ঝুঁকির মুখে ব্যাংকিং খাত- ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে বাড়ছে কৃত্রিম আয় by আশরাফুল ইসলাম
ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতে বাড়ছে কৃত্রিম আয়। এর ফলে ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে এ খাত। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী ব্যাংক এক হাজার কোটি টাকার ভোক্তাঋণ বা জামানতবিহীন ঋণ বিতরণ করলে বাধ্যতামূলক ঋণের নিরাপত্তার জন্য ৫০ কোটি টাকা সংরক্ষণ করতে হবে, যাকে ব্যাংকিং পরিভাষায় সাধারণ প্রভিশন বলা হয়। কিন্তু সমপরিমাণ ঋণ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে বিতরণ করলে মাত্র আড়াই কোটি টাকার প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়। আর এ প্রভিশন সংরক্ষণ করা হয় ব্যাংকের মুনাফা থেকে। কম প্রভিশন সংরক্ষণ করলে ব্যাংকের আয় বাড়ে। এভাবেই কৃত্রিম মুনাফা বাড়াতে এখন জামানতবিহীন ঋণ রূপান্তর হচ্ছে এসএমইতে।
আয় বাড়াতে বেশির ভাগ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। খোদ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এমন অভিযোগ উঠায় এখন বিব্রত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিভিন্ন সময় ব্যাংকগুলোতে পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ চিত্র পেয়েছেন। আর এর কারণ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সার্কুলারকে দায়ী করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে ুদ্র ও মাঝারি খাতের (এসএমই) ঋণকে উৎসাহিত করতে প্রভিশন সংরক্ষণে বিশেষ ছাড় দেয়া হয়েছে। ১০০ টাকা এসএমই ঋণ দিলে ২৫ পয়সা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়, যা ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে ৫ টাকা। আয় বাড়ানোর জন্যই ভোক্তা ঋণসহ অন্যান্য ঋণও এখন জালিয়াতির মাধ্যমে এসএমই হিসেবে দেখাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এর ফলে ব্যাংক খাতে ঋণঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি আর্থিক ভিত দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, ঋণের বিপরীতে প্রভিশনিং ও ঋণ পুনঃতফসিল নীতিমালা কঠোর করে ২০১২ সালের ১৪ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দু’টি মাস্টার সার্কুলার জারি করেছিল। এ সার্কুলার জারি করার সময় বাংলাদেশ ব্যাংক দাবি করেছিল, ঋণ শ্রেণীকরণ, প্রভিশনিং ও পুনঃতফসিলীকরণের নীতিমালা পরিমার্জনের ফলে অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যাংকের ঋণপ্রবাহ কমে আসবে। ব্যাংকিং খাতের ওপর ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা শ্রেণীর আস্থা আরো বাড়বে, আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা সুসংহত হবে এবং দেশের ব্যাংকিং খাত আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হবে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের অবস্থান বেশি দিন ধরে রাখতে পারেনি। রাজনৈতিক চাপ, সরকারদলীয় ব্যাংক পরিচালকদের বিরোধিতার মুখে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই সার্কুলার পাঁচবার পরিবর্তন করতে হয়েছে।
প্রথম পরিবর্তন করা হয় গত ২০১২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। সে সময় প্রভিশন সংরক্ষণের ওপর একটি বড় পরিবর্তন আনা হয়। প্রথমে সার্কুলার জারি করার সময় বলা হয়েছিল এসএমই ঋণের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ সাধারণ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। কিন্তু সার্কুলার জারির তিন মাসের মাথায় তা পরিবর্তন করে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। অথচ কৃষি ও ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ সাধারণ প্রভিশন বহাল রাখা হয়। শিথিল করার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগ থেকে অভিযোগ উঠেছিল যে, একটি বিশেষ ব্যাংককে ছাড় দেয়ার জন্যই এটা শিথিল করা হয়েছে। এর পরিণাম সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, এটা ব্যাংকিং খাতের জন্য মোটেও ভালো ফল বয়ে আনবে না। কেননা এর ফলে ব্যাংক খাতে ঋণজালিয়াতি বেড়ে যাবে। তখন সব ঋণই এসএমই ঋণে রূপান্তর করা হবে।
ওই কর্মকর্তার মন্তব্যই সত্য হয়েছে। ব্যাংকিং খাত পরিদর্শনের সাথে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্তত চারটি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকিভিত্তিক ঋণগুলো এখন জালজালিয়াতির মাধ্যমে এসএমই ঋণে রূপান্তর হয়ে যাচ্ছে। এর প্রধান কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংকের অবস্থান বদলানো। বেশির ভাগ ব্যাংক তাদের ঝুঁকিভিত্তিক ঋণ বিশেষ করে ভোক্তাঋণ এমএমই ঋণ হিসেবে রূপান্তর করছে জালজালিয়াতির মাধ্যমে। এর ফলে ব্যাংকগুলোতে ঝুঁকিভিত্তিক ঋণ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি অবৈধভাবে বেশি পরিমাণ মুনাফা দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে। এতে পুরো ব্যাংকিং খাতকেই ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত বছরের ৩০ জুন শেষে এসএমই ঋণের স্থিতি ছিল ১ লাখ ৮৬৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২১ শতাংশ। কিন্তু চলতি বছরের জুনে এসে বেড়ে এসএমই ঋণের স্থিতি হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের প্রায় ২৪ শতাংশ। এক বছরে এসএমই ঋণ বেড়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, গ্যাস, বিদ্যুৎ সঙ্কটের পাশাপাশি চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগমুখী হচ্ছেন না। নানা প্রণোদনার পরেও উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে আস্থা ফিরে আসছে না। এ কারণে বেসরকারি খাতে সামগ্রিক ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১১ শতাংশ। অথচ এ সময়ে এসএমই ঋণ না কমে বরং এর প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এটা নিছক জামানতবিহীন ঋণকে এসএমইতে রূপান্তরের ফসল। একজন কর্মকর্তা জানান, বিনিয়োগ মন্দার মাঝে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও এসব ঋণজালিয়াতিকে খুব একটা গুরুত্বের সাথে দেখছে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগ্রাসী ব্যাংকিং করে এমন ব্যাংকগুলোর এখন পোয়া বারো। কেননা এক হাজার কোটি টাকার ভোক্তা ঋণ এসএমই ঋণ হিসেবে চালিয়ে দিতে পারলে ওই ব্যাংকের ভুয়া আয় বেড়ে যায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা। আর সমপরিমাণ এসএমই ঋণ দিলে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয় আড়াই কোটি টাকা। এ হিসাবে ২০ হাজার কোটি টাকার ভোক্তা ঋণ এসএমই হিসেবে দেখাতে পারলে কৃত্রিমভাবে আয় বেড়ে যায় (১০০০-৫০) ৯৫০ কোটি টাকা।
সাধারণত, প্রভিশন সংরক্ষণ করা হয় ব্যাংকের ঋণ ঝুঁকি কমিয়ে আর্থিক ভিত শক্তিশালী করার জন্য। কিন্তু ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে প্রভিশন কম সংরক্ষণ করলে ব্যাংকগুলোর ঋণঝুঁকি বেড়ে যায়, যা প্রকারান্তরে ব্যাংকের আর্থিক ভিতই দুর্বল করে দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ সূè ঋণ জালিয়াতি ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এক ঋণ থেকে অন্য ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অসম বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে। অন্যথায় ব্যাংক খাতের জন্য তা মোটেও ভালো ফল বয়ে আনবে না।
আয় বাড়াতে বেশির ভাগ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। খোদ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এমন অভিযোগ উঠায় এখন বিব্রত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিভিন্ন সময় ব্যাংকগুলোতে পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ চিত্র পেয়েছেন। আর এর কারণ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সার্কুলারকে দায়ী করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে ুদ্র ও মাঝারি খাতের (এসএমই) ঋণকে উৎসাহিত করতে প্রভিশন সংরক্ষণে বিশেষ ছাড় দেয়া হয়েছে। ১০০ টাকা এসএমই ঋণ দিলে ২৫ পয়সা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়, যা ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে ৫ টাকা। আয় বাড়ানোর জন্যই ভোক্তা ঋণসহ অন্যান্য ঋণও এখন জালিয়াতির মাধ্যমে এসএমই হিসেবে দেখাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এর ফলে ব্যাংক খাতে ঋণঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি আর্থিক ভিত দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, ঋণের বিপরীতে প্রভিশনিং ও ঋণ পুনঃতফসিল নীতিমালা কঠোর করে ২০১২ সালের ১৪ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দু’টি মাস্টার সার্কুলার জারি করেছিল। এ সার্কুলার জারি করার সময় বাংলাদেশ ব্যাংক দাবি করেছিল, ঋণ শ্রেণীকরণ, প্রভিশনিং ও পুনঃতফসিলীকরণের নীতিমালা পরিমার্জনের ফলে অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যাংকের ঋণপ্রবাহ কমে আসবে। ব্যাংকিং খাতের ওপর ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা শ্রেণীর আস্থা আরো বাড়বে, আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা সুসংহত হবে এবং দেশের ব্যাংকিং খাত আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হবে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের অবস্থান বেশি দিন ধরে রাখতে পারেনি। রাজনৈতিক চাপ, সরকারদলীয় ব্যাংক পরিচালকদের বিরোধিতার মুখে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই সার্কুলার পাঁচবার পরিবর্তন করতে হয়েছে।
প্রথম পরিবর্তন করা হয় গত ২০১২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। সে সময় প্রভিশন সংরক্ষণের ওপর একটি বড় পরিবর্তন আনা হয়। প্রথমে সার্কুলার জারি করার সময় বলা হয়েছিল এসএমই ঋণের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ সাধারণ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। কিন্তু সার্কুলার জারির তিন মাসের মাথায় তা পরিবর্তন করে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। অথচ কৃষি ও ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ সাধারণ প্রভিশন বহাল রাখা হয়। শিথিল করার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগ থেকে অভিযোগ উঠেছিল যে, একটি বিশেষ ব্যাংককে ছাড় দেয়ার জন্যই এটা শিথিল করা হয়েছে। এর পরিণাম সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, এটা ব্যাংকিং খাতের জন্য মোটেও ভালো ফল বয়ে আনবে না। কেননা এর ফলে ব্যাংক খাতে ঋণজালিয়াতি বেড়ে যাবে। তখন সব ঋণই এসএমই ঋণে রূপান্তর করা হবে।
ওই কর্মকর্তার মন্তব্যই সত্য হয়েছে। ব্যাংকিং খাত পরিদর্শনের সাথে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্তত চারটি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকিভিত্তিক ঋণগুলো এখন জালজালিয়াতির মাধ্যমে এসএমই ঋণে রূপান্তর হয়ে যাচ্ছে। এর প্রধান কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংকের অবস্থান বদলানো। বেশির ভাগ ব্যাংক তাদের ঝুঁকিভিত্তিক ঋণ বিশেষ করে ভোক্তাঋণ এমএমই ঋণ হিসেবে রূপান্তর করছে জালজালিয়াতির মাধ্যমে। এর ফলে ব্যাংকগুলোতে ঝুঁকিভিত্তিক ঋণ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি অবৈধভাবে বেশি পরিমাণ মুনাফা দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে। এতে পুরো ব্যাংকিং খাতকেই ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত বছরের ৩০ জুন শেষে এসএমই ঋণের স্থিতি ছিল ১ লাখ ৮৬৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২১ শতাংশ। কিন্তু চলতি বছরের জুনে এসে বেড়ে এসএমই ঋণের স্থিতি হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের প্রায় ২৪ শতাংশ। এক বছরে এসএমই ঋণ বেড়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, গ্যাস, বিদ্যুৎ সঙ্কটের পাশাপাশি চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগমুখী হচ্ছেন না। নানা প্রণোদনার পরেও উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে আস্থা ফিরে আসছে না। এ কারণে বেসরকারি খাতে সামগ্রিক ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১১ শতাংশ। অথচ এ সময়ে এসএমই ঋণ না কমে বরং এর প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এটা নিছক জামানতবিহীন ঋণকে এসএমইতে রূপান্তরের ফসল। একজন কর্মকর্তা জানান, বিনিয়োগ মন্দার মাঝে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও এসব ঋণজালিয়াতিকে খুব একটা গুরুত্বের সাথে দেখছে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগ্রাসী ব্যাংকিং করে এমন ব্যাংকগুলোর এখন পোয়া বারো। কেননা এক হাজার কোটি টাকার ভোক্তা ঋণ এসএমই ঋণ হিসেবে চালিয়ে দিতে পারলে ওই ব্যাংকের ভুয়া আয় বেড়ে যায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা। আর সমপরিমাণ এসএমই ঋণ দিলে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয় আড়াই কোটি টাকা। এ হিসাবে ২০ হাজার কোটি টাকার ভোক্তা ঋণ এসএমই হিসেবে দেখাতে পারলে কৃত্রিমভাবে আয় বেড়ে যায় (১০০০-৫০) ৯৫০ কোটি টাকা।
সাধারণত, প্রভিশন সংরক্ষণ করা হয় ব্যাংকের ঋণ ঝুঁকি কমিয়ে আর্থিক ভিত শক্তিশালী করার জন্য। কিন্তু ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে প্রভিশন কম সংরক্ষণ করলে ব্যাংকগুলোর ঋণঝুঁকি বেড়ে যায়, যা প্রকারান্তরে ব্যাংকের আর্থিক ভিতই দুর্বল করে দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ সূè ঋণ জালিয়াতি ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এক ঋণ থেকে অন্য ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অসম বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে। অন্যথায় ব্যাংক খাতের জন্য তা মোটেও ভালো ফল বয়ে আনবে না।
No comments