কিংসমিড বলেই শ্রীলঙ্কার যা আশা


ত কয়েক দিনে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটাররা নিশ্চয়ই দুঃস্বপ্ন দেখেছেন। দুঃস্বপ্নের বেশির ভাগজুড়ে হয়তো ছিল ‘সবুজ ২২ গজ’। ওই রেশ কাটতে না-কাটতেই আরেকটা চ্যালেঞ্জ আসছে দিলশানদের জন্য। সেঞ্চুরিয়নের সবুজ ২২ গজে হাবুডুবু খেয়ে তারা তৃতীয় দিন চা-বিরতির আগেই ম্যাচ হেরেছিল ইনিংস ও ৮১ রানে। আজ ডারবানের কিংসমিডেও লঙ্কানদের জন্য অপেক্ষা করছে সবুজ উইকেট। লঙ্কানদের অবশ্য সাহস জোগাতে পারে এই মাঠের ইতিহাস।


দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে একটি ম্যাচই কেবল ড্র করতে পেরেছে তারা, সেটি এই কিংসমিডেই, ২০০০ সালে। দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন পর্যন্ত একমাত্র ফিফটিটা ওই ম্যাচেই পেয়েছিলেন মাহেলা জয়াবর্ধনে (৯৮), কুমার সাঙ্গাকারা করেছিলেন ৭৪। ৫ উইকেট নিয়েছিলেন দিলহারা ফার্নান্ডো। এর চেয়েও বেশি আশা-জাগানিয়া আরেকটি তথ্য—দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে অপয়া মাঠ এই কিংসমিড। সর্বশেষ তিন টেস্টেই এখানে হেরেছে তারা, শেষ জয়টা ছিল ২০০৮ সালের বক্সিং ডে টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। লড়াইয়ের জন্য এর চেয়ে উপযুক্ত ভেন্যু আর কি হতে পারে শ্রীলঙ্কার জন্য!
তবে এর উল্টো দিকটাও আছে। বিশ্বকাপের পর থেকে যেন ক্রমাগত তলানির দিকে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা, বিপর্যস্ত প্রথম টেস্টেও। ‘কিংসমিড কুফা’ কাটানোর জন্য এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর পাবে না দক্ষিণ আফ্রিকা। গ্রায়েম স্মিথের কণ্ঠেও সেই প্রত্যয়, ‘কিংসমিডে আমরা যেভাবে খেলেছি, সেটা সত্যিই হতাশাজনক। তবে এবার আমরা সেটা বদলে দিতে চাই। আমি এখানে ভালো করতে চাই। আমার ধারণা, দলের সবার অনুভূতিও একই।’ অধিনায়কের প্রতিধ্বনি সহ-অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্সের কণ্ঠেও, ‘গত কিছুদিনে কিংসমিডে আমাদের পারফরম্যান্স মোটেও ভালো নয়। ব্যাপারটা নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা এই ধারাকে বদলে দিতে চাই।’ সম্ভবত একই দল নিয়ে নামবে স্বাগতিকেরা, অনুশীলনে গোড়ালিতে খানিকটা চোট পেলেও খেলবেন ভারনন ফিল্যান্ডার।
মুত্তিয়া মুরালিধরনের অবসরের পর শ্রীলঙ্কার বোলিং আক্রমণ বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে সত্যি। প্রতিপক্ষকে দুবার অলআউট করার সামর্থ্য নিয়েই সংশয় আছে। তবে সত্যি বলতে, সাম্প্রতিক সময়ে তাদের বেশি ভুগিয়েছে ব্যাটিং। সাঙ্গাকারা-জয়াবর্ধনের ওপর অতিনির্ভর ব্যাটিং ভেঙে পড়ছে বারবার। ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজের পর থেকে অধিনায়ক তিলকারত্নে দিলশানের ব্যাটে বিস্ময়কর রানখরা। মরিয়া লঙ্কানরা তাই টেস্ট ক্যাপ তুলে দিচ্ছে দিনেশ চান্ডিমালের হাতে। কয়েক বছর ধরেই শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের পরবর্তী ‘বড় কিছু’ মনে করা হচ্ছে ২২ বছর বয়সী উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানকে, ১৭ ওয়ানডেতে দুটি সেঞ্চুরিও করে ফেলেছেন। এবারই হবে তাঁর সামর্থ্যের পরীক্ষা।
লঙ্কানরা কিছুটা আশান্বিত হতে পারে শন পোলকের কথায়। এই শহরেরই বাসিন্দা সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়কের ধারণা, ব্যাটসম্যানদের একেবারে বধ্যভূমি হবে না কিংসমিড। পেস-বাউন্স-সুইং থাকবে, তবে ব্যাটসম্যানদেরও কিছু করার থাকবে। তবে তার পরও, স্টেইন-মরকেল-ফিল্যান্ডারদের বিপক্ষে ম্যাচ বাঁচাতে হলে দারুণ কিছুই করতে হবে লঙ্কানদের। এএফপি, ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.