বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির দাবি-বরিশালে বেসরকারি শিক্ষকদের ব্যতিক্রমী অবস্থান ধর্মঘট
স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে একসময়ে 'পণ্ডিত মশাই' নামের একটা গল্প ছিল। সেই পণ্ডিত মশাইয়ের বেতন ছিল মোটে ২৫ টাকা। ইন্সপেক্টর তাঁর তিন পায়ের কুকুরটি নিয়ে স্কুল পরিদর্শনে এলে পণ্ডিত জানতে পারেন, ওই কুকুরের পেছনে মাসিক খরচ ৭৫ টাকা। সেই ক্ষোভে ছাত্রদের পণ্ডিত জিজ্ঞেস করেন, 'কুকুরটির তিন ঠ্যাঙের জন্য খরচ ৭৫ টাকা হলে, এক ঠ্যাঙের পেছনে খরচ কত?' হাস্যরসাত্মক মনে হলেও গল্পটিতে রয়েছে সমাজব্যবস্থার ওপরে তীব্র শ্লেষ।
একই সঙ্গে শিক্ষকদের প্রতি সমাজের তীব্র বঞ্চনার কাহিনী। ইংরেজ আমল পেরিয়ে পাকিস্তানি শাসনামলের পর এখন স্বাধীন বাংলাদেশ। কিন্তু, শিক্ষকদের বঞ্চনার যেন শেষ নেই। একবিংশ শতকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়েও বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য সরকার থেকে বাড়িভাড়া বাবদ মাসিক বরাদ্দ মাত্র ১০০ টাকা। অথচ গ্রামগঞ্জে এখন গোয়ালঘর ভাড়া করতেও কমপক্ষে দেড় থেকে দুই হাজার টাকার প্রয়োজন। এই হাস্যকর তামাশাপূর্ণ বরাদ্দের প্রতিবাদে গতকাল বরিশালের বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা মিনিয়েচার কুড়েঘর নিয়ে ব্যতিক্রমী অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন।
জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্ট বরিশাল আঞ্চলিক শাখার উদ্যোগে গতকাল সকালে অশ্বিনী কুমার টাউন হলের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্টের বরিশাল আঞ্চলিক শাখার আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাসিন-উল-ইসলাম হাবুল ।
অবস্থান ধর্মঘটে আসা বেসরকারি শিক্ষকরা জানান, সরকার থেকে তাঁদের জন্য বরাদ্দ বাড়িভাড়ায় প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের একটি মিনিয়েচার কুড়ের ঘরও ভাড়া করে থাকা সম্ভব নয়। বর্তমানে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে পরিবার নিয়ে তাঁদের জীবন নির্বাহ করতে হচ্ছে। অথচ বিষয়টি অবহিত হওয়া সত্ত্বেও সরকার এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাঁরা বলেন, জাতির মেরুদণ্ড সৃষ্টির কারিগরদের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নের কোনো চেষ্টাই সফল হবে না। তাঁরা অভিযোগ করেন, সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের নামে শত শত কোটি টাকা খরচ করছে, অথচ বেসরকারি শিক্ষকদের টাইমস্কেল পর্যন্ত স্থগিত করে রেখেছে। শিক্ষকদের প্রতি এই অবহেলা পুরো জাতির জন্য চরম অপমানের বিষয়।
বক্তারা আরো বলেন, বর্তমানে গ্রামগঞ্জে একটি ঘর ভাড়া করতে কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার প্রয়োজন। অথচ বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের দেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। পক্ষান্তরে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বেতন স্কেলের ৪৫ শতাংশ ঘরভাড়া দেওয়া হয়। এই নিয়মকে তাঁরা বৈষম্যমূলক বলে অভিহিত করে এর প্রতিকার দাবি করেন। তাঁরা জানান, বাড়িভাড়া ভাড়ার পরিমাণ বৃদ্ধি করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।
সভায় বক্তব্য দেন মো. আবদুল খালেক, মো. মজিবুর রহমান, মোজ্জামেল হোসেন, শামসুল আলম, হারুন-অর-রশিদ প্রমুখ।
« পূর্ববর্তী সংবাদ
জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্ট বরিশাল আঞ্চলিক শাখার উদ্যোগে গতকাল সকালে অশ্বিনী কুমার টাউন হলের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্টের বরিশাল আঞ্চলিক শাখার আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাসিন-উল-ইসলাম হাবুল ।
অবস্থান ধর্মঘটে আসা বেসরকারি শিক্ষকরা জানান, সরকার থেকে তাঁদের জন্য বরাদ্দ বাড়িভাড়ায় প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের একটি মিনিয়েচার কুড়ের ঘরও ভাড়া করে থাকা সম্ভব নয়। বর্তমানে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে পরিবার নিয়ে তাঁদের জীবন নির্বাহ করতে হচ্ছে। অথচ বিষয়টি অবহিত হওয়া সত্ত্বেও সরকার এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাঁরা বলেন, জাতির মেরুদণ্ড সৃষ্টির কারিগরদের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নের কোনো চেষ্টাই সফল হবে না। তাঁরা অভিযোগ করেন, সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের নামে শত শত কোটি টাকা খরচ করছে, অথচ বেসরকারি শিক্ষকদের টাইমস্কেল পর্যন্ত স্থগিত করে রেখেছে। শিক্ষকদের প্রতি এই অবহেলা পুরো জাতির জন্য চরম অপমানের বিষয়।
বক্তারা আরো বলেন, বর্তমানে গ্রামগঞ্জে একটি ঘর ভাড়া করতে কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার প্রয়োজন। অথচ বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের দেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। পক্ষান্তরে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বেতন স্কেলের ৪৫ শতাংশ ঘরভাড়া দেওয়া হয়। এই নিয়মকে তাঁরা বৈষম্যমূলক বলে অভিহিত করে এর প্রতিকার দাবি করেন। তাঁরা জানান, বাড়িভাড়া ভাড়ার পরিমাণ বৃদ্ধি করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।
সভায় বক্তব্য দেন মো. আবদুল খালেক, মো. মজিবুর রহমান, মোজ্জামেল হোসেন, শামসুল আলম, হারুন-অর-রশিদ প্রমুখ।
« পূর্ববর্তী সংবাদ
No comments