মেলবোর্ন টেস্ট-দুই মেরুতে পন্টিং-টেন্ডুলকার



চীন টেন্ডুলকার বরাবরই এগিয়ে ছিলেন, তবে টেস্টে সর্বোচ্চ রানের দৌড়ে তাঁকে ভালোই তাড়া করছিলেন রিকি পন্টিং। গত বছরের শুরুতেও দুজনের রানের ব্যবধান ছিল দেড় হাজারের মতো। সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ডে তো টেন্ডুলকারের ঘাড়ে নিঃশ্বাসই ফেলছিলেন। গত বছরের জানুয়ারিতে ৩৯তম টেস্ট সেঞ্চুরিটা যখন করলেন পন্টিং, টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরি ছিল ৪৩টি। এরপর ৮টি সেঞ্চুরি করেছেন টেন্ডুলকার, পন্টিং একটিও নয়। রানের ব্যবধানটা


বেড়ে দাঁড়িয়েছে এখন প্রায় আড়াই হাজার, পন্টিংকে ছাড়িয়ে গেছেন রাহুল দ্রাবিড়ও। আজ শুরু বক্সিং ডে টেস্টে বরাবরের মতোই অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা টেন্ডুলকার। সহ-অধিনায়ক ব্র্যাড হাডিন বলছেন, ভাগ্যের একটু সহায়তা পেলে টেন্ডুলকারকে আটকাতে পারবেন তাঁরা। আর পন্টিং? ক্যারিয়ার বাঁচাতে ফিরে গেছেন সূচনাবিন্দুতে। ব্যাটিংয়ের খুঁতগুলো সারাতে জরুরি বার্তা পাঠিয়ে ডেকে আনতে হয়েছে রাজ্য দলে তাঁর প্রথম কোচ গ্রেগ শিপার্ডকে।
১৭ বছর বয়সে, তাসমানিয়ার সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম শ্রেণীতে অভিষেক হয়েছিল পন্টিংয়ের। তখন তাসমানিয়ার কোচ ছিলেন শিপার্ড। সাবেক ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ব্যাটসম্যান ১১ বছর কোচিং করিয়েছেন তাসমানিয়াকে। এখন ভিক্টোরিয়া আর আইপিএল দল দিল্লি ডেয়ার ডেভিলসের কোচ। তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত শিষ্যের ‘এসওএস’ পেয়ে ছুটে এসেছিলেন মেলবোর্নে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ‘সুইং বোলিং সামলানো’ ক্যাম্পে। তিন দিন নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন গুরু-শিষ্য।
হঠাৎ শিপার্ডের দ্বারস্থ হওয়া নিয়ে পন্টিংয়ের যুক্তি, ‘শিপার্ড বোলিং মেশিনে আমাকে কিছু বল করেছে, যাতে বুঝতে পারে আমার ব্যাটিংটা এখন কেমন হচ্ছে। আমার খেলা সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা আছে ওর, খুব ভালো বোঝে। আমার সমস্যা কোথায় হচ্ছে, কী কী ঠিক করতে হবে, এসব আমি নিজেও জানি। অস্ট্রেলিয়া দলের কোচিং স্টাফও জানে। তার পরও বাইরের একজনের দৃষ্টিতে দেখা, পরামর্শ নেওয়াটা খুব কাজে লেগেছে।’
সাহায্যের ফল কতটা হলো, সেটার প্রমাণ হবে মাঠেই। পন্টিংয়ের যে এতসব করতে হচ্ছে, এটাই বিস্ময়কর। দলে তাঁর জায়গা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, এই বা কে ভেবেছিল! কিন্তু নির্মম বাস্তব এখন এটাই। বুঝতে পারছেন পন্টিং নিজেও, ‘অনেক অনেক বছর ধরে এই অনুভূতির সঙ্গে পরিচয় ছিল না আমার। পারফরম্যান্স এমন ছিল যে, এসব প্রশ্ন কখনো ওঠেনি। এই প্রশ্নগুলোকে আবার দূর করতে কী করতে হবে সেটাও জানি, রান করা এবং সেটা ধারাবাহিকভাবে।’
কারণটা ভিন্ন, তবে পন্টিংয়ের মতো সেঞ্চুরির খোঁজে আছেন টেন্ডুলকারও। ক্যারিয়ার বাঁচানো নয়, টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরি প্রয়োজন একটা বোঝা নামানোর জন্য। ৪টি টেস্ট, এবার নিশ্চয়ই শততম সেঞ্চুরিটা হয়েই যাবে টেন্ডুলকারের! তবে অস্ট্রেলিয়ার সহ-অধিনায়ক হাডিন বলেছেন, টেন্ডুলকারকে আরও অপেক্ষায় রাখার সব রকম চেষ্টাই করবেন তাঁরা, ‘ভক্ত-সমর্থক ও খেলাটার সঙ্গে যুক্ত সবার জন্যই শচীনের শততম সেঞ্চুরিটা খুব রোমাঞ্চকর ব্যাপার। তবে আমাদের এটা নিয়ে ঠিক ওভাবে আলোচনা হয়নি। আমার ধারণা, একটু যদি ভাগ্যের সহায়তা পাই, তাহলে ওকে আমরা সেঞ্চুরির সুযোগ দেব না।’ ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.