবে না এবং তাদের পক্ষে এর বাইরে চিন্তা না করাই স্বাভাবিক।
বিজয়ের মাসে এমন চিত্র যখন পত্রিকার পাতায় পড়তে হয়, তখন নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার কোনো সুযোগ থাকে না। সুযোগ থাকে না সম্ভাব্য অনেক প্রশ্নেরই জবাব দেওয়ার। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া সেসব বধ্যভূমি আমাদের ইতিহাসের অংশ। আমাদের চেতনাকে শাণিত করার আলোকবর্তিকা। খবর বেরিয়েছে অল্প কয়েকটি বধ্যভূমির। সেগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। নাম উল্লেখ করেই বলা হয়েছে কালের কণ্ঠে। পাবনা এবং ময়মনসিংহের বধ্যভূমি এগুলো। এমন সংবাদ ডিসেম্বর এলে হরহামেশাই পড়া যায়। কিন্তু বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণের জন্য কার্যকর উদ্যোগ আর নেওয়া হয় না। এই সরকারের আমলে কয়েকটি চিহ্নিত করার কাজ হয়েছে। সৌধ নির্মাণ হয়েছে খুবই সামান্য। কিছু আবার উদ্যোগ নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তহীনতার কারণে কাজ বন্ধ আছে। কিছু আছে, স্থানীয় মানুষের অসহযোগিতা কিংবা জমিসংক্রান্ত জটিলতার কারণে যেগুলোর কাজ এগিয়ে নেওয়া যাচ্ছে না। বধ্যভূমি চিহ্নিতকরণ ও সৌধ নির্মাণের যে বেহাল অবস্থা, তা বোঝা যায় কালের কণ্ঠের একটি প্রতিবেদন থেকে। পাবনার ১১টি বধ্যভূমির কথা উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে; সেখানে মাত্র একটি স্থানে সৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়েরও ১১টি বধ্যভূমির কথা উল্লেখ আছে; সেখানেও একমাত্র লঞ্চঘাটা বধ্যভূমিতে সৌধ নির্মাণ হয়েছে সরকারি অর্থানুকূল্যে। এমন পরিস্থিতি সারা দেশেই বিদ্যমান।
যেসব স্থানে স্বেচ্ছায় স্থানীয় মানুষ জমি দিতে চাইছে, সেগুলো অতি দ্রুত উন্নয়নের আওতায় আনা সম্ভব হলেও সরকারি সিদ্ধান্তহীনতা কিংবা সেদিকে কোনো খেয়াল না থাকার কারণে তা কার্যকর হয়নি। আবার কোনো কোনো গ্রামে জমির মালিকই হয়তো বছরের পর বছর অপেক্ষা করছে, সেখানে সরকারি কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় কি না সে জন্য। দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, বর্তমান সরকারও এ বিষয়ে সাফল্যজনক উদাহরণ তৈরি করতে পারেনি। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক যে মন্ত্রণালয় আছে, তাদের কার্যকর কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠান নেই। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। বধ্যভূমিগুলো চিহ্নিতকরণের প্রকল্প নিয়েছে তারা, আর সংবাদই বলে দেয় তাদের সাফল্য-ব্যর্থতা। সরকারের বোধোদয় হোক।
যেসব স্থানে স্বেচ্ছায় স্থানীয় মানুষ জমি দিতে চাইছে, সেগুলো অতি দ্রুত উন্নয়নের আওতায় আনা সম্ভব হলেও সরকারি সিদ্ধান্তহীনতা কিংবা সেদিকে কোনো খেয়াল না থাকার কারণে তা কার্যকর হয়নি। আবার কোনো কোনো গ্রামে জমির মালিকই হয়তো বছরের পর বছর অপেক্ষা করছে, সেখানে সরকারি কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় কি না সে জন্য। দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, বর্তমান সরকারও এ বিষয়ে সাফল্যজনক উদাহরণ তৈরি করতে পারেনি। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক যে মন্ত্রণালয় আছে, তাদের কার্যকর কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠান নেই। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। বধ্যভূমিগুলো চিহ্নিতকরণের প্রকল্প নিয়েছে তারা, আর সংবাদই বলে দেয় তাদের সাফল্য-ব্যর্থতা। সরকারের বোধোদয় হোক।
No comments