বর্ষশেষ সংখ্যায় রস+আলো যদি সারা বছরের জবাবদিহি করে

স+আলোর এই সংখ্যাটাই চলতি বছরের শেষ সংখ্যা। রস+আলো যদি তার দায়িত্ববোধ থেকে প্রায় শেষ হয়ে যাওয়া এই বছরের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে পাঠকের কাছে একটা জবাবদিহি করতে চায়, তাহলে এর ধরন কেমন হতে পারে, সেটাই জানাচ্ছেন ইকবাল খন্দকার আঁকা: মনোরঞ্জন বিজ্ঞাপনসংক্রান্ত জবাবদিহি বছরের শেষ দিকে এসে রস+আলোতে বিজ্ঞাপন বেড়ে যাওয়ায় কেউ কেউ মনে একটু বেশিই কষ্ট পেয়েছেন বলে জানা যায়। প্লিজ, কষ্ট পাবেন


না। আপনি যদি একটা রম্য লেখা পড়েন, তাহলে বড়জোর হাসতে পারবেন। এখানে শেখার কিছু নেই। কিন্তু রস+আলোতে যেসব বিজ্ঞাপন ছাপা হয়, সেসব বিজ্ঞাপন থেকে চাইলেই আপনি কিছু না কিছু শিখতে পারবেন; যেমন, কোন কোড নম্বর লিখে কোন নম্বরে পাঠালে কী গান শোনা যাবে। জানতে পারবেন কোন কোম্পানির মাল কিনলে কত পার্সেন্ট কমিশন পাবেন। এই যে কমিশন, তথা টাকা সেভের সুবিধাটা, এই সুবিধা আপনি সারা জীবন রম্য পড়েও পাবেন না। অতএব বিজ্ঞাপনই পড়া উচিত।
আইডিয়া-সংক্রান্ত জবাবদিহি
যথাযথ সাহসের অভাবে সামনে বলতে না পারলেও তলে তলে অনেককেই বলতে শোনা গেছে, রস+আলোতে আইডিয়া-সংকট দেখা দিয়েছে। তলে তলে বললেও কথা কিন্তু সত্য। এটাও সত্য যে, রস+আলো ইচ্ছে করেই আইডিয়া-সংকট সৃষ্টি করেছে। কারণ রস+আলো সময়ের সঙ্গে, পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে জানে। দেশে এখন হরেক রকমের সংকট চলছে। তাই সেই সব সংকটের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে এখানে আইডিয়া-সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। ধরে নিন, এই সংকট অনেকটা চালের বাজারের কৃত্রিম সংকটের মতো। অতএব যেকোনো সময় এই সংকট কেটে যাবে।
বিলসংক্রান্ত জবাবদিহি
বিল প্রদানের ক্ষেত্রে আমরা ‘সবুরে মেওয়া ফলে’ প্রবাদটির সঠিক প্রয়োগ করতে সচেষ্ট। তাই যাঁরা অভিযোগ করেছেন কোনো কোনো মাসে নির্দিষ্ট সময়ে বিল পাওয়া যায়নি, তাঁদের বলছি, আসলেই সবুরে মেওয়া ফলে। দেরি করে বিল তুলে যেহেতু কয়েক মাসের বিল একসঙ্গে পেয়েছেন এবং ভালো একটা অ্যামাউন্ট হয়েছে, অতএব আমাদের ধন্যবাদ প্রাপ্য। একসময় এসে পুরো এক বছরের ধন্যবাদ দিয়ে যাবেন। বিল কম দেওয়া হয়—এই অভিযোগও কারও কারও আছে। শুনুন, বেশি ‘বিল’ পেলেই যে আপনি ‘বিল’ গেটস বা ‘বিল’ ক্লিনটন হয়ে যাবেন, এমন ধারণা অবান্তর।
পাঠকসংখ্যা-সংক্রান্ত জবাবদিহি
পাঠকদের একটা কমন অভিযোগ, আমরা কদিন পর পর পাঠকসংখ্যা বের করার কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে লেখা নিলেও যথাসময়ে প্রকাশ করি না। অভিযোগে সত্যতা আছে। তবে আপনাদের বুঝতে হবে, কেন আমরা যথাসময়ে পাঠকসংখ্যা বের করি না। আমাদের ডাক বিভাগ কী পরিমাণ গতিশীল, এটা নিশ্চয়ই সবার জানা। এই গতির কারণে আমরা নির্দিষ্ট সময়ে সব লেখা হাতে পাই না। ফলে আমরা অপেক্ষা করতে থাকি, কবে সবার চিঠি হাতে পাব এবং কবে পাঁচ-দশ কেজি কাগজ হবে। আসলে পাঁচ-দশ কেজি কাগজের পরিমাণ চিঠি না জমলে কাগজওয়ালাকে ডেকে এনে পোষায়, বলুন?
প্রাইজবন্ড-সংক্রান্ত জবাবদিহি
পাঠকসংখ্যা নিয়ে যতটা না অভিযোগ, তার চেয়ে বেশি অভিযোগ প্রাইজবন্ড নিয়ে। গত এক বছরে এই অভিযোগ শুনতে শুনতে আমাদের কান ঝালাপালা। তবু আমরা প্রাইজবন্ড কেন দেরি করে দিই? হ্যাঁ, কারণ অবশ্যই আছে। সত্যি কথা বলতে কি, আমরা আপনাদের একটু বেশিই ভালোবাসি। আমরা চাই সব সময় আপনারা চিঠি লিখুন, কুশলাদি বিনিময় করুন। আমরা খেয়াল করেছি, প্রাইজবন্ড দিতে যত দেরি হয়, ততই আপনারা চিঠি লেখেন। আর যত বেশি চিঠি তত বেশি কুশলবিনিময়। প্রাইজবন্ড পেয়ে গেলে আর চিঠি লিখতে চান না। তাই ভবিষ্যতে আরও দেরিতে দেওয়ার ইচ্ছা আছে।

No comments

Powered by Blogger.