আয়ের পথ হারাচ্ছেন তুরাগের জেলেরা-ভয়াবহ দূষণ
রাজধানীর মিরপুরের ভ্যান-রিকশাচালক সিদ্দিক মিয়া একজন মৌসুমি জেলে। বর্ষা মৌসুমের তিন থেকে চার মাস তিনি তুরাগ নদে মাছ শিকার করেন। রাতে ভ্যান-রিকশা চালান আর খুব ভোরে ধর্মজাল হাতে নেমে পড়েন তুরাগে। এ ক'দিন পরিশ্রম অনেক বেশি হলেও তার দরিদ্র সংসারে ফুটে ওঠে সুখের হাসি। কিছুদিনের জন্য কেটে যায় অভাব-অনটন। তবে শুষ্ক মৌসুমে আবারও বিষাক্ত হয়ে ওঠে মরা তুরাগের জল। মাছ তো দূরের কথা, একটি প্রাণীও
থাকে না এ নদীতে। তখন সিদ্দিক মিয়ার মতো কয়েকশ' মৌসুমি জেলের সংসারে লেগে থাকে দারিদ্র্যের হাহাকার। শতাধিক পেশাদার জেলে পরিবারের আয়-উপার্জন থেমে যায়।
গত শুক্রবার ভোরে মিরপুর বেড়িবাঁধের নবাবেরবাগ চরে বেশ কয়েকজন মৌসুমি জেলের মাছ শিকারের দৃশ্য দেখা যায়। তারা ছোট ধর্মজাল নিয়ে স্রোতের বিপরীতে সারিবদ্ধভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পানিতে ডুবিয়ে রাখার পর জালগুলো ওপরে তুলে আনা হলে ছোট ছোট রূপালি মাছ ধরা পড়ে। তবে প্রতিবার জালে মাছের দেখা মেলে না। মাছ শিকারি সিদ্দিক মিয়া সমকালকে জানান, ডিসেম্বরের পর তুরাগে জাল নিয়ে নামার কোনো উপায় থাকবে না। পানি কালো হয়ে যাবে। কারণ এ সময়ে তুরাগের নাব্যতা একদম কমে যায়। জেগে ওঠা অসংখ্য চরের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা দু'একটা শাখা খালে পানির প্রবাহ থেমে যায়। এই পানির সঙ্গে রাজধানীর কল-কারখানার বর্জ্য ও বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ মিলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, তুরাগে কোনো প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।
প্রতিদিন তুরাগের পানিতে গোসল করেন বেড়িবাঁধ বস্তির রহিমা খাতুন। তিনি প্রতিদিন সঙ্গে করে দুই শিশু ও কলস নিয়ে আসেন। জেনে-বুঝে কেন এই বিষাক্ত পানি ব্যবহার করছেন তা জানতে চাইলে রহিমা সমকালকে বলেন, উপায় নেই। তাই গা ভিজিয়ে একটু শান্তি পাই। তবে নতুন কেউ গোসল করলে তার খোস-পাঁচড়া হয়ে যাবে। তিনি বলেন, বস্তিতে পানি পাওয়ার কোনো সুযোগ না থাকায় হাজার হাজার মানুষ এই কালো পানিই ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে আমাদের সংসার থেকে রোগ-ব্যাধি তাড়ানো যাচ্ছে না।
বেড়িবাঁধ স্লুইস গেটের বৈকালিক বাজারের মাছ বিক্রেতা সিরাজ জানান, তুরাগের মাছই বিকেলে বিক্রি করা হয় এখানে। এ বাজারটিও মৌসুমি। নদীতে মাছ না পাওয়া গেলে দুই পাড়ের শত শত মানুষের উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায়।
গত শুক্রবার ভোরে মিরপুর বেড়িবাঁধের নবাবেরবাগ চরে বেশ কয়েকজন মৌসুমি জেলের মাছ শিকারের দৃশ্য দেখা যায়। তারা ছোট ধর্মজাল নিয়ে স্রোতের বিপরীতে সারিবদ্ধভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পানিতে ডুবিয়ে রাখার পর জালগুলো ওপরে তুলে আনা হলে ছোট ছোট রূপালি মাছ ধরা পড়ে। তবে প্রতিবার জালে মাছের দেখা মেলে না। মাছ শিকারি সিদ্দিক মিয়া সমকালকে জানান, ডিসেম্বরের পর তুরাগে জাল নিয়ে নামার কোনো উপায় থাকবে না। পানি কালো হয়ে যাবে। কারণ এ সময়ে তুরাগের নাব্যতা একদম কমে যায়। জেগে ওঠা অসংখ্য চরের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা দু'একটা শাখা খালে পানির প্রবাহ থেমে যায়। এই পানির সঙ্গে রাজধানীর কল-কারখানার বর্জ্য ও বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ মিলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, তুরাগে কোনো প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।
প্রতিদিন তুরাগের পানিতে গোসল করেন বেড়িবাঁধ বস্তির রহিমা খাতুন। তিনি প্রতিদিন সঙ্গে করে দুই শিশু ও কলস নিয়ে আসেন। জেনে-বুঝে কেন এই বিষাক্ত পানি ব্যবহার করছেন তা জানতে চাইলে রহিমা সমকালকে বলেন, উপায় নেই। তাই গা ভিজিয়ে একটু শান্তি পাই। তবে নতুন কেউ গোসল করলে তার খোস-পাঁচড়া হয়ে যাবে। তিনি বলেন, বস্তিতে পানি পাওয়ার কোনো সুযোগ না থাকায় হাজার হাজার মানুষ এই কালো পানিই ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে আমাদের সংসার থেকে রোগ-ব্যাধি তাড়ানো যাচ্ছে না।
বেড়িবাঁধ স্লুইস গেটের বৈকালিক বাজারের মাছ বিক্রেতা সিরাজ জানান, তুরাগের মাছই বিকেলে বিক্রি করা হয় এখানে। এ বাজারটিও মৌসুমি। নদীতে মাছ না পাওয়া গেলে দুই পাড়ের শত শত মানুষের উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায়।
No comments